‘আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা অসম্ভব’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা অসম্ভব। তাকে মুক্ত করার একমাত্র পথ হলো আইনি লড়াই। যে পথে বিএনপি হাঁটে না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর একাডেমি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কামরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায় হয়েছে কত সালে, কিন্তু এখনো তারা (বিএনপি) আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারে নাই। এটা হচ্ছে তাদের একটা ভেলকিবাজি, মিথ্যা, ধোঁকা। তারা খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রেখে তারেক রহমানকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। খালেদা জিয়াকে তারা মুক্ত করতে চায় না। তার মুক্তি সম্ভব একমাত্র আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে। কিন্তু তারা (বিএনপি) আদালতে যায় না।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা সমাবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকে তিনি (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় বাসায় বসবাস করছেন মুক্ত মানুষ হিসেবে। চিকিৎসা পাচ্ছেন, নেতাকর্মীরা দেখা করতে পারছেন। সবই করতে পারছেন। কিন্তু তারা (বিএনপি) খালেদা জিয়াকে আবার মুক্ত মানুষ হিসেবে রাজনীতিতে আনতে কোনো আইনি লড়াই করে না, করার মতো কোনো মানসিকতাও তাদের নাই। কারণ তারা চায়, তারেককে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করতে। এ কারণেই তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না। এখনো তারা বলে যে আন্দোলন করবে। আন্দোলন করে তারা কী করবে? কোনো লাভ নাই। আইনি লড়াই ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি কোনো অবস্থাতেই সম্ভব না।
কামরুল বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে ক্ষমতায় যাব- এমন নিশ্চয়তা পেলে নির্বাচনে যাব আর এই নিশ্চয়তা না পেলে নির্বাচনে যাব না, এটা কোনো গণতান্ত্রিক দলের চরিত্র হতে পারে না। বিএনপির সেই চরিত্র, তাই তারা নির্বাচনে আসে না। বারবার নির্বাচনে আসে না আর আমাদের অপবাদ দেয়। কিন্তু আমরাতো চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। সংসদে শক্তিশালী অপজিশন গঠন করুক কিংবা সরকার গঠন করুক, নির্বাচনের মাধ্যমে যাই হোক হবে। এটাইতো নিয়ম; কিন্তু তারা আসে না। তারা আন্দোলন করে।তারা আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও করে। এটা কোনো আন্দোলন হতে পারে না। আমরাও তো আন্দোলন করেছি। কিন্তু তাদের মতো জ্বালাও-পোড়াও করিনি।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অনেকে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা গুজব রটাচ্ছে। বলছে যে, আমাদের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু এখনো ভালো আছে। আমরা ভালো আছি। করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পরও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের স্মৃতিচারণ করে কামরুল ইসলাম বলেন, নাসিম একজন বড়মাপের নেতা। কিন্তু কর্মীদের সঙ্গে তার ভাবসাবে সেটা বোঝা যায়নি। তিনি একজন কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন। তিনি ১৪ দলকে সক্রিয় করে তুলেছেন। ১/১১ এর সময় তাকে আটক করা হয়েছিল। তাকে অনেক নির্যাতনও করা হয়েছিল, কিন্তু নেত্রীর বিপক্ষে একটা কথাও বের করতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধু একাডেমির সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম প্রমুখ।