বিশ্ব

তেলআবিবে হুতিদের ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় পাল্টা হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। স্থানীয় সময় শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ইয়েমেনের রাজধানী সানায় সিরিজ বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলাগুলি সানার আত্তান এলাকা লক্ষ্য করে চালানো হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা এই ঘটনার বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।

এদিকে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি জানিয়েছে যে সানা ও এর কৌশলগত বন্দরসহ আল হুদাইদাহ অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী ১৬ বার হামলা করেছে।

সেই আক্রমনের প্রতিশোধ হিসেবে, হুথি গোষ্ঠী স্থানীয় সময় শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ভোরে তেল আবিবকে লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ অনুসারে, হামলায় ২০ জন সামান্য আহত এবং কয়েক ডজন অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে শেখ পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে নাম এসেছে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিকেরও। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে টিউলিপকে নির্দোষ বলে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়,  তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মূলত, তার কাজ হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেয়া। তবে, বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প থেকে হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধেই। এসব অভিযোগে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।

স্টারমারের মন্ত্রীসভার অন্যতম এক সদস্য  লুইস হাই, যিনি যুক্তরাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার আগেই ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। সেই কেলেঙ্কারি শেষ হতে না হতেই এবার স্টারমারের মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎের অভিযোগ। যুক্তরাজ্যের রক্ষণশীলরা বলছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্টারমারের রাজনৈতিক রায় ও সিদ্ধান্তের নতুন ‘কালদাগ’।

অভিযোগের জবাবে, স্টারমারের অফিসিয়াল মুখপাত্র বলেছেন যে সিদ্দিকের ওপর প্রধানমন্ত্রী পূর্ণ আস্থা রেখেছেন এবং নিশ্চিত করেছেন যে তিনি (টিউলিপ সিদ্দিক) দুর্নীতিবিরোধী সমস্যাগুলি পরিচালনা করতে থাকবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সাথে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করার সময় প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছিলো। মূলত টিউলিপ সিদ্দিকের খালা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন যে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে তারই আওতায় পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

ইউক্রেনকে শায়েস্তা করতে গিয়ে আপাতত মহা সংকটে পড়েছে রাশিয়া। প্রতিবেশী দেশে আক্রমণ চালিয়ে যেতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বন্ধুত্ব করেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে। আর সেই বন্ধুত্বের খেসারত এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন পুতিন।

যুদ্ধক্ষেত্রে পুতিনের শত্রু ইউক্রেনকে ছেড়ে খোদ রুশ বাহিনীর ওপরেই গুলি চালিয়ে বসেছে কিমের সেনারা। খবর, ইন্ডিয়া টুডে’র।

যুদ্ধক্ষেত্রে গোলা-গুলির এই কান ফাটানো শব্দেই নাকি বিভ্রান্ত হয়ে যায় উত্তর কোরিয়ার সেনারা। রুশ সেনার কমান্ড বুঝতে ভুল করে তারা। ভাষা সমস্যার জেরে তাই বন্ধুকেই ‘শত্রু’ ভেবে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে কিমের সেনারা। এতেই প্রাণ হারান রাশিয়ার ৮ সেনা।

প্রতি বছরই বিশ্বের একাধিক দেশে উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য পাঠিয়ে থাকে কিম সরকার। পুতিনের কূটনৈতিক সফরের পরই রাশিয়াকেও যুদ্ধে মদদ জোগানোর উদ্দেশ্যে গত অক্টোবর মাসে দেশটিতে কমপক্ষে ১০ হাজার সেনা পাঠান কিম।

‘শত্রুপক্ষে’র বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার কথা ছিল উত্তর কোরিয় সেনাদের। কিন্তু তাদের হাতেই কিনা সেনা হারাতে হলো রুশ বাহিনীকে।

উল্লেখ্য, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধপরিস্থিতির মাঝে কিমের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হয় পুতিনের। চলতি বছরেই কূটনৈতিক রসায়নকে নতুন মোড়ে এনে দাঁড় করিয়ে উত্তর কোরিয়া গিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। কিমের সঙ্গে আলোচনা হয় দুই দেশের নিরাপত্তা ও সামরিক বাহিনী নিয়ে।

ইয়েমেনের রাজধানী সানা এবং একটি বন্দর শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে। ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় উপত্যকা এবং ইয়েমেনের গভীরে হুতি যোদ্ধাদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনী বলেছে, যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে সেগুলো হুতি বাহিনী সামরিক অভিযানের জন্য ব্যবহার করতো।

ইয়েমেন নিয়ন্ত্রিত আল মাসিরাহ টিভি বলছে, ইসরায়েলি হামলায় আস-সালিফে সাতজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বাকি দুইজন রাস ইসা তেল স্থাপনায় নিহত হয়েছে।

আল মাসিরাহ আরও জানিয়েছে, বন্দর শহর লক্ষ্য করে শত্রুরা চারটি অভিযান চালিয়েছে এবং তেল স্থাপনা লক্ষ্য করে দুইটি অভিযান চালিয়েছে। এ ছাড়া রাজধানী সানায় দুইটি কেন্দ্রীয় জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে আক্রমণাত্বক অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইয়েমেনের সাবা নিউজ এজেন্সি বলছে, হোদেইদাহে চারটি অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে রাস ইসা তেল স্থাপনায় দুইটি হামলা করে ইসরায়েল। এতে তেল স্থাপনা কোম্পানির কর্মীরা হতাহত হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, তার বাহিনী হুতিদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এসবের মধ্যে বন্দর এবং জ্বালানি স্থাপনা আছে।

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হুতিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইয়েমেনে এসব অভিযান চালানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে

এদিকে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৯৭ জনে। আহত হয়েছেন এক লাখ সাত হাজারের বেশি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গাজায় বসবাসকারী পাঁচজন ফিলিস্তিনিদের একটি দল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ- গাজা ও পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীকে সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে মিডেল ইস্ট আই এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ-এর সহায়তায় দায়ের করা এই মামলাটি করা হয়েছে লিহি আইনকে কেন্দ্র করে। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিদেশী সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র বা সামরিক সহায়তা প্রদান থেকে বিরত রাখে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘লেহি আইনের’ আওতায় মামলাটি করা হয়েছে। এই আইনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং নির্যাতনের মতো গুরুতর মানবিক লঙ্ঘনে জড়িত বিদেশী সামরিক ইউনিটগুলোতে সহায়তা নিষিদ্ধ করে। কিন্তু গাজার ক্ষেত্রে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর লেহি আইন বাস্তবায়নে ব্যর্থ বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

বাদীদের পাশাপাশি মামলার সমর্থনকারী বেশ কয়েকজন প্রাক্তন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের মতে, অভিযোগে বর্ণনা করা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নীতি উপেক্ষা করে গাজায় আক্রমণ করতে সাহায্য করেছে। এই কাজে বাইডেন প্রশাসনের সাথে আরও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। এছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সহায়তা স্থগিত হয়ে যাবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আইনটিতে ফাঁকফোঁকর তৈরি করেছিলো। যাতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে বিনা বাধায় সামরিক সাহায্য দেয়া যায়।

এমনই একটি ফাঁক হল পররাষ্ট্র দফতরের ‘ইসরায়েল লিহি ভেটিং ফোরাম’ প্রতিষ্ঠা। মামলায় বলা হয়েছে যে “ইসরায়েলি সামরিক ইউনিটগুলোর গাজায় আক্রমণ করে মানবাধিকারের যে গুরুতর লঙ্ঘন করেছে, তা বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এই ডিজাইন করা হয়েছে।

গত অক্টোবরে, পদত্যাগকারী স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন কর্মকর্তা জশ পল স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মামলাটি সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমি ইসরায়েল লিহি ভেটিং ফোরামের অংশ হিসেবে অনেক কিছু খুবই কাছ থেকে দেখেছি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গুরুত্বর মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে যেনেও রাজনৈতিক পরিণতির ভয়ে অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনিচ্ছুক ছিলেন।”

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত এপ্রিল মাসে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর পাঁচটি ইসরায়েলি নিরাপত্তা ইউনিট গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করার বিষয়টি নির্ধারণ নিশ্চিত করে।

তবে ওয়াশিংটন নির্ধারণ করে যে তাদের মধ্যে চারটি ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি এবং এখনও মার্কিন নিরাপত্তা সহায়তা পেতে পারে। অন্যদিকে পঞ্চম ইউনিটের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ইসরায়েল সরকারের সাথে স্টেট ডিপার্টমেন্ট যোগাযোগ করবে।

সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)-এর সহায়তায় দায়ের করা এই মামলাটি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত খারিজ করে দেয়। তবে, আরেকটি আপিল আদালতের তিন বিচারকের প্যানেল খারিজকে পুনর্বিবেচনায় নিয়েছে। সব মিলিয়ে, মামলাটি আবার দেখার জন্য ১১ বিচারকের প্যানেলের প্রয়োজন হবে।

নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে অভিশংসিত হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সামরিক আইন জারির জন্য দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসন মুখোমুখি হন তিনি। খবর রয়টার্স।

অভিশংসনের পক্ষে সমর্থন দেন পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ এমপি। যার মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের এমপিরাও ছিলেন। প্রস্তাবের পক্ষে রায় দেন ২০৮ এমপি আর বিপক্ষে ছিলেন ৮৪ জন।

এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর অভিশংসনের জন্য ভোটাভুটি হয় দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে। তবে ইওলের ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা তা বয়কট করায় প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।

এর ফলে, দেশটিতে দেখা দেয় চরম রাজনৈতিক সংকট এবং অস্থিরতা। ইওলের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে দক্ষিণ কোরিয়া।

এদিকে, দেশটির সাংবিধানিক নিয়মানুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে অভিশংসিত প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুতির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। খবর এএফপি ও সিএনএনের।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতির এক খবরে দাবি করা হয়, মংডুর দখল করা সবশেষ ঘাঁটি থেকে ‘কুখ্যাত’ সেনা কর্মকর্তা ব্রিডেগিয়ার জেনারেল থুরিন তুনসহ জান্তা বাহিনীর কয়েকশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আরাকান আর্মি।

গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালায় আরাকান আর্মি। এরপর রাজ্যটিতে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই শুরু হয়।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, মংডুর পুরো এলাকার ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে তারা। শহরটিতে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মংডুর কাছে জান্তার সর্বশেষ ঘাঁটি গত রোববার সকালে দখল করে নেন আরাকান আর্মির সদস্যরা। এটি দখলে তাদের দুই মাস লড়াই করতে হয়েছে। ঘাঁটির কমান্ডারসহ জান্তার বেশ কিছু সেনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরাকান আর্মির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, দৃশ্যত জান্তার সেনারা আত্মসমর্পণের পর ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো থেকে সাদা পতাকা হাতে বেরিয়ে আসছেন। এএফপি ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে জানতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

বাংলাদেশ সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মংডুর অবস্থান। শহরটি আরাকান আর্মির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি প্রসঙ্গে জান্তা সরকারের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। অবশ্য এতে তারা সাড়া দেয়নি।

এর আগে, গত মে মাসে আরাকান আর্মি বলেছিল, মংডু থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে বুথিডং শহর দখল করে নিয়েছে তারা।

বাংলাদেশ ও ভারতের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সম্প্রতি দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন ও ভারতের পক্ষে বিক্রম মিশ্রি নেতৃত্ব দেন। পরে দেশে ফিরে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব সদ্য সমাপ্ত এই সফর নিয়ে দেশটির সংসদ সদস্যদের ব্রিফ করেন।

ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ব্রিফে উঠে আসে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভারতে বসে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি।

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুর বরাতে জানা যায়, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনার বিষয়টি সমর্থন করে না নরেন্দ্র মোদি সরকার। এটি দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজের ব্যক্তিগত যোগাযোগের উপকরণ ব্যবহার করে বক্তব্য দিচ্ছেন। ভারত সরকার তাকে কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুযোগ প্রদান করেনি, যাতে তিনি ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে তার রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি মনোযোগ দিয়েই সম্পর্ক বিবেচনা করে ভারত।

বিমানে করে রাজধানী দামেস্ক ছেড়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। তবে তিনি দামেস্ক ছেড়ে কোথায় গেছেন, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এদিকে দেশটির রাজধানীতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে বিদ্রোহীরা।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে বিবিসির সরাসরি সম্প্রচারে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দিকে দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে বিদ্রোহীরা। এরইমধ্যে রাজধানী ঘিরে কয়েকটি উপশহরের নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে এইচটিএস যোদ্ধারা।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও এর মাধ্যমে তার দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসনের অবসান হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। তবে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রতিশোধ নেয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। দীর্ঘদিনের শাসক পালিয়ে যাওয়ার পর সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠী ঘোষণা করেছে, আসাদ শাসনের সমাপ্তি দেশটির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

বিদ্রোহীরা বলেছে, ‘নতুন সিরিয়া’ হবে ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জায়গা’, যেখানে ন্যায়বিচারের জয় হবে এবং সব সিরীয় নাগরিকের মর্যাদা রক্ষা করা হবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবো।

বিদ্রোহীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছি।

এদিকে, আপাতত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানেই থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এর নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। এক টেলিগ্রাম বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দিয়ে বলেন, এখন বিদ্রোহীরা দামেস্কের কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করবে না।

পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে বাংলাদেশ। গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) দেশটির নাগরিক ও বংশদ্ভূতদের জন্য ২০১৯ সালে জারি করা ভিসা সহজীকরণ স্মারকপত্রটি বাতিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এর ফলে, এখন থেকে দেশটির নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র লাগবে না। পাশাপাশি দূতাবাস সরাসরি ভিসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি নাগরিক অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত যেকোনো দেশের নাগরিকদের ভিসা সহজীকরণের লক্ষ্যে সুরক্ষা সেবা বিভাগ কর্তৃক ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী জারিকৃত স্বারকপত্রটি নির্দেশক্রমে বাতিল করা হলো।

এতে আরও বলা হয়, এর ফলে বর্ণিত নাগরিকগণের ভিসার আবেদন বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস বা মিশন সরাসরি নিষ্পত্তি করতে পারবেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।