বিশ্ব

ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক আগের মতোই অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুব দ্রুতই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সব ধরনের চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সব সংকটে পাশে ছিল চীন। কোভিড কিংবা জুলাই আন্দোলনেও চীনা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা দেশ ছেড়ে যায়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, চীনের সাথে সামরিক যোগাযোগ বাড়াতে চায় সরকার। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোই একমাত্র সমাধান। এ কাজে চীনের আরও আন্তরিক ও সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।

এবার উত্তেজনা ছড়ালো ফ্রান্স-ইসরায়েল সম্পর্কে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের সাথে বাগযুদ্ধে জড়ালেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজা ও লেবাননে হত্যাযজ্ঞ বন্ধে তেলআবিবকে অস্ত্র সরবরাহ না করার দাবি সরব হয়েছেন ম্যাকরন। আর তাতেই চটেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যকে অপমানজনক আখ্যা দিয়ে করেছেন সমালোচনা।

এক বছর ধরে গাজায় আগ্রাসন চালালেও, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক পশ্চিমা দেশের সমর্থন পেয়ে আসছে ইসরায়েল। মুখে যুদ্ধবিরতির কথা বললেও, বেশকিছু দেশ অস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলকে উল্টো সহায়তা করছে।

পশ্চিমাদের এমন দ্বিচারিতা এরইমধ্যে হচ্ছে বেশ সমালোচিত। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন। তার দাবি, ইসরায়েলকে অস্ত্র দেয়া বন্ধ না করলে গাজা ও লেবাননে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে আমি এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলেছিলাম। তা নিয়ে ইসরায়েল ও লেবাননের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনাও করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, নেতানিয়াহু লেবাননে স্থল অভিযানের সিদ্ধান্ত নিলেন। আমরা যদি যুদ্ধবিরতি চাই তবে সেটি ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখে সম্ভব নয়। তাই তাদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা উচিত।

মিত্র দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের এমন বক্তব্যকে অবশ্য ভালোভাবে নেয়নি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ম্যাকরনের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বানকে অপমানজনক আখ্যা দিয়ে তুমুল সমালোচনা করেছেন তিনি।

ম্যাকরনের কথার জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল যেহেতু ইরানের নেতৃত্ব দেয়া সকল বর্বরতার বিরুদ্ধে লড়ছে, তাই সব সভ্য দেশেরই উচিত তেলআবিবের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন এবং অন্যান্য নেতারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের প্রতি ধিক্কার জানাই। যারা সন্ত্রাস চায় না তারাই আবার ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দ্বিমুখী আচরণ করছে।

যদিও ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহকারী শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় নেই ফ্রান্স। গত বছর ইসরায়েলে মোট ৩৩ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রফতানি করেছে প্যারিস।

গতকাল ইসরায়েলের ওপর ইরান সর্বকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে। মোট ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে যার বেশিরভাগই ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জর্ডানের যৌথ আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী প্রতিরক্ষা দ্বারা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

তবে, মঙ্গলবার রাতের বিমান হামলা, গত এপ্রিলে অনুরূপ হামলার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি গুরুতর। এই আক্রমণের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে একটি বিপজ্জনক আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।

তবে, এখন আলোচনায় ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা এবং এই অঞ্চলে ইসরায়েলি এবং অন্যান্য বাহিনীর নিযুক্ত প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা। কীভাবে এতোগুলো ব্যালিস্টিক মিসাইল আক্রমণের বেশিরভাগ-ই নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হলো ইসরায়েল ও দেশটির মিত্ররা। অন্যদিকে, ইরান একটি হামলায় যদি ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে পারে, তাহলে দেশটির কাছে কত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে? এছাড়াও, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কতটুকু দূরে গিয়ে আক্রমণ করতে সক্ষম? চলুন দেখে নেয়া যাক:

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস)-এর মিসাইল থ্রেট প্রজেক্টের ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, তেহরানের কাছে হাজার হাজার ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যেগুলো বিভিন্ন রেঞ্জের এবং দূরের টার্গেট ভেদ করতে সক্ষম।

তবে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে এসব ধরণের ক্ষেপণাস্ত্রের সঠিক সংখ্যা অজানা। চলতি বছরে ইরান ওয়াচ ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছ, ২০২৩ সালে, ইউএস এয়ার ফোর্স জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি কংগ্রেসকে বলেছিলেন যে ইরানের কাছে ৩ হাজারের বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল রয়েছে।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ট্র্যাজেক্টোরি বা গতিপথ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সীমার বাইরে বা কাছাকাছি নিয়ে যায়। ওয়ারহেড পেলোড রকেট থেকে আলাদা হওয়ার আগে যা এটিকে ওপরে নিয়ে যায়। তারপর আবার বায়ুমণ্ডলে তার লক্ষ্যবস্তুতে ফিরে আসে।

ঘটনাস্থল থেকে যাচাইকৃত সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিও বিশ্লেষণ করেছেন এমন অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, ইরান ইসরায়েলের ওপর সর্বশেষ হামলায় ‘শাহাব-৩’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আরমামেন্ট রিসার্চ সার্ভিসেসের (এআরইএস) গবেষণা সমন্বয়কারী প্যাট্রিক সেনফ্টের মতে, ‘শাহাব-৩’ ইরানের সব মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ভিত্তি। অর্থাৎ, এই সিরিজের ওপর ভিত্তি করেই ইরান অন্যান্য মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে থাকে। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা করেছে তরল প্রপেলান্ট।

এর আগে, ২০০৩ সাল থেকে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘শাহাব-৩’। এটি ৭৬০ থেকে ১২ শ’ কেজি পর্যন্ত ওয়ারহেড বহন করতে পারে। ‘শাহাব-৩’-এর নতুন প্রকরণ গদর ও এমাদ ক্ষেপণাস্ত্রের নির্ভুলতার রেঞ্জ ৩০০ মিটার বা ১০০০ ফুট। অর্থাৎ, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যে লক্ষ্যবস্তুকে কেন্দ্র করে ছোড়া হয় তার আশপাশের ১০০০ ফুটের মধ্যেই আঘাত হানবে। 

ইরানি গণমাধ্যমগুলোর দাবি, ইসরায়েলি হামলায়, তেহরান একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ-১’ ব্যবহার করেছে। তেহরান ‘ফাত্তাহ-১’-কে একটি হাইপারসনিক (যা শব্দের গতির চেয়েও কয়েকগুণ বেশি দ্রুত চলতে পারে) ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেছে। এই ফাত্তাহ-১ এর গতি মাক-৫; যার অর্থ এটি শব্দের গতির পাঁচগুণ অর্থাৎ ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজার ৮ হাজার মাইল বা ৬ হাজার ১শ’ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম।

তবে বিশ্লেষকেরা বলেছেন, প্রায় সব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তাদের উড্ডয়ন পথের একটা সময়ে হাইপারসনিক গতিতে পৌঁছায়। বিশেষ করে যখন সেগুলো লক্ষ্যবস্তুর দিকে নামতে থাকে। উচ্চ গতি থাকার কারণে এগুলোকে গুলি করে ভূপাতিত করা কঠিন হয়ে যায়।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো ফ্যাবিয়ান হিঞ্জের মতে, ‘ফাত্তাহ-১’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নয়। তিনি বলেন, তবে এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি অতি দ্রুত সময়ে এর গতিপথ বদলাতে পারে। যার কারণে এটিকে শনাক্ত করে বাধা দেয়া কঠিন। 

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ইরানপন্থী মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করে হিজবুল্লাহ। এর আগে, শুক্রবার লেবাননের বৈরুতের দাহিয়েতে বেসামরিক ভবনের নিচে হিজবুল্লাহর সদর দফতরে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলার পরেই নাসারাল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি জানায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

হাসান নাসরাল্লাহর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পরে জানা যায়, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অবশ্য এরপর মুখ খুলেছিলেন খামেনি। নাসরাল্লাহর মৃত্যুতে তেহরানের বক্তব্য পরিষ্কার করেন তিনি। বক্তব্যে খামেনি বলেন,  এটি ইসরায়েলের নেতাদের অদূরদর্শীতা এবং বোকামিকেই প্রমাণ করেছে।

এই অঞ্চলের সকল প্রতিরোধ শক্তি হিজবুল্লাহকে সমর্থন করে এবং পাশে আছে বলে জানান তিনি। সেইসঙ্গে খামেনি সকল মুসলিমকে লেবাবনের জনগণ ও হিজবুল্লাহর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। নাসরাল্লাহ হত্যার রিপোর্টের পর মুসলমানদেরকে ইসরায়েলের মোকাবিলা করার আহ্বানও জানান তিনি।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) দাবি করছে, হাসান নাসরাল্লাহকে টার্গেট করে সে হামলা চালানো হয়েছিল। এই হামলায় হাসান নাসরাল্লাহর সাথে হিজবুল্লাহর সাউদার্ন ফ্রন্ট কমান্ডারও নিহত হয়েছে।

আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফট্যানেন্ট জেনারেল হারজি হালেভি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, এখানে বার্তা খুব পরিষ্কার। ইসরায়েলি নাগরিকদের যারা হুমকি দেবে তাদের কীভাবে খুঁজে বের করতে হয় সেটা আমরা জানি। সেটা উত্তরে, দক্ষিণে কিংবা আরো দূরে হলেও আমরা খুঁজে পারব। দক্ষিণ বৈরুতে হিজবুল্লাহর সিনিয়র নেতারা যখন বৈঠক করছিলেন তখন সেখানে হামলা চালানো হয়। দক্ষিণ বৈরুতের এ জায়গাটি হেজবুল্লাহর একটি শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

উল্লেখ্য, আইডিএফ তাদের ‘এক্স’ প্লাটফর্মে লিখেছিলো, হাসান নাসরাল্লাহ পৃথিবীতে আর আতঙ্ক ছড়াতে পারবে না।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, পরমাণু শক্তিধর কোনো দেশ পরমাণু শক্তি নেই এমন দেশকে সাহায্য করলে তা যৌথ আক্রমণ বলে ধরে নেয়া হবে। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই বুধবার দেশের পরমাণু নীতিতে পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছেন পুতিন। তার এই কাজ পরমাণু আক্রমণের রাস্তা প্রশস্ত করল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

পুতিনের এই বক্তব্য চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে পশ্চিমা বিশ্বে। ইউক্রেন সাহায্যকারী দেশগুলোর কাছে দূরপাল্লার মিসাইল চেয়েছে। তারা রাশিয়ার ভিতরে আক্রমণের কৌশল নিয়েছে। আগস্টে তারা রাশিয়ার সীমান্ত অঞ্চল কুরস্কের একাংশের দখল নিয়েছে।

ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, প্রেসিডেন্টের নতুন সিদ্ধান্তে পশ্চিমাদের আরও সাবধান হওয়া উচিৎ। ইউক্রেনকে শুধু পরমাণু সহায়তা না, অন্য যেকোন উপায়ে সমর্থন দেয়া দেশগুলোও আমাদের শত্রু হিসেবে বিবেচিত হবে।

রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেনকে ক্রুজ মিসাইল সরবরাহ করেছে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেগুলো ব্যবহারের অনুমতি এখনও দেয়া হয়নি কিয়েভকে। এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার থেকে ইউক্রেনকে সংযত রাখতেই এমন কঠোর সিদ্ধান্ত মস্কোর।

দিমিত্রি পেসকভ বলেন, সারা পৃথিবী আমাদের পরমাণু অস্ত্রের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা সম্পর্কে জানে। সীমান্ত আক্রান্ত হলে অবশ্যই সেগুলো ব্যবহারের চিন্তা করবো আমরা।

এদিকে, রাশিয়ার নতুন সিদ্ধান্তকে বেপরোয়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আখ্যা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র পিটার স্টানো বলেন, পরমাণু শক্তি নিয়ে রাশিয়া শুরু থেকেই জুয়া খেলছে। জাতিসংঘে সাধারণ অধিবেশন নিয়ে যখন সব রাষ্ট্রগুলো ব্যস্ত তখন এই হুমকি এলো। তবে তার এসব অপচেষ্টা সফল হবে না। এই হুমকি অবশ্যই আমরা প্রত্যাখান করেছি।

শত্রু রাষ্ট্রগুলোতে রাশিয়ার পরমাণু হামলার হুমকির ঘটনা নতুন নয়। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোতে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়ে আসছে মস্কো।

লেবাননে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলায় অন্তত ১৮২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭২৭ জনেরও বেশি। আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির তিনশ’র বেশি স্থাপনায় একযোগে হামলা করেছে ইসরায়েল।

হামলায় নিহত ও আহতদের মধ্যে শিশু, নারী ও মেডিকেল কর্মীরা রয়েছেন বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এমনটা জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হামলার আগে হিজবুল্লাহ সক্রিয় রয়েছে, এমন এলাকা থেকে লেবাননের বাসিন্দাদের ফোন কল করে অবিলম্বে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এমনকি লেবাননের একটি রেডিও হ্যাক করেও তাতে এ বার্তা প্রচার করা হয়।

হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে ‘হিসাব-নিকাশের লড়াই’ ঘোষণা করায় মধ্যপ্রাচ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। অব্যাহত হামলার মুখে দক্ষিণ লেবানন থেকে লোকজনকে সরে যেতে দেখা গেছে। লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনায় এখন পর্যন্ত সোমবারের হামলাই সবচেয়ে তীব্র বলে অভিহিত করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, লেবাননে হামলা আরও তীব্র করা হচ্ছে। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ইসরায়েলিকে উত্তরে ফেরানোর জন্য ‘আমাদের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত’ এ হামলা চলবে।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে লেবাননের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের এ ঘটনায় লেবাননে ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে, যাদের মধ্যে হিজবুল্লাহর অন্তত ১৬ সদস্য রয়েছেন। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে হিজবুল্লাহ।

পেজার বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাঝেই সোমবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় একাধিক শহরে একযোগে বিমান হামলা চালালো ইসরায়েলি বাহিনী।

ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য খোরাশানে একটি কয়লার খনিতে গ্যাস বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৭ জন। রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় ঘটা এ বিস্ফোরণের পর থেকে আরও ২৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। মদনজু কোম্পানির পরিচালনাধীন খনিটির দু’টি ব্লকে মিথেন গ্যাসের বিস্ফোরণ দুর্ঘটনাটির কারণ। ঘটনার সময় সেখানে ৬৯ জন শ্রমিক ছিলেন।

ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, যারা আটকে পড়েছেন, তাদের উদ্ধারে এবং তাদের পরিবারকে সহায়তা দিতে সব প্রচেষ্টা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, ইরানের খনিতে এমন ঘটনা প্রথম নয়। ২০১৩ সালে দুটি পৃথক খনিতে ১১ শ্রমিক নিহত হন। ২০০৯ সালে বেশ কয়েকটি ঘটনায় ২০ শ্রমিক নিহত হন। ২০১৭ একটি কয়লা খনি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪২ জন নিহত হয়েছিলেন।

লেবাননে আবারও টার্গেট হলো যোগাযোগ ডিভাইস। সিরিজ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ২০ জনের। আহত সাড়ে চারশ’র বেশি মানুষ। যোগাযোগের তারহীন যন্ত্র ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের কারণে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লেবাননের কয়েকটি স্থানে হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা কয়েক হাজার পেজার (যোগাযোগের তারহীন যন্ত্র) একযোগে বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়। আহত হয় প্রায় তিন হাজার।

হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত ওয়াকিটকি ছিল হামলার মূল লক্ষ্য। বিস্ফোরিত হয়েছে রেডিও, সোলার সিস্টেম, গাড়ির ব্যাটারিও। রাজধানী বৈরুত, বেক্কা ভ্যালিসহ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে হয়েছে এসব বিস্ফোরণ। সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে মনে করা হয় অঞ্চলগুলোকে। পেজার বিস্ফোরণের ঘটনার একদিনের মধ্যে হলো এ হামলা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, ৫ মাস আগে ওয়াকিটকিগুলো কিনেছিল হিজবুল্লাহ। কাছাকাছি সময় কেনা হয়েছিল পেজারগুলোও। ধারণা করা হচ্ছে, সরবরাহের আগেই গোপনে বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল ডিভাইসগুলোতে। মঙ্গলবার লেবাননজুড়ে হাজার হাজার পেজার বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু ও প্রায় তিন হাজার মানুষ আহত হয়। হামলাগুলোর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে হিজবুল্লাহ।

ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীকে এক বিজেপি নেতা হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি রাহুলের ওপর হামলার প্ররোচনাও দিচ্ছেন তিনি। এই অভিযোগেই এবার দিল্লি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস। অভিযুক্ত বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে দলটি। খবর, দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানায়, লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীকে শারীরিকভাবে আঘাত করার জন্য বিজেপি নেতা এবং তার সহযোগীদের প্রকাশ্য হুমকির বিরুদ্ধে কংগ্রেস বুধবার দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছে। কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন নয়াদিল্লির তুঘলক রোড থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন এবং এর একটি অনুলিপি ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছেও পাঠান।

কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি নেতা তরবিন্দর সিং সম্প্রতি এক জনসভায় বলেছেন, রাহুল গান্ধী নিজের আচরণ শোধরান, নাহলে তার অবস্থাও তার দাদির মতো হবে।

দিল্লি পুলিশের কাছে পাঠানো চিঠিতে কংগ্রেস জানিয়েছে, একাধিক বিজেপি ও এনডিএ শরিকের নেতা রাহুল গান্ধীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। রেল প্রতিমন্ত্রী রভনীত সিং বিট্টু থেকে শুরু করে উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী রঘুরাজ সিং, তরবিন্দর সিং মারওয়াহ, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় গাইকোয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস।

শিবসেনা নেতা সঞ্জয় গাইকোয়াদ আবার ঘোষণা দিয়েছেন, রাহুল গান্ধীর জিহ্বা যে ছিড়ে আনতে পারবে, তাকে ১১ লাখ রুপি দেবেন তিনি।

অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন অতিশি মারলেনা। আম আদমি পার্টি’র বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল পদত্যাগের আগে দলের নেতারা তাকে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেয়ার ক্ষমতা দেন। তিনিই ৪৩ বছর বয়সী অতিশির নাম প্রস্তাব করেন।

অতিশি কেজরিওয়ালের মন্ত্রিসভায় শিক্ষা, গণপূর্ত, বিদ্যুৎ, রাজস্ব, পরিকল্পনা, অর্থ, পরিষেবা, ভিজিলেন্স, পানি ও জনসংযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরসহ সর্বাধিক পোর্টফোলিও সামলেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে, প্রথমবারের মতো কালকাজি নির্বাচনী এলাকা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন অতিশি। আবগারি নীতির মামলায় তৎকালীন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া গ্রেফতার হওয়ার পরে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তিনি মন্ত্রী নিযুক্ত হন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।