রাজনীতি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের বিশেষ নিরাপত্তায় করা আইন বাতিল হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি। এর মাধ্যমে ‘জাতির পিতা পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯’ বাতিল হলো।

গত ২৯ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় বলা হয়, বিগত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯’ প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছিল। পরে ২০১৫ সালের ১৫ মে এ আইন অনুসারে বিশেষ নিরাপত্তা ও সুবিধাদি প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কেবল একটি পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্য আইনটি করা হয়েছিল, যা একটি সুস্পষ্ট বৈষম্য।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সব বৈষম্য দূরীকরণে দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করেছে বলেও উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উল্লেখ করা হয়। বৈঠকে তখন মত দেয়া হয়, বর্তমানে সংসদ না থাকায় এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এই আইন বাতিলে অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন। এ প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ এর খসড়া লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৩৫) দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুর্বৃত্তদের মধ্যে লেদু নামের একজন গণপিটুনিতে নিহত হন।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদরের গোকুল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মিজান গোকুল উত্তরপাড়ার আফসার আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান রাতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গোডাউন এলাকায় কয়েকজনের সঙ্গে বসেছিলেন। রাত ৯টার দিকে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে দুর্বৃত্তরা এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা মিজানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মোটরসাইকেলযোগে চলে যায়। পরে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিজান খুনের ঘটনায় দুর্বৃত্তদের মধ্যে লেদু নামের একজনকে পিটিয়ে আহত করে জনতা। পরে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে আহত লেদুকে মারধর করে মিজানের সমর্থকরা। এসময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে যমুনা টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরোপ্রধান মেহেরুল সুজনসহ অন্তত চারজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

পোশাক কারখানায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উসকানিদাতা ছাত্রলীগ নেতা ইসতিয়াক আহম্মেদ হৃদয়কে (২৪) নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেত্রকোণা জেলা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত হৃদয় ছাত্রলীগের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা কমিটির শিক্ষা ও পাঠ্যক্রম বিষয়ক সম্পাদক। সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হন ইসতিয়াক।

পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, গার্মেন্টস সেক্টরে নাশকতার মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উসকানিদাতা ছাত্রলীগ নেতা ইসতিয়াক আহম্মেদ হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

অন্তবর্তী সরকার কী কী সংস্কার করবে তা জনগণের সামনে তুলে ধরা উচিত বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা করতে হবে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মহিলা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, যে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, তার সুফল পেতে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের মতামতের উপর নির্ভর করে যত দ্রুত সম্ভব জনগণের ক্ষমতা তাদের কাছে হন্তান্তর করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় ভারত প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক হওয়া উচিত।

যতবার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণ করি বা আহতদের দেখি ততবারই তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই— এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, যখনই হাসপাতালে আহতদের দেখতে যাই তখনই কষ্ট পাই। তরুণ ছেলে-মেয়েরা কীভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে। কারও মাথা আঘাত, কারও হাত-পা চলে গেছে। এ সময় রংপুরে নিহত আবু সাঈদের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেন, রংপুরে একজন তাজা তরুণ মরলো। ফুটফুটে একটা ছেলে। কীভাবে তাকে প্রাণ হারাতে হলো।

আহত আরেক শিক্ষার্থীর স্মৃতিচারণ করে বলেন, ছেলেটির পা কেটে ফেলা হয়েছে। সে ক্রিকেটপাগল। ক্রিকেটার হতে চেয়েছিল। আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করে স্যার আমি ক্রিকেট খেলবো কীভাবে? পা নেই, কিন্তু মাথা থেকে ক্রিকেট যাচ্ছে না। এ সময় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, যতবার দেখি এসব, ততবারই একটি প্রশ্ন মাথায় জাগে এই বাংলাদেশ আমরা বানিয়েছিলাম?

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তরুণরা অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে বলেই বাংলাদেশ আজ এ পর্যায়ে এসেছে। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে দেশ গড়ার যে সুযোগ পাওয়া গেছে- এ সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে হবে যাতে বিশ্বে সম্মানিত রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়। দেশ গড়ার যে কাজ তরুণরা শুরু করেছে, সে সুযোগ কোনোভাবে নষ্ট হলে সর্বনাশ হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।

রিমান্ড চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। এমন পরিস্থিতিতে রিমান্ড শেষ না করেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে, গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডি থানার মোতালেব হত্যা মামলায় তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

গত ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্য রাতে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে যৌথবাহিনী। এরপর আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ধানমন্ডির জিগাতলায় মোতালেব নামে এক কিশোর নিহতের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এই মামলার ২৩ নম্বর আসামি শাজাহান খান। তিনি ছাড়াও মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের বেশকয়েকজন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শাজাহান খান মাদারীপুর-২ আসন থেকে টানা আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একই আসন থেকে পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৯ সালে শাজাহান খানকে প্রথম নৌপরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। মন্ত্রী থাকা সময় তার বিরূদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তবে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে তিনি সবচেয়ে বিতর্কিত হন। সেসময় রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর বাসচাপা নিয়ে মন্তব্য করেন শ্রমিক ফেডারেশনের এই কার্যকরী সভাপতি।

যারা দেশ ধ্বংস করেছে তাদের পরাজিত করতে হলে, অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করতে হবে—এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এবি পার্টির এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জনগণের যে মালিকানা কেড়ে নিয়েছে; তা ফিরিয়ে দিতে হবে। আগামীতে বাংলাদেশ কোন পথে যাবে- সে সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে।

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে সবার জন্য লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির তাগিদ দেন আমীর খসরু। তরুণদের প্রত্যাশা এই সরকারকে বুঝতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, যারা নতুন প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা বুঝবে না, আগামীর রাজনীতিতে তাদের ঠাঁই হবে না।

ফরমায়েশি সাজা দেয়ার নির্দেশ ছিল; হুমকি আর চাপ দেয় রাষ্ট্রযন্ত্র। কিন্তু, তিনি তা মানেননি; খালাস দিয়েছেন আসামিকে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ফলাফল- প্রাণভয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। দেশান্তরী হয়েও রক্ষা হয়নি যেন। এখন বিগত সরকারের পতনের পর দেশে ফেরার আর দেশসেবার আকুলতা তার কণ্ঠে। বলছি, বিচারপতি মোতাহের হোসেনের কথা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অর্থ পাচার মামলায় খালাস দেয়ায়; যাকে বরণ করতে হয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ। কী ঘটেছিল সেসময় এনিয়ে ভার্চুয়ালি যমুনা টেলিভিশনের সাথে কথা বলেছেন অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোতাহের হোসেন অর্থ পাচার মামলায় বেকসুর খালাস দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। সেসময়ের কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যেন জানান দিয়েছিলেন নিজের কঠোর অবস্থানের। কেবল ন্যায়বিচার করতে গিয়ে বদলে যায় তার জীবন।

তারেক রহমানকে খালাস দেয়ায় কী হয়েছিল সেসময়? মামলার রায়ের আগেই বা কী ঘটেছিল? বিচারক মোতাহের হোসেন জানান, তিনি কখনও ছিলেন পিস্তলের মুখে। তৎকালীন আইনমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও সাবেক আইন সচিব জহিরুল হক দুলালের নির্দেশনায় ফরমায়েসী রায় ঘোষণার জন্য চাপ দেয়া হয় তাকে।

ঘটনার পূর্বের কাহিনী বর্ণনা দিতে গিয়ে ফিনল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা বিচারক মোতাহের হোসেন শোনালেন ভয়ঙ্কর সেসব ঘটনা।

তিনি বলেন, তদানীন্তন ঢাকার জেলা জজ, মেট্রোপলিটন সেশন জজ তারা আমার চেম্বারে এসে হুমকি দেয়। বলে, আপনি যদি তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে চেম্বার থেকে বের হন, তাহলে কিন্তু আপনার লাশ আর পাওয়া যাবে না। গুম হয়ে যাবেন। তৎকালীন আইনসচিব শেখ জহিরুল হক ও মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা (যুগ্ম সচিব) তারা নানাভাবে অস্ত্রের মুখে হুমকি দিতো আমাকে। একবার বন্দুক বের করে আমার বুকে ধরে, বলে একবার ট্রিগার চাপলে ১০টি গুলি আপনার বুক ভেদ করে চলে যাবে। আপনি তারেক রহমানকে সাজা দেবেন কিনা বলেন?

এই বিচারকের মতে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সেই মামলার স্বাক্ষ্যপ্রমাণ অনুযায়ী সাজা দেয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দিতে, লিখিত রায়ে স্বাক্ষর করার চাপও ছিল মোতাহের হোসেনের ওপর। ব্যক্তিগতভাবে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়ার মামলার বিচার করা এই বিচারকের কখনও সাক্ষাৎ বা আলাপ হয়নি তারেক রহমানের সাথে। শুধু দৃঢ় অবস্থান ছিল ন্যায়বিচার নিশ্চিতে।

বিচারক মোতাহের হোসেন বলেন, সরকারি স্বাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য দিয়ে কোনোদিন কোনো আসামীকে দোষীসাব্যস্ত করা যায় না। তার বিপক্ষে স্বাক্ষীপ্রমাণ ছিল না। এরকম একটি মামলায় তিনি নিরীহ, তাকে প্রধানমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রীর হুকুমে শাস্তি দেবো এটি আমার বিবেক সায় দেয়নি। আমি নিশ্চিত ছিলাম, আমি সত্য বিচার করবো ও ন্যায়সঙ্গত রায় দেবো।

তবে ফরমায়েসি রায় না দেয়ার খেসারতও দিতে হয়েছে মোতাহের হোসেনকে। দেশ ছাড়তে হয় প্রাণভয়ে। প্রথমে মালয়েশিয়া, এরপর সেখান থেকেও বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার ভয়ে পালিয়ে যেতে হয় নেপালে। আর ২০২২ সালে ছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নেন ফিনল্যান্ডে।

বিষয়টি নিয়ে বিচারক মোতাহের হোসেন বলেন, মালয়েশিয়া থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করার জন্য ৩৪জন গোয়েন্দা ও চারজন মন্ত্রী দেশটিতে যায়। এই সংবাদ পাওয়ার পর আমি বাসায় না গিয়ে ৫-৭শ মাইল দূরে চলে যাই। জঙ্গলে গিয়ে ১৬ দিন বাস করি।

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর আশাবাদী বিচারক মোতাহের হোসেন। দেশ ফিরতে চান দ্রুত সময়ে। তিনি বলেন, দেশ ছাড়ার পর আইন ও সংবিধান নিয়ে গবেষণা করছি। যদি দেশের সেবা করার ও আইন সংস্কারের কাজের সুযোগ পাই তাহলে দেশে ফিরে আবারও সেবা করতে চাই।

প্রসঙ্গত, তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে বিচারপতি মোতাহের হোসেনের দেয়া সেই রায়ের পর ২০১৪ সালে দুদক তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে। ৮ বছর পর করে মামলাও। সম্প্রতি এই মামলা থেকে খালাস পান আলোচিত এই অবসরপ্রাপ্ত বিচারক।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাজা মওকুফ হওয়া ৫৭ বাংলাদেশির মধ্যে ১৪ জন দেশে ফিরছেন। আজ শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় তাদের বহনকারী ফ্লাইটটি প্রথমে ঢাকার শাহজালাল ও পরে রাত ১০টায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, কোটা আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে দেশটিতে বিক্ষোভ করার দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশির সাজা মওকুফ করার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। পাশাপাশি তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কোথাও জানানো হয়। গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত ১৯ জুলাই কোটা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ওই বিক্ষোভ করেন। পরে আবুধাবির ফেডারেল কোর্ট অব আপিল ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও সভা-সমাবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। মিছিল, মিটিং বা প্রতিবাদ সমাবেশের চেষ্টা করা বা উসকানি দিলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। সতর্ক করার পরও প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ করলে তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।

জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে ভাবা হচ্ছে না জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন কিছু অন্তর্বর্তী সরকার করবে না। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই।

শনিবার (৭ আগস্ট) সকালে রাজশাহীর ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিদর্শন ও সুধী সমাবেশে যোগদান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় স্থানীয় সাধারণ জনগণের পাশাপাশি মাদরাসা ছাত্রদের সম্পৃক্ত করে মন্দির পাহারা দেয়া হবে, যেন কোনো ধরনের হামলা বা নাশকতা না হয়। মাদরাসা ছাত্ররা কোনো জঙ্গিবাদের সঙ্গে ছিল না। এটা পূর্বের সরকারের ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার।

তিনি আরও বলেন, পটপরিবর্তনের পর কিছু সনাতন ধর্মাবলম্বীর বাড়িতে যেমন হামলা হয়েছে, তেমনি মুসলমানদের বাড়িতেও হয়েছে। এটাকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।