রাজনীতি

নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য কেউ যেন দলকে ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে সর্তক থাকতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ঢাকা বিভাগের ৩ জেলার ৩১ দফা কর্মশালায় এ আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় তারেক রহমান বলেন, সকল দলের মতামতের প্রতিফলন এই ৩১ দফা। দফাগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে দলকে ক্ষমতায় যেতে হবে। জনগণের ভোটের মাধ্যমের প্রথমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তা না হলে এই আন্দোলন ব্যর্থ হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো মানুষের আস্থা অর্জন করা। আপনার মতো অনেক মানুষই তো আছে, কয়জনের সাথে মানুষ এভাবে কথা বলছে। আপনার সাথে এমন ব্যবহার করছে, কারণ আপনি বিএনপি করেন। আপনার কাজকর্মের সাথে তাদের ভবিষ্যৎ জড়িত।

তিনি আরও বলেন, মানুষের আস্থা অর্জনই একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় সফলতা। এই বিশ্বাস এই আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব জনগণের নয়। এই আস্থা ধরে রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আপনার এলাকায় আপনাকে দিয়ে মানুষ বিএনপিকে বিচার করবে। আপনি ভালো হলে বিএনপি ভালো, আপনি খারাপ হলে বিএনপি খারাপ। আপনাদের দিয়েই মানুষ বিএনপিকে বিচার করবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, যারা অপকর্ম করবে শক্তহাতে সেই লোকগুলোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনারা আজ এখানে নেতা হিসেবে এসেছেন। আপনাদের অধীনে অনেক লোক আছে। খেয়াল রাখবেন নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কেউ যেন দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে না পারে।

এসময় তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্র নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যদি কেউ ভাবেন খুব সহজে এবারের নির্বাচন পার হবেন সেটি ভুল। অতীতের যেকোন নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচন কঠিন হবে বলেও জানান তারেক রহমান।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জমান মিল্লাত বলেছেন, আমাদের দেশকে অশান্ত করার জন্য ভারতে বসে আবারও ষড়যন্ত্র করছেন শেখ হাসিনা। এই পায়তারার চেষ্টা অব্যহত থাকলে ৫ আগষ্টের চেয়েও বড় কিছু ঘটতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে জামালপুর শহরের জগবন্ধু স্কুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জামালপুর জেলায় নিহত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলে।

তিনি বলেন, শেখ মুজিব ও তার কন্যা শেখ হাসিনার জন্য স্বাধীনতা অর্জন করে আমরা ফল ভোগ করতে পারিনি। বিগত ১৫ বছরে রাষ্ট্র কাঠামোসহ এমন কিছু নেই যা ভাঙা হয়নি। এসব ভেঙে দিয়ে হত্যা, গুম, খুন ইত্যাদি করে, ভারতে বসে আবারও ষড়যন্ত্র করছেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা এই সরকারের আইনজীবী আছেন তাদেরকে বলতে চাই স্বৈরাচার সরকারের দোসর যারা জেলে আছে তারা যেনো বের হতে না পারে। প্রয়োজনে প্রত্যাকটি দোসরকে খুঁজে খুঁজে ধরে জেলে ভরতে হবে। আমাদের ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছে সেই অত্যাচারের বিচার না করা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই। আমরা করতে দেবো না।

এখন পর্যন্ত ৩৭টি জেলায় গিয়ে নিহতদের পরিবারকে তারেক রহমানের সংগঠন থেকে সহযোগীতা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরবর্তীতে ৬৪ জেলায় সহযোগীতা করা হবে। বিএনপি সরকার নির্বাচিত হলে প্রত্যেকটি পরিবারের দায়িত্ব বিএনপি নেবে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ছাত্র আন্দোলনে নিহত ১৭ জনের পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

অস্ত্র আর জোর করে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা আকড়ে থাকার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক প্রতিরোধ সফলতার মুখ দেখে গত ৫ আগস্ট। সে সময়ের সক্রিয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এখন নিজেই অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ। তার কাছে প্রশ্ন ছিল— আওয়ামী লীগ কি প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফিরেতে পারবে?

নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়া উচিত। বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের অধ্যায় শেষ হয়ে গিয়েছে বলে এই প্রজন্ম মনে করে। এখন বিচারের মধ্য দিয়ে আসলে সমাজে রিকনসিলিয়েশনটা হওয়া সম্ভব।

ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের মূল্যায়ন কীভাবে হবে জানতে চাইলে এই সরকারের তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ দলটাই সবসময় মিথ্যার ওপর টিকে ছিল। তাদের প্রধান অস্ত্র ছিল প্রোপাগান্ডা। আওয়ামী লীগ তো পরাজিত হয়েছে। সে (শেখ হাসিনা) অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং তারা বলেন এত বছরের দল, সেই দলটির নেত্রী নেতাকর্মীদের রেখে পালিয়ে গেলেন।

এদিকে, প্রতিদিনই ষড়যন্ত্র হচ্ছে দেশের বিরুদ্ধে, ছড়ানো হচ্ছে নানা প্রোপাগান্ডা। এর বিপরীতে ঢাল ছাত্র-জনতার ঐক্য আর এতদিনের বঞ্চিত রাজনৈতিক দলগুলোর নবোদ্যম।

এ অবস্থায় ঐক্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা হচ্ছে কীভাবে? নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের জাতীয় ঐক্য ও রাজনৈতিক সমাঝোতাই আসলে পারবে দেশকে এগিয়ে নিতে। সে ঐক্য যদি ব্যহত হয়, তাহলে এটিই বড় চ্যালেঞ্জ। ঐক্য বিনষ্ট করতে নানা পক্ষ কাজ করছে। সরকার থেকে বের হওয়ার পর তারা সেই জিনিসগুলোকে ব্যবহার করছে। অপতথ্য ছড়াচ্ছে, প্রোপাগান্ডা করছে। আমরা সে জায়গায় সত্যটাকে তুলে ধরতে চাই। গণমাধ্যমগুলোর ক্ষেত্রে আমরা সেই সহায়তা চেয়েছি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আমরা ১ ইঞ্চি পর্যন্ত আটকাবো না। এই সরকার কোনো সাংবাদিককে বা কোনো সংবাদপত্রে বিন্দুমাত্র হস্তক্ষেপ করেনি, করবেও না। আমাদের সরকারের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম। মুক্ত সাংবাদিকতা।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নতুন বাংলাদেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, গত ৪ মাসে আমরা কাউকে মানা করি নাই। আপনারা লিখেন। আপনারা আমাদের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিন, দেখিয়ে দিন। ক্ষমতায় থাকলে অনেক কিছু বোঝা যায় না। তাই দায়িত্ব নিয়ে ভুল ধরিয়ে দিন।

তিনি জানিয়েছেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গণমাধ্যমকে নতুন উচ্চতায় নিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার।

গণমাধ্যমের মালিক যেন সাংবাদিকের মুখ বন্ধ করতে না পারে, তারা সে কাজটি করতে চান বলেও এ সময় উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। গণমাধ্যম মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের বেতন দিতে না পারলে মালিকদের বলবো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সম্প্রতি দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন ও ভারতের পক্ষে বিক্রম মিশ্রি নেতৃত্ব দেন। পরে দেশে ফিরে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব সদ্য সমাপ্ত এই সফর নিয়ে দেশটির সংসদ সদস্যদের ব্রিফ করেন।

ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ব্রিফে উঠে আসে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভারতে বসে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি।

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুর বরাতে জানা যায়, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনার বিষয়টি সমর্থন করে না নরেন্দ্র মোদি সরকার। এটি দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজের ব্যক্তিগত যোগাযোগের উপকরণ ব্যবহার করে বক্তব্য দিচ্ছেন। ভারত সরকার তাকে কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুযোগ প্রদান করেনি, যাতে তিনি ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে তার রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি মনোযোগ দিয়েই সম্পর্ক বিবেচনা করে ভারত।

সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৭ বছরের সাজা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের সাজাও স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর আগে, ৫ ডিসেম্বর অর্থপাচারের এই মামলায় গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে খালাস দেয় হাইকোর্ট।

২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ১২ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশি টাকায় ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। মামুনকে খালাস দেয়ার কারণে মামলার আইনি সুবিধা পেয়ে তারেক রহমানের সাজাও স্থগিত করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার ওপর হামলার অভিযোগে জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও নড়াইল-২ আসনের সাবেক এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও তার বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপনসহ ২৯৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে লোহাগড়া থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার মূখ্য সংগঠক কাজি মো. ইয়াজুর রহমান বাবু।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল শিকদার নীল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ মশিয়ুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল হক রোম, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল আমীর লিটু।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মী ও গুন্ডা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, খুনি, অস্ত্রধারী ব্যক্তি। গত ৪ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার কর্মসূচি চলাকালে উপজেলার লোহাগড়ার সিএন্ডবি চৌরাস্তা মোড়ে ছাত্রজনতার ওপর হামলা করে বেধড়ক মারপিট করে অভিযুক্তরা। বাদীসহ ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থীকে রামদা, বাঁশের লাঠি, রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে মামলা বিবরণীতে বাদী উল্লেখ করেন।

লোহাগড়া থানার ওসি মো. আশিকুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই মামলায় ইতোমধ্যে দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মায়ের ডাক সংগঠনের আয়োজনে আওয়ামী শাসনামলে গুম-খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে গণজমায়েত কর্মসূচি।

আয়োজনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার আগে থেকেই তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হন। গণজমায়েত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

মূলত জুলাই গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, ক্রসফায়ার, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, মোদিবিরোধী আন্দোলন, ডিএসএসহ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী জুলুমের প্রতিবাদ জানাতে ভুক্তভোগীরা গণজমায়েতে অংশ নেন।

সমাবেশে সারাদেশ থেকে ভুক্তভোগী ব্যক্তি তাদের অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ এবং বিচারের দাবি জানাচ্ছেন।

সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার ইস্যুতে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। সেগুলো ধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরির পেছনে অন্যতম কারণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভুল তথ্য দর্শকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। যার ফলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পাশাপাশি একটি সংগঠনের নামেও। আর এতে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে ভুল বোঝাবুঝির জায়গায় পতিত হচ্ছে বাংলাদেশ, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে ইসকনও। দ্য উইক ম্যাগাজিন ইন্ডিয়া-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন ইসকনের কেন্দ্রীয় আধ্যাত্মিক নেতা ও মুখপাত্র দেবশঙ্কর বিষ্ণু দাস।

চিন্ময়ের পরিচয় নিয়ে প্রচলিত একটি ধারণার সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দেন দেবশঙ্কর। তিনিও জানান, চিন্ময় প্রায় ৬ মাস আগে ইসকন থেকে বহিস্কৃত হন। পরবর্তীতে নিজের সংগঠনের প্রতিই মনোযোগী ছিলেন। তাই যে ব্যক্তি একটি শান্তিপ্রিয় ধর্মীয় সংগঠন থেকে বিতাড়িত, তার সম্পর্কে তথ্য প্রচারে ‘ইসকন’ শব্দটা ব্যবহার না করার দিকেই দৃষ্টিপাত করেন দেবশঙ্কর। এতে ১১০টি দেশে শান্তির পক্ষে কাজ করা ইসকনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।

চট্টগ্রামে চিন্ময়ের পক্ষে এক আইনজীবী লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলে, তিনি বাধার মুখে পড়েন- এমন কিছু তথ্য চাউর হয়েছে বলে জিজ্ঞাসা করা হলে দেবশঙ্কর জানান, এটি সঠিক নয়। যারা এ ধরণের তথ্য প্রচার করেছে তারা ভুল বার্তা দিয়েছে।

শুধু চিন্ময়ই না, যেকোনো মানুষ তা যে ধর্ম-বর্ণের হোক, তার আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার পাওয়ার পক্ষে কথা বলেন দেবশঙ্কর। তবে যেহেতু চিন্ময় দাস ইসকনের সদস্য নন, তাই ইসকনের কাছ থেকে তিনি সাহায্যপ্রার্থী হতে পারেন না বলেও মনে করেন ধর্মীয় সংগঠনের এ মুখপাত্র।

এসময় বাংলাদেশে ইসকনের যাত্রা ও কর্মকাণ্ডে জোরপূর্বক কোনো শিথিলতা আনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে দেবশঙ্কর জানান, এটা হাস্যকর। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে শুরু করে সেখানকার কেউ এক্ষেত্রে কোনো বাধা দেয়নি। ১৪০টি সেন্টারে তারা আগের মতোই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান।

বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যু নিয়ে বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়ের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে এখন অপতথ্য খুব দ্রুত ছড়ায়। তবে মূলধারার গণমাধ্যমকে খবর বা তথ্য প্রচারে আরও সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ইসকনের এই কেন্দ্রীয় নেতা। এসময় কিছু মানুষও ইচ্ছে করে গুজব তৈরি করছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।

প্রতিটি দেশের অভ্যন্তরীণ নিজস্ব আইন আছে উল্লেখ করে দেবশঙ্কর জানান, আমরা নিয়মগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়কে এ বিষয়কে মনে রাখতে অনুরোধ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ভারতের সাথে সম্পর্ক আরও ভালো হবে বলে আশা করছি। যাতে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হয়। তবে তা হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে চাই। তাকে বিচারের আইনের আওতায় আনা আমাদের অঙ্গীকার। শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য মেটা পর্যবেক্ষণ করবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের যেসব পেইজ থেকে ভুল তথ্য ছাড়ানো তার বিরুদ্ধেও মেটা পদক্ষেপ নেবে। এ সময় বাংলাদেশের প্রকৃত পরিস্থিতি দেখতে ভারতের সাংবাদিকদের বার বার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আগের সরকার ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের বিরুদ্ধেও অ্যাকশনে যেত। যার কারণে মেটার সাথে একটি ট্রাস্ট ইস্যু তৈরি হয়েছে। তবে সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে অবশ্যই তাদের নজরে আনব।

বাজারে সয়াবিন তেলের ঘাটতি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, রমজানে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ভারতের সাথে অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাছাড়া, ভারতের পররাষ্ট্র সেক্রেটারির সাথে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ হতে পারে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছে তা উনার ব্যক্তিগত মতামত। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এখনও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।