রাজনীতি

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। না হয় পরে বলবেন যে আমি আপনাদের সতর্ক করিনি। আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করতে না পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি-কাটাকাটি করেন, দেশ ও জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। আমি আজকে বলে দিলাম, সতর্ক করে দিচ্ছি, পরে বলতে পারবেন না যে সতর্ক করিনি।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শহীদ সেনা দিবসে রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত ফটো এক্সিবিশনে তিনি এসব কথা বলেন।

সেনাপ্রধান বলেন, আমরা সুখে শান্তিতে থাকতে চাই, সে উদ্দেশে সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর প্রতি আক্রমণ করবেন না। আমাদের প্রতি কারো কারো বিদ্বেষের কারণে আজও খুজে পায়নি। আমাদের সাহায্য করেন, আক্রমণ নয়। প্রয়োজন হলে আমাদের উপদেশ দেন। ভালো উপদেশ হলে আমরা গ্রহণ করবো। আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই, দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

তিনি আরও বলেন, নিজেরা ভেদাভেদ না করে এক হয়ে থাকি। যদি কোনো বিভেদ থাকে আলোচনা করে ঠিক করবো। ডানে-বায়ে গিয়ে লাভ হবে না। কেউ অপরাধ করলে বিন্দুমাত্র ছাড় নেই। এটা একটা সুশৃঙ্খল বাহিনী, এটিকে সুশৃঙ্খল থাকতে দিন।

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমার অন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। আমার একটাই আকাঙ্ক্ষা দেশ ও জাতিকে সুন্দর জায়গায় রেখে আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসবো। আই হ্যাড এনাফ, ওয়াজ লাস্ট সেভেন-এইট মান্থ এনাফ।

দেশের আইনশৃঙ্খলা খারাপের পেছনে বেশকিছু কারণ আছে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, প্রথমত আমরা নিজেরা হানাহানির মধ্যে ব্যস্ত, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারে ব্যস্ত। অপরাধীদের জন্য এটি চমৎকার একটি সুযোগ। আমরা একটা অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে বিরাজ করছি, তারা জানে এই সময়ে অপরাধ করলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সে কারণে এসব অপরাধ হচ্ছে। আমরা যদি সংগঠিত থাকি, একত্রিত থাকি, তাহলে এগুলো এগুলো মোকাবেলা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই এগুলো দেশের জন্য অতীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। খারাপ কাজের সাথে অনেকগুলো ভালো কাজ করেছে। দেশকে যে এত বছর স্থিতিশীল রাখা হয়েছে, এটার কারণ হচ্ছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও সিভিলিয়ানরা মিলে অর্গানাইজেশনগুলো ইফেক্টিভ রেখেছে। এজন্য আমরা একটা সুন্দর পরিবেশ পেয়েছি। এর মধ্যে কেউ অপরাধ করলে শাস্তি হবে। অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। না হয় এই জিনিস আবার ঘটবে। আমরা এসব চিরতরে বন্ধ রাখতে চাই। কিন্তু তার আগে মনে রাখতে হবে, এমনভাবে কাজটা করবো, যাতে এসব অর্গানাইজেশন আন্ডারমাইন্ড না হয়। আপনারা যদি মনে করেন, এসব অর্গানাইজেশনকে আন্ডারমাইন্ড করে শান্তিতে থাকবেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক বিরাজ করবে, এটি সম্ভব না।

ওয়াকার-উজ-জামার বলেছেন, আমরা নির্বাচনের দিকেই ধাবিত হচ্ছি, তার আগে যেসব সংস্কার প্রয়োজন, সরকার সেগুলো করবে। আমি যতবার ড. ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছেন এবং সেটা ডিসেম্বরের মধ্যেই। আমি প্রথমেই ১৮ মাসের কথা বলেছিলাম। মনে হয় সরকার সেদিকেই ধাবিত হচ্ছে। ড. ইউনূস যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে। আমরা উনাকে সহযোগিতা করবো। আমাদের মধ্যে চিন্তা-চেতনায় বিরোধ, মতবিরোধ থাকতে পারে কিন্তু দিনশেষে দেশ ও জাতির কথা চিন্তা করে সবাই এক থাকতে পারি।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, এ বর্বতায় সেনাসদস্যরা দায়ী নন। তৎকালীন বিজিবি সদস্যরা এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী। বিচারিক প্রক্রিয়াকে নষ্ট করবেন না। যারা শাস্তি পেয়েছে, তারা শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। রাজনীতিবিদ ও বাইরের কেউ যুক্ত ছিল কি না তার জন্য কমিশন করা হয়েছে, কমিশন তদন্ত করে জানাবে।

উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা হতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তিনি। বিশ্বস্ত সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে যমুনা টেলিভিশন।

গেল কদিন ধরেই আলোচনা ছিল, যে কোনো মুহূর্তে উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন নাহিদ। নানা সময়ে তিনি নিজে এবং তার সংগঠন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষ থেকেও তেমন ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল।

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা আন্দোলনের সময় পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন সমন্বয়ক নাহিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এই ছাত্র অভ্যুত্থান পরবর্তী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।

নাহিদ ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ নামে একটি সংগঠনের নেতা ছিলেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন তিনি।

রোজায় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, কোনোভাবেই যেনো নিত্যপণ্যের দাম না বাড়ে, সেজন্য কাজ করছে সরকার। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে এ সব কথা বলেন তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাজেট নির্ধারিত সময় হবে। এ বিষয়ে দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, দোকান মালিক সমিতিসহ প্রধান প্রধান স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। তাদের নিরাপত্তা না দিলে বিনিয়োগ বাড়বে না।

২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থের বিষয় নিয়ে তিনি আরও বলেন, এটি এনজিও ব্যুরো খতিয়ে দেখতে পারে। তার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। দেশের স্বার্থে যেকোনো উন্নয়নে ফান্ড আসতেই পারে। বড় বিষয় হলো কোন উদ্দেশ্যে সেই টাকা আনা হয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখা। ভবিষ্যতে যাতে দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কাজে অর্থ না আসে, সেটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সার্বিক পরিস্থিতি আরো উন্নত করতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ সংক্রান্ত কোর কমিটি। গতকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে কোর কমিটির এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ—

১. রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তল্লাশি চৌকি বাড়াতে হবে। অপরাধ প্রবণ এলাকায় টহল সংখ্যা বাড়ানো হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, বিজিবি সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথবাহিনী গঠন করে টার্গেট এলাকায় জোরদার অপারেশন পরিচালনা করা হবে।

২. রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নৌবাহিনীর একটি অতিরিক্ত পেট্রোল এবং কিছু এলাকায় কোস্ট গার্ডের একটি অতিরিক্ত পেট্রোল নিয়োজিত থাকবে।

৩. পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধান, উপ-পুলিশ কমিশনার, মাঠে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর ব্রিগেড প্রধান ও অন্যান্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তাবৃন্দ প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে সময়ে সময়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করবেন।

৪. ডিএমপির পুলিশ সদস্য, বিজিবি, আনসার ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যদের জন্য মোটরসাইকেল ক্রয় করা হবে, যাতে করে তাৎক্ষণিকভাবে অলিগলিতে টহল দিয়ে অপরাধীদের পাকড়াও করা যায়।

৫. ছিনতাইকারী ও ডাকাতরা অবস্থান করতে পারে এমন সম্ভাব্য স্থানগুলোতে কম্বাইন্ড অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।

৬. ঢাকা শহরের বাইরে বিশেষ করে টঙ্গি, বসিলা, কেরানীগঞ্জ এবং মুন্সিগঞ্জ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক টহল বাড়ানো হবে।

৭. ৫০০ এপিবিএন সদস্য ডিএমপিতে ন্যস্ত হয়ে পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে।

৮. থানাভিত্তিক সন্ত্রাসীদের হালনাগাদ তালিকা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আইনের আওতায় আনতে তড়িৎ পদক্ষেপ নেবে।

৯. মিথ্যা, গুজব ও প্রোপাগান্ডার বিপরীতে সত্য তথ্যগুলো প্রচারে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ সভায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বক্স চৌধুরীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পিলখানায় বীর সেনা সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিকে অনেক দিন বিভ্রান্তিতে রাখা হয়েছে। এই নির্মমতার সুবিচার নিশ্চিতে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ দায়বদ্ধ এমনটি বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের বাণীতে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

বাণীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সুবিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। সমব্যাথী হয়ে দেশ ও জনগণ শহীদ পরিবার এবং নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়াবে- এ আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির সূর্য সন্তান, শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে দিনটি চেতনা ও অনুভূতির একটি নিয়ামক হবে। মনে করিয়ে দেবে দেশের জন্য যুদ্ধ করার ব্রত নিয়ে পথচলা একদল সাহসী মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত নির্মম মৃত্যুর কথা।

গত ১৬ বছর ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় সকল প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতর মাধ্যমে নষ্ট করা হয়েছে। এমনটা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে মার্জিত বক্তব্য দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে, স্থানীয় সরকার দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করার লক্ষ্যে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে সরকার। তিনি জানান, সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর যেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান পালিয়েছে; সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার জরুরি।

এ সময় তিনি জনগণের শঙ্কা দূর করতে আইশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতির দিকে। আরও ভালো করার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলনের বৈঠক শেষে তিনি এমনটাই দাবি করেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, অপারেশন ডেভিল হান্ট চলছে। যতদিন ডেভিলরা থাকবে ততদিন অপারেশন চলবে।

তিনি আরও বলেন, দেশ থেকে দুর্নীতি কমাতে হবে। সব লেভেলে যেন দুর্নীতি কমে সেজন্য ডিসিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। গাজীপুর জিএমপি, শিল্প পুলিশে জনবল বাড়ানোর প্রস্তাবও সংশ্লিষ্ট ডিসি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে নিপীড়ন ও অত্যাচারের হাতিয়ার হিসেবে ডিসিদের ব্যবহার করেছে। এক্ষেত্রে আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের শেষদিনে আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বৈঠক শেষে এ কথা বলছেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, ডিসিরা আইন ও সংবিধান মেনে চললেই জনগণ প্রকৃত সেবা পাবে। বর্তমান সরকার ডিসিদের জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা যেন দ্রুত জামিন না পায়, সে ব্যাপারে বলেছেন ডিসিরা। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আদালতের কাজই জামিন দেয়া।

আইন উপদেষ্টা জানান, ডিসিরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রস্তাব করেছে। জনশক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণের কার্যক্রম আরো বাড়ানো হবে। তাছাড়া যারা বিদেশে যেতে চায়, তাদের ডাটাবেজ করা হবে।

তিস্তা ব্রিজ থেকে গণপদযাত্রা শুরু হয়েছে। নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতেই এ পদযাত্রা। যেটি মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) লালমনিরহাট প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হবে।

আজ তিস্তা অববাহিকার ১১টি পয়েন্টে জড়ো হয়েছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। নদী বাঁচানোর এই আন্দোলনে শামিল আছেন স্থানীয় কৃষক-শ্রমিকসহ হাজারও মানুষ।

তাদের দাবি, বিচ্ছিন্নভাবে নয় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ই শুরু করতে হবে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ। পাশাপাশি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে ভারতকে।

আয়োজকরা জানান, আন্তর্জাতিকভাবে তিস্তার ক্ষতবিক্ষত পরিস্থিতি তুলে ধরতেই এ উদ্যোগ। এর মাধ্যমে ভারতকে চুক্তি বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগ করা যাবে।

আজ সন্ধ্যায় ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচির শেষদিনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উত্তরাঞ্চলবাসীর উদ্দেশে বক্তৃতা দেয়ার কথা রয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের।

শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম বেশ কিছুদিন থেকে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগ মুহূর্তে দলের নেতৃত্বে নিয়ে সামনে আসছে বিভিন্ন পক্ষের দাবি-তদবির। এমন বাস্তবতায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও ছাত্রশিবিরের মতভেদ।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে কথার বাহাস। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভুঁইয়া তার ভেরিফায়েড পেজে হুঁশিয়ার করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। আন্দোলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে একই সুরে কথা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদ। অন্যদিকে, ছাত্র শিবির বলছে, কেবল ক্যামেরার সামনে থাকলেই আন্দোলন হয় না। পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃত না হওয়ার বিষয়টিও খেয়াল রাখার কথা বলছে সংগঠনটি।

তবে ২৪ এর আন্দোলন ও ইতিহাস বুকে ধারণ করার কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন। তিনি বলেন, যদি কোনো দল বা আদর্শ দ্বারা এই অভ্যুত্থান হতো তাহলে তারা সেই পার্টিতেই থেকে যেতেন। ছেড়ে আসার কোনো প্রয়োজন বোধ করতেন না। যেহেতু ছেড়ে আসার প্রসঙ্গ রয়েছে, তাই আমরা যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছি- সেটি সামগ্রিকভাবে তাদের সাথে আর করা সম্ভব হবে না।

শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের আগেই কেন এত বিরোধ, এত বিতর্ক— এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের কাছে। তিনি বলেন, অভ্যুত্থানে কোনো ব্যক্তি একক মাস্টারমাইন্ড ছিলেন না। কোনো দলের একক কৃতিত্ব ছিল সেটিও বলবো না। সবার অংশগ্রহণে হয়েছে এবং সবাইকে এর কৃতিত্ব দিতে হবে না। ইতিহাস বিকৃত হোক এটা কারও কাম্য না। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই জনগণে অতীতেও ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, এখনও সেটির চেষ্টা চলছে। আমরা চাই, সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হোক।

ছাত্রশিবিরে সভাপতি বলেন, এই অভ্যুত্থান নিয়ে ক্রেডিটের রাজনীতি শুরু হয়েছে। এটি যেন না হয়। আমরা এটির পক্ষে না।

শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দলকে কীভাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা? জানতে চাওয়া হয় আন্দোলনে মাঠের অংশীজনের মধ্যে যে মনোমালিন্য তা কি নিতান্তই রাজনৈতিক কৌশল নাকি দুই সংগঠনের মাঝে ফাটলের ইঙ্গিত?

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ রুশাদ ফরিদী বলেন, জুলাই আন্দোলনের কৃতিত্ব নেয়ার জন্য তাদের মধ্যে এক ধরনের দ্বন্দ্ব দেখা গেছে। যেমন, ছাত্রশিবির তাদের বেশ কয়েকজন নেতার নাম বলছে। তাদের কিন্তু আমরা শিবিরের নেতা হিসেবে গণআন্দোলনে সামনে দেখিনি। সুবিধা নেয়ার জন্য নিজের পরিচয় গোপন রেখে এখন সেই পরিচয় দিয়ে যদি বলে, আমি তোমাদের পেছনে ছিলাম, আমার মনে হয় না এটা তাদের জন্য ভালো কিছু হবে।

তবে একটি জায়গায় এই দুই সংগঠনের নেতাদের চাওয়ায় কোন মতভেদ নেই, আর তা হলো ২৪ এর ইতিহাস যেন বিকৃত না হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।