শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার উপায়
ভালোবেসে বিয়ে হোক কিংবা পরিবারের পছন্দে, শ্বশুরবাড়িতে মানিয়ে নিতে কমবেশি সবারই কিছুটা সময় লাগে। এমনকি চেনা সম্পর্কগুলোও আগের থেকে একটু হলেও আলাদা হয়ে যায়। শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে না থাকলেও অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর জেরে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যেও জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব।
সময় ব্যবস্থাপনা
অফিস, নিজের কাজ আর সংসার সামলে দুই বাড়িতেই সময় দেওয়া বেশ কঠিনই বলা যায়। আমাদের সমাজে পুরুষদের এ বিষয়ে কিছুটা দায়মুক্তি থাকলেও নারীর ক্ষেত্রে একদমই উল্টো। বিয়ের পর বেশ কিছুদিন চলে যায় নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ায়। এর মধ্য থেকেও সপ্তাহান্তে সময় বের করে শ্বশুর-শাশুড়ির খোঁজ নিন। আপনার ব্যস্ততার বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন।
তর্ক এড়িয়ে চলা
আপনার কোনো কথার সূত্র ধরে যেন পারিবারিক সংকট তৈরি না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। অনেক সময় কোনো বিষয়ে কথার উত্তর দিতে খুব ইচ্ছা হবে, এমন পরিস্থিতিতেও চুপ থাকতে চেষ্টা করুন। হয়ত বিষয়টি পরে বুঝিয়ে বলতে পারবেন। উত্তর দেওয়ার সুযোগ আপনি পরেও পাবেন। এতে বড় ঝামেলা এড়ানো সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া
শ্বশুর-শাশুড়ির স্বাস্থ্যের খোঁজ নিন নিয়মিত। ওষুধ ঠিক সময়ে খাচ্ছেন কি না কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলছেন কি না তার খোঁজ নিন। এতে আপনার প্রতি ভরসা করতে শুরু করবেন শ্বশুর-শাশুড়ি। এ ছাড়া শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যেরও খোঁজখবর নিন।
একসঙ্গে বেড়ানো
সঙ্গীকে নিয়ে বেড়ানোর পাশাপাশি শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে বেড়াতে যেতে পারেন। দূরে সম্ভব না হলে কাছেপিঠে কোথাও বেড়াতে যান। একদিন সবাই মিলে সারাদিনের জন্য বাইরে গিয়ে সময় কাটিয়ে আসুন। এ ছাড়া সপ্তাহান্তে বা মাসে দুয়েকবার শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে রেস্তোরাঁয় খেতে যেতে পারেন।
পছন্দের খাবার রান্না করা
শ্বশুরবাড়িতে মাঝেমধ্যে তাঁদের পছন্দের কোনো খাবার রান্না করতে পারেন। এতে সম্পর্ক অনেক বেশি দৃঢ় হবে। কর্মজীবীরা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রান্নার সময় বের করুন। প্রয়োজনে শাশুড়ির সঙ্গে মিলে রান্না করতে পারেন।
কাছাকাছি বাড়িতে বসবাস
অশান্তি এড়াতে অনেকেই আলাদা বাড়িতে থাকেন। তবে সম্ভব হলে কাছাকাছি বাড়িতে থাকুন। এতে যেকোনো প্রয়োজনে এবং দেখভাল করতে শ্বশুরবাড়িতে যাওয়া সহজ হবে।
ধৈর্য রাখা
শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ প্রতিকূল হলে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ধৈর্য ধরতে হবে। ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনযাপন এবং বেড়ে ওঠার পরিবেশ আপনার চেয়ে আলাদা হতে পারে, এটি মেনে নিন। কিছু দিন গেলে পরিস্থিতি সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ
শ্বশুরবাড়ির যেকোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুন। বিবাহবার্ষিকী বা জন্মদিনে কেক ও উপহার নিয়ে নিজেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন। এতে শ্বশুর-শাশুড়ি ও অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সুসম্পর্কও গড়ে উঠবে।
উপহার দেওয়া
কোনো উৎসবে বা দিবসে শ্বশুর-শাশুড়িকে উপহার দিন। শ্বশুর-শাশুড়ির পছন্দ কিংবা প্রয়োজন জেনে উপহার দিতে পারেন। এতে সহজে তাদের মন জয় করা যাবে। সম্ভব হলে শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যেরও উপহার দিন।
সীমাবদ্ধতা বজায়
শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্কে কিছুটা সীমাবদ্ধতা বজায় রাখুন। তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না। আবার আপনার ব্যক্তিগত বিষয়েও যেন তারা খুব একটা হস্তক্ষেপ করতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে অবশ্যই বিনয়ের সঙ্গে বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন কিংবা সঙ্গীকে দিয়ে বলাতে পারেন। যেকোন সম্পর্কেই কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত।