হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সামাল দিতে পারবে না ইসরায়েল
লেবাননের ইরানপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে পুরোদমে যুদ্ধ বেধে গেলে ইসরায়েল ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা। তাঁদের ভাষ্যমতে, আয়রন ডোমসহ ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোতে যত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তার চেয়ে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের সংখ্যা বেশি। সে কারণে তাদের হামলা পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব না–ও হতে পারে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে সিএনএনের। তাঁরা বলেছেন, ইসরায়েল ভয় পাচ্ছে—হিজবুল্লাহর বিপুল পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মুখে ঝুঁকিতে পড়তে পারে আয়রন ডোম। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। আর এমন সময় বিষয়টি নিয়ে কথা উঠছে, যখন লেবাননে স্থল ও আকাশপথে হামলা চালানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই আয়রন ডোম। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, এই ব্যবস্থার পেছনে ২৯০ কোটি ডলারের খরচ করেছে তারা। আয়রন ডোম নিয়ে গর্ব করে থাকে ইসরায়েলি বাহিনীও। তাদের দাবি, গত বছর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের চালানো রকেট হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে আয়রন ডোমের সফলতার হার ছিল ৯৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে ইসলামিক জিহাদের চেয়ে হিজবুল্লাহ অনেক বেশি শক্তিশালী। সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে—এমন ক্ষেপণাস্ত্র ও অস্ত্রশস্ত্র বছরের পর বছর ধরে সংগঠনটিকে দিয়ে আসছে ইরান। বর্তমানে তাদের হাতে এমন অস্ত্রের বড় মজুত আছে বলে ধারণা করা হয়। ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এসব অস্ত্র দিয়ে হিজবুল্লাহ বড় ধরনের হামলা চালালেই কেবল সেগুলো ঠেকানোর সক্ষমতা হারাতে পারে আয়রন ডোম।
এদিকে এরই মধ্যে নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছে হিজবুল্লাহ। চলতি মাসের শুরুর দিকে তাদের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তর ইসরায়েলে আয়রন ডোমের একটি ব্যাটারিতে হামলা চালিয়েছে একটি ড্রোন। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহেই ৯ মিনিটের আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ। ড্রোন থেকে ধারণ করা ওই ভিডিওতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার চিত্র ধরা পড়েছে।
হিজবুল্লাহর হাতে দেড় লাখ রকেট–ক্ষেপণাস্ত্র
হিজবুল্লাহর হাতে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও রকেট আছে, সেগুলোর সক্ষমতা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অস্ত্রশস্ত্রের চেয়ে বেশি। হিজবুল্লাহর এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বেশির ভাগই স্বল্পপাল্লার। এরপরও সেগুলোর কিছু কিছু ইসরায়েলের বেশ ভেতরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। ইসরায়েলি বাহিনীর ধারণা, সংগঠনটির হাতে প্রায় দেড় লাখ ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট আছে।
এদিকে মার্কিন সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর ৪০ থেকে ৫০ হাজার যোদ্ধা রয়েছেন। তবে গত বুধবার সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ জানিয়েছেন, এই সংখ্যাটা এক লাখের অনেক বেশি। এর মধ্যে হিজবুল্লাহর বিশেষ বাহিনী ‘রেদওয়ান ফোর্সের’ সদস্যরাও রয়েছেন। তাঁদের সিরিয়ায় বাশার আল–আসাদ সরকারের পক্ষে লড়াই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।