চিকিৎসকদের উচিত মূলধারার সংগঠনে যুক্ত হওয়া
আমেরিকার প্রতিটি অঙ্গরাষ্ট্রে এ রকম অ্যাসোসিয়েশন আছে। প্রতিটি শহরেও এ ধরনের সংগঠন আছে। তাদের একটা চমৎকার ‘চেইন অব কম্যান্ড’ আছে। এতে চিকিৎসক নেতারা অঙ্গরাজ্যের সিনেটে চিকিৎসকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য লবিং করেন, পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি করেন।
সারাবিশ্বের সব দেশের মতো এখানেও চিকিৎসকদের উপর নানা ধরনের চক্রান্ত কাজ করছে। যেমন, নতুন মেডিকেল কলেজ বা ট্রেনিং প্রোগ্রাম তৈরি হচ্ছে না। নার্স প্র্যাকটিশনার্সদের বা ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্টদের স্বতন্ত্র কাজ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি তাদের নামের আগে ডাক্তার টাইটেল লাগাবার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তারদের ক্ষমতা এবং নিরাপত্তা কমছে।
এএমএ কংগ্রেস এবং সিনেটে চিকিৎসকদের স্বার্থ রক্ষায় জন্য কাজ করেন। এদেশে কতগুলো মেডিকেল কলেজ হবে, প্রতি বছর কতজন নতুন চিকিৎসক বের হবেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য কি আইন পাস করতে হবে, চিকিৎসকদের আইনি হয়রানি থেকে কিভাবে বাঁচানো যাবে? এসব নিয়ে সংগঠনের নেতারা সিনেটর বা কংগ্রেসম্যানদের সাথে কাজ করেন। এসব সংগঠনে রাজনৈতিক মতভেদ নেই। চিকিৎসকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সবাই এক।
অথচ এদেশে অধিবাসী চিকিৎসকদের প্রতিটি সংগঠনে বিভক্তি দৃশ্যমান। তারা এদেশের মূলধারা থেকে আলাদা। যদিও এর ব্যতিক্রম আছে এবং ব্যতিক্রমগুলো ব্যক্তিগত পর্যায়ে। তারা প্রায় সবাই মূলধারার চিকিৎসকদের সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট।
গত দুই বছরে আমি এদেশের মূলধারার চিকিৎসকদের সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়েছি। এখানে কাজ করা আনন্দের এবং গর্বের। কাজ করার পরিধি অসীম। কেউ পেছন থেকে টেনে ধরে না। প্যানেল করে ভোট দিয়ে এখানে নির্বাচন হয় না। নকল ভোটার বানানো হয় না।
এসব সংগঠন মেডিকেল কলেজ এবং বড় বড় হাসপাতাল এবং প্র্যাকটিসের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের মেন্টরশিপ, গবেষণায় সাহায্য করে। সদস্যদের স্বল্পহারে ঋণের ব্যবস্থা করে, চিকিৎসকদের আইনি সহযোগিতা করে, বিষণ্ণ এবং মানসিক বিষাদগ্রস্ত চিকিৎসকদের সহযোগিতা করে। এসব সংগঠনের চিকিৎসকরা পদ-পদবির জন্য মামলাবাজী করেন না।
আমি এবার আমাদের অঙ্গরাজ্যের এরকম একটি সংগঠনের বোর্ড মেম্বার নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের উদ্বোধনী বা পরিচিতি অনুষ্ঠানে এএমএয়ের সভাপতি ডাবল স্টার মেজর জেনারেল অধ্যাপক ডা. জেরাল্ড হারম্যান ও ওয়ার্ল্ড মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. সিসিল উইলসন সাথে পরিচিত হয়ে এবং তাদের বক্তৃতা শুনে অত্যন্ত আবেগতাড়িত হলাম। আমাদের উচিত মূলধারার চিকিৎসকদের সংগঠনে যুক্ত হওয়া। এখানে অতি সহজে অনেক কাজ করতে পারবেন। নেতৃত্বের বিভাজন আর যুক্তকরণ নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না।