এগিয়ে আসছে শিশুকন্যাদের ঋতুস্রাবের বয়স!
ঋতুস্রাব নারীর জীবনে একটি ক্রিয়া যা নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয়ে আবার নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়ে যায়। সাধারণত প্রতি মাসে ৭ দিন নারীদের ঋতুস্রাব চলে যেখানে শরীরে জমে থাকা দূষিত রক্ত বের হয়ে যায়। আগে নারীদের ঋতুস্রাব শুরু হতো ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সে। কিন্তু এখন সেই সময়কাল কমে ৭ থেকে ৮ বছরে এসেছে।
নির্দিষ্ট বয়সের আগে ঋতুচক্র শুরু হওয়ার সঙ্গে কিন্তু শারীরিক এবং মানসিক নানা রকম সমস্যার যোগ রয়েছে। মস্তিষ্কের কোথাও টিউমার হলেও হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন আসতে পারে। আবার, এমন অনেক ওষুধ রয়েছে, যা প্রয়োগ করলেও হরমোনের হেরফের ঘটে। ফলে মেয়েদের শারীরিক বাড়বৃদ্ধি হয় দ্রুত গতিতে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং রোগমুক্তি পাওয়া নারীদের দেহে হরমোনের মাত্রায় হেরফের বিষয়ে ভারতের স্ত্রীরোগ চিকিৎসক অভিনিবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুরো বিষয়টিই কিন্তু ঘটছে হরমোনের কারসাজিতে। তা শুধু কোভিড কেন, আমরা যে প্লাস্টিকের বোতলে জল খাই, সেখান থেকে এক ধরনের রাসায়নিক বেরোয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওই রাসায়নিকটি মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মতো কাজ করে। যে কোনও কারণে মেয়েদের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে গেলেই পিউবার্টি বা বয়ঃসন্ধি এগিয়ে আসতে পারে। তাই কোভিড পরবর্তী সময়ে মেনার্কি এগিয়ে আসার ঘটনা এখন খুবই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে।
শিশুকন্যাদের ঋতুস্রাবের সময় এগিয়ে আসার পাশাপাশি নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, যাদের সময়ের আগে ঋতুচক্র শুরু হয়, তাদের মধ্যে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ২৩ শতাংশ বেশি।
এছাড়া হার্টের শিরা-ধমনী সংক্রান্ত রোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। মেনস্ট্রুয়াল সাইকল শুরু হলে অনেক শিশুই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অনেকের মধ্যে আত্মহননের প্রবণতাও বেড়ে যায়। তাই যে সময়েই বয়ঃসন্ধি আসুক না কেন, দেখে নেওয়া জরুরি, তার সঙ্গে শারীরিক কোনও জটিলতা রয়েছে কি না। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখাও জরুরি।