কোটা আন্দোলনকারীদের “আমরা সবাই রাজাকার” স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সাংস্কৃতিক ফেডারেশনসমূহ। মঙ্গলবার ১৬ জুলাই এক বিবৃতিতে এই কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে ফেডারেশনসমূহ উল্লেখ করেছে, কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ১৪ জুলাই রোববার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার” ও “আমরা সবাই রাজাকার” বলে যে স্লোগান দিয়েছে তাতে পুরো জাতি বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আলোকিত দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষার্থীরা যখন নিজেদের ‘‘রাজাকার’’ উল্লেখ করে স্লোগান দেয় তখন মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নির্মম নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী-শিশুসহ সবার প্রতি চূড়ান্ত অবমাননা করা হয়। অথচ এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর রাজাকাররা শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিল।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়, ‘‘ওই শিক্ষার্থীরা তাদের ভুল বুঝতে পারবে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দাবি আদায়ের পথে চলবে।’’
বিবৃতিদাতারা বলেন, যেকোনো বিষয়ে মত, ভিন্ন মত থাকলে আলাপ-আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসম্মানজনক বক্তব্য, কটাক্ষ করা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য ও ঔদ্ধত্যের শামিল।’
শিক্ষার্থীদের গর্বের সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান “জয় বাংলা” উচ্চারণ করার আহ্বান জানিয়েছে বিবৃতিদাতা সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলো।
বিবৃতিদাতা সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলো হল: বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ, বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ, বাংলাদেশ যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এবং বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ।