ক্ষমতাচ্যুতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করলেন শেখ হাসিনা
বঙ্গোপসাগেরর বুকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কক্সবাজারের ছোট্ট দ্বীপ সেন্ট মার্টিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে না দেওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতির এই দাবি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস তুলে ধরেছে।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে যাওয়ার পর একাধিকবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে দেখা হয়েছে শেখ হাসিনার। ভারতীয় নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক কর্তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁর।
তবে আজ রোববার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য তিনি আমেরিকাকে সরাসরি দায়ী করেছেন।
দেশত্যাগ করার আগে যে বক্তব্য তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে দিতে চেয়েছিলেন, তাতেও এর উল্লেখ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। হাসিনা জানিয়েছেন, আমেরিকার কথামতো বঙ্গোপসাগরে একক আধিপত্যর জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তাঁদের ছেড়ে না দেওয়ার মাশুল হিসেবে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশিদের সতর্ক করেছেন, তাঁদের ওপর মৌলবাদীরা যেন ভর না করে।
শেখ হাসিনা আশাপ্রকাশ করেছেন, তিনি আবার নিজের দেশে ফিরে যাবেন। তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আবারও দাঁড়াবে। তাঁর দলের বহু নেতাকে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার খবরে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, হাসিনা ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগের শীর্ষ কর্তাদের বক্তব্য, গত মে মাসে আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহসচিব ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরের সঙ্গে এই ক্ষমতা পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে। এই অভিযোগও তাঁরা করছেন যে, লু চিনবিরোধী কিছু পদক্ষেপ নিতে হাসিনার ওপর চাপ দিচ্ছিলেন।
শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতের হিন্দন বিমানঘাঁটির কাছাকাছি একটি গোপন আস্তানায় অবস্থান করছেন। যতক্ষণ না তাঁর পরবর্তী আশ্রয়ের ঠিকানা নির্ধারিত হয়, হাসিনা নয়াদিল্লিতেই থাকবেন। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভারতে থাকতে হতে পারে। তবে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আইনি সুযোগ না থাকায় ভিসার মাধ্যমে তিনি দিল্লিতে থাকবেন।