বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৬ সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও অর্থমন্ত্রী ইয়েলেনকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন কংগ্রেস সদস্যরা।

চিঠি দেয়া কংগ্রেস সদস্যরা হলেন, লয়েড ডগেট, এডওয়ার্ড জে মার্কি, উইলিয়াম আর কিটিং, ক্রিস ভন হলেন, জেমস পি ম্যাকগভার্ন ও অল গ্রিন।

চিঠিতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হয়। কংগ্রেস সদস্যরা বলেন, আন্দোলনে বেশিরভাগ সহিংসতার জন্য দায়ী দুই বাহিনী পুলিশ ও বিজিবি। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এর দায়ভার আসাদুজ্জামান খানের।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ দেন উল্লেখ করেন ৬ কংগ্রেস সদস্য। এসব কারণেই আওয়ামী লীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের বাড়িতে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে রংপুরে আবু সাঈদের বাড়িতে পৌঁছেন তিনি।

সেখানে পৌঁছে ড. ইউনূস আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন আরও দুই উপদেষ্টা। তারা হলেন–ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তারা দুইজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।

গত ১৬ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান পুলিশ সদস্যরা। সংঘর্ষ যখন তুঙ্গে, তখন আবু সাঈদ দুহাত দুদিকে প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে গেলেন রাস্তায়।

এরপর বুলেট তেড়ে এসে বিঁধে গেল আবু সাঈদের বুকে। এরপরও দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তারপর আবারও গুলি। পরে রাস্তার ডিভাইডার পার হলেন। শান্ত, নির্মল চেহারার সাঈদ বসে পড়েন সেখানেই। তারপর ঢলে পড়েন রাস্তায়। পরে জানা যায়, তিনি মারা গেছেন। তারপর থেকেই শহীদের খেতাব ও আইকনিক ছবি হয়ে ওঠেন আবু সাঈদ।

ছাত্রজনতার দাবির মুখে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করবেন কি না- তা তাকেই ঠিক করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ফুল কোর্ট সভা ডাকার কোনো সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার পর সচিবালয়ের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরে গণমাধ্যমকে বলেন, সব ধরনের খারাপ আইনসহ পুরো আইন বিভাগের সংস্কার করা হবে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে জনগণের নিপীড়নের জায়গা হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার কাজ শেষ করে মুক্তজীবনে ফিরতে চান বলে জানান এই আইন উপদেষ্টা।

প্রধান বিচারপতিসহ বিচারপতিদের পদত্যাগে দুপুর ১টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরপর বাসভবন ঘেরাও করবে তারা। সে পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট চত্বরেই বিক্ষোভ করবে আন্দোলনকারীরা।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানালো বিশ্বের নানা দেশ ও জোট। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান- গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ঢাকার সাথে কাজ করতে চায় ওয়াশিংটন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। জোটের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল জানান, গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় সহযোগিতায় আগ্রহী ইইউ।

শুক্রবারই বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানায় চীন। পারস্পরিক সহায়তা বৃদ্ধিতে নতুন সরকারের সাথে কাজ করতেও আগ্রহী বেইজিং। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও স্বাগত জানিয়েছেন নতুন সরকারকে। মোদি বলেন, ভারত উভয় দেশের জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ড. ইউনুসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জনগণকে সহায়তা করতে প্রস্তুত জাতিসংঘও।

জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জনগণ প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো উপায়ে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত জাতিসংঘ।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বতীর্কালীন সরকারের শপথ নেয়া সদস্যদের মধ্যে দফতর বন্টন করা হয়েছে।  আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুরে অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারের উপদেষ্টাদের দায়িত্ব বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে রয়েছে ২ বিভাগ ও ২৫ মন্ত্রণালয়। সেগুলো হলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এছাড়া উপদেষ্টাদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদকে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; ড. আসিফ নজরুলকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রাণলয়; আদিলুর রহমান খানকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; হাসান আরিফকে শিল্প মন্ত্রণালয়; মো. তৌহিদ হোসেনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; শারমীন এস মুরশিদকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়; ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; ফরিদা আখতারকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; নুরজাহান বেগমকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়; জনাব মো. নাহিদ ইসলামকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ঢাকার বাইরে থাকায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা ও মুক্তিযুদ্ধে অপারেশন জ্যাকপটের উপ-অধিনায়ক ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক উপদেষ্টা হিসেবে গতকাল শপথ নেননি। তারা শপথ নিলে প্রধান উপদেষ্টার অধীনে থাকা দফতর কমতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় দেশের সব সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। শুক্রবার (৯ আগস্ট) আবহাওয়ার এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।

সতর্কবার্তায় বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাতে বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর ১৬ জন উপদেষ্টার নাম ঘোষণা করা হয়। এই উপদেষ্টাদের মধ্যে ১৩ জন শপথ নিয়েছেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিনজন শপথ নেননি এদিন।  

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেয়া সদস্যদের মধ্যে দফতর বন্টন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুরে অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারের উপদেষ্টাদের দায়িত্ব বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে থাকছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আর উপদেষ্টাদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদকে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; ড. আসিফ নজরুলকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রাণলয়; আদিলুর রহমান খানকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; হাসান আরিফকে শিল্প মন্ত্রণালয়; মো. তৌহিদ হোসেনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; শারমীন এস মুরশিদকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়; ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; ফরিদা আখতারকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; নুরজাহান বেগমকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়; জনাব মো. নাহিদ ইসলামকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ঢাকার বাইরে থাকায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা ও মুক্তিযুদ্ধে অপারেশন জ্যাকপটের উপ-অধিনায়ক ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক উপদেষ্টা হিসেবে গতকাল শপথ নেননি। তারা শপথ নিলে প্রধান উপদেষ্টার অধীনে থাকা দফতর কমতে পারে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে, শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অন্য উপদেষ্টারাও। আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকালে সাভারে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান তারা।

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উপস্থিত ১৩ উপদেষ্টাকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।

শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন প্রধান উপদেষ্টা।

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাকি উপদেষ্টাদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ। ঢাকা মেডিকেল কলেজের বহিঃপ্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ মিনারে এসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন তারা।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত সোয়া নয়টার পর বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর বাকি উপদেষ্টারাও শপথ গ্রহণ করেন। এরপর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ড. ইউনূস।

ভাষণ দেয়ার পরপরই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের দেখতে বঙ্গভবন থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যরা ১১ দফা দাবি নিয়ে পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় আইজিপি তাদের কথা শোনেন এবং দ্রুততম সময়ে তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। এছাড়া, তাদের দাবি বাস্তবায়নে ৮ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে আইজিপির দফতরে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে আট সদস্যের পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন– কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু, নৌপুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল রানা, ডিএমপির সহকারী কমিশনার (ফোর্স) সৌম্য শেখর পাল, সিআইডির পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম, সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান জুয়েল, সিআইডির উপপরিদর্শক জহিরুল হক ও কনস্টেবল বরকত উল্লাহ।

কমিটি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আহত পুলিশ সদস্যদের সুচিকিৎসা এবং তাদের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে সুপারিশ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ দেশের মানুষের স্বার্থে স্যাক্রিফাইস করেছে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ সমন্বয়ক।

পোস্টের প্রথমেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সারজিস।

তিনি লিখেছেন, প্রথমেই নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে অভিনন্দন। এটা যেমন তাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্জন, তেমনি দেশের মানুষের স্বার্থে আত্মত্যাগও বটে। কারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকার কারণে সামনের ইলেকশনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

সারজিস আলম বলেন, আমি বিশ্বাস করি, তারা দুজন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে পুরো দেশের মানুষের প্রাণের দাবিগুলোর প্রতিনিধিত্ব করবে। জনগণের রায় বাস্তবায়ন করতে চাপ প্রয়োগ করবে। আমাদের আস্থার প্রতিবিম্ব হয়ে উঠবে।

সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্ট

 

সারজিস আরও লেখেন, ২০২৪ সালের এই অভ্যুত্থানের অন্যতম বড় অর্জন– বাংলাদেশের মানুষ তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বে দেখতে চায়, দেশ গঠনে সামনের সারিতে প্রত্যাশা করে। এই তরুণদের মধ্যে কেউ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকবে, কেউ রাজপথে থাকবে। কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্বে এসে নতুন করে ক্যাম্পাসগুলোকে ঢেলে সাজাবে। আবার কেউ হয়তো সংসদে দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে।  

ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ অথবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি লিখেছেন– দেশের মানুষ যদি চায়, নিশ্চয় ভবিষ্যতে কোনো একটি ক্ষেত্রে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। 

উল্লেখ্য, সারজিস আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র। নাহিদ ইসলাম সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এবং আসিফ মাহমুদ ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তারা সবাই ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।