শুক্রবার গুলশানে দলের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে তার বাসভবনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না আরো বলেন, ছাত্র-জনতার সফল অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটেছে। ছাত্রদের নেতৃত্বে সারাদেশের সকল শ্রেণি, পেশার মানুষ যেভাবে এই অভ্যূত্থানে সম্পৃক্ত হয়েছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
সভায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নেতৃবৃন্দ আলোচনা করেন।
সভার সূচনা বক্তব্যে দলের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই অভ্যূত্থান হাসিনা সরকারের স্বৈরাচারী শাসনের সুবিধাভোগী গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এই গণঅভ্যূত্থানের পর দেশের জনগণ নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়। অভ্যূত্থান, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা ছিল এই আকাঙ্খা বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, সেই সরকার জনগণের আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থতির যে অবনতি ঘটেছে, তা অতিদ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। গত ১৬ বছরে দেশের সকল সাংবিধানিক এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। এই সকল প্রতিষ্ঠানকে পুনর্গঠিত করা নতুন সরকারের প্রথম কাজ। বিচার বিভাগকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তর করা, নির্বাচন কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে জনগণের আস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি দমন, বিগত সরকারের আমলে সংঘটিত সকল অপরাধের বিচার এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভেঙে পড়া অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের সকল স্তরে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার পর অংশীজনদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করবে।
নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, যে প্রত্যাশা নিয়ে দেশের জনগণ জীবন দিয়ে গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছে, সেই প্রত্যাশা বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে। রাষ্ট্রের গঠনমূলক সংস্কারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে সহযোগিতা করবে নাগরিক ঐক্য।
পাশাপাশি সকল ধরনের নৈরাজ্য, সহিংসতা এবং দখলদারত্ব বন্ধ করতে সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নেবার আহবান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন অন্যথায় সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর উপর জনগণের আস্থার সংকট দেখা দিবে।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ারের পাঠানো বার্তায় আরো বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর উপর হাসিনা সরকারের নিপীড়ন, নির্যাতনে যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ করতে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উদ্যোগ নিতে হবে। সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন নেতৃবৃন্দ।