প্রযুক্তি

২৯টি ক্যাটাগরিতে ৩ হাজারের বেশি লাইসেন্স দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বলা হয়েছিলো, এতে গ্রাহক সেবার মান বাড়বে। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়া হবে।

কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত লাইসেন্স আর মধ্যস্বত্বভোগী কোম্পানির ভারে জর্জরিত টেলিকম খাত। গ্রাহক সেবায় নেই জরুরি কোনো সম্পৃক্ততা। অথচ মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে বছরের পর বছর মোটা অঙ্কের মুনাফা হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। টেলিযোগাযোগ খাতের ইকো সিস্টেমে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজনৈতিক প্রভাবে নেয়া কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নিচ্ছে বিটিআরসি। এ প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে সহসাই কমিটি গঠন করবে বিটিআরসি।

মূলত ক্ষমতাচ্যূত আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব লাইসেন্সের বেশিরভাগই হাতিয়ে নেয় প্রভাবশালীরা। অভিযোগ উঠেছে, বাজার যাচাই না করে টেলিকম খাতে নানা স্তর তৈরির মাধ্যমে লাইসেন্স বাণিজ্য চালিয়ে গেছেন মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেট।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, প্রায় ২৯০০-৩০০০ লাইসেন্স দেয়া আছে। এত লাইসেন্স আসলে দরকার আছে কি না, এটা দেখার দরকার আছে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দলের নেতাদের কেউ কেউ টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যবসায় নামেন। বাগিয়ে নেন আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স ক্যটগরির ডজন ডজন লাইসেন্স। মধ্যস্বত্ত্বভোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়ে থেমে থাকেননি। এমনকি সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়ারও প্রমাণ পেয়েছে বিটিআরসি।

এমদাদ উল বারী বললেন, আমাদের যেসব মেজর লাইসেন্স আছে, এর বেশিরভাগই মেয়াদ শেষ হবে দুই বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ২০২৭ সালে। অনেকগুলো স্তর আমরা দেখতে পাচ্ছি, যা ভ্যালু তৈরি করতে পারছে না। সেই স্তরগুলো বাদ দিবো, সংস্কার করবো নাকি একীভূত করবো— এটা আমাদের স্ট্রাটেজির একটা অংশ হবে।

প্রয়োজনের অতিরিক্ত লাইসেন্স প্রদান গ্রাহক সেবায় কোনো ভ্যালু যুক্ত করেনি। বরং এসব প্রতিষ্ঠানের মুনাফা নিশ্চিত করার জন্য গ্রাহকের ওপর অতিরিক্ত খরচের বোঝা চাপানো হয়েছে, এমন অভিমত প্রযুক্তিবিদদের।

প্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, অনেক লাইসেন্স বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলোর বড় অংশ থেকে বড় টাকা পাওনা রয়েছে। সেই লাইসেন্সগুলো দেয়া হয়েছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়। রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়া লাইসেন্স পেয়েছেন, তারা বিটিআরসির টাকা ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে এ রকম নজির খুব একটা নেই। কাজেই এসবের মূলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন। যেখান থেকে আসলে প্রয়োজনের বেশি লাইসেন্স দেয়া এবং তাদেরকে দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়া হয়।

বিদ্যুৎখাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে সম্পাদিত চুক্তিগুলোর বিস্তারিত তথ্য এক সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বিশেষ ক্ষমতা আইনে সম্পাদিত চুক্তির পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর খিলক্ষেতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনে গঠিত জাতীয় কমিটির প্রথম সভা শেষে এ কথা বলেন।

তিনি জানান, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বিদ্যুতের ইনডেমনিটি আইন পর্যালোচনা কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠক শেষে কমিটির আহ্বায়ক জানান, কোনোভাবেই কাউকে ভয় দেখানো এই কমিটির কাজ নয়। গেল আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে এই বিশেষ আইনের আওতায় ৯০টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি সই হয়। এগুলোর সবগুলো না হলেও আলোচিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তি পর্যালোচনা করবে কমিটি।

দায়মুক্তির আইনে অনুমোদিত ৪৩টি বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্ত  গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বাতিল হতে যাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৩১টি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এবং ১২টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০’-এর আওতায় নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রকল্পগুলোর প্রস্তাব অনুমোদিত হলেও এগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হয়নি এবং বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়নি। আর রেন্টাল কেন্দ্রগুলোর মেয়াদ শেষ হলেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকার কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়েছিল।

গত মঙ্গলবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে বিদ্যুৎ বিভাগের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এদিকে বিপিসির আওতাধীন ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এস আলম গ্রুপকে। প্রস্তাবিত ‘ইন্সটলেশন অব ইআরএল ইউনিট-২’ শীর্ষক প্রকল্পটি বিপিসি ও ইআরএল এবং এস আলম গ্রুপের মধ্যে সরকারি বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ চুক্তির আওতায় বাস্তবায়নের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন ছিল। ঐ প্রস্তাব গতকাল বাতিল করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। একই সঙ্গে প্রকল্পটির ডিপিপি বৈদেশিক মুদ্রার হালনাগাদ রেট অনুযায়ী প্রাক্কলন এবং সকল ক্রয় পরিকল্পনা পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী প্রণয়নপূর্বক পরিকল্পনা কমিশনে পুনর্গঠিত ডিপিপি পাঠাতে বিপিসিকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

সাতদিন সময় টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৯ আগস্ট) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সময় মিডিয়া লিমিটেডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আহসানুল করিম।

সময় টিভির এমডি ও সিইও পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অপসারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ আগস্ট আদালতে আবেদন করা হয়। আদালতে সিটি গ্রুপের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করীম। আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, গত শনিবার (১০ আগস্ট) গুলশানের সিটি হাউজে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্ধারণ করা হয়। এতে বলা হয়, সভায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই সভায় পরিচালক শম্পা রহমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। সময় মিডিয়া লিমিটেডের সব কার্যক্রম এখন থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশনায় পরিচালিত হবে। পরে এ অব্যাহতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের কোম্পানি বেঞ্চে আবেদন করেন আহমেদ জোবায়ের।

ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ নেয়ায় যেসব স্টার্টআপ কোম্পানির বিনিয়োগ বন্ধ করা হয়েছিল তা পুনর্বিবেচনা করা হবে। কেউ বঞ্চিত হলে তাদের সুবিচার করা হবে বলে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

সোমবার (১২ আগস্ট) দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে অফিস করে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে একথা বলেন নতুন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, নিজেদের প্রয়োজন ও সক্ষমতার মধ্যে কাজ করতে হবে। তরুণদের প্রশিক্ষিত করতে হবে। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আইসিটি সেক্টরে পেছুর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই সেক্টরে দুর্নীতি করার কোনও সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি একটি মানবাধিকারের বিষয়। ইন্টারনেট বন্ধ করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করতে যেহেতু ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে তাই আজ রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এ ঘটনায় সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে যান তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা। এ সময় তাকে স্বাগত জানান কর্মকর্তারা। পরে বিসিসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে বসেন নাহিদ ইসলাম। বৈঠকের শুরুতেই হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানতে চান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে তাঁর কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুশফিকুর রহমানকে নির্দেশ দেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আজ রোববার প্রথম কার্যদিবসে সকাল ১০টায় সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে যান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে উঠে আসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়টি। এ সময় তিনি বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আন্দোলনের সময় মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ও ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় শেখ হাসিনা সরকার। পাঁচ দিনের মাথায় ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে চালু করা হয় এবং ১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়।

এরপর ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে আবারও সরকারের নির্দেশে মোবাইল অপারেটররা দেশজুড়ে ফোর-জি নেটওয়ার্ক সেবা বন্ধ করে দেয়।

আজকের বৈঠকে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, কার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়, তা বের করতে হবে। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির কোন কোন কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে ইন্টারনেট বন্ধে সহযোগিতা করেছেন, তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে। তদন্ত করতে ২৪ ঘণ্টা সময় দেন তিনি।

মোবাইল ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন ঘটেছে। রোববার (৪ আগস্ট) ‍দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে রাজধানীর গ্রাহকরা মোবাইলে ফোরজি ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন না। যদিও ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে কি-না এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

এদিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারে দুপুর দেড়টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় কোনো ভোগান্তির খবর পাওয়া যায়নি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে ফেরে।

১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়। কিন্তু বন্ধ ছিল মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম। এ ছাড়া টিকটকও বন্ধ রাখা হয়। অন্যদিকে, ব্রডব্যান্ড সংযোগে ইউটিউব চালু থাকলেও মোবাইল ডেটায় তা বন্ধ ছিল। গত ৩১ জুলাই ফেসবুকও চালু করা হয়।

টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে চালু হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট। আজ বিকেল ৩টায় ফোরজি সেবা চালু হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

রোববার (২৮ জুলাই) বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিফোন অপারেটর বাংলাদেশ এবং মোবাইল ফ্রিনান্সিয়াল সার্ভিসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।

পলক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সংযোগ চালুর পর গ্রাহকরা তিন দিনের জন্য ৫ জিবি বোনাস পাবেন। সব অপারেটরের গ্রাহকরাই এই সুবিধা পাবেন বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মধ্যে গত ১৭ জুলাই রাতে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়। ৫দিন পর গত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কূটনীতিক পাড়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, ফ্রিল্যান্সিং ও প্রযুক্তি এবং রফতানিমুখী খাতে ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়।

বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কন্টেন্ট ক্রিয়েশন দারুণ জনপ্রিয় একটি বিষয়। অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঠিকভাবে না জানার কারণে কন্টেন্ট ক্রিয়েশনে ভালো করতে পারেন না। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল-এর (বিইউপি) সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেড।

সম্প্রতি বিইউপি ক্যাম্পাসে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে নগদ ও বিইউপি। বিউপির পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন লে. কর্নেল মাসুদুর রহমান খান ও নগদের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সোলায়মান স্বাক্ষর করেন।
এ সময় নগদের হেড অব মার্কেটিং স্ট্রাটেজি অ্যান্ড প্ল্যানিং মনসুরুল আজিজ, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম, সহকারি ব্যবস্থাপক তানহা ওয়াহিদ আদৃতাসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ফলে চলতি মাস থেকে বিইউপির সাংবাদিকতা বিভাগে কন্টেন্ট ক্রিয়েশন কোর্স চালু হবে। এর জন্য প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গিয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ করে ৫১০ টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর বিইউপির প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম অনুযায়ী বাকি প্রক্রিয়া ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য যে ফি প্রদান করবেন, সেটিও নগদের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রদান করতে পারবেন।

এই কোর্সে সফলভাবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ পাবেন। এই কোর্সে ভালো করা শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো নগদের দেওয়া ‘ক্রিয়েটরশিপ’ ইন্টার্নশিপে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। বিইউপির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক এবং বিভিন্ন দক্ষ পেশাদার ব্যক্তিদের মাধ্যমে এই কোর্স পরিচালিত হবে। ৩০ জুলাই পর্যন্ত এই কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

নগদের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সোলায়মান বিইউপির সাথে চুক্তির বিষয়ে বলেন, ‘নগদ শুরু থেকেই প্রযুক্তিগত দিক থেকে শুরু করে উদ্ভাবনী সব ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। যার কারণে আমরা দেশের বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশেও কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের বিষয়ে যারা ভালোভাবে জানতে আগ্রহী, তাদের জন্য বিইউপির সাথে যৌথভাবে এই কোর্স চালু হচ্ছে। আশা করি এখান থেকে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন এবং মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন।’

চুক্তির বিষয়ে বিইউপির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন লে. কর্নেল মাসুদুর রহমান খান বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের ওপর বিইউপি ও নগদ এমন একটি কোর্স নিয়ে আসছে। এই কোর্সে অত্যাধুনিক মিডিয়া ল্যাব ব্যবহার করে প্রতি শুক্র ও শনিবার দেশের সেরা পেশাদার ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মাধ্যমে মানসম্মত কন্টেন্ট ক্রিয়েশন শিখতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।’

বিশ্বের দ্বিতীয় জনপ্রিয় অনলাইন সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে ইউটিউব। বর্তমান সময়ে এর ব্যবহার প্রচুর পরিমাণে করা হয়। যেখানে সবাই ভিডিওর মাধ্যমে নিজেদের সমস্যার সমাধান পেয়ে থাকেন। সেই সার্চ ইঞ্জিন ইউটিউব এবার ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সুবিধা নিয়ে আসছে।

সরাসরি ছবি তোলার পাশাপাশি ফোনের গ্যালারিতে থাকা ছবির মাধ্যমে, অনলাইন থেকে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় গুগল লেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে। আর এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে এবার পছন্দের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যাবে ইউটিউবে।

নাইনটুফাইভ গুগলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউটিউবের সার্চবারে গুগল লেন্স ব্যবহারের সুযোগ চালুর জন্য কাজ করছে গুগল। শুরুতে এ সুবিধা ইউটিউবের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে যুক্ত করা হবে।

নতুন এ সুবিধা চালু হলে ইউটিউব অ্যাপের সার্চবারে যাওয়ার পর গুগল লেন্সের আইকন দেখা যাবে। তাতে ক্লিক করে ছবি তুললে বা ফোন গ্যালারির ছবি নির্বাচন করলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের বিভিন্ন ভিডিও ইউটিউবে খুঁজে পাওয়া যাবে। এর একটি স্ক্রিনশটও প্রকাশ করেছে নাইনটুফাইভ গুগল।

সেখানে দেখা যায়, ইউটিউব অ্যাপের সার্চ আইকনে ট্যাপ করার পর সার্চবারের ডান দিকে মাইক্রোফোন আইকনের পাশে গুগল লেন্সের আইকন যুক্ত করা হয়েছে। এতে ট্যাপ করে ছবি দিয়ে ইউটিউব থেকে ভিডিও খুঁজে নিতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। বর্তমানে নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীদের ওপর এ সুবিধার কার্যকারিতা পরখ করা হচ্ছে।

পরখ করা ব্যবহারকারীদের তথ্যমতে, এ সুবিধা চালুর পর নিজেদের গুগল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত সব অ্যান্ড্রয়েড ফোনেই গুগল লেন্সের মাধ্যমে ইউটিউবে পছন্দের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে শিগগিরই এটি অন্য অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।