জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, মিয়ানমার সেন্টমার্টিনের কাছে যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা করছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা হামলা চালিয়ে আসছে। বিভিন্ন ভাবে তারা আমাদের ভূখণ্ডে চলে আসতে চাচ্ছে। দেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী অনেক শক্তিশালী শুনেছি। কিন্তু এটি নিয়ে আমরা তাদের কোনো ভ‚মিকা দেখছি না। মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এটি সত্যিই দুঃখজনক।
শনিবার বিকালে চার দিনের সফরে রংপুরে এসে রংপুর সার্কিট হাউজে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, এর আগে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আমাদের দেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সরকার মানবতা দেখিয়ে সেই বোঝা ঘাড়ে নিয়েছে। বর্তমানে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হোক। মিয়ানমার সেন্টমার্টিন যদি দখলে নিয়ে ফেলে আবার কোনো মহত্বের কারণে তা ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা আমরা জানি না। আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার করার দায়িত্ব আছে। সংসদ চালু থাকলে এটি কেন হচ্ছে আমি প্রশ্ন করতাম।
জিএম কাদের আরও বলেন, সরকার যে বাজেট করেছে তা দুর্বৃত্তায়ন সহায়ক বাজেট। বিভিন্ন দুর্বৃত্তায়নকে এ বাজেটে উৎসাহিত করা হয়েছে। দুষ্টের পালন ও শিষ্টের দমন করা হচ্ছে বিভিন্ন নীতিতে। সরকারের আশপাশের মানুষ ধনী থেকে অতি ধনী হচ্ছে, আর সাধারণ মানুষ কষ্ট ভোগ করছে। এবারের বাজেটের মাধ্যমে বৈষম্যের দেশ তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে কোনো সময় অর্থনৈতিক সংকট হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বর্তমানে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা করেছে সরকার। তারা উচ্চাভিলাষী মেগা প্রকল্প করে, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়েছে। আমি বলব অর্থের বিরাট অপচয় হয়েছে। তাই দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে।
জিএম কাদের আরও বলেন, বর্তমানে কর ছাড়ের সুফল পাচ্ছে ব্যবসায়ীরা, অপরদিকে করের বোঝা বইতে হচ্ছে জনগণকে। সরকার সংকুচিত অর্থ সরবরাহ মুদ্রানীতি গ্রহণ করার কথা বলেছে। কিন্তু দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সিন্ডিকেট। তাই এই নীতি কোনো কাজে আসবে না।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, সরকার বিদ্যুৎ ও গ্যাস আমদানি করছে। অথচ দেশে গ্যাসের বিশাল মজুত রয়েছে। সেটি উত্তোলনের বিষয়ে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। এতে করে উচ্চ মূল্যে জনগণকে বিদ্যুৎ-গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে। গ্যাস সংকট এবং উচ্চ মূল্য দিয়ে গ্যাস ব্যবহার করতে না পেরে অনেক ইন্ডাষ্ট্রি বন্ধ হয়ে গেছে। দেশে বেকারত্ব বাড়ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির রংপুর মাহনগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির আহমেদ, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আলাউদ্দিন মিয়া, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, জেলা যুব সংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম প্রমুখ। এসময় রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি এবং অংঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।