রাজনীতি

বিএনপির ঘুম হারাম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপির চোখে ঘুম নেই, ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ফখরুলের চোখে অশান্তির আগুন। লন্ডন থেকে ফরমান আসে, ইন অ্যান্ড আউট।

সোমবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে কখন? তারা নিজেরা নিজেদের বিশ্বাস করে না। কেউ কাউকে পছন্দ করে না। একজন আরেক জনকে বলে সরকারের এজেন্ট। তাদের আন্দোলন ভুয়া।’

 

বিএনপির এক দফা কোথায় গেলো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘গেলো রে গেলো, সব নাকি ইন্ডিয়া হয়ে গেলো। গেলো রে গেলো, স্বাধীনতা গেলো, গেলো রে গেলো সার্বভৌমত্ব গেলো। কোথায় গেলো? ৫৩ বছর আমরা স্বাধীনতা নিয়ে টিকে আছি। কোথায় যাবো? ভারত আমাদের বন্ধু।’

বিএনপি ভারতের দাসত্ব চেয়েছিল মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মনে আছে, নরেন্দ্র মোদি যখন ক্ষমতায় আসে প্রথম দিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে বিএনপি নেতারা ভারতের হাইকমিশনের সামনে হাজির। হাইকমিশন বন্ধ, মিষ্টি আর ফুল নিয়ে হাজির। এই হলো বিএনপি।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা ভারতের বিরোধিতা করে কিন্তু ওয়াশিংটনের ইচ্ছায় ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির অঙ্গীকার করে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে ২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তি বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছেন বলেই আজ ৬৮ বছরের সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়, আরেকটা বাংলাদেশের সমান সমুদ্রসীমা আমরা ভারতের কাছ থেকে আদায় করতে পেরেছি, শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় হয়েছে।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম বাবুল মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বাঘা মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বাবুলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

বাবুল নিহতের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। এ ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ করে পালটাপালটি বক্তব্য দিচ্ছেন জেলার শীর্ষ নেতারা। দলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত বাবুলের জানাজায় গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার। হাত ধরে টেনে তাকে বাবুলের লাশের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমার বয়স এখন ষাটের ওপরে। আমার রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের ঘটনায় মদদ দেওয়ার ইতিহাস নেই। মনে হচ্ছে যেন লাশটি কারও দরকার ছিল। একজনের লাশ দরকার ছিল। যেটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করা যায় এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়। আমার কাছে এটাই মনে হচ্ছে। আমরা যারা আওয়ামী লীগের রক্ত নিয়ে বড় হয়েছি, তাদেরকেই এখন হেনস্তা করার অপচেষ্টা করছে নতুনরা।’

বাবুল নিহতের ঘটনায় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ-সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ এবং বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলুকে দোষারোপ করেছেন। তার হত্যায় এ তিন নেতার মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শাহরিয়ারের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই একজনের লাশের দরকার ছিল। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাবুলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। লাশ সামনে রেখে বক্তব্য দিতে গিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাবুল নিহতের ঘটনায় জড়িত খুনি আক্কাস (আক্কাস আলী, বাঘা পৌর মেয়র) ও খুনি মেরাজ (মেরাজ উদ্দিন, বাকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান)। তাদের পেছনে মদদদাতা আছে। দুই বছর আগে আক্কাস বহিষ্কৃত হয়েছিল আওয়ামী লীগ থেকে। খায়রুজ্জামান লিটন নিজের মুখে সেই কথা এখানে বলেছিলেন। এর সাতদিনের মাথায় খায়রুজ্জামান লিটনের গাড়িতে আক্কাস ও মেরাজকে ঘুরতে দেখা গেছে।’

শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা জবাব চাই, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে। অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলুর কাছে জবাব চাই, সে (লাভলু) কেন আজ পলাতক? খুনের মামলায় দুজন সশরীরে উপস্থিত ছিল। পেছন থেকে মদদদাতা হিসাবে আসাদুজ্জামান আসাদ, এএইচএম খায়রুজ্জামান ও লায়েব উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হবে। তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। আমাদেরও দায়িত্ব আছে।’

শাহরিয়ার আরও বলেন, ‘আমি প্রশাসনকে বলব, এই যে কয়েকজনের নাম বললাম, আসামিদের টেলিফোন নম্বরের সঙ্গে, তাদের সাতদিনের টেলিফোন মিলিয়ে নিবেন। তাদের সঙ্গে যদি দিনে পাঁচবার করে কথা না হয়, আমি সংসদ-সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে যাব।’

শাহরিয়ারের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘জানাজায় আমার নাম ধরে এলাকার বর্তমান এমপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঈর্ষাপরায়ণভাবে এ রকম উক্তি করতে পারেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। তার কাছ থেকে এটা আশাই করিনি। কী উদ্দেশ্যে, কেন তিনি বলেছেন তা তিনিই বলতে পারবেন। যারা বিবেকসম্পন্ন মানুষ তারা এটাকে সমর্থন করবেন না।’ 

শাহরিয়ার আলম যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ-সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য আয়েন উদ্দিন ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। শাহরিয়ারের ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার। তাকে হাত ধরে টেনে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

অনিল কুমার সরকার অভিযোগ করেন, তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে জানাজার স্থান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নিহত বাবুলকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি ফুলের ডালাও নিয়ে গিয়েছিলেন। সেটিও দিতে দেওয়া হয়নি। শাহরিয়ারের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বৃহস্পতিবার বিকালে তার কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি বলেন, ‘বাবুল যখন ছাত্রনেতা, তখন থেকেই তাকে আমি পাশে পেয়েছি। তাকে হত্যার মতো নিন্দনীয়-নৃশংস হত্যার সঙ্গে আমি কোনোভাবে জড়িত থাকার কোনো কারণ নেই, কোনো সুযোগ নেই। জানাজায় আমার নাম ধরে এলাকার বর্তমান এমপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এরকম উক্তি করতে পারেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। তার কাছ থেকে এটা আশাই করিনি। কী উদ্দেশ্যে, কেন তিনি বলেছেন, তা তিনিই বলতে পারবেন। যারা বিবেকসম্পন্ন মানুষ, তারা এটাকে সমর্থন করবেন না।’

বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এর আগে গত ২২ জুন দুপুরে উপজেলা চত্বরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হন তিনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় তার মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাবুলের জানাজা শেষে বাঘা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গাঁওপাড়া মহল্লায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আমিরুল ইসলাম আমুর কবরের পাশে দাফন করা হয়।

২২ জুন বাঘা উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন বাবুল।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে শক্তিশালী হয়েছে আওয়ামী লীগের কোষাগার। ২০২৩ পঞ্জিকা বছরের নিরীক্ষিত একটি হিসাব প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ পঞ্জিকা বছরে আওয়ামী লীগ যে ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আয় করেছে, তার মধ্যে কেবল মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে ১৬ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এসেছে। অন্যান্য ফরম থেকে এসেছে ২ কোটি ২৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। মাসিক চাঁদা বাবদ আয় হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। মেঘনা ব্যাংক অনুদান হিসেবে দিয়েছে ১ কোটি ১ লাখ টাকা।

আওয়ামী লীগ গত বছরের ব্যয় দেখিয়েছে ৯ কোটি ৮৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। তাতে উদ্বৃত্ত থেকেছে ১৭ কোটি ৮৪ লাখ ৫১ হাজার ১৮৯ টাকা। আর বছর শেষে স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ কোটি ৫৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা।

২০২২ পঞ্জিকা বছরে দলটি ১০ কোটি ৭১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৮ টাকা আয় দেখিয়েছে। আর ব্যয় দেখিয়েছে ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৯ টাকা।

২০২১ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল ২১ কোটি ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৬৬ টাকা, তহবিল থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ৮৫২ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছিল।

মহামারীর প্রথম বছর ২০২০ সালে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩৩ টাকা আয় দেখিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আর ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩১ টাকা।

২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল ২১ কোটি টাকা। আর তার আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বছর ২০১৮ সালে ২৪ কোটি টাকা আয় দেখিয়েছিল দলটি।

নির্বাচন কমিশনে আসা পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- দেশের জনগণ আমার কাছ থেকে সরে গেলে আমি মারা যাব। আমরা আপনার মৃত্যু চাই না। তবে আপনার সঙ্গে জনগণ নেই। বহু আগেই আপনার দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অপমৃত্যু হয়েছে। জনগণ আপনার সরকারের অনাচার-অত্যাচারের বিচার চায়।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিলে রিজভী এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, দেশে ভয়াবহ দুঃশাসন চলছে। এ অবস্থায় প্রতিটি মানুষ ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে বাস করছে। কারও কথা বলার স্বাধীনতা নেই। এ কঠিন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে জোর করে বন্দি করে রেখেছে। তাকে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর প্রতিহিংসার কারণে দেশনেত্রী আজ বন্দি। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে সাদকা হিসেবে দুটি খাসি বিতরণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতিমখানায় এবং দুস্থ সাধারণ মানুষের মাঝে এসব খাসির মাংস বিতরণ করা হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা ডা. মুশফিক প্রমুখ।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বার বার আওয়ামী লীগের ওপর আঘাত এসেছে। খণ্ড-বিখণ্ড করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু গণমানুষের দল বলেই বার বার জেগে উঠেছে। ঠিক ফিনিক্স পাখির মতো৷ কারণ আওয়ামী লীগের শক্তি তৃণমূল। তারা কখনো পরাভব মানে না।

রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যেমন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, তেমনি আমাদের দলের প্রতিটি পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির যতটুকু অর্জন সেটি আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো মাথানত করে না। বিভিন্ন সময় নেতারা অনেকে ভুল করেছেন। আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে গেছেন। যেসব নেতা ভুল করেছেন, তারা বোঝেননি। চলে যাওয়ায় হারিয়ে গেছেন। হ্যাঁ, অনেকে ফিরে এসেছেন, আমরা গ্রহণ করেছি। আবার অনেকে এখনো সরকার পতনের আন্দোলন করছেন।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সিলেটে বন্যায় কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতিপূরণে সহায়তা করবে সরকার।

তিনি বলেন, সুরমা, কুশিয়ারা নদী খননের মাধ্যমে সিলেটবাসীকে বন্যা থেকে রক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বছর সিলেটবাসীকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে সিলেট পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরীর ৪২নং ওয়ার্ডে বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তা প্রদানকালে জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন।
 
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতার মসনদে বসে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করে বিএনপি। তাদের কর্তাব্যক্তিরা বিদেশে টাকা পাচার করে আলিশান অট্টালিকা নির্মাণসহ সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছেন। আমরা অভিযোগ করেছিলাম তারেক রহমান এই দেশে অর্থ লোপাট করছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তারেক রহমান তো দূরের কথা একটি দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি খালেদা জিয়া সরকার।

মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি বলেন, শুধু ত্রাণ নয়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। তারই হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বন্যায় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় নিয়মিত খাবার, পানি ও ওষুধ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এর আগে ২০২২ সালের বন্যায় সিলেটবাসীর পাশে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী। আগামী বছর বন্যার কবল থেকে সিলেটকে রক্ষা করতে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার।

সিলেটে ত্রাণ বিতরণকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সরকার। সিলেটে বন্যা দেখা দেওয়ার পর থেকে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে বন্যার খোঁজখবর রাখেন। শেখ হাসিনা সব সময় সিলেটবাসীর পাশে আছেন। আপনারা তার উপর আস্থা রাখুন। সব সময় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পাশে আছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মো. মখলিছুর রহমান কামরান, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ তৌফিক বকস, ৪২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রব।

এ সময় সিলেট সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করবেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, রাজনীতিবিদরাই দীর্ঘদিন ধরে দেশের দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। তারাই দুর্নীতিকে সহায়তা করেছে। আমলাদের দুর্নীতি থেকে তারাই মুনাফা নিয়েছে। দুর্নীতি রোধ করতে হলে রাজনীতিবিদদের টার্গেট করতে হবে। কাউকেই আইনের ঊর্ধ্বে রাখা যাবে না।

বুধবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ধুমধাম করে দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচনের কাজ আগেও দেখেছি। ক্যাসিনো নিয়ে যাদের ধরা হয়েছিল তারা এখন বহাল তবিয়তে আছে। শেষপর্যন্ত কী হবে তা আমরা জানি না। সাধারণ মানুষের ধারণা, সরকারে থেকেই রাজনীতিবিদরা দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করে দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, সরকার এতো ক্ষমতাবান হয়ে গেছে, তারা জবাবদিহিতার স্তম্ভগুলো পাশ কাটিয়ে যেতে পারছে। জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই দেশে অর্থনৈতিক মন্দা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নিরাপত্তার অভাব এবং ভালো দেশের আশা থেকে মানুষ নিরাশ হচ্ছে। 

তিনি বলেন, দুদকের কর্মকাণ্ড নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে। আমরা দেখেছি দুদক সবসময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দিকে বেশি দৃষ্টি দেয়। অনেক বড় রুই-কাতলা সরকারের সঙ্গে থাকছেন, সরকারের আনুকূল্য পাচ্ছেন, তাদের দিকে দুদকের দৃষ্টি কম। সাধারণ মানুষের ধারণা, দুদক ক্ষমতাসীনদের ধরে ধরে ক্লিন সার্টিফিকেট দেয়।  

জিএম কাদের আরও বলেন, রাজনীতিবিদরা দেশের সব কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দেবেন- এটাই স্বাভাবিক। রাজনীতিবিদদের হাতেই দেশের স্টিয়ারিং হুইল থাকে। তারা যেদিকে দেশকে নিয়ে যাবেন, দেশ সে দিকেই যাবে। তারা চাইলেই আমলারা দুর্নীতিবাজ হতে পারে, চাইলেই ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদ হয়ে দুর্নীতিবাজ হতে পারে। এটা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। উদ্ধার পেতে হলে রাজনীতিবিদদের দিকেই দৃষ্টি দিতে হবে। কাউকেই আইনের ঊর্ধ্বে অবস্থান দেওয়া ঠিক না। আইনের শাসন অর্থ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। 

তিনি বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত হলেই জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত হবে। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারভিত্তিক রাষ্ট্রের জন্যই দেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল। আমরা চাই সরকার দুর্নীতি রোধ করতে কাজ করবে- এটাই স্বাধীনতার চেতনা।

রবিবার ২৩ জুন সিডনী ব্লাকটাউন কাডিন্সিলস্থ প্লাম্পটন নেইবারহুড কনভেনশন সেন্টারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন প্রথম বার্ষিক সাধারন সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তাহমিনা মালিক বীনা ও রাশেদুল মোবাশ্বের মিকন সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন।

অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়মিত বাৎসরিক পুনর্মিলনীর আয়োজন করে আসছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত চেষ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে আত্মপ্রকাশের পর এটাই ছিলো সংগঠনটির প্রথম সাধারন সভা ও নির্বাচন। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সেন্টার প্রাঙ্গন হয়ে উঠেছিলো উৎসব মুখর।

নির্বাচন ও ফলাফল গণনা শেষে র্নিবাচন কমিশনার মিসেস খালেদা কায়সার মিনি, সভাপতি তাহমিনা মালিক রহমান বীনা, সহ-সভাপতি লামিয়া আহমেদ লুনিয়া, সাধারন সম্পাদক রাশিদুল মোবাশ্বের মিকন, যুগ্ম সচিব সাবিরা রহমান রিমা, কোষাধ্যক্ষ সানদিদ বিন একলিম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক উমাশংকর বড়ুয়া, ক্রীড়া সম্পাদক শফিকুল হায়দার চৌধুরী এবং কার্যকরী সদস্য পদে মতিয়া পারভীন, মো: নূর-এ-জাননাত নাইম, মো: হাসান শাহ রিপন, নিগার সুলতানা, তৌহিদ হাসান ও আনোয়ার সাদাত মনিকে বিজয়ী ঘোষনা করেন।

সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই নতুন নির্বাচিত কমিটি আগামী দুবছর কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সুষ্ঠু ও সফল নির্বাচন আয়োজনে তাকে সহযোগিতা করার জন্যে সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান। নব-নির্বাচিত সভাপতি তাহমিনা মালিক বীনা বিজয়োত্তর বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার খালেদা কায়সার মিনি ও বিদায়ী সভাপতি সাইফ সিকান্দার ও তার কমিটিসহ সভায় উপস্থিত সকল সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন আজ আমরা এলামনাই এসোসিয়েশনকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে পেরেছি। সকল জাহাঙ্গীরনগরিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই আমাদের চলার পথ সুগম করবে এবং আগামীতেও প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। সন্ধ্যে ৬ টায় সাধারন সভার কার্যক্রম এর সমাপ্তি টানা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে দুই দিনের সরকারি সফর শেষে শনিবার রাতে দেশে ফিরেছেন।  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে তিনি শুক্রবার অপরাহ্নে দিল্লি যান। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ৬টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করে এবং ফ্লাইটটি রাত ৮ টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ভারতের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী কীর্তিবর্ধন সিং এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।

লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার পর ভারতে কোনো সরকার প্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। এছাড়াও এ সফর ছিল ১৫ দিনেরও কম সময়ে ভারতের রাজধানীতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর। 

এর আগে তিনি ৯ জুন মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে ঢাকা ও নয়াদিল্লি আজ দুটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরও সুসংহত করতে সাতটি নতুন ও তিনটি নবায়নকৃত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন ‘ক্রিটিক্যাল’ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন তিনি।

ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলছে। সেখানে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক-নার্স ছাড়া সবার প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ফখরুল এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন।

পরে গণমাধ্যমকে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি আজকে (শনিবার) দুপুর দেড়টায় ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। এখন তিনি সিসিইউতে আছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং চিকিৎসকরা এখন কাউকে ভেতরে যেতে দিচ্ছেন না। আমি তার চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে যেটা বুঝলাম, ডাক্তারদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে, তার অবস্থা বেশ ক্রিটিক্যাল। তারা আজকে (শনিবার) সন্ধ্যায় সম্ভবত আবার বোর্ড মিটিং করবেন এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় কী হবে, তা নির্ধারণ করবেন।

শুক্রবার গুলশানের বাসা ফিরোজায় খালেদা জিয়া হঠাৎ ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়লে রাত সাড়ে ৩টায় অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক একিউএম মহসিনসহ মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা কয়েক দফা বৈঠকে বসে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করেন। মেডিকেল বোর্ডের এসব সভায় লন্ডন থেকে ডা. জোবায়েদা রহমানসহ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. জাহিদ বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ম্যাডামের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে তাৎক্ষণিক যা করণীয় সেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

খালেদা জিয়াকে সর্বশেষ গত ২ মে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই সময় তাকে সিসিইউতে রেখে দুই দিন চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনির বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায়র কারাদণ্ডের সাজা পেয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে যান। পরে একই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিলে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। সেই মাসেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৭ বছরের সাজা হয় তার। সেই থেকে প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন তিনি। পরে মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। 

প্রথমটি হলো, তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। দ্বিতীয় শর্তটি হলো, তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। তখন করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।