রাজনীতি

মুসলমান মানেই টেরোরিস্ট (সন্ত্রাস) নয়, ইন্দিরা গান্ধী-মহাত্মা গান্ধীকে মুসলিমরা খুন করেনি, এটা নিয়ে মিথ্যা প্রচার করে একটা জাতি ও ধর্মকে বদনাম করা হচ্ছে। এই অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কলকাতার মেয়র তথা পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শনিবার (৪ জানুয়ারি) কলকাতা পার্ক সার্কাস ময়দানে মিলন উৎসব অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ফিরহাদ হাকিম বলেন, রাজ্যে একটা ধারণা তৈরি করা হচ্ছে। মুসলিম মানেই উগ্রপন্থী। অতীতে ভারতবর্ষে যে কজন রাজনৈতিক নেতা খুন হয়েছে, ইন্দ্রিরা গান্ধী থেকে মহাত্মা গান্ধী বা অন্যান্য নেতা, কাউকেই মুসলিমরা খুন করেনি। তাহলে কেন শুধু শুধু মুসলিমদের বিরুদ্ধে এভাবে বিদ্বেষ তৈরি করা হচ্ছে?

এরপরই ফিরহাদ হাকিম বলেন, আমি বলছি না, সবাই ভালো। যারা বাংলাদেশে খুন করছে বা যারা উগ্রপন্থী কার্যকলাপ করছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু সব মুসলিম খারাপ নয়। এখানে সাম্প্রদায়িকতার সুড়সুড়ি দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিম সমাজকে খারাপ দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবই।

বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এর আগেই মুসলিম প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন ফিরহাদ, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। গত জুলাই মাসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ফিরহাদ বলেছিলেন, যারা ইসলাম নিয়ে জন্মগ্রহণ করেননি, তারা ‘দুর্ভাগা’। আর সেই বক্তৃতার ভিডিও নিয়ে সরব হয়েছিল বিজেপি। এমনকি মুখ খুলেছিলেন ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবির। তার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিরোধীরাও।

গাজীপরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ৪ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর শনিবার (৪ জানুয়ারি) তাদের আলালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের কোনাবাড়ি থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান হোসেন, গাছা থানার ৩৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নেতা হিমেল সরকার, ৩৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাকিম হোসেন জয় এবং জেলার কাপাসিয়া টোক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান।

তাদের মধ্যে, সোহানুর রহমান সোহানকে শুক্রবার রাতে কোনাবাড়ী থানাধীন আমবাগ আতাউর মার্কেট এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া গাছা থানা পুলিশ শুক্রবার হিমেল সরকার ও মোস্তাকিম হোসেন জয়কে গ্রেফতার করে।  

পুলিশ জানায়, তারা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করার লক্ষ্যে গোপনে মিটিং করার প্রস্ততি নিচ্ছিল। এ ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে নাওজোড় হাইওয়ে থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ মিছিল করার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত শহরের কাউতলী এলাকায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে এ অবরোধের সৃষ্টি করা হয়।

এ সময় দুই কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়ে পুলিশের অনুরোধে সড়ক থেকে সরে দাঁড়ায় শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বেলা তিনটার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাবের সামনে এসে জড়ো হয়। পরে তারা কাউতলী এলাকায় সড়কে গিয়ে অবরোধ করেন। এ সময় অভিযোগ করা হয়, ছাত্রলীগ মিছিল করা মানে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ। তাদেরকে গ্রেফতারে পুলিশের কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, ইতোমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাও দায়ের হয়েছে। কারা কারা জড়িত তাদের সবাইকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রিটিশ এমপি রূপা হকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সেই নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে একটি ভুয়া সংসদ, এমপি এবং স্পিকার তৈরি হয়েছিল। জনগণের কণ্ঠকে জোরপূর্বক দমন করা হয়েছিল। এখন দেশবাসী তাদের কণ্ঠ ফিরে পেয়েছে।

এ সময় ব্রিটিশ এমপি রূপা হক পরবর্তী নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ, সংস্কার উদ্যোগ ও রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ড. ইউনূশের কাছে জানতে চান।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, পরবর্তী নির্বাচনের জন্য ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জনগণ কতটা সংস্কার চায় তার ওপর ভোটের তারিখ নির্ভর করছে।

বৃটিশ এমপি রূপা হক বলেন, বাংলাদেশকে দেখে আমি সত্যিই অনুপ্রাণিত। আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে এই দেশে আসতে চাই।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে ভারতের কোনও অনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও পায়নি ঢাকা, এ কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলে বেলাব থানা সমিতি আয়োজিত এক বার্ষিক সাধারণ সভা ও মিলনমেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার অনুরোধের বিষয়ে এই মুহূর্তে ভারতের নতুন করে কিছু বলার নেই।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। সেদিনই তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা মামলা হয়েছে। রয়েছে গণহত্যার মামলাও। বিচারের প্রক্রিয়ার স্বার্থে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর দিল্লিকে কূটনৈতিক নোট পাঠায় ঢাকা।

বাংলাদেশ নিয়ে আরও নানা প্রশ্ন নিয়ে উত্তর দেন রনধীর জয়সওয়াল। তার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, কেউ যেন ভয়ভীতি ছাড়া কথা বলতে পারে, তা নিশ্চিত করেছে এই সরকার। ভবিষ্যতে সরকারও এই ধারা অব্যাহত রাখবে বলে প্রত্যাশা।

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হেইট থ্রু’ কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) স্টুডেন্টস রাইটস ওয়াচের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হেইট থ্রু কর্মসূচির আয়োজন করে ।

এক বছর আগেও ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যেতো আলোকসজ্জা। শোনা যেতো দলীয় স্লোগান। তবে এবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত হলো সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী এই আয়োজন।

এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি’সহ সংগঠনটির নেতাকর্মীদের ছবিতে জুতা ছুঁড়ে মারে শিক্ষার্থীরা। পরপর ৩ বার সফল হলে পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় কোমল পানীয়।

এরপর, শেখ হাসিনা, সাদ্দাম’সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি এবং গণরুম, ফ্যাসিবাদ ও দাসপ্রথা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড পুড়িয়ে ফেলা হয়। এর মাধ্যমে ছাত্র সংগঠন দ্বারা নির্যাতন প্রথার কবর রচিত হলো বলে মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।

পরে, এই কর্মসূচি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও প্রশাসনে ঘাপটি মেরে আছে। নব্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সদা সতর্ক থাকার ঘোষণাও দেন তারা। পরে টিএসসি’তে শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভে’ জুতা ছুঁড়ে মারে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ।

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্য, ন্যায় বিচার, অহিংসা, মানবতা, উন্নত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, এই শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশ জনতা পার্টি নামে নতুন রাজনৈতি দল আত্মপ্রকাশ করেছে।

গতকাল (শনিবার) রাজধানীর কাওরানবাজারের ইডিবি ট্রেড সেন্টারে এই দলের ঘোষণা করেন দলটির প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইকবাল কবির। এর আগে দলটির চেয়ারম্যান নূর হাকিম তার দলের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন।

স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক নামক রাষ্ট্রটি মূলত- ১৭৫৭, ১৯৪৭, ১৯৪৮, ৫২, ৫৪, ৬৬,৬৯,৭০-য়ে বৈপ্লবিক আন্দোলন ও কর্ম সূচির মধ্যে দিয়ে  পরবর্তীতে ৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন করে। এরপর ৯০, এর গণ আন্দোলন ২০০৬ এর আন্দোলন এবং ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথান, পরবর্তীতে বর্তমান  অবস্থায় উপনীত আমাদের এই বাংলাদেশ। 

গত ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ‘দেশ জনতা পার্টি'র রাজনৈতিক দলের উদ্ভাবনের সূচনা হয়। ঢাকায় ২২/১ তোপখানা রোডের বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ ভবনে।

স্বাধীনতা চেতনার আলোকে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চায়। বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধাশীল এবং মৌলিক মানবধিকার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় আছে এবং কর্মসংস্থান পূর্ণ মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গিকারবদ্ধ। দেশের নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার, নাগরিক অধিকার, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থানের অধিকার বাস্তবায়নে সক্রিয় থাকবে। ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রসাশনিক কার্যক্রম ও সেবা  উন্নয়ন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করিতে চায়।   

এরপর দেশ জনতা পার্টির ১০৫ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে চেয়ারম্যান করা হয় মো. নূর হাকিমকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় ইদ্রিস আলী নান্টুকে।

আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ খাতকে ব্যবসার খাত এবং লুটপাট করার মেশিন বানিয়েছিলো বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। দাবি করেন, আওয়ামী সরকার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ খাত থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন টুকু।

তিনি বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এক লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট করে পাচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠরা। যার পেছনে সামিটসহ পাঁচটি কোম্পানি জড়িত বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। সরকারকে দ্রুত এসব চুক্তি প্রকাশ করতে হবে বলেও দাবি করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।

এসময় বিএনপি মহাসচিব জানান, ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের সকল চুক্তি রিভিউ করবে বিএনপি।

ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ঠেকাতে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা এবং দুইবারের বেশি যেন কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন— তা সুপারিশ করবে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান যেন একই ব্যাক্তি না হন, এমন প্রস্তাবও থাকছে সুপারিশে। রাজনৈতিক ঐক্যমত না থাকায় সংবিধান পুনর্লিখনের পরিকল্পনা থেকেও সরে আসার কথা জানালেন কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রিয়াজ।

তার নেতৃত্বাধীন কমিশন এরইমধ্যে রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে সংবিধান সংশোধনের সুপারিশের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে বলে জানান আলী রিয়াজ।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, যথাযথভাবে যেন সংবিধান সংস্কার করতে পারি…. সংবিধানে যে সমস্ত পদ এখন একনায়ক প্রতিষ্ঠা করে, সেগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের মাধ্যমে বন্ধ করা, যাতে আরেকজন শেখ হাসিনা-স্বৈরশাসক না হন। গত ১৬ বছরে আমরা যেটা দেখতে পেয়েছি, তা হলো ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ। এটি কেবল তো ১৬ বছরই না, তখন বেশি নগ্নভাবে দেখতে পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এককেন্দ্রীকরণের যে সমস্যা, আমাদের সেটি মোকাবেলা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, জবাবদিহিতা তৈরি করা। যাতে করে প্রধানমন্ত্রী কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তি, তিনি যেন এমন ক্ষমতার অধিকারী না হোন, যাতে তাকে প্রশ্ন করা যাবে না। সেই প্রশ্নগুলো করার জন্য ক্ষমতার ভারসাম্যের বিষয়টি আসছে।

অধ্যাপক আলী রিয়াজের মতে, বিদ্যামান সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী একক ক্ষমতার অধিকারী। এতে জবাবদিহিতা নেই, সৃষ্টি হয়েছে স্বৈরতন্ত্রের।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী একাধিক পদ আকড়ে ধরেন। ক্ষমতার এই ভারসাম্য শুধু রাষ্ট্রপতির সঙ্গে না করে সংসদের মধ্যেও করতে হবে। কেউ যেন দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হন, সেই ব্যাপারে আমরা ঐক্যমত দেখতে পেয়েছি।

বিদ্যমান সংবিধানের বিতর্কিত ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলেরও সুপারিশ করবে এ কমিশন।

প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, সংসদ সদস্যদের পায়ে বেড়ি লাগানো এবং দল ও ব্যক্তির অনুগত হয়ে পড়া থেকে বের করার ব্যাপারে কোনো রকম দ্বিধা আমি কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কাছ থেকে দেখতে পাইনি। সিভিল সোসাইটি থেকেও দেখতে পাইনি। সংবিধান বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকেও পাইনি। তাহলে এটা পরিবর্তন করতে হবে। আমরা পরিবর্তনের সুপারিশ করবো।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেছিল। উচ্চ আদালতের রায়ে আবারও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এই বিধান ফিরেছে। সংবিধান সংস্কারের সুপারিশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও থাকছে। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচন অন্তবর্তী সরকারের অধীনেই হবে বলে জানিয়েছেন আলী রিয়াজ।

তিনি বলেছেন, এই সরকারের বৈধতা যেমন আইনি, তেমনি এই সরকারের বৈধতার সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে নৈতিকতা এবং সেটা যুক্ত আছে গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে। এই প্রক্রিয়াটা অতীতে যেমন হয়েছে, তেমনই হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কারণ, একটা নতুন বাস্তবতার মধ্যে আছে সবাই। এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ফলে ওইভাবে বিবেচনা করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, সরকারের মেয়াদ, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ সহ বেশকিছু বিষয়ে মতামত পেয়েছে কমিশন। এসব বিষয় প্রস্তাবে থাকতে পারে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে।

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়া অস্বাভাবিক নয়— এ মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডে নিহতের পরিবারসহ আহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জোর আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেছেন, সচিবালয়ের মতো স্পর্শকাতর ভবনে ভয়াবহ আগুন এবং আগুনে একজনের মৃত্যু ও ২-৩ জন আহত হওয়ার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে ভস্মীভূত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়া অস্বাভাবিক নয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।