গত ৩ দশক পর চাল আমদানি শূন্য
গত দুই মৌসুম দেশে ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এজন্য গত অর্থবছর শুরু থেকে চাল আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়। তবে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম বাড়তে থাকায় পরবর্তীতে সীমিত আকারে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। যদিও তাতে সাড়া দেননি কোনো আমদানিকারক। ফলে বিদায়ী অর্থবছর কোনো চালই আমদানি হয়নি। গত তিন দশকের মধ্যে এবারই প্রথম এ ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছর মাত্র চার হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছিল। এটি ছিল তিন দশকের মধ্যে চাল আমদানির সর্বনি¤œ রেকর্ড। যদিও সদ্যবিদায়ী অর্থবছর চালের ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা গেছে গম আমদানির ক্ষেত্রে। টানা তিন বছর কমার পর গত অর্থবছর গম আমদানি বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণ। বিদায়ী অর্থবছর এ খাদ্যশস্যটি আমদানি বেড়েছে প্রায় ৭৬ শতাংশ। এতে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গম আমদানির রেকর্ড হয়ে যায় ২০২৩-২৪ অর্থবছর।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, তিন দশক আগে ১৯৯০-৯১, ১৯৯১-৯২ ও ১৯৯২-৯৩ অর্থবছর টানা তিন বছর বাংলাদেশকে কোনো চাল আমদানি করতে হয়নি। তবে ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছর থেকে বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতি বছরই কম-বেশি চাল আমদানি হয়েছে। আর গম প্রতি বছরই বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়। এ খাদ্যশস্যে কখনোই বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল না। তবে ২০১৯-২০ সালের পর বিদায়ী অর্থবছর গম আমদানিতে বড় উল্লম্ফন হয়েছে।
বিদায়ী অর্থবছর গম আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৮ লাখ আট হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয় প্রায় সাত লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন। আর বেসরকারি খাতে আমদানি করা হয় ৬০ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছর গম আমদানি হয়েছিল ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছর গম আমদানি বেড়েছে প্রায় ২৯ লাখ ৩৩ হাজার টন। ২০১৯-২০ অর্থবছর গম আমদানি হয়েছিল ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার মেট্রিক টন।
তথ্যমতে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতি বছর চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৮-০৯ অর্থবছর আমদানি করা হয়েছিল পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন। ২০০৯-১০ অর্থবছর তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৮৮ হাজার মেট্রিক টন। পরের অর্থবছর এক লাফে চাল আমদানি বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টনে। ২০১১-১২ অর্থবছর তা আবার কমে দাঁড়ায় পাঁচ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টনে।
২০১২-১৩ অর্থবছর তা আরও কমে দাঁড়ায় ২৬ হাজার মেট্রিক টন। পরের দুই অর্থবছর চাল আমদানি আবার দ্রুত বাড়ে। এর মধ্যে ২০১৩-১৪ অর্থবছর আমদানি হয় তিন লাখ ৭১ হাজার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছর ১৪ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছর চাল আমদানি আবারও কমে। ওই দুই অর্থবছর চাল আমদানি করা হয় যথাক্রমে দুই লাখ ৫৬ হাজার ও এক লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন।