রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না
বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিকল্প উপায় হিসেবে ডলারের খোঁজে সরকার। এক-দেড় বছর ধরে ডলার প্রাপ্তির প্রধান উৎস রপ্তানি আয়, প্রবাসী আয় ও উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি ঋণ। বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ খুবই কম। ফলে ঘাটতি মেটাতে বাজেট সহায়তার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। তারপরও গত এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার কোটি বা ১০ বিলিয়ন ডলার। মূলত প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে শ্লথগতি এবং বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়ে যাওয়ার কারণেই রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে।
এ অবস্থায় ডলার খরচের চাপ কমাতে চীনের কাছ থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান ঋণ চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু চীনের ঋণের উদ্যোগটি আপাতত আলোর মুখ দেখেনি। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে এ নিয়ে একটি ইতিবাচক ঘোষণার প্রত্যাশা ছিল। এ জন্য দুই পক্ষের মধ্যে দুই মাস ধরে দর-কষাকষি চলছিল। প্রধানমন্ত্রীর সফরে আলোচিত এই ঋণের বিষয়ে ঘোষণা না থাকায় রিজার্ভ ধরে রাখার সমস্যা আপাতত থেকেই গেল। ফলে বাজেট সহায়তা পাওয়ার ভরসা এখন বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি)।
২০২৩ সালের ৩০ জুন দেশের রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি বা ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুসারে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন সেই রিজার্ভ কমে হয়েছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি বা ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদেরাও মনে করেন, ভবিষ্যতে রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে; ডলারের চাহিদাও বাড়বে। কারণ, সরকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চায়। এ জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি উৎপাদন বাড়াতে হবে। ফলে আমদানি বাড়বে, যা ডলারের চাহিদা বাড়িয়ে দেবে। আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধও বাড়ছে।