অপরাধ

বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৩৫) দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুর্বৃত্তদের মধ্যে লেদু নামের একজন গণপিটুনিতে নিহত হন।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদরের গোকুল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মিজান গোকুল উত্তরপাড়ার আফসার আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান রাতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গোডাউন এলাকায় কয়েকজনের সঙ্গে বসেছিলেন। রাত ৯টার দিকে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে দুর্বৃত্তরা এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা মিজানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মোটরসাইকেলযোগে চলে যায়। পরে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিজান খুনের ঘটনায় দুর্বৃত্তদের মধ্যে লেদু নামের একজনকে পিটিয়ে আহত করে জনতা। পরে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে আহত লেদুকে মারধর করে মিজানের সমর্থকরা। এসময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে যমুনা টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরোপ্রধান মেহেরুল সুজনসহ অন্তত চারজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বলেছেন, বাংলাদেশের অনেক বড় বড় অপরাধী বিপুল পরিমাণ অর্থ কানাডায় পাচার করে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে।

এ বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে কানাডার হাইকমিশনার জানালেন, অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং ও সময়সাপেক্ষ। তবে অসম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব ও চিঠি প্রেরণের অনুরোধ করেন তিনি।

কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পাচারের অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়। সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, কানাডাসহ বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, কৃষি খাতে সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে হাইকমিশনার কানাডাসহ বিদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চান। জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে বিদেশিদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। আমরা তাদের জন্য পরিপূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে উন্নতি ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব শিগগিরই আরও সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।

সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে কানাডার হাইকমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী মিয়ানমারের নাগরিকসহ সেখানে কাজ করা দেশি-বিদেশি এনজিও কর্মী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কানাডাতে কিছু রোহিঙ্গার পুনর্বাসনের অনুরোধ করেনও তিনি।

এ সময় বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কারে কানাডার সহায়তা চান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ নিয়ে কানাডার হাইকমিশনার বলেন, পুলিশ প্রশিক্ষণে কানাডার সহযোগিতা বিষয়ক একটি প্রকল্প বাংলাদেশে চালু রয়েছে। এটিকে সম্প্রসারণের মাধ্যমে এ নিয়ে কানাডা আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। আর বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তরে কানাডার অর্থায়নে ‘কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নে উপদেষ্টার সহযোগিতা চান দেশটির হাইকমিশনার।

পোশাক কারখানায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উসকানিদাতা ছাত্রলীগ নেতা ইসতিয়াক আহম্মেদ হৃদয়কে (২৪) নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেত্রকোণা জেলা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত হৃদয় ছাত্রলীগের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা কমিটির শিক্ষা ও পাঠ্যক্রম বিষয়ক সম্পাদক। সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হন ইসতিয়াক।

পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, গার্মেন্টস সেক্টরে নাশকতার মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উসকানিদাতা ছাত্রলীগ নেতা ইসতিয়াক আহম্মেদ হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও পাচাররোধে করণীয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)-এর সাথে বৈঠকে বসেছে দুদক। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এফবিআই লিগ্যাল অ্যাটাচে রবার্ট ক্যামেরুনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুদকের প্রধান কার্যালয় সেগুনবাগিচায় আসে।

দলটি দুদকের মানি লন্ডারিং ও লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসেছে। সভায় মানিলন্ডারিংরোধে করনীয়, কারিগরি সহায়তা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের টাকা ফেরাতে টাস্কফোর্স কীভাবে এফবিআইকে পাশে পাবে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

যৌথ টাস্কফোর্সে তাদের সরাসরি অংশগ্রহণ থাকবে নাকি পরামর্শক হিসেবে থাকবে তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া এফবিআইয়ের সঙ্গে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করায় জোর প্রচেষ্টা থাকবে বলে জানা গেছে।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও পাচাররোধে করণীয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)-এর সাথে বৈঠকে বসেছে দুদক। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এফবিআই লিগ্যাল অ্যাটাচে রবার্ট ক্যামেরুনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুদকের প্রধান কার্যালয় সেগুনবাগিচায় আসে।

দলটি দুদকের মানি লন্ডারিং ও লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসেছে। সভায় মানিলন্ডারিংরোধে করনীয়, কারিগরি সহায়তা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের টাকা ফেরাতে টাস্কফোর্স কীভাবে এফবিআইকে পাশে পাবে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

যৌথ টাস্কফোর্সে তাদের সরাসরি অংশগ্রহণ থাকবে নাকি পরামর্শক হিসেবে থাকবে তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া এফবিআইয়ের সঙ্গে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করায় জোর প্রচেষ্টা থাকবে বলে জানা গেছে।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও পাচাররোধে করণীয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)-এর সাথে বৈঠকে বসেছে দুদক। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এফবিআই লিগ্যাল অ্যাটাচে রবার্ট ক্যামেরুনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুদকের প্রধান কার্যালয় সেগুনবাগিচায় আসে।

দলটি দুদকের মানি লন্ডারিং ও লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসেছে। সভায় মানিলন্ডারিংরোধে করনীয়, কারিগরি সহায়তা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের টাকা ফেরাতে টাস্কফোর্স কীভাবে এফবিআইকে পাশে পাবে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

যৌথ টাস্কফোর্সে তাদের সরাসরি অংশগ্রহণ থাকবে নাকি পরামর্শক হিসেবে থাকবে তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া এফবিআইয়ের সঙ্গে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করায় জোর প্রচেষ্টা থাকবে বলে জানা গেছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কমিশনের বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুদক কমিশনার জহুরুল হক স্বাক্ষরিত মামলা প্রত্যাহারের অনুমোদনপত্র আদালতে দাখিল করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেন এ বিষয়ে দুদকের আবেদনের শুনানি করে খালিদীকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির মৌখিক আদেশ দেন। আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিচারক সেই লিখিত আদেশে সই করেন।

মামলা প্রত্যাহারের আবেদনে বলা হয়, ক্রিমিনাল ‘ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৫৮ এর ১০ (৪) ধারা ও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৫ ধারার বিধানের আলোকে দুদক এ মামলার প্রসিকিউশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহারসহ তাদের কোনো সম্পদ ক্রোক, অবরুদ্ধে ও বিদেশ গমনের নিষেধাজ্ঞা থাকলে তার সকল দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া প্রয়োজন।

বিচারক রোববার তার লিখিত আদেশে বলেন, তৌফিক ইমরোজ খালিদীকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হল। মামলা প্রত্যাহার হওয়ায় তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিদেশযাত্রায় আর কোনো বাধা নেই।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তাদের আমলে দায়ের করা মামলা থেকে রেহাই ও জামিন দেয়া হচ্ছে রাজনীতিবিদসহ দেশের বিশিষ্টজনদের। এরই ধারাবাহিকতায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা প্রত্যাহার করে নিতে আবেদন করে দুদক।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩০ জুলাই মামলাটি দায়ের করেন। গত ২৫ এপ্রিল এই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

খালিদীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তিনি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন। তিনি আদালতে বলেছেন, এ অভিযোগ এতোটাই হাস্যকর, যুক্তিহীন ও ভিত্তিহীন যে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতাকে তা গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

রিমান্ড চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। এমন পরিস্থিতিতে রিমান্ড শেষ না করেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে, গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডি থানার মোতালেব হত্যা মামলায় তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

গত ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্য রাতে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে যৌথবাহিনী। এরপর আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ধানমন্ডির জিগাতলায় মোতালেব নামে এক কিশোর নিহতের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এই মামলার ২৩ নম্বর আসামি শাজাহান খান। তিনি ছাড়াও মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের বেশকয়েকজন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শাজাহান খান মাদারীপুর-২ আসন থেকে টানা আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একই আসন থেকে পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৯ সালে শাজাহান খানকে প্রথম নৌপরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। মন্ত্রী থাকা সময় তার বিরূদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তবে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে তিনি সবচেয়ে বিতর্কিত হন। সেসময় রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর বাসচাপা নিয়ে মন্তব্য করেন শ্রমিক ফেডারেশনের এই কার্যকরী সভাপতি।

ফরমায়েশি সাজা দেয়ার নির্দেশ ছিল; হুমকি আর চাপ দেয় রাষ্ট্রযন্ত্র। কিন্তু, তিনি তা মানেননি; খালাস দিয়েছেন আসামিকে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ফলাফল- প্রাণভয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। দেশান্তরী হয়েও রক্ষা হয়নি যেন। এখন বিগত সরকারের পতনের পর দেশে ফেরার আর দেশসেবার আকুলতা তার কণ্ঠে। বলছি, বিচারপতি মোতাহের হোসেনের কথা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অর্থ পাচার মামলায় খালাস দেয়ায়; যাকে বরণ করতে হয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ। কী ঘটেছিল সেসময় এনিয়ে ভার্চুয়ালি যমুনা টেলিভিশনের সাথে কথা বলেছেন অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোতাহের হোসেন অর্থ পাচার মামলায় বেকসুর খালাস দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। সেসময়ের কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যেন জানান দিয়েছিলেন নিজের কঠোর অবস্থানের। কেবল ন্যায়বিচার করতে গিয়ে বদলে যায় তার জীবন।

তারেক রহমানকে খালাস দেয়ায় কী হয়েছিল সেসময়? মামলার রায়ের আগেই বা কী ঘটেছিল? বিচারক মোতাহের হোসেন জানান, তিনি কখনও ছিলেন পিস্তলের মুখে। তৎকালীন আইনমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও সাবেক আইন সচিব জহিরুল হক দুলালের নির্দেশনায় ফরমায়েসী রায় ঘোষণার জন্য চাপ দেয়া হয় তাকে।

ঘটনার পূর্বের কাহিনী বর্ণনা দিতে গিয়ে ফিনল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা বিচারক মোতাহের হোসেন শোনালেন ভয়ঙ্কর সেসব ঘটনা।

তিনি বলেন, তদানীন্তন ঢাকার জেলা জজ, মেট্রোপলিটন সেশন জজ তারা আমার চেম্বারে এসে হুমকি দেয়। বলে, আপনি যদি তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে চেম্বার থেকে বের হন, তাহলে কিন্তু আপনার লাশ আর পাওয়া যাবে না। গুম হয়ে যাবেন। তৎকালীন আইনসচিব শেখ জহিরুল হক ও মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা (যুগ্ম সচিব) তারা নানাভাবে অস্ত্রের মুখে হুমকি দিতো আমাকে। একবার বন্দুক বের করে আমার বুকে ধরে, বলে একবার ট্রিগার চাপলে ১০টি গুলি আপনার বুক ভেদ করে চলে যাবে। আপনি তারেক রহমানকে সাজা দেবেন কিনা বলেন?

এই বিচারকের মতে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সেই মামলার স্বাক্ষ্যপ্রমাণ অনুযায়ী সাজা দেয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দিতে, লিখিত রায়ে স্বাক্ষর করার চাপও ছিল মোতাহের হোসেনের ওপর। ব্যক্তিগতভাবে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়ার মামলার বিচার করা এই বিচারকের কখনও সাক্ষাৎ বা আলাপ হয়নি তারেক রহমানের সাথে। শুধু দৃঢ় অবস্থান ছিল ন্যায়বিচার নিশ্চিতে।

বিচারক মোতাহের হোসেন বলেন, সরকারি স্বাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য দিয়ে কোনোদিন কোনো আসামীকে দোষীসাব্যস্ত করা যায় না। তার বিপক্ষে স্বাক্ষীপ্রমাণ ছিল না। এরকম একটি মামলায় তিনি নিরীহ, তাকে প্রধানমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রীর হুকুমে শাস্তি দেবো এটি আমার বিবেক সায় দেয়নি। আমি নিশ্চিত ছিলাম, আমি সত্য বিচার করবো ও ন্যায়সঙ্গত রায় দেবো।

তবে ফরমায়েসি রায় না দেয়ার খেসারতও দিতে হয়েছে মোতাহের হোসেনকে। দেশ ছাড়তে হয় প্রাণভয়ে। প্রথমে মালয়েশিয়া, এরপর সেখান থেকেও বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার ভয়ে পালিয়ে যেতে হয় নেপালে। আর ২০২২ সালে ছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নেন ফিনল্যান্ডে।

বিষয়টি নিয়ে বিচারক মোতাহের হোসেন বলেন, মালয়েশিয়া থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করার জন্য ৩৪জন গোয়েন্দা ও চারজন মন্ত্রী দেশটিতে যায়। এই সংবাদ পাওয়ার পর আমি বাসায় না গিয়ে ৫-৭শ মাইল দূরে চলে যাই। জঙ্গলে গিয়ে ১৬ দিন বাস করি।

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর আশাবাদী বিচারক মোতাহের হোসেন। দেশ ফিরতে চান দ্রুত সময়ে। তিনি বলেন, দেশ ছাড়ার পর আইন ও সংবিধান নিয়ে গবেষণা করছি। যদি দেশের সেবা করার ও আইন সংস্কারের কাজের সুযোগ পাই তাহলে দেশে ফিরে আবারও সেবা করতে চাই।

প্রসঙ্গত, তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে বিচারপতি মোতাহের হোসেনের দেয়া সেই রায়ের পর ২০১৪ সালে দুদক তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে। ৮ বছর পর করে মামলাও। সম্প্রতি এই মামলা থেকে খালাস পান আলোচিত এই অবসরপ্রাপ্ত বিচারক।

বিডিআর বিদ্রোহের ‘আসল রহস্য’ এখনও উন্মোচিত হয়নি বলে দাবি করেছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ। এ ঘটনার পুনঃতদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবিও জানান তিনি।

আলোচিত ‘ওয়ান-ইলেভেন’র প্রধানতম চরিত্র মঈন ইউ আহমেদ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে নিজের এসব ভাষ্য তুলে ধরেন। ওই ঘটনায় এবারই প্রথম কথা বললেন বিদেশে অবস্থানরত মঈন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মঈন ইউ আহমেদ। 

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মঈন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দেই, তখন আমাকে বলা হয়, যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী? এই তদন্ত করতে সরকারের কাছ থেকে যে সাহায্য প্রয়োজন, তা আমরা পাইনি।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরেও প্রকৃত ঘটনা জানতে পারেনি দেশের মানুষ। হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে বিগত বছরে শুধু সাবেক সরকারের কথা শুনতে হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা অনেক কিছুই জানা নেই। জনগণও জানতে পারেনি।

বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করে জড়িতদের বের করতে সক্ষম হবেন এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেসময় অনেকের অসহযোগিতা এবং অনেকে জেলে থাকায় তদন্তের কাজ ঠিকভাবে করা যায়নি। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ ঘটনার পুনঃতদন্ত করার আহ্বান জানান তিনি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।