অপরাধ

র‍্যাব বিলুপ্ত করা হলে সে সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। পূর্বে র‍্যাব কতৃক ঘটে যাওয়া নেতিবাচক কাজের জন্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনাও করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় র‍্যাবের বিরুদ্ধে আয়না ঘরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গুম-খুন কমিশন যেহেতু এটা নিয়ে কাজ করছে সেজন্য এসব আয়নাঘর অক্ষত রাখা হয়েছে। এখন থেকে র‍্যাবের কোনো সদস্য ব্যক্তিগত স্বার্থে জড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন র‍্যাব প্রধান।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অভিযোগ আছে। তবে সামনে এমন ঘটনা আর হবে না। র‍্যাব কর্তৃক যারা গুম-খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেসব পরিবারের কাছে ক্ষমাও চান র‍্যাব ডিজি। বলেন, এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে র‍্যাব দায়মুক্ত হবে।

শহিদুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে জনপ্রত্যাশা এখনও পূরণ হয়নি। এসময় গত চার মাসে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাদাবাজির অভিযোগে ১৬ র‍্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান র‍্যাব ডিজি। এছাড়া জুলাই-আগস্টের মামলায় র‍্যাব ৩৫৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বলেও জানানো হয়।

সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৭ বছরের সাজা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের সাজাও স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর আগে, ৫ ডিসেম্বর অর্থপাচারের এই মামলায় গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে খালাস দেয় হাইকোর্ট।

২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ১২ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশি টাকায় ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। মামুনকে খালাস দেয়ার কারণে মামলার আইনি সুবিধা পেয়ে তারেক রহমানের সাজাও স্থগিত করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার ওপর হামলার অভিযোগে জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও নড়াইল-২ আসনের সাবেক এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও তার বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপনসহ ২৯৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে লোহাগড়া থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার মূখ্য সংগঠক কাজি মো. ইয়াজুর রহমান বাবু।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল শিকদার নীল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ মশিয়ুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল হক রোম, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল আমীর লিটু।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মী ও গুন্ডা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, খুনি, অস্ত্রধারী ব্যক্তি। গত ৪ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার কর্মসূচি চলাকালে উপজেলার লোহাগড়ার সিএন্ডবি চৌরাস্তা মোড়ে ছাত্রজনতার ওপর হামলা করে বেধড়ক মারপিট করে অভিযুক্তরা। বাদীসহ ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থীকে রামদা, বাঁশের লাঠি, রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে মামলা বিবরণীতে বাদী উল্লেখ করেন।

লোহাগড়া থানার ওসি মো. আশিকুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই মামলায় ইতোমধ্যে দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মায়ের ডাক সংগঠনের আয়োজনে আওয়ামী শাসনামলে গুম-খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে গণজমায়েত কর্মসূচি।

আয়োজনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার আগে থেকেই তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হন। গণজমায়েত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

মূলত জুলাই গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, ক্রসফায়ার, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, মোদিবিরোধী আন্দোলন, ডিএসএসহ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী জুলুমের প্রতিবাদ জানাতে ভুক্তভোগীরা গণজমায়েতে অংশ নেন।

সমাবেশে সারাদেশ থেকে ভুক্তভোগী ব্যক্তি তাদের অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ এবং বিচারের দাবি জানাচ্ছেন।

সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার ইস্যুতে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। সেগুলো ধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরির পেছনে অন্যতম কারণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভুল তথ্য দর্শকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। যার ফলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পাশাপাশি একটি সংগঠনের নামেও। আর এতে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে ভুল বোঝাবুঝির জায়গায় পতিত হচ্ছে বাংলাদেশ, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে ইসকনও। দ্য উইক ম্যাগাজিন ইন্ডিয়া-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন ইসকনের কেন্দ্রীয় আধ্যাত্মিক নেতা ও মুখপাত্র দেবশঙ্কর বিষ্ণু দাস।

চিন্ময়ের পরিচয় নিয়ে প্রচলিত একটি ধারণার সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দেন দেবশঙ্কর। তিনিও জানান, চিন্ময় প্রায় ৬ মাস আগে ইসকন থেকে বহিস্কৃত হন। পরবর্তীতে নিজের সংগঠনের প্রতিই মনোযোগী ছিলেন। তাই যে ব্যক্তি একটি শান্তিপ্রিয় ধর্মীয় সংগঠন থেকে বিতাড়িত, তার সম্পর্কে তথ্য প্রচারে ‘ইসকন’ শব্দটা ব্যবহার না করার দিকেই দৃষ্টিপাত করেন দেবশঙ্কর। এতে ১১০টি দেশে শান্তির পক্ষে কাজ করা ইসকনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।

চট্টগ্রামে চিন্ময়ের পক্ষে এক আইনজীবী লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলে, তিনি বাধার মুখে পড়েন- এমন কিছু তথ্য চাউর হয়েছে বলে জিজ্ঞাসা করা হলে দেবশঙ্কর জানান, এটি সঠিক নয়। যারা এ ধরণের তথ্য প্রচার করেছে তারা ভুল বার্তা দিয়েছে।

শুধু চিন্ময়ই না, যেকোনো মানুষ তা যে ধর্ম-বর্ণের হোক, তার আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার পাওয়ার পক্ষে কথা বলেন দেবশঙ্কর। তবে যেহেতু চিন্ময় দাস ইসকনের সদস্য নন, তাই ইসকনের কাছ থেকে তিনি সাহায্যপ্রার্থী হতে পারেন না বলেও মনে করেন ধর্মীয় সংগঠনের এ মুখপাত্র।

এসময় বাংলাদেশে ইসকনের যাত্রা ও কর্মকাণ্ডে জোরপূর্বক কোনো শিথিলতা আনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে দেবশঙ্কর জানান, এটা হাস্যকর। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে শুরু করে সেখানকার কেউ এক্ষেত্রে কোনো বাধা দেয়নি। ১৪০টি সেন্টারে তারা আগের মতোই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান।

বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যু নিয়ে বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়ের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে এখন অপতথ্য খুব দ্রুত ছড়ায়। তবে মূলধারার গণমাধ্যমকে খবর বা তথ্য প্রচারে আরও সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ইসকনের এই কেন্দ্রীয় নেতা। এসময় কিছু মানুষও ইচ্ছে করে গুজব তৈরি করছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।

প্রতিটি দেশের অভ্যন্তরীণ নিজস্ব আইন আছে উল্লেখ করে দেবশঙ্কর জানান, আমরা নিয়মগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়কে এ বিষয়কে মনে রাখতে অনুরোধ করেন তিনি।

চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে এক ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী মামলাটি দায়ের করেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিলেও তাৎক্ষণিক কোনো আদেশ দেননি। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪৫০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী অভিযোগ করেন, গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠনোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় দাড়ি-টুপি দেখে চিন্ময়ের অনুসারীরা তার ওপর হামলা করেন। এতে তার মাথায় ও হাতে গুরুতর জখম হয়।

এদিকে, মামলা দায়েরের পর চিন্ময়সহ বাকি আসামিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন আইনজীবীরা।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের একজন আইনজীবী নিহত হন। সেদিন পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫টি মামলা দায়ের হয়েছে।

গত সাড়ে ১৫ বছরে আর্থিক খাতে বিস্ময়কর দুর্নীতি করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ৩ টার্মে দেশের জনগণ দেখেছে ছোট, মাঝারি এবং মেগা প্রকল্পের হিড়িক। কিন্তু এসব প্রকল্পের অনেকগুলো নিয়ে প্রশ্ন ছিল জনমনে। অভিযোগ ছিল বাস্তবতা ও জনস্বার্থ বিবেচনা না করে কেবল লুটপাটের জন্য এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

দেখা গেছে, বেশিরভাগ উন্নয়ন প্রকল্পে হয়েছে পুকুর চুরি। রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, ঘুষ এবং মূল্যস্ফীতির কাছে হার মেনেছে বাজেট। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় একাধিক সময়ে অস্থিতিশীল হয়েছে পণ্যের বাজার।

অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতের লুট হওয়া অর্থ দিয়ে তৈরি করা যেত ২৪টি পদ্মা সেতু। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সংস্কারমূলক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে তছনছ হওয়া অর্থনীতিকে টেনে তুলতে হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পে নয়-ছয়ের কারণে ব্যয় বেড়েছে শতকরা ৭০ ভাগ। প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, বাস্তবায়ন না হওয়ার আগেই অর্থ ছাড়, নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে পাথর স্থাপন বা ফিতা কেটে তছরুপ করা হয় অর্থ। অর্থাৎ দৃশ্যমান একটি আনুষ্ঠানিকতা জানান দেয়াই ছিলো এসবের মূল লক্ষ্য।

সম্পদ ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে প্রকল্পগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিলো, সেসব প্রকল্পে গুরুত্ব দেয়া হয় নি। প্রকল্পগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আসল উদ্দেশ্য ছিলো কোনো গোষ্ঠিকে সেখান থেকে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয়া। একাধিকবার একই প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়িয়ে সেই বিশেষ গোষ্ঠিকে সুবিধা করে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক কৌশলগুলোকে পুনরায় ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এর ফলে যেসব জায়গায় বড় মাপের ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হতে পারে। ব্যাংক খাতে অর্থ লুটপাট বন্ধে সেগুলোর আগের পরিচালনা পর্ষদও ভেঙে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে আরও উঠে আসে ব্যাংক খাতের হরিলুট অবস্থা। বলা হয়, ব্যাংক খাত ভঙ্গুর করেছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এই খাতে লোপাট হওয়া অর্থে ১৪টি মেট্রোরেল অথবা ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব। ঋণ খেলাপি এবং আর্থিক অনিয়ম নষ্ট করেছে আর্থিক স্থিতিশীলতা। ব্যহত হয়েছে উৎপাদনশীলতা। বছরে পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা।

রিপোর্টে বলা হয়, পদ্ধতিগত কর ফাঁকি, ছাড়ের অপব্যবহার এবং দুর্বলভাবে কর প্রশাসন পরিচালনায় রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে রাষ্ট্র। গেল ১ দশকে ভিসা ক্রয়, রিক্রুটিং এজেন্সির হুন্ডিতে পাচার হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। যা দিয়ে ৪টি ঢাকা এমআরটি-৬ (মেট্রোরেল) উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ সম্ভব।

উল্লেখ্য, সামাজিক নিরাপত্তা জাল তৈরী করার কথা বলা হলেও, সুরক্ষা কর্মসূচির বাইরে ছিল প্রকৃত সুফলভোগী। দলীয় বিবেচনার পাশাপাশি তালিকা প্রণয়নে হয়েছে ব্যাপক অনিয়ম।

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় নিয়ে কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকে তাকে ফের পুন:তদন্তের জন্য আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি। দলের স্হায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ মনে করেন স্বাধীন বিচারলয় থেকে ন্যায় বিচারই পেয়েছেন তারেক-বাবর।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।

হাফিজ বলেন, পুন:তদন্তের জন্য গ্রেনেড হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কেউ আদালতে পুন:তদন্তের জন্য আবেদন করলে বিএনপি সহযোগিতা করবে।

তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলার পেছনে তৎকালীন বিএনপি সরকারের কোন সম্পৃক্ততা নেই। বরং পাশের দেশের সহযোগিতায় ধর্মীয় উগ্রবাদী কোন সংগঠন এই হামলা ঘটাতে পারে।

আরও চারটি মামলায় ন্যায় বিচার পাওয়ার পরই তারেক রহমান দেশে ফেরার প্রস্তুতি নেবেন বলেও জানান হাফিজ উদ্দিন আহমদ।

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যান তারেক রহমাহসহ সকল আসামিকে খালাস দেয় উচ্চ আদালত। পাশাপাশি এই মামলার অভিযোগপত্রও অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দর থেকে ১২ কেজি স্বর্ণসহ এক মালয়েশিয়ান নাগরিককে আটক করেছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে তাকে আটক করা হয়।

আটককৃতের নাম চো ইয়ো চার। আটকের পর তাকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে একটি ফ্লাইটে ঢাকায় নামেন ওই যাত্রী। এরপর ভিসা অন এরাইভাল এলাকায় এলে তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় এনএসআই সদস্যরা তাকে নজরদারি করেন। পরে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়।

পরবর্তীতে আর্চওয়ে মেশিনে তার শরীর স্ক্যান করলে শার্টের নিচে ভেস্টের ভেতর স্বর্ণের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। পরে তার শরীরে তল্লাশি চালিয়ে ১২টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। যার প্রতিটির ওজন ১ কেজি এবং আনুমানিক বাজারমূল্য ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

চট্টগ্রামে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি দাবিতে মিছিলের প্রস্তুতিকালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নগরীর পাহাড়তলীর সরাইপাড়া এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, মামুনুর রশিদ, শহীদ উদ্দীন, ইয়াছিন, আবু হেনা, মোমিনুল ও রহিম। তারা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, আটককৃতরা কিছুদিন ধরে সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর সাবের হোসেনের বাসায় অবস্থান করছিলেন। মুসলিম হয়েও তারা কেন চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আজাদ বলেন, সরাইপাড়া এলাকায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় তাদেরকে জড়ো হতে দেখে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।