অপরাধ

রাজধানী বায়তুল মোকাররম এলাকায় মিছিল করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীর। শুক্রবার (৭ মার্চ) জুমার নামাজের পর মিছিলটি শুরু হয়।

এ সময় মিছিলটি পল্টন মোড় দিয়ে বিজয় নগরের দিকে অগ্রসর হয়। ব্যারিকেড থাকলেও পুলিশের সদস্য কম থাকায় তা ভেঙে সামনে দিকে আগায় মিছিলটি। এরপর আবারও সামনে ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলটি আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। তবে এ যাত্রায়ও সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে পল্টন মোড় থেকে মিছিলটি ফিরে আসার সময় পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে যায়। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী। বর্তমানে বায়তুল মোকাররম, নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এর আগে, আজ শুক্রবার নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘মার্চ ফর খিলাফত’–এর ডাক দেয়। সংগঠনটির এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের তল্লাশি করে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন। জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি বিবেচনায় ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ অনুযায়ী নিষিদ্ধ ঘোষিত যেকোনো সংগঠনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ ও অন্যান্য উপায়ে প্রচারণাসহ সব কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। হিযবুত তাহরীরসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো সংগঠন সভা, সমাবেশ ও যেকোনো উপায়ে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে ডিএমপি প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হিটু মিয়াকে আটকের পর তার ছেলেকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী চরপড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় গতকাল রাতে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। নতুন করে আটক হওয়া ব্যক্তির নাম সজীব শেখ। তিনি শিশুর দুলাভাই বলে জানা গেছে।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মাগুরা সদর থানার সামনে বিক্ষোভ করে সাধারণ জনতা। এসময় তারা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত অভিযোগ করে হিটু মিয়ার শাস্তির দাবি জানায়।

পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে শিশুটি তার বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে শিশুটিকে একা পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। এতে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমানে শিশুটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরা ১১ ও ১২ নম্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন– মনিরুল ইসলাম (৪০), মোহতাসিন বিল্লাহ (৪০) এবং মাহমুদুল হাসান (২১)।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। 

আজ শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন সেক্টর-১১ ও সেক্টর-১২ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিটিটিসি জানতে পারে, নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের কিছু সক্রিয় সদস্য ৭ মার্চ বাইতুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় ‌‌‘মার্চ ফর খিলাফত’ নামে একটি সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে সিটিটিসি অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩)  মামলা করা হয়েছে।

সিটিটিসি জানায়– প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। এসময় তাদের কাছ থেকে সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য সদস্যদের খুঁজে বের করতে সিটিটিসির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও ডিএমপি জানায়।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে কয়লা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ছে স্থানীয় শিশুরা। সরেজমিন ওই এলাকার স্কুলের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এলাকার প্রায় অর্ধেক ছাত্র এমন কাজে জড়িত। লেখাপড়ার বদলে টাকা উপার্জনের দিকেই তাদের মনোযোগ। আর, সেটা তারা করছে অবৈধভাবে। দুর্গম হওয়ায় প্রশাসনের নরজদারিও তেমন নেই।

তাহিরপুর এলাকাটির যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো নয়। এখানকার মানুষের লেখাপড়ার চেয়ে জীবিকা নির্বাহ করাই প্রধান লক্ষ্য। বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে চোরাই পণ্য আনার সাথে জড়িত।

স্থানীয় স্কুল টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েছে। এক শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিন স্কুলে না আসার কারণ জানতে চাওয়া হয় প্রধান শিক্ষক হালিমা বেগমের কাছে। তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ছাত্রদের উপস্থিতি কম। স্কুলে আসলেও টিফিনের পর তারা উপস্থিত থাকে না।

এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেও তেমন একটা প্রতিকার পাননি বলেও জানান, প্রধান শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসার ব্যাপারটি অভিভাবকরা জানে বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, কাছেই পাহাড় হওয়ায় স্কুল ফাঁকি দিয়ে পাহাড়ে চলে যায় ছাত্ররা।

স্কুল থেকে বেরিয়ে পাহাড়ি পথে সেই শিক্ষার্থীর খোঁজ নিতে যায় যমুনা টেলিভিশন। দেখা যায় মাথায় কয়লা ভর্তি বস্তা নিয়ে ফিরছে সেই ছাত্র।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সীমান্তে এই শিশুর মত শত শত শিশু এমন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে গেছে। মূলত ভারতের খনি থেকে চোরাই পথে কয়লা আনার কাজ করে তারা। মাঝেমধ্যে শিক্ষকরা ধরে এনে ক্লাসে বসালেও, তাতে কাজ হয় না।

এ ব্যাপারে কারণ ব্যাখ্যা করেন শিশুদের নিয়ে কাজ করা ভারতীয় সমাজকর্মী হাসিনা খারবাহি। তিনি বলেন, এখানে খনিগুলোতে লোভনীয় পারিশ্রমিকে কাজ করে ভারতীয় ও নেপালি শিশুরা। বিভিন্ন সময়ে খনিতে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে বহু শিশু। এসব ঘটনা মিডিয়াতে আসে না বলেও জানান তিনি।

সীমান্তে নজরদারির অভাবের অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তবে বিজিবি জানায়, সীমান্তে নজরদারি অব্যাহত আছে।

২৮ বিজিবির সিও লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, বাহিনী সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যেন কেউ অবৈধভাবে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না পারে। সীমান্তে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন জীবিকা নির্বাহের সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

২০২৫ সালের সরকারি জরিপ বলছে, এই টেকেরহাট নামের গ্রামটিতে শিশুর সংখ্যা ৫৬৮ জন। ২০৬ জন স্কুলে গেলেও বাকিরা যায় না।

মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে। কেবল শেখ হাসিনাই নয় তার সহযোগীদেরও বিচারের মুখোমুখি করা হবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমটি।

সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ আছে সরকারের কাছে। তবে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নির্ভর করছে ভারত এবং আন্তর্জাতিক আইনের ওপর।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বলাও হয়েছে দিল্লিকে। এ বিষয়ে ভারতের জবাবের অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ।

স্কাই নিউজের সাথে আয়নাঘর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আয়নাঘরগুলোতে ভয়ঙ্করভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এলাকার মধ্যে হওয়ায় সেগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। আয়নাঘরগুলোকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হবে।

টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলাটি খুবই গুরুতর। দেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এবং সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সীমান্ত সেনাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার কানাডা-মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ বর্ধিত শুল্কারোপ কার্যকর করলো যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, এক মাস যেতে না যেতেই আবারও চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্কারোপ ওয়াশিংটনের। বিপরীতে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে দেশগুলো। পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপে এখন অনেকটাই উত্তপ্ত বিশ্ব অর্থনীতি।

বিশ্লেষকদের মতে, বাণিজ্য অংশীদারদের চাপে ফেলতে ট্রাম্প শুল্কোরোপ করলেও তাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে। ওয়াশিংটন দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরির কথা বললেও তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রই। বিশ্ব অর্থনীতিতে তৈরি হতে পারে নতুন মেরুকরণ। সৃষ্টি হতে পারে নতুন বাজার।

সাপ্লাই চেইন বিশেষজ্ঞ ক্যামেরন জনসন বলেন, পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপে বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো চীনসহ জাপান-অস্ট্রেলিয়ার মতো মার্কিন মিত্রদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে। চীনও তাদের বাজারে সুযোগ দিয়ে দেশগুলোর দিকে ঝুকছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা তা হলো- বিশ্ব বাণিজ্য আর আগের মতো নেই।

বিশ্লেষকদের ধারণা, এমন সিদ্ধান্তের ফলে আবারও মুল্যস্ফীতি দেখা দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে। ক্যামেরন জনসন এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, আমরা বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে আছি। যুক্তরাষ্ট্র তার শুল্কনীতি ব্যবহার করে দরকষাকষির সুযোগ বাগিয়ে নিচ্ছে। বিশেষত তার মিত্রদের কাছে। কেননা, ওয়াশিংটন মনে করে এই দেশগুলোর কারণেই তারা পিছিয়ে পড়ছে।

প্রতিবেশী কানাডা এবং মেক্সিকোকে যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। দেশটির বাণিজ্যকৃত মোট পণ্যের ৩০ শতাংশই আমদানি-রফতানি হয় দু’দেশে। পরিসংখ্যান বলছে, যার পরিমাণ আনুমানিক এক দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। অন্যদিকে, কৃষিজাত পণ্য রফতানিতে চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্র।

পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলার একটি সেনানিবাসে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটেছে। এ হামলায় কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। বুধবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক সেনা কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রোজা ভাঙার সময় সেনা নিবাসের ওই এলাকায় দু’টি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি ঢুকে পড়ে। তার পরপরই ঘটে বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের ধাক্কায় নিকটবর্তী একটি মসজিদ এবং একটি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নিহতদের মধ্যে সাতজন শিশু রয়েছে। এছাড়াও হতাহতদের মধ্যে ১০ সেনা সদস্যও রয়েছে। বিস্ফোরণের পর গোলাগুলিতে ছয় জঙ্গি নিহত হয়েছে।

একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আত্মঘাতী বোমা হামলার পর ১২ জন জঙ্গি ওই কম্পাউন্ডে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল এবং ছয়জন হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

বিস্ফোরণের ফলে দুটি চার ফুট লম্বা গর্ত তৈরি হয়েছে এবং এর তীব্রতার কারণে এলাকার কমপক্ষে আটটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

আফগানিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ ঘোষিত টিটিপির হাফিজ গুল বাহাদুর (এইচজিবি) গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

ঢাকা-রাজশাহী সড়কে বাসে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানির আসল পরিকল্পনাকারী আলমগীরসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে আলোচিত এ মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। গ্রেফতার দুজন হলেন, আলমগীর হোসেন (৩৪) এবং মো. রাজিব হোসেন (২১)।

পুলিশ সুপার জানান, এর আগে গ্রেফতার তিনজনের দেয়া তথ্যে সোমবার অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য আলমগীরকে নেত্রকোণা জেলার পুর্বধলা থানার সাধুপাড়া গ্রাম থেকে প্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৪ হাজার দুইশত ১০ টাকা এবং দুটি রুপার আংটি উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর জানায় লুট করা মোবাইল সেট, ব্যবহার করা ছুড়ি ও নারীদের গহনা রাজিবের কাছে জমা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকার আশুলিয়ার থানার ধানসোনা এলাকার পলাশবাড়ি থেকে রাজিবকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ সময় রাজিবের কাছ থেকে ১০টি মোবাইল সেটসহ, গহনা ও তিনটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতা আলমগীরকে ৭ দিন ও রাজিবকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, গত শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, গত সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছেড়ে আসে। সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিনঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি করে নেমে যায় ডাকাতরা। তারা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে যাত্রীদের চাপের মুখে বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করেন চালক। মঙ্গলবার যাত্রীরা বাসটি নিয়ে বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান। বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদী হয়ে শুক্রবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সার্বিক পরিস্থিতি আরো উন্নত করতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ সংক্রান্ত কোর কমিটি। গতকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে কোর কমিটির এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ—

১. রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তল্লাশি চৌকি বাড়াতে হবে। অপরাধ প্রবণ এলাকায় টহল সংখ্যা বাড়ানো হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, বিজিবি সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথবাহিনী গঠন করে টার্গেট এলাকায় জোরদার অপারেশন পরিচালনা করা হবে।

২. রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নৌবাহিনীর একটি অতিরিক্ত পেট্রোল এবং কিছু এলাকায় কোস্ট গার্ডের একটি অতিরিক্ত পেট্রোল নিয়োজিত থাকবে।

৩. পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধান, উপ-পুলিশ কমিশনার, মাঠে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর ব্রিগেড প্রধান ও অন্যান্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তাবৃন্দ প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে সময়ে সময়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করবেন।

৪. ডিএমপির পুলিশ সদস্য, বিজিবি, আনসার ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যদের জন্য মোটরসাইকেল ক্রয় করা হবে, যাতে করে তাৎক্ষণিকভাবে অলিগলিতে টহল দিয়ে অপরাধীদের পাকড়াও করা যায়।

৫. ছিনতাইকারী ও ডাকাতরা অবস্থান করতে পারে এমন সম্ভাব্য স্থানগুলোতে কম্বাইন্ড অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।

৬. ঢাকা শহরের বাইরে বিশেষ করে টঙ্গি, বসিলা, কেরানীগঞ্জ এবং মুন্সিগঞ্জ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক টহল বাড়ানো হবে।

৭. ৫০০ এপিবিএন সদস্য ডিএমপিতে ন্যস্ত হয়ে পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে।

৮. থানাভিত্তিক সন্ত্রাসীদের হালনাগাদ তালিকা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আইনের আওতায় আনতে তড়িৎ পদক্ষেপ নেবে।

৯. মিথ্যা, গুজব ও প্রোপাগান্ডার বিপরীতে সত্য তথ্যগুলো প্রচারে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ সভায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বক্স চৌধুরীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পিলখানায় বীর সেনা সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিকে অনেক দিন বিভ্রান্তিতে রাখা হয়েছে। এই নির্মমতার সুবিচার নিশ্চিতে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ দায়বদ্ধ এমনটি বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের বাণীতে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

বাণীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সুবিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। সমব্যাথী হয়ে দেশ ও জনগণ শহীদ পরিবার এবং নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়াবে- এ আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির সূর্য সন্তান, শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে দিনটি চেতনা ও অনুভূতির একটি নিয়ামক হবে। মনে করিয়ে দেবে দেশের জন্য যুদ্ধ করার ব্রত নিয়ে পথচলা একদল সাহসী মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত নির্মম মৃত্যুর কথা।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।