অপরাধ

কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জন্য রাখা অর্থ অনুমোদন ছাড়াই খরচ, বাড়তি ব্যয়ে সড়ক নির্মাণ এবং গোপনে প্রকল্পের পরিত্যক্ত লোহা (স্ক্র্যাপ) বিক্রির মাধ্যমে এই অর্থ লোপাট করেছে একটি চক্র। ছয়জনের এই চক্রের নেতৃত্বে ছিলেন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মালিক ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কালাম। এ নিয়ে গত মে মাসে একটি অভিযোগও জমা পড়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে। এ ছাড়া  অনুসন্ধানেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

পাবনার রূপপুরের পরেই বিদ্যুৎ খাতে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র। এটি নির্মাণে দফায় দফায় ব্যয় বাড়িয়ে সর্বশেষ ব্যয় ধরা হয় ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। দুটি ইউনিটে মোট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট গত বছরের জুলাই মাসে উৎপাদনে এসেছে। কেন্দ্রটিতে ঋণ দিয়েছে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। এই প্রকল্পে এর আগে কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয় জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাও করেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ দামে নাটবল্টু কিনেছে। এসবের পর এবার নতুন করে অভিযোগ এল নয়ছয় করে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাতারবাড়ী প্রকল্পে জরুরি খাতে ব্যয় করার জন্য প্রায় ১ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এই অর্থ অতি জরুরি প্রয়োজনে ব্যয় করার কথা ছিল। কোনো রকম অনুমতি ছাড়া এই বরাদ্দের পুরোটাই ব্যয় করা হয়েছে। যে ১৫টি কাজের বিপরীতে এই অর্থ ব্যয় হয়েছে, তার মধ্যে মাত্র ৪টি কাজের অনুমতি দিয়েছিলেন সিপিজিসিএলের বোর্ড পরিচালকেরা। বাকি ১১টি কাজে কোনো অনুমতির তোয়াক্কাও করেনি ছয়জনের চক্রটি। এই চক্রে আছেন সিপিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী অর্থ পরিচালক মোহাম্মদ শহীদ উল্ল্যা, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, নির্বাহী প্রকৌশলী (নকশা) মো. কামরুল ইসলাম, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মতিউর রহমান ও সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. আলফাজ উদ্দীন।

অনিয়ম-১:  প্রকল্পের প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (পিডিপিপি) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরের সড়ক বিটুমিন বা পিচের মাধ্যমে করার কথা ছিল, এতে ৮০ কোটি টাকার মতো ব্যয় নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু চক্রটি এই সড়ক বিটুমিনের মাধ্যমে না করে সিমেন্ট ও কংক্রিটের ঢালাই দেয়। এতে বাড়তি ব্যয় হয় ১৭০ কোটি টাকা। এই কেনাকাটায় সিপিজিসিএলের বোর্ড সভার অনুমতি নেওয়া হয়নি।

অনিয়ম-২: মাতারবাড়ী প্রকল্পের অভ্যন্তরে প্রায় ১০০ একর জমিজুড়ে স্ক্র্যাপ বা বাতিল লোহা স্তূপাকারে ছিল। এসব লোহা ছিল মূলত বিভিন্ন ধরনের শাটার। ঢালাই কাজে এসব শাটার ব্যবহার করা হয়। শাটারের দামসহ ধরে ঠিকাদারদের নির্মাণ খরচ দেওয়া হয়। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের বাতিল লোহা প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সম্পদ। ফলে মাতারবাড়ী প্রকল্পে যা কিছুই পরিত্যক্ত হবে, তার মালিক সিপিজিসিএল। কিন্তু পরিত্যক্ত এসব লোহার বড় অংশই বিক্রি করে দিয়েছেন সিপিজিসিএলের এমডি ও তাঁর সহযোগীরা, যার মূল্য কম করে হলেও ৩০০ কোটি টাকা। লোহা বেচার এই অর্থ সিপিজিসিএলের কোষাগারে যায়নি। পুরোটাই লোপাট করেছে এমডির নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট। 

অনিয়ম-৩: মাতারবাড়ী প্রকল্পে সাগরের সুরক্ষা ও ভূমি সুরক্ষার কাজটি করেছে বিদেশি ঠিকাদার হুন্দাই। প্রকল্পের ভেতর তাদের ৭৮ হাজার ৫০০ বর্গফুটের তিনটি স্টিল নির্মিত ভবন ছিল, যেখানে তাদের লোকেরা থাকতেন। সবার আগে হুন্দাইর কাজ শেষ হয় এবং তারা এই তিনটি ভবন রেখে প্রকল্প এলাকা ত্যাগ করে। তিনটি ভবনে অন্তত ১৫ কোটি টাকার স্ক্র্যাপ লোহা ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, এই ভবন তিনটির মালিক সিপিজিসিএল। কিন্তু হুন্দাইর নাম বলে তা বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

একইভাবে প্রকল্পে পসকোর ১২ কোটি টাকার স্ক্র্যাপ বাইরে বিক্রি করা হয় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সম্পদ হিসেবে প্রচার করে। অথচ পসকো ও হুন্দাই এসব বিক্রির অনেক আগেই প্রকল্প এলাকা ত্যাগ করেছে।

সিপিজিসিএলের দুজন শীর্ষ কর্মকর্তা 

জানিয়েছেন, এর আগে পায়রা, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাতিল লোহা ওই কেন্দ্রের মালিকপক্ষ দরপত্র করে বিক্রি করেছে। এ ছাড়া পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্ক্র্যাপও দরপত্র আহ্বান করে বিক্রি করা হয়েছে। মাতারবাড়ী প্রকল্পেরও ৯ কোটি টাকার স্ক্র্যাপ প্রথমে দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। এরপর বলা হয়, এটি প্রকল্পের ঠিকাদার জাপানি কোম্পানির মালিকানাধীন স্ক্র্যাপ। ফলে তারা এই বাতিল লোহালক্কড় বিক্রি করবে। এই ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানে থাকা প্রায় আড়াই শ কোটি টাকার লোহা বিক্রি করা শুরু হয়। এসব লোহা বিক্রির অর্থ সিপিজিসিএলের কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিপিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে দফায় দফায় কল করা হয়। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু ২২ আগস্ট পর্যন্ত তিনি কোনো জবাব দেননি। 

কান্ট্রি অব অরজিন পরিবর্তন করার অভিযোগ: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে লিখিত অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী যে দেশ থেকে যন্ত্রপাতি দেওয়ার কথা, সে দেশ থেকে না এনে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে আনা হয়েছে। সিপিজিসিএলের এমডি আবুল কালাম আজাদ ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা নিয়েছে। তবে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা 

পক্ষে সম্ভব হয়নি। 

দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে মতামত চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, যত বড় প্রকল্প তত বড় দুর্নীতি। বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে মাতারবাড়ী সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প। এতে খরচের মাত্রাও অনেক বেশি। এখানে জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি হয়েছে, এখানে নাটবল্টু অস্বাভাবিক দামে কেনা হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে এই প্রকল্পের পুরোনো লোহালক্কড় বেচে দিচ্ছে প্রকল্পের কর্মকর্তারা। দ্রুত ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। না হলে বিদ্যুৎ খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে না।

সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে কড়া নিরাপত্তায় সিলেটে নেয়া হয়েছে। আজ তাকে আদালতে তোলা হবে। এর আগে, শুক্রবার অবৈধভাবে পারাপারের সময় সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পরিবার নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

এদিকে মানিকের ধরা পড়ার একটি ভিডিও ফুটেজ আসে যমুনা নিউজের হাতে। একজন বিজিবি সদস্য ভিডিওতে তাকে তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে তিনি জানান, তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ এবং তার নাম বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক। এ সময় তাকে দেশত্যাগের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, প্রশাসনের ভয়ে তিনি দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিলেন।

ভিডিওতে মানিক আরও জানান, তারসাথে ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি পাসপোর্টের পাশাপাশি ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড, নগদ ৪০ হাজার টাকাও ছিল। কয়েকজনের সাহায্যে ১৫ হাজার টাকার চুক্তিতে তাকে বর্ডার পার করে দেয়ার পরিকল্পনা হয়। তবে সেই টাকা নেয়ার পরও দুজন যুবক তাকে প্রহার করেন বলেও জানান সাবেক এই বিচারপতি। এছাড়া তার ৬০-৭০ লাখ টাকা তারা নিয়ে গেছে বলেও ভিডিওতে দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক দীর্ঘদিন ধরেই দেশে বেশ আলোচিত। নানা কারণে তুমুল সমালোচিতও তিনি। সবশেষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় একটি টিভি চ্যানেলের টকশোতে নারী উপস্থাপিকার সাথে বাজে আচরণ করে আবার আলোচনায় আসেন। ওই অনুষ্ঠানে নারী উপস্থাপিকাকে রাজাকারের বাচ্চা বলে সম্বোধন করেন। আবার যারা মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল বা সংস্কার চায় সেসব শিক্ষার্থীরাও রাজাকারের বাচ্চা বলে মন্তব্য করেন এই সাবেক বিচারপতি।

আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) অবৈধভাবে পারাপারের সময় সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল আসাদ উন নবি যমুনা নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত এলাকায় রাত ৯টার দিকে এক ব্যক্তি অবৈধভাবে ভারতে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে। সে সময়ই টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পরিবার নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

প্রথমে শেয়ার কিনে পরিচালনা পর্ষদ দখল। তারপর নতুন-পুরাতন কোম্পানি দেখিয়ে ঋণের পর ঋণ। এভাবেই হাজার হাজার কোটি টাকা নামে-বেনামে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। বলা হচ্ছে, ঋণের নামে ব্যাংক লুটের নতুন কৌশল আবিষ্কার করেছিল তারা। নিয়ম-নীতি ভেঙে ছয়টি ব্যাংক থেকে এস আলম সংশ্লিষ্টরা বের করে নিয়েছেন ৯৫ হাজার কোটি টাকা। এসব অপকর্মে গ্রুপটির সহযাত্রী ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা।

এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, ৯৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে এক ইসলামী ব্যাংক থেকেই ৭৫ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এস আলম ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো।

এক সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নন-এসি বাস সার্ভিসের জন্য পরিচিত গ্রুপটি সরকারি জনতা ব্যাংক থেকেও নিয়েছে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি। এছাড়া সোশ্যাল ইসলামী, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকসহ নিয়ন্ত্রণে রাখা ব্যাংকগুলো থেকেও কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ বা বেনামে সরিয়েছে এস আলম।

ব্যাংক থেকে তারা কীভাবে বের করলেন এসব টাকা? বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংকগুলোর পর্ষদে নিজের লোক বসিয়েছেন আগে। পরে তারাই পথ বের করে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, বোর্ডকে দিয়ে ঋণ পাশ করিয়েছে। এগুলো একটাও তো বৈধ না। বোর্ডে যেহেতু সব এস আলমের লোকজন ছিল, সুতরাং ওরা বোর্ড থেকে পাশ করিয়ে বৈধভাবে নিয়ে গেছে। তারা আইনগতভাবে দেখাবে, বৈধভাবে পাশ করিয়েছে। কিন্তু বোর্ডে তো সব ওদেরই লোক।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, সমস্ত নীতিমালা উপেক্ষা করে নিজেরাই প্রভাবিত করে ঋণ দিচ্ছে। এইটা করে পুকুর চুরির মতো ব্যবস্থা করেছে।

এস আলম সরাসরি নিজেদের নামে ঋণ নেয়ার পাশাপাশি গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও নিয়েছে। তাতেও থামেনি, তৈরি করে ছায়া কোম্পানি। আর বেশিরভাগ কর্মকাণ্ডই হয়েছে নিয়ম লঙ্ঘন করে। অনিয়মের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া এই বিপুল অঙ্কের টাকা ফেরত পাবার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।

ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, তারা আসলে যেগুলো করেছেন, এর উদ্দেশ্যটা তো ঠিক না। ওরা যে টাকা বের করে নিছে, সবগুলো এনপিএল, তা ফেরত না আসলে কী হবে? ফান্ড তো ঘুরে আসবে না। মূলধনের ওপর চাপ পড়বে। লাভের ওপর চাপ পড়বে। সমস্ত দিক থেকে চাপের মুখে পড়া হবে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এত অনিয়ম-লুটপাট কি শুধু এস আলম আর তাদের পুতুল পর্ষদ দিয়েই সম্ভব ছিল? জবাবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মোটেই না। জেনে-বুঝেও উদ্যোগ নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। উল্টো সহযোগিতা করেছেন সাবেক দুই গভর্নরসহ কয়েকজন কর্মকর্তা।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংকে লুটপাট হচ্ছে, নিয়ন্ত্রকরা কোথায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোথায়, কী করেছে তারা? কেউ তো থামানোর জন্য কিছু করে নাই। তারা কোনো পদক্ষেপ নেই, সহযোগিতা করেছে।

ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, এসব বিষয় কারও না কারো তো দেখার কথা ছিল, কেউ যদি বন্ধ করার চেষ্টা করতো, তাহলে তাকে বলা হতো, আপনি চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেননি। সেটা তো করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক, বরং তাদের সুবিধা দেয়ার জন্য যেভাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক সেভাবে সেভাবে সাকুর্লার দিছে।

সঠিক হিসাব বের হলে এস আলমের নামি-বেনামি ঋণের পরিমাণ আরও বেশি হবে বলে মনে করেন ব্যাংকাররা। আর জালিয়াতির পথ এখন বন্ধ করে দেয়ায় সামনে আসবে হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ।

বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের ৫ দিনের রিমান্ড আদেশ দিয়েছে আদালত। রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত এ আদেশ দেন।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের আদালতে মেননের উপস্থিতিতে এ রিমান্ড শুনানি হয়। এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি। আওয়ামী লীগ আমলে তিনি প্রথমে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবং পরে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় সম্প্রতি কয়েকটি মামলায় মেননকে আসামি করা হয়েছে।

২০০৮ সাল থেকে টানা তিন দফায় ঢাকা-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন রাশেদ খান মেনন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ আসনে (উজিরপুর-বানারীপাড়া) নির্বাচিত হন।

সাড়ে ১৫ বছর জামায়াতে ইসলামীর ওপর যে জুলুম করা হয়েছে তা অন্য কোনো দলের উপর হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শুক্রবার ৯২৩ আগস্ট) দুপুরে নরসিংদীর ব্রাহ্মন্দীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ১৯ জনের পরিবারের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

শফিকুর রহমান বলেন, একে একে ১১জন দায়িত্বশীল নেতাকে ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। শত শত কর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার কর্মীকে পঙ্গু করা হয়েছে। দুই চোখ খুলে নেয়া হয়েছে। গুলি করে অন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হাত কেটে ফেলেছে, পা কেটে ফেলেছে। কী যন্ত্রণা আমরা বুকে নিয়ে চলছিলাম। কিন্তু আমরা পরিষ্কার ঘোষণা করেছি জামায়াতে ইসলামী কারও ওপর প্রতিশোধ নেবে না।

তিনি বলেন, প্রতিশোধ প্রতিহিংসার জন্ম দেয়, প্রতিহিংসা সমাজে খুনের পরিবেশ সৃষ্টি করে। আমরা সামগ্রিকভাবে ক্ষমা করে দিতে চাই কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে যে অপরাধ করেছেন ইনসাফের দাবি হচ্ছে তাকে তার অপরাধের শাস্তি পেতে হবে। তাই বলে আমরা কেউ আইন হাতে তুলে নেবো না।

অনুষ্ঠানে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান তুলে দেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলার সঙ্গী হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। নাম রয়েছে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও চিত্রনায়ক ফেরদৌসেরও।  

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে আদাবর থানায় মামলাটি রুজু করা হয়। মামলায় সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আরও ১৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদির অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট রুবেল আদাবরের রিংরোডে প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নেয়। এসময় অভিযুক্তদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ ও প্ররোচনায় মিছিলে গুলি করা হয়। বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রুবেলকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। 

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সাথে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। তার এমন আকস্মিক পদত্যাগ ও পালানোর ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা। তবে পালিয়ে থাকা এসব নেতাকর্মীরা এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

পলাতক বেশ কিছু আওয়ামী লীগ নেতার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

তাদের একজন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য দলের অভ্যন্তরীণ একটি স্বার্থগোষ্ঠীকে দায়ী করে বলেছেন তিনি (হাসিনা) আমাদের কথা শুনতেন না, তিনি শুনতেন ‘গ্যাং অব ফোরে’র কথা। তারা তাকে বাস্তবতা বুঝতে দিতো না বলে অভিযোগ করেন।

‘গ্যাং অব ফোর’ কারা এমন প্রশ্ন করলে ওই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

আওয়ামী লীগের ওই নেতা আরও বলেন, চারজনের এই দল তার (হাসিনা) পতনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এই ব্যক্তিদের ওপর তার ছিল অন্ধবিশ্বাস। তার যে সহজাত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল, তা তিনি তাদের কারণে হারিয়ে ফেলেছিলেন।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস দাবি করেছে, গত এক সপ্তাহে তারা আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে। সেসব বেশিরভাগ নেতারাই নাকি বলেছে, হাসিনা দল ও জনগণকে পরিত্যাগ করেছেন।

আরেক আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টি হাসিনার প্রত্যাখ্যান করা ছিল ‘সাংঘাতিক ভুল’। কেননা একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন বিএনপি নির্বাচনে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা গেলে বিরোধীদের রাগ-ক্ষোভ হয়তো মিটে যেত।

ওই নেতা আরও বলেন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা গেলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানোও যেত। তাতে আমরাই আবার জিততে পারতাম এবং দল ক্ষমতায় থাকত।

হাসিনার দেশত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা আত্মগোপন করেছেন, কেউবা গ্রেফতার হয়েছেন। নেতারা বলছেন, ৫০ বছরের পুরনো যে দল টানা ১৫ বছরের বেশি দেশ শাসন করেছে, তারাই এখন অস্তিত্ব সংকটে।

সন্দেহভাজন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানেন অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)।

প্রথম ধাপে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ খান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম এবং তাদের সাথে সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও সঞ্চয় অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

কর ফাঁকির অভিযোগে অনুসন্ধান কার্যক্রমের স্বার্থে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এই চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন উপায়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির বিশেষ অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)।

আরও বলা হয়, সিআইসি বিভিন্ন সংবাদ পর্যালোচনা ও সুনির্দিষ্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সম্ভাব্য কর ফাঁকিবাজদের তালিকা করেছে। পর্যায়ক্রমে এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আয়কর আইন-২০২৩ ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর অধীনে ফাঁকি দেওয়া কর উদ্ধারের পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে তার বিরুদ্ধে আর্থিক খাতে নজিরবিহীন দুর্নীতি, লুটপাট, জালিয়াতি ও টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধেও আর্থিক খাতে লুটপাট ও অনৈতিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষে হয়ে শেখ হাসিনার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নজরুল ইসলাম মজুমদার।

সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ‘কুইক রেন্টাল’ নামে পরিচিত বহুল বিতর্কিত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার। সিঙ্গাপুরে ৫০ শীর্ষ ধনীর একজন তিনি। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে।

আহমেদ আকবর সোবহানের বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে জমি দখল, নানা খাতে অনিয়মের মাধ্যমে সুবিধা নেয়া ও অর্থ পাচারের সুবিধা নেয়ার অভিযোগ আছে। কোটা আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকে আহমেদ আকবর সোবহান অঙ্গীকার করেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত শেখ হাসিনার পাশে থাকবেন।

এছাড়া, ওবায়দুল করিমের ওরিয়ন গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বড় বড় প্রকল্পে কাজ করে ওরিয়ন গ্রুপ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।