অপরাধ

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ঈসমাইল হোসেনকে ধর্ষণ মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১০ জুলাই) সকালে আদালতে সোপর্দ করা হলে কারাগারে পাঠানো হয়।

হালুয়াঘাট থানার ওসি মো. মাহাবুবুল হক কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে হালুয়াঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ঈসমাইলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। ঈসমাইল মেয়েটিকে স্ত্রী দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারায় পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইসমাইল হোসেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পশ্চিম কালিয়ানীকান্দা গ্রামের সুরুজ আলীর পুত্র।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর বাড়িতে ইসমাইল যাতায়াত করতেন। গত ৫/৬ মাস আগে ইসমাইল ওই কিশোরীর বাড়িতে এসে তাকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়।

একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি পরে জেনেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন কিশোরীর মা। শুধু তাই নয়, ওই কিশোরীর মাকে রাজি করিয়ে তার মেয়েকে বাড়িতে কাজের লোক হিসেবে নিয়ে আসে ইসমাইল। সেখানেও তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।

একপর্যায়ে শনিবার (৬ জুলাই) রাতে ইসমাইল আবারো মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটি ইসমাইলকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সে রাজি না হওয়ায় কিশোরী তার মাকে সব ঘটনা খুলে বলে।

বিষয়টি নিয়ে কিশোরীর মা আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে ইসমাইলের পক্ষ থেকে বিয়ের কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে হালুয়াঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কিশোরীর মা।

ওসি মো. মাহাবুবুল হক বলেন, ঈসমাইল মেয়েটিকে স্ত্রী দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশি রোগীদের কিডনি চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিডনি চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিন বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ৫ জনকে। জানিয়েছে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম।

দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের ওই চিকিৎসকের নাম বিজয়া কুমারি। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, নয়ডায় যথার্থ নামের একটি হাসপাতালে করা হতো কিডনি অপসারণের কাজ। ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন রোগীর কিডনি অপসারণ করা হয়েছে। এসব রোগীর বেশিরভাগই বাংলাদেশি।

পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সক্রিয় এই চক্র দালালদের মাধ্যমে দরিদ্র বাংলাদেশিদের অর্থের লোভ দেখিয়ে নয়াদিল্লির আশপাশের কিছু হাসপাতালে নিয়ে আসতো। সেসব হাসপাতালে চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বাংলাদেশিদের কিডনি অপসারণ করতেন।

আব্দুল্লাহ আল মোমিন: পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষিকার সাথে পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র ও কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ জাহিদ হাসান মামুনের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করেছে শিক্ষক সমিতি। অসৌজন্যমূলক আচরনের প্রতিবাদে পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন ও  অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

০৯ (জুলাই)  মঙ্গলবার দুপুর ১২ পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে  এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। 

পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ ইবনে আল ইমাম এর সভাপতিত্বে  সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ মাহমুদের সঞ্চালনায় ক্লাস বর্জন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সকল শিক্ষক -শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন। 

ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদা আক্তার বলেন, ক্লাস চলাকালীন আমার ক্লাসরুমে ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান মামুন প্রবেশ করে, এ সময় আমি তাকে ক্লাস রুম থেকে বের হতে বললে সে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক  আচরণ করেন। এর প্রতিবাদে আমরা সকল পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি এবং এর বিচার চাই। 

এ বিষয়ে পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার মো. সোলাইমান বলেন, এ বিষয় নিয়ে আমি শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি তাদের বলেছি ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্টটি সাবমিট করার জন্য রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।

গত ১২ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এদের মধ্যে পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীও রয়েছেন। 

সিআইডির সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি।

জানা গেছে, গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসি’র ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহকারী এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত পিএসসি’র চেয়ারম্যানের সাবেক ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলীও। 

পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক এই গাড়ি চালকের নাম প্রচারের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সৈয়দ আবেদ আলীর ব্যক্তিগত প্রোফাইল ঘেটে দেখা যায়, রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ড ও দান খয়রাতের নানা খবর।

সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে তার বিপুল বিত্তবৈভবের খবর। ঢাকায় ও গ্রামে একাধিক বাড়ি, গরুর খামার ও সম্পদের তথ্য মিলেছে তারই ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যদিও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিত্তবৈভব বানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরছেন নেটিজেনরা। ছেলে ছাত্রলীগ নেতা, পড়েছেন বিদেশে, এরপর দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকার ভেতর তার দুইটি বহুতল ভবন, মাদারীপুরে আলিশান  রয়েছে এমন তথ্যও সামনে আসছে।

সৈয়দ আবেদ আলীর ফেসবুক পেজ থেকে জানা যায়, নেটিজেনদের দেওয়া তথ্য মিথ্যে নয়। নিজের ফেসবুক আইডিতে হোটেলের তথ্য তুলে ধরেছেন নিজেই। 

গত ১৮ মে এক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমাদের নতুন হোটেল এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা। সমুদ্রকন্যার পাড়ে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা।’

এই হোটেলের কাজে গিয়ে কুয়াকাটার সৈকতে তিনি নামাজ পড়ছিলেন। সেই নামাজের ছবি ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। সে ছবি এখন রীতিমতো ভাইরাল।

এছাড়াও সৈয়দ আবেদ আলী মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। ফেসবুকে তাদের জীবনযাপন এবং বিভিন্ন কর্মসূচির ছবি দেখে ধারণা করা কঠিন যে তিনি পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যানের ড্রাইভার ছিলেন।

বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডকে এবং দ্যা কোকা-কোলা কোম্পানিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (৭ জুলাই) আইনজীবী জায়েদ বিন নাসের ডাকযোগে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে এ নোটিশটি পাঠান। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ৯ জুন প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের দ্বারা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়নি, পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনেছে কোকা-কোলা। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনে বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ২৯৫ (ক) এবং সাইবার সিকিউরিটি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৮ ও ৩৫ এর অধীনে কোকা-কোলা কোম্পানি অপরাধ করেছে।

শামিল। এ ধরনের ঠকবাজির ফলে জনগণের সাংবিধানিক প্রতিবাদ কর্মসূচিকে যেমন নস্যাৎ করার চক্রান্ত করা হয়েছে ঠিক একইভাবে সাধারণ মানুষের মূল্যবোধ ও চেতনাকে আঘাতপ্রাপ্ত করা হয়েছে। কোকা কোলার অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণমূলক অপপ্রচারের ফলে অসামান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের জনগণের, যার সমস্ত দায়ভার কোকা কোলা কোম্পানির। আমার, আমার মক্কেলগণ, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবসহ অগণিত মানুষের অর্থনৈতিক, বিশ্বাসমত ও সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত হানা হয়েছে, যার মূল্যমান কোটি কোটি টাকার বেশি।

এতে তিনি বলেন, আমি নিজে বিইউপি আইন অ্যালামনাই সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে পৃথিবীব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ অন্তত ১০টি দেশের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং অ্যালামনাই সংগঠনের (বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন) নেতৃবৃন্দ ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের কাছে চিঠি লিখেছি। আমার পাঠানো চিঠির পাণ্ডুলিপি লিগ্যাল নোটিশের সঙ্গে সংযুক্তি আকারে দেওয়া হয়েছে।

রাত পৌনে ৯টার দিকে ডুমুরিয়া থেকে মোটরসাইকেলে খুলনায় আসছিলেন ডুমুরিয়ার শরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম (৪২)। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের গুটুদিয়া ওয়াপদা সেতুর কাছে এলে তাঁকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। পিঠের নিচে বাঁ পাশে গুলি লাগলে তিনি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এরপর হেডলাইট না জ্বালিয়ে মোটরসাইকেলে দ্রুত পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

মেহেদী হাসান নামের প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক এসব তথ্য জানান। ঘটনাস্থলের পাশে ব্র্যাক তেলাপিয়া হ্যাচারিতে তিনি চাকরি করেন। ঘটনার সময় তিনি সেতুর পশ্চিম পাশের দোকান থেকে মালামাল কিনে হেঁটে হ্যাচারিতে ফিরছিলেন। তাঁর ঠিক ২০ থেকে ৩০ গজ পেছনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

মেহেদী হাসান বলেন, মহাসড়কে প্রায়ই ছোট-বড় যানবাহনের টায়ার ফাটার ঘটনা ঘটে। এ জন্য এমন শব্দ সাধারণ মানুষকে খুব বেশি আকর্ষণ করে না। শনিবার রাতে সেতু পার হয়ে ২০ গজের মতো সামনে যাওয়ার পর বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। ফিরে দেখেন, মোটরসাইকেল থেকে একজন ছিটকে পড়েছেন। এর পরপরই তাঁরই সামনে দিয়ে আরেকটি মোটরসাইকেল খুলনার দিকে চলে যায়। সেই মোটরসাইকেলে দুজন ছিলেন। কিন্তু তাঁদের মোটরসাইকেলের হেডলাইট জ্বলছিল না। তিনি ভেবেছিলেন, দ্রুতগতিতে যাওয়া মোটরসাইকেলটি হয়তো পড়ে যাওয়া মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিয়েছে। এ জন্য দ্রুত ছুটে গিয়ে পড়ে যাওয়া ব্যক্তিকে তোলার চেষ্টা করেন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন।

ওয়াপদা সেতুর উত্তর পাশে গুটুদিয়া কমলপুর নুরানিয়া হাফিজিয়া আশরাফিয়া কওমি মাদ্রাসা। পশ্চিমে কয়েকটি দোকান। ঘটনার সময় দোকানের পাশে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন মো. ফারুক গোলদার। শব্দ শুনে তিনিও মনে করেছিলেন, হয়তো কোনো গাড়ির চাকা ফেটে গেছে। পরক্ষণে মোটরসাইকেল পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পান। দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, একজন পড়ে আছেন। কিছুটা দূরে পড়ে আছে মোটরসাইকেলটিও।

এবার পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের রূপগঞ্জের আনন্দ হাউজিংয়ে থাকা প্রায় ২৪ কাঠার ডুপ্লেক্স বাড়িটি দখলে নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। 
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় হাইকোর্টের আদেশে শনিবার দুপুরে বাড়িটি জব্দ করে জেলা প্রশাসন। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিকুল আলম, দুদকের উপ-পরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান মাহমুদ রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমন সরকার প্রমুখ। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিকুল আলম বলেন, বেনজীর আহমেদের মেয়ের নামের সম্পত্তি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে রক্ষণাবেক্ষণ করার আদেশ দেন আদালত। এর প্রেক্ষিতে সম্পত্তিটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। 

দুদকের আঞ্চলিক পরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী বলেন, বাড়িটি অত্যাধুনিক তালাবদ্ধ থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ভেতরে প্রবেশ করা যায়নি। তবে একটি কমিটি করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোরশেদ আলমের হেফাজতে আগামী ৩ দিনের জন্য রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে এর ভেতরে থাকা মালামালসহ সবকিছু জব্দ তালিকা করব। 

তিনি আরও জানান, দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ জুন আদালত তৃতীয় দফায় বেনজীরের আরও বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ করা হয়। সে তালিকায় এ বাংলোটিও রয়েছে। 

জানা গেছে, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দেশের নানাস্থানে অবৈধ স্থাপনা গড়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের দক্ষিণবাগ চোরাবো মোড়ের ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেন বেনজীর। আনন্দ হাউজিং নামীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের গড়া আবাসন কোম্পানিতে ২৪ কাঠা জমিতে গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি। যেখানে সাধারণের প্রবেশ রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বেনজীর এ বাড়িতে যেদিন এবং যতক্ষণ অবস্থান করতেন বন্ধ রাখা হতো এখানকার রাস্তা। পুলিশ পাহারায় এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হতো সেখানে। 

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হামিদ বলেন, লেকের পাশে ২৪ কাঠা জায়গাজুড়ে বেনজীরের লাল রঙের আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়িটি অবস্থিত। এটি দেখলে নজর কাড়বে সবারই। তবে ভেতরে প্রবেশ করে দেখার সুযোগ মেলেনি কারও।  

স্থানীয় সূত্র জানায়, আট বছর আগে এলাকার প্রয়াত প্রেমানন্দ সরকারের সন্তানদের কাছ থেকে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৫৫ শতাংশ জায়গা কেনেন বেনজীর। পরে ২০১৯ সালের দিকে এই আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেন তিনি। তবে তার এই বাড়ি ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা গল্প, রহস্য। 

অভিযোগ রয়েছে, বেনজীরের অবৈধ সম্পদের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এই বাড়িটির তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ ভেতরে থাকা মালামাল সরিয়ে ফেলেছেন। প্রায় সময়ই পুলিশের সাইরেন বাজিয়ে গাড়ির বহর নিয়ে বাড়িতে আসতেন বেনজীর। পুলিশের নিরাপত্তার কড়াকড়ির কারণে তখন বাড়ির পাশের সড়ক দিয়ে লোকজনের চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হতো। বেনজীরের সঙ্গে মাঝেমধ্যে আসতেন চেনা-অচেনা সংগীতশিল্পী ও নাটক-সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। তখন বাড়িতে গানের আসর বসত। গানের উচ্চ শব্দে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটত স্থানীয়দের, তবুও ভয়ে কখনো কেউ মুখ খুলতেন না। 

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেফতার তিন আসামি দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। তারা হলেন, ঝিনাইদাহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু, শিমুল ভূইঁয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূইঁয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ ও তানভীর ভূইঁয়া।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাবুবুর রহমানের আদালতে উল্লেখিত আসামিদের জবানবন্দি প্রত্যাহারের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত করা হয় আসামিদের। তাদের পক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীসহ আরও অনেক আইনজীবী শুনানি করেন। পরে আদালত আবেদনগুলো নথিভুক্ত রাখার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আসামিরা রিমান্ডে নির্যাতনের কারণে অসুস্থ বলে চিকিৎসার আবেদন করেন। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী কারাকর্তৃপক্ষকে চিকিৎসার নির্দেশ দেন।

আসামিদের পক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইনের বিরুদ্ধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম।

মঙ্গলবার এমনটা জানিয়ে জবি উপাচার্য বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের একটি অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চিন্তার একটি বিষয়। কেননা সে স্বাধীনতার স্বপক্ষে গড়ে ওঠা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে তৈরি সংগঠনের একটি শাখার সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের যে অভিযোগ, সেটি প্রশাসন দেখেছে। কিন্তু আমাদের শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলায় এ বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার ছাত্রত্বও পর্যালোচনা করা হবে। যেটুকু আমি জানতে পেরেছি, সে এখন প্রফেশনাল প্রোগ্রামে ভর্তি রয়েছে, রেগুলার শিক্ষার্থী নয়। তবে এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজের সঙ্গে সম্পর্কিত। সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনের বিরুদ্ধে এমন একটি অভিযোগ খুবই মারাত্মক।

অধ্যাপক সাদেকা হালিম আরও বলেন, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগটি তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও একটি কমিটি হবে। কমিটিতে শিক্ষকরা থাকবেন। তবে এটি জাতীয় কনসার্ন। যেহেতু ২০১৬-১৭ সালের মেডিকেল কলেজের প্রশ্নফাঁস ছিল, তখনও আমরা বেশ কয়েকটা ঘটনা দেখেছি। সেহেতু আমি মনে করি, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে, তারাও দেখবে। আর ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির যারা আছেন, তাদেরও বিষয়টি দেখা উচিত বলে মনে করি।

তবে এর আগে তিনি বলেছিলেন, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ একটি গুরুতর বিষয়। আমরা যদি কারও বিরুদ্ধে এমন সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই, তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। 

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন বলেছেন, যে কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান। অনৈতিক ও গঠনতন্ত্র বিরোধী, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলে অবশ্যই সংগঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

নরসিংদীর রায়পুরার উপজেলা চেয়ারম্যান ও জাতীয় রাজস্ব রোর্ডের সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা কানিজ বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন।

রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে এই আবেদন করেন। আদালত আগামী ২৮ জুলাই এই আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ সালাম। 

এদিকে গত সোমবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল আদালত মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও তাদের ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবকে বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত ইফাতের কথিত বাবা জাতীয় রাজস্ব রোর্ডের সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চারবার অনুসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবারই অনুসন্ধান পর্যায় থেকে শেষ হয়েছে কার্যক্রম। এক ধরনের অলিখিত ‘ক্লিনচিট’ দেওয়া হয়েছে মতিউরকে। মতিউরের বিরুদ্ধে ফের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

ছাগলকাণ্ডের পর মতিউরের নামে-বেনামে শতশত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য সামনে এসেছে। এছাড়া মতিউরের সন্তানদের বিলাসবহুল গাড়িও, পাখি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এবার পঞ্চম বারের মতো তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলো।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।