অপরাধ

জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তা বাস্তবায়ন করেন তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তদন্ত সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে পলক এ কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন। পলকের দেয়া তথ্য জানিয়ে তাজুল বলেন, শেখ হাসিনার টার্গেট ছিল ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা ধামাচাপা দেয়া।

তিনি বলেন, আসামি জিয়াউল আহসান ট্রাইব্যুনালে একটি আবেদন করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ট্র্যাইব্যুনালের নাকি বিচার করার এখতিয়ার নাই। বিচার বিতর্কিত করতে এমন আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানসহ ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ, গাজী এম এইচ তামিম।

ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলমের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের চাকতাই শাখা থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এস আলমের কর্মচারী মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম সারওয়ার চৌধুরীকে সামনে রেখে ওই টাকা হাতিয়ে নেয় আলোচিত গ্রুপটি। এতে সহযোগিতা করেন ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন এমডি ও পরিচালকসহ ৩৪ কর্মকর্তা।

তাদের পাশাপাশি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের মালিক মিলিয়ে মোট ৫৮ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলমসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মুরাদ এন্টারপ্রাইজের গোলাম সারোয়ার চৌধুরী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যাংকের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে হাতিয়ে নেয় অর্থ। ২০২১ সালের ২১ থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ৮৯০ টাকা ঋণ মঞ্জুর হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের নভেম্বরে বিনিয়োগ সীমা বৃদ্ধি করে হাজার কোটি এবং ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বরে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়। যার মধ্যে ১ হাজার ৯২ কোটি টাকা পাচার করেছে।

গাজীপুরে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষের ঘটনায় মাঠ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকার। মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীদের কেউই মাঠে প্রবেশ করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ধর্মীয় স্বার্থে কোনো পক্ষকে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তাবলিগের দুই পক্ষের হতাহতের ঘটনায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে মাঠ দখল নিয়ে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থী অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে শতাধিক আহতের ঘটনা ঘটে।

হতাহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। নিহতরা হলেন– কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু এলাকার বাচ্চু মিয়া (৭০), দক্ষিণ খানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল হোসেন (৬০) এবং বগুড়ার তাইজুল ইসলাম। তাদের মধ্যে বেলাল হোসেন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্বনয়কদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালীন সময় এমন হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে জুবায়েরপন্থী সংগঠনটির মিডিয়া সমন্বয়ক মুফতী আমানুল হক।

এদিকে সাদপন্থীদের মিডিয়া সমন্বয়ক মুহাম্মদ সায়েম গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ব ইজতেমার মাঠ আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আমাদের বেলাল হোসেন নামের এক সাথীর মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার আগে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার জন্য সাদ অনুসারী মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। আর সাদপন্থীরা যেন ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে না পারেন, সেজন্য আগে থেকেই ময়দানে অবস্থান করছিলেন জুবায়েরপন্থীরা।

বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৭ জনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

এই মামলায় ৬ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াকে।

বাবরকে এ মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ হাজির করতে না পারায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।

কোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী নিরাপদ ব্যক্তিকে সাজা দেয়া বিচারের মূল উদ্দেশ্য হতে পারে না। পুলিশ তার বিরুদ্ধে অকাট্য সাক্ষ্য প্রমাণ আদালতে হাজির করতে পারেনি। মামলাr তদন্তে যথেষ্ট ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে বলেও জানায় আদালত।

পরিকল্পিতভাবে ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীরা হামলা করেছে বলে দাবি করেছেন যুবায়েরপন্থীরা। এর আগে, গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক।

সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিব ইস্কান্দার।

গতকাল মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্বনয়কদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালীন সময় এমন হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে যুবায়েরপন্থী সংগঠনটির মিডিয়া সমন্বয়ক মুফতী আমানুল হক।

এছাড়া ঘটনা সম্পর্কে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, সাদপন্থীরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। পুরো একতরফাভাবে হামলা চালানো হয়েছে। সমস্যাটি আলোচনায় মাধ্যমে সমাধানের প্রক্রিয়া চলছিলো। এমন অবস্থায় এ হামলা মেনে নেয়ার মতো নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

র‍্যাব বিলুপ্ত করা হলে সে সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। পূর্বে র‍্যাব কতৃক ঘটে যাওয়া নেতিবাচক কাজের জন্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনাও করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় র‍্যাবের বিরুদ্ধে আয়না ঘরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গুম-খুন কমিশন যেহেতু এটা নিয়ে কাজ করছে সেজন্য এসব আয়নাঘর অক্ষত রাখা হয়েছে। এখন থেকে র‍্যাবের কোনো সদস্য ব্যক্তিগত স্বার্থে জড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন র‍্যাব প্রধান।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অভিযোগ আছে। তবে সামনে এমন ঘটনা আর হবে না। র‍্যাব কর্তৃক যারা গুম-খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেসব পরিবারের কাছে ক্ষমাও চান র‍্যাব ডিজি। বলেন, এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে র‍্যাব দায়মুক্ত হবে।

শহিদুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে জনপ্রত্যাশা এখনও পূরণ হয়নি। এসময় গত চার মাসে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাদাবাজির অভিযোগে ১৬ র‍্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান র‍্যাব ডিজি। এছাড়া জুলাই-আগস্টের মামলায় র‍্যাব ৩৫৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বলেও জানানো হয়।

সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৭ বছরের সাজা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের সাজাও স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর আগে, ৫ ডিসেম্বর অর্থপাচারের এই মামলায় গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে খালাস দেয় হাইকোর্ট।

২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ১২ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশি টাকায় ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। মামুনকে খালাস দেয়ার কারণে মামলার আইনি সুবিধা পেয়ে তারেক রহমানের সাজাও স্থগিত করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার ওপর হামলার অভিযোগে জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও নড়াইল-২ আসনের সাবেক এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও তার বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপনসহ ২৯৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে লোহাগড়া থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার মূখ্য সংগঠক কাজি মো. ইয়াজুর রহমান বাবু।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল শিকদার নীল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ মশিয়ুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল হক রোম, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল আমীর লিটু।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মী ও গুন্ডা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, খুনি, অস্ত্রধারী ব্যক্তি। গত ৪ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার কর্মসূচি চলাকালে উপজেলার লোহাগড়ার সিএন্ডবি চৌরাস্তা মোড়ে ছাত্রজনতার ওপর হামলা করে বেধড়ক মারপিট করে অভিযুক্তরা। বাদীসহ ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থীকে রামদা, বাঁশের লাঠি, রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে মামলা বিবরণীতে বাদী উল্লেখ করেন।

লোহাগড়া থানার ওসি মো. আশিকুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই মামলায় ইতোমধ্যে দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মায়ের ডাক সংগঠনের আয়োজনে আওয়ামী শাসনামলে গুম-খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে গণজমায়েত কর্মসূচি।

আয়োজনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার আগে থেকেই তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হন। গণজমায়েত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

মূলত জুলাই গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, ক্রসফায়ার, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, মোদিবিরোধী আন্দোলন, ডিএসএসহ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী জুলুমের প্রতিবাদ জানাতে ভুক্তভোগীরা গণজমায়েতে অংশ নেন।

সমাবেশে সারাদেশ থেকে ভুক্তভোগী ব্যক্তি তাদের অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ এবং বিচারের দাবি জানাচ্ছেন।

সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার ইস্যুতে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। সেগুলো ধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরির পেছনে অন্যতম কারণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভুল তথ্য দর্শকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। যার ফলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পাশাপাশি একটি সংগঠনের নামেও। আর এতে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে ভুল বোঝাবুঝির জায়গায় পতিত হচ্ছে বাংলাদেশ, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে ইসকনও। দ্য উইক ম্যাগাজিন ইন্ডিয়া-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন ইসকনের কেন্দ্রীয় আধ্যাত্মিক নেতা ও মুখপাত্র দেবশঙ্কর বিষ্ণু দাস।

চিন্ময়ের পরিচয় নিয়ে প্রচলিত একটি ধারণার সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দেন দেবশঙ্কর। তিনিও জানান, চিন্ময় প্রায় ৬ মাস আগে ইসকন থেকে বহিস্কৃত হন। পরবর্তীতে নিজের সংগঠনের প্রতিই মনোযোগী ছিলেন। তাই যে ব্যক্তি একটি শান্তিপ্রিয় ধর্মীয় সংগঠন থেকে বিতাড়িত, তার সম্পর্কে তথ্য প্রচারে ‘ইসকন’ শব্দটা ব্যবহার না করার দিকেই দৃষ্টিপাত করেন দেবশঙ্কর। এতে ১১০টি দেশে শান্তির পক্ষে কাজ করা ইসকনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।

চট্টগ্রামে চিন্ময়ের পক্ষে এক আইনজীবী লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলে, তিনি বাধার মুখে পড়েন- এমন কিছু তথ্য চাউর হয়েছে বলে জিজ্ঞাসা করা হলে দেবশঙ্কর জানান, এটি সঠিক নয়। যারা এ ধরণের তথ্য প্রচার করেছে তারা ভুল বার্তা দিয়েছে।

শুধু চিন্ময়ই না, যেকোনো মানুষ তা যে ধর্ম-বর্ণের হোক, তার আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার পাওয়ার পক্ষে কথা বলেন দেবশঙ্কর। তবে যেহেতু চিন্ময় দাস ইসকনের সদস্য নন, তাই ইসকনের কাছ থেকে তিনি সাহায্যপ্রার্থী হতে পারেন না বলেও মনে করেন ধর্মীয় সংগঠনের এ মুখপাত্র।

এসময় বাংলাদেশে ইসকনের যাত্রা ও কর্মকাণ্ডে জোরপূর্বক কোনো শিথিলতা আনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে দেবশঙ্কর জানান, এটা হাস্যকর। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে শুরু করে সেখানকার কেউ এক্ষেত্রে কোনো বাধা দেয়নি। ১৪০টি সেন্টারে তারা আগের মতোই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান।

বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যু নিয়ে বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়ের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে এখন অপতথ্য খুব দ্রুত ছড়ায়। তবে মূলধারার গণমাধ্যমকে খবর বা তথ্য প্রচারে আরও সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ইসকনের এই কেন্দ্রীয় নেতা। এসময় কিছু মানুষও ইচ্ছে করে গুজব তৈরি করছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।

প্রতিটি দেশের অভ্যন্তরীণ নিজস্ব আইন আছে উল্লেখ করে দেবশঙ্কর জানান, আমরা নিয়মগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়কে এ বিষয়কে মনে রাখতে অনুরোধ করেন তিনি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।