অপরাধ

দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।যেখানে ধর্মে ধর্মে বিভেদ ও ঘৃণার কোনো রাজনীতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গা পূজার মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে একথা জানান তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, হিন্দুদের আট দফার বিষয়ে বিএনপির যথেষ্ট সহানুভূতি আছে। বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলই হিন্দুদের উপর অত্যাচার ও দখলদারিত্বের সাথে জড়িত ছিলো বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রতিটি ঘটনারই বিচার হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল আরও জানান, বিদেশি কিছু মিডিয়া বাংলাদেশের সম্প্রীতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাজনৈতিক কারণ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

বাগেরহাট (মোরেলগঞ্জ) প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক আহবায়ক খান মতিউর রহমান এর বিরুদ্ধে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপি ঝাড়ু মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছে।

শনিবার সংবাদ সম্মেলনে মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুল হক বাবুল বলেন, বাগেরহাট ৪ এর বট বৃক্ষের মতো বিএনপি'র সকল নেতাকর্মীদের যিনি ছায়া দিয়ে রেখেছেন এবং হামলা-মামলা শিকার হলে যিনি সর্বক্ষণ আগলে রেখেছেন সেই গণমানুষের প্রিয় নেতা জনাব খায়রুজ্জামান শিপন কে নিয়ে কটুক্তি করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আব্দুল জব্বার মোল্লা, মোড়লগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক সিকদার ফরিদুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মতিউর রহমান বাচ্চু, পৌর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ন আহবায় ফারুক হোসেন সামাদ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এফ এম শামীম আহসান।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি নেতা মশিউর রহমান শফিক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফকির রাসেল আল ইসলাম, পৌর বিএনপি'র যুগ্ম আহবায়ক বদিউজ্জামান মহারাজ, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আসাদুজ্জামান মিলন,  ঢাকা শ্যামপুর থানা শ্রমিক দলের সভাপতি হারুন অর রশিদ, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মজনু মোল্লা, উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসান, পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি মাসুদ খান চুন্নু, পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান জুয়েল, মৎস্যজীবী দলের উপজেলা সভাপতি লাভলু মুন্সি, পৌর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া আক্তার, বাগেরহাট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন অবশ্যই বাতিল করা উচিত। এই আইন বাতিল হবেই। এমন মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আইনটি পুরোপুরি বাতিল হবে নাকি ‘স্পিচ অফেন্স’ সংক্রান্ত মামলাগুলো বাতিল করা হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, নতুন আইনের উদ্দেশ্য হবে সাইবার সুরক্ষা দেয়া। তাছাড়া, নারী ও শিশুদের স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে তাদের বিশেষ নিরাপত্তার ও নাগরিদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এ সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলোও আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, সাইবার সিকিউরিটি আইন বা এর আগের পুর্বসূরী মামলাগুলো প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে সরকার চাইলেই সব মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন না। ভুয়া মামলায় কেউ দোষী সাব্যস্ত হলেও তাকে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মুক্তি পেতে হবে। এ সময় সকল ধরণের কালা কানুন থেকে দেশকে মুক্ত করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা পরিবর্তন করে ২০২৩ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়। তাতে পুলিশকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়। তাছাড়া ডিজিটাল মাধ্যম থেকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত অপসারণের পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতাও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দেয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে কমানো হয় সাজার পরিমাণ। আগের আইনে ১৪টি জামিনঅযোগ্য ধারা ছিল। নতুন আইনে সেটি কমিয়ে চারটি করা হয়। আগের আইনটির ৫৭ ধারা সবচেয়ে ‘বিতর্কিত’ ছিল।

মাত্র ১৩ কার্য দিবসে ৪০০টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কাছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার আলোচিত বন্দিশালা ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করে ভুক্তভোগীদের বর্ণনার সঙ্গে মিল পেয়েছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। তবে বিভিন্ন স্থান পরিবর্তনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণগুলো মুছে ফেলার অভিযোগ তুলেছে সংস্থাটি।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকালে গুম সংক্রান্ত কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

গুম সংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এরই মধ্যে বিভিন্ন আয়নাঘরে পরিবর্তন আনা হয়েছে। দেয়াল রঙ করার পাশাপাশি কয়টি কক্ষ ভেঙ্গে ফেলারও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তবে আয়নাঘরে সব ধরনের পরিবর্তন স্থগিত করার জন্য লিখিতভাবে বলা হয়েছে বলেও জানান কমিশনের সদস্যরা। তারা বলেন, অভিযুক্তদের তলব করে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। গুমে অভিযুক্ত যারা পালিয়ে গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আয়নাঘরে প্রমাণ মুছে ফেলা প্রসঙ্গে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন– যে বর্ণনাগুলো আমরা পেয়েছি, সেই মোতাবেক সেলগুলো অনেকাংশে নেই এখন। কিছু জিনিস পরিবর্তন করা হয়েছে, কিছু জিনিস ভেঙে ফেলা হয়েছে।

মূলত ৬ আগস্ট ২০০৯ থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ সালের মধ্যে হওয়া গুমের ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখবে এই কমিশন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। জমা দেয়ার টাইমলাইন ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর, সেটাকে বর্ধিত করে ১০ অক্টোবর করা হয়েছে।

গার্মেন্টসে ছড়ানো অস্থিরতায় একটা গ্রুপ উস্কানি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ের এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, সাভারে একজন নিহতের ঘটনায় শ্রমিকদের ভেতর থেকেই প্রথম কেউ গুলি ছুঁড়েছিলো। এরপরই সহিংস হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তার অভিযোগ, গুজব ছড়িয়ে শ্রমিকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে, পাল্টা গুলি ছুঁড়তে বাধ্য হয় পুলিশ।

পোশাক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে আসিফ মাহমুদ বলেন, নিহতের পরিবারকে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া যারা গুজব ছড়িয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

উপদেষ্টা বলেন, যেসব কারখানার মালিক বেতন দিচ্ছে না তাদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা হবে। চাপ প্রয়োগের মাধ্যমেই বকেয়া বেতন আদায় করতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব পক্ষের সহযোগিতা দরকার বলেও মন্তব্য করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা।

জোর করে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা লিখে নেয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্লবী থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সাবেক মালিক সারোয়ার চৌধুরী।

মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে মাশরাফীকে। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন– হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র, ইমাম হাসান, অজ্ঞাত (রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির এক কর্মকর্তা), কে এম রাসেল, বাবলু ও অজ্ঞাতসহ মোট ৮ জন।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে, জোরপূর্বক সরওয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মাদার প্রতিষ্ঠান ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিকানা কেড়ে নেয়া হয়েছে। মাশরাফীর কার্যালয়ে বসে হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র নামে সিলেট স্ট্রাইকার্সের সহ-মালিক সারোয়ার চৌধুরীর মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে ছিলেন।

আরও বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির এক কর্মকর্তা (অজ্ঞাত) সারোয়ারকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করেই স্বাক্ষর নিতে শুরু করেন। এমনকি তার পাসপোর্টও জব্দ করা হয়েছিল। এসময় তিনি যেন কারও সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা না বলেন, সেই হুমকিও শুভ্র তাকে দিয়েছিলেন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বিরুদ্ধে নড়াইলে আরও একটি মামলা হয়েছিল।

ব্যাংক জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত দেশের শীর্ষ ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলমের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এস আলম গ্রুপ ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ নিয়েছে ও বিদেশে কত টাকা পাচার করেছে, এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি কামরুল ইসলাম মোল্লা ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

শুনানিতে আদালত বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। তাই তারা ধীরে এগুতে চান।

এর আগে এস আলমের সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর এবং স্থানান্তরের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকোনুজ্জামান।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে সরকারী উন্নয়নমূলক কাজের বিভিন্ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করতো মিরাজুলের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার মধ্যে পিরোজপুরের উন্নয়ন কাজের মান সবদিক দিয়ে খারাপ জেলা। এই জেলার কাজের মান খারাপ হওয়ার জন্য মিরাজুল ইসলাম দায়ী, এমনটাই মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মিরাজুল পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান।

তিনি ভান্ডারিয়রা-কাউখালী এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য মহারাজ এর ছোটো ভাই। সাবেক সাংসদ মহারাজ একসময় জাতীয় পার্টির (জেপি) আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কথিত আছে এই নির্বাচনে জেতার জন্য তার ভাই ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় করেন।

পিরোজপুর জেলায় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর পোষ্টিং হতো এই দুই ভাইয়ের ইচ্ছানুযায়ী। প্রথমদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়ে আসেন আব্দুল হাইকে। তার সাথে মতবিরোধ হলে নিয়ে আসেন নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল হাসানকে। তিনি সেখানে প্রায় চার বছর ছিলেন; তার সময়ের এলজিইডি পিরোজপুরের কাজের মান খুব খারাপ হলে তাকে প্রধান প্রকৌশলী তুলে নিয়ে আসেন।

এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে নিয়ে আসা হয় এলজিইডির সবচেয়ে সমালোচিত প্রকৌশলী জনাব সুশান্ত রঞ্জন রায়কে। তিনি এমন কোনো অপরাধ নাই যা এদের পক্ষে করেন নাই; টেন্ডারবাজি, অপ্রয়োজনীয় রিভাইস, ওভারপেমেন্ট, ডুপ্লিকেশন (একই স্কীম একের অধিক প্রকল্প থেকে টেন্ডারকরণ) ইত্যাদি অনেক ভয়ানক অপরাধ।

সুশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ভারী হলে কর্তৃপক্ষ তাকে সরানোর উদ্যোগ নেয়, আরেক দুর্নীতিপরায়ন নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদারকে নিয়ে আসা হয়। তিনি গত জুন মাসে অবসরে গিয়েছেন। এরপর নিয়ে আসা হয় অনৈতিক কাজের মাস্টারমাইন্ড বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী রনজিত দেকে।

পরবর্তীতে মিরাজুল ইসলাম তৎকালীন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী রশীদের সহযোগীতায় (কোটি টাকার বিনিময়ে) সুশান্ত রঞ্জন রায়কে ‘বরিশাল-ঝালকাঠী-পিরোজপুর’ (ইঔচ) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসাবে নিয়োগ পাওয়িয়ে দেন।

এই প্রকল্পের আওতায় পিরোজপুর জেলায় ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড কাজ পায়। যাহার প্রোপ্রাইটর মিরাজুল ইসলাম। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য (ওইজচ) নামে একটি প্রকল্প চালু হয়। এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ছিলেন আহমদ আলী। তাকে এই প্রকল্পের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সুশান্ত রঞ্জন রায়কে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। কারণ আহমেদ আলী জানতে পারেন তার প্রকল্পের প্রায় ১৫/২০টি ব্রীজের কাজ শুরুই হয়নি। অথচ ৮৫% পেমেন্টের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এই কাজগুলো করার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড। কাজগুলোর ওভারপেমেন্ট, ডুপ্লিকেশন, টেন্ডারিং ইত্যাদি ঘাপলাসহ আহমেদ আণলীর বিষয়টি পুণঃতদন্ত করে দেখা উচিত বলে সংশিষ্টরা জানান।

ইউওজডঝচ প্রকল্প এর কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। শুরুতেই এই প্রকল্প থেকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার স্কীম বাস্তবায়নের জন্য দরপত্র আহ্বানের নিমিত্তে অনুমোদন দেয়া হয়। ঐ অর্থ-বছরেই পিরোজপুর জেলায় প্রকল্প পরিচালক ১১০ কোটি টাকা ছাড় করেন। কাজগুলোর বেশিরভাগই নামে-বেনামে বাস্তবায়ন করছে ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড। তাদেরকে বরাদ্দকৃত টাকার প্রায় পুরোটাই দিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তখন পর্যন্ত মাঠে ৫% কাজও বাস্তবায়িত হয়নি। তাকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করার জন্য মিরাজ কোটি টাকার বেশি মন্ত্রীকে প্রদান করেন।

টঐইচ প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন মোঃ সেলিম মিয়া। এ প্রকল্পের অধীনে পিরোজপুর জেলায় ১৮টি ব্রীজ নির্মাণের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। প্রায় সবগুলোর কাজ করার দায়িত্ব পায় ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড। এসব স্কীমের ১৪টি তারা নিজে করছে। এই ১৪টি কাজের কোনো কাজই শুরু হয়নি, অথচ পরিশোধ করা হয় চুক্তিমূল্যের প্রায় ৮৫% টাকা ।

ঈঅঋউজওজচ প্রকল্প এর মাধ্যমে পিরোজপুর জেলায় ৭০ এর অধিক স্কীম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ রফিকুল হাসান। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এর মধ্যে প্রায় ৬৫টি স্কীম ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড পেয়েছে। এ প্রকল্পের কাজগুলোর টেন্ডারিং প্রক্রিয়াসহ গুণগতমান নীরিক্ষার জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শন করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। পিরোজপুর জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ ইব্রাহীম। মিরাজের ইচ্ছে অনুযায়ী তাকে নিয়োগ দেয়া হয়।

মিরাজের সাথে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও ভান্ডারিয়া নিবাসী সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব তোফাজ্জেল হোসেনের দহরম-মহরম সম্পর্ক। মূলত এদেরকে ব্যবহার করে বরিশাল বিভাগের সমস্ত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের নিয়োগে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

এলজিইডি সূত্র জানায়, দেশের পরিবর্তীত সর্বত্র সংস্কার হলেও এখানকার বিতর্কিত কর্মকর্তারা এলজিইডি মন্ত্রণালয়সহ সর্বত্র দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের এই দৌরাত্বের সীমা শুরু বরিশাল বিভাগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এলজিইডির আওতাধীন বাংলাদেশের সমস্ত প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগে মন্ত্রীর পক্ষে কাজ করেছেন। অনতিবিলম্বে বরিশাল বিভাগের সমস্ত প্রকল্প পরিচালদেরকে দায়িত্ব থেকে অপসারন করে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিয়োগদানের পরামর্শ সংশিষ্টদের।

এ ব্যাপারে মিরাজুল ইসলামের বক্তব্য জানতে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বর্তমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরিবর্তীত প্রেক্ষাপটে তিনি আত্মগোপনে থাকায় তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।