বাংলাদেশ

শিক্ষার্থীরা কোনো অবস্থাতেই সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। একটি মহল সরকার বনাম শিক্ষার্থী গেম খেলে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। জানিয়েছেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডে বিচারবিভাগীয় তদন্ত সংস্থার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের মূল দাবি পূর্ণ হয়েছে। কোটা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। অযথা শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি যেহেতু পূরণ হয়েছে, সেহেতু আমরা বিশ্বাস করি তারা শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাবে। তারা কোনো অশুভ শক্তির ঢাল হবে এটা জাতি চায় না। শিক্ষাজীবন স্বাভাবিক গতি ফিরে পাক এটা আমাদের প্রত্যাশা।

জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করায় সরকারকে এ সময় ধন্যবাদ জানায় আওয়ামী লীগ। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে বিএনপির প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, মির্জা ফখরুলের বিবৃতি দেখলে বোঝা যায়, তাদের সাথে জামায়াতের সম্পর্ক কতটা নিবিড়।

নাগরিক সমাজের অনেকেই চলমান সংকটে তাদের নিজস্ব মতামত দিচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যক্তিগত মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। তাদের মতামতের কারণে তৃতীয় শক্তি উসকানি হিসেবে সুযোগ নিতে পারে। সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি নজর দেয়ার আহ্বান জানাই।

বাঙালির জীবনে অভিশপ্ত মাস, শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন আজ। এই মাসটি শোক ও বেদনার। এই আগস্টেই, স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিলো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যে শূন্যতা পূরণ হবার নয় কোনোদিন। ১৯৭৫ সালের আগস্টের ১৫ তারিখ বাঙালির অবিসাংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সহধর্মিণী’সহ পরিবারের প্রায় সবাইকে ঘাতকচক্র নৃশংসভাবে হত্যা করে।

বিশ্বজনতা বঙ্গবন্ধু কে চিনে, এক নির্ভীক বীরের নামে। শোষণ, বঞ্চনা আর পরাধীনতার শেকল থেকে বেরিয়ে আত্মমর্যাদাশীল জাতি গঠনের মহানায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু।

যার আজীবন সংগ্রাম আর ত্যাগে জন্ম হয়েছিল একটি মানচিত্রের, কিছু বিশ্বাসঘাতকের চক্রান্তে তাকেই হত্যা করা হয় স্বাধীনতার পরিপূর্ণ তৃপ্তির আগে।বাঙালির গর্বের মুক্তিযুদ্ধের মাত্র ৪ বছর পরেই ইতিহাসে লাগে রক্তের দাগ। ১৫ আগস্ট জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে রচিত হয় কালো অধ্যায়।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনৈতিক ধারা পরিবর্তনের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল এদেশেরই কিছু বিপথগামী। তারাই হত্যা করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যের। ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক এই অধ্যায়ের পর বারবার প্রমাণিত হয়, ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে দিতেই পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড চালায় পরাজিত শক্তির।

ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে ঠিকই, কিন্তু অগ্রযাত্রা রুখতে পারেনি, তার লালন করা স্বপ্নের। দেরিতে হলেও হয়েছে হত্যাকারীদের বিচার। একসময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি এখন বঙ্গবন্ধু পরিবারের হাত ধরেই সমৃদ্ধির পথে।

বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার মধ্য দিয়ে চেষ্টা চলেছিল একটি আদর্শ মুছে ফেলার। সেই নরহত্যার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালির ইতিহাসে সে কালো মেঘের সূচনা হয়েছিল, পাঁচ দশক পরও সেই ঘনঘটা ফিরে ফিরে আসে বাংলার আকাশে।

স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যতোই উন্নতি করুক, জাতির পিতাকে হত্যার গ্লানি- ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাবে না কোনো দিনও।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুন অর রশীদকে বদলি করা হয়েছে। তাকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

বুধবার (৩১ জুলাই) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশ এ তথ্য জানানো হয়। জনস্বার্থে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।

এদিকে, একই আদেশে হারুন অর রশীদ ছাড়াও আরও দুইজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (লজিস্টিক, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামানকে ডিএমপি ডিবি প্রধান হিসেবে ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিনকে ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস থেকে লজিস্টিক, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

জাময়াত-শিবির আগেও নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান তাদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে এনেছে। তবে জামায়তকে নিষিদ্ধে যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, জনগণের তরফ থেকে জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি আরও আগে থেকেই ছিল। পরে বিএনপি ক্ষমতায় এসে আবারও তাদের রাজনীতির পথ তৈরি করে দেয়। এবার প্রজ্ঞাপনের পর নিষিদ্ধ হবে জামায়াত ও শিবিরের যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড।

এর আগে, সোমবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ১৪ দলের নেতাদের বৈঠকে জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়।

উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। পরে দলটির পক্ষ থেকে নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।

সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের দেখতে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি আহতদের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান।

আঘাতের তীব্রতা দেখে এবং হামলার নৃশংসতার কথা শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি তিনি। পরিদর্শনকালে আহতদের চিকিৎসায় নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিকুর রহমান।

এর আগে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটর (পঙ্গু হাসপাতাল), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল, রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে চিকিৎসাধীন আহতদের খোঁজ-খবর নেন এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন তিনি।

এছাড়া নাশকতাকারীদের সাম্প্রতিক সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর ১০ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, সাইবার সন্ত্রাসীরা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য ও ভুয়া ছবি পাঠিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা মেট্রোরেল, বিটিভিসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সুপরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে বন্দুক রেখে বর্তমান সরকারকে নিশানা করেছে বিএনপি। ক্ষমতা দখলের জন্য ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য সৃষ্টি এখন দলটির একমাত্র কৌশল। যেকোনো আন্দোলন দেখলেই বিএনপি সেখানে অনুপ্রবেশ করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে উন্মত্ত হয়ে ওঠে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এ সকল সন্ত্রাসী ঘটনার মদদদাতা, অর্থের জোগান দাতাদের চিহ্নিত করেছে এবং তাদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়াও চলমান। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা ইতিহাসের ন্যক্কারজনক ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে। জনগণের শান্তি, শৃঙ্খলা ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ কঠোরতা প্রদর্শন করবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, এ বিষয়ে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এই মহূর্তে সেই পরিস্থিতি (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা) তো নেই।

পেনশন ইস্যুতে আন্দোলনরত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে আলোচনাকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

আজও কিছু শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমেছে, এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা যেমনটি বলছেন কয়েকজন নেমেছে, কয়জন নেমেছে বা কী হয়েছে সে ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমাদের কাছে তথ্য নেই। তথ্য পেলে আমরা জানাতে পারব।

শিক্ষকদের পেনশনের বিষয়টি কীভাবে সুরাহা করা হবে, এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে বলেন, আলোচনা শুরু হলো, বক্তব্য শুনে সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলার পর সুরাহা সম্পর্কে জানা যাবে।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল আরও বলেন, আলোচনা শুরু হলো। শিক্ষকরা জাতির গৌরব। তাদের দাবি যৌক্তিকভাবেই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে শোনা হবে। তাদের দাবির বিষয়ে সরকার আন্তরিক বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

আলোচনার শুরুতে শিক্ষকরা বলেছেন, আন্দোলনের আগে থেকেই তারা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলে আসছেন তারা। এখনও তারা বিশ্বাস করেন, আলোচনার মাধ্যমেই পেনশন ইস্যুটির সমাধান হবে।

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বাড্ডা, ইসিবিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় আবারও বিক্ষোভ করার চেষ্টা করেছে কিছু শিক্ষার্থী। এ সময় ঘটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও। বিক্ষোভের চেষ্টাকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ৩০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পরিস্থিতি বিবেচনায় সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

দুপুর ১টার দিকে, সায়েন্সল্যাব এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন কিছু শিক্ষার্থী। পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করার চেষ্টা করেন তারা। তখন তাদের ধাওয়া করে পুলিশ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। সেখান থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়।

পরে, দুপুর ২টার কিছু আগে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন কিছু শিক্ষার্থী। তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখানে অন্তত ১৫ জনকে আটক করা হয়।

এ সময় সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় এক অভিভাবককে মা’কে। তার অভিযোগ, তার ছেলে ছাত্র নয়। তিনি অসুস্থ তাই বাজারে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল তার ছেলে। যুবক দেখলেই আটক করা হচ্ছে বলে অভিযোগও করেন ওই অভিভাবক।

প্রায় একই সময়ে বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও ছিল পুলিশের কঠোর অবস্থান। শিক্ষার্থীরা সেখানে সমবেত হতে পারেননি। আটক করা হয় ৩ জনকে।

এর আগে, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ইসিবি চত্বরে জড়ো হন বেশ কিছু শিক্ষার্থী। সেখানেও ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয় তাদের। এ সময় অন্তত ২০ জনকে আটক করে পুলিশ।

আটকদের কেউ ছাত্র নয় উল্লেখ করে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, জামায়াত শিবিরের আন্দোলনের ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হচ্ছে। তারা অন্ধকারে থেকে এসব কর্মসূচী দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, রোববার (২৮ জুলাই) ডিবি হেফাজত থেকে কোটা আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক যৌথ বিবৃতি দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। তবে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ দাবি করেন, ওই বিবৃতি স্বতস্ফুর্তভাবে দেয়া নয়, বরং তাদের জিম্মি করে বক্তব্য পাঠ করানো হয়েছে। পরে তারা ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীর কাজীপাড়ায় মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেফতার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকসহ ৮ জনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (২৮ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত কাফরুল থানার এক মামলায় এই তিন নেতাসহ আটজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

জানা গেছে, কাফরুল থানার মামলায় রুহুল কবির রিজভীসহ আট জনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাদের প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডে নেয়া অন্য আসামিরা হলেন– বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপি নেতা মাহমুদুস সালেহীন।

এর আগে, রামপুরা থানার মামলায় রুহুল কবির রিজভী, সুলতান সালাউদ্দিন, আমিনুল ইসলাম ও জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরোয়ারের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। আর নুরুল হককে বনানী থানার মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল।

আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রোববার (২৮ জুলাই) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম।

নাহিদ ইসলাম বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে নিহত ও আহত হয়েছেন। অগ্নিসংযোগসহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে রাষ্ট্রীয় স্থাপনায়। এ সকল অনাকাঙ্খিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানান তিনি।

নাহিদ আরও বলেন, তাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার যা ইতিমধ্যে সরকার পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি। সার্বিক স্বার্থে কর্মসূচী প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন নাহিদ ইসলামসহ ছয় সমন্বয়ক।

এর আগে, গত শুক্র ও শনিবার এই ছয় সমন্বয়ককে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।