বাংলাদেশ

যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সড়কও অবরোধ করা হয়েছে। তাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে অগ্নিসংযোগের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি মটরসাইকেল ও সিএনজিতেও আগুন দেয়া হয়।

এর আগে, সন্ধ্যায় ওই এলাকায় পুলিশের সাথে কোটাবিরোধীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ গুলি ছুড়ে। তাতে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সার্জিস আলম দাবি করেছেন, যাত্রাবাড়ীতে সংঘর্ষের এই ঘটনায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের কেউ নেই।

জানা গেছে, শুরুতে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা সেখানে জড়ো হয়। পরে আরও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে যোগ দেয়।

কোটা আন্দোলনে নিহতের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কিছু মহল উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় গণভবনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, কোটা আন্দোলন থেকে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝড়ে গেলো। এ সময় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, কোটা আন্দোলনে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। এ ঘটনা কখনো কাম্য নয়। চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের ছাদ থেকে নির্মমভাবে ফেলে দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটাও করা হয়। সন্ত্রাসীরা কোটা আন্দোলকারীদের মধ্যে প্রবেশ করে এই সংঘাত ও নৈরাজ্যকর পরিস্তিতি সৃষ্টি করছে। এ সময় যারা দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে তদন্ত করে তাদের বের করা হবে।

সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল শুনানির দিন ধার্য করেছে। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য আদালতে বলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এ সময় সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বানও জানান তিনি।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নেতৃত্ব এখন বিএনপি জামায়াতের অশুভ শক্তির হাতে। তাই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ চুপ থাকতে পারে না বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতা দখলে বিএনপি জামায়াত মরিয়া হয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভর করেছে। তারা প্রকাশ্যে উস্কানী দেয়ার সাথে সাথে সারাদেশ থেকে রাজধানীতে সন্ত্রাসী এনেছে। তাই বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা মোকাবেলায় সারাদেশের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকা পাহারা দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত যারা হয়েছে তারা ছাত্রলীগের। জামায়াত শিবির ও বিএনপি এই আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

সহকারী প্রক্টরকে লাঠি দিয়ে পেটানো ঘটনা গণমাধ্যমে আসেনি। গণমাধ্যমকে সত্য ঘটনা তুলে ধরার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফাইড কপি পাবার পর মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করা হয়েছে।
রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। সে রায়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি–নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি–ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ (যদি অন্যান্য থাকে) সব কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, ‘প্রয়োজনে উল্লেখিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা পরিবর্তন ও হার কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে এ রায় বিবাদীদের জন্য কোনো বাধা তৈরি করবে না। যেকোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটাপূরণ না হলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করায় বিবাদীদের স্বাধীনতা রয়েছে।’

এদিকে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া এই রায় স্থগিত চেয়ে ঢাবির দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্র পক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাচ বিচারপতির আপিল বিভাগ কোটা নিয়ে আইনী বিরোধের বিষয়বস্তুর ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাসকো) দেন। সেই সাথে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে রাষ্ট্র পক্ষকে লিভ টু আপিল (সিপি) করেতে বলা হয় এবং পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের আন্দোলনের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেড (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওই পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। যেখানে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৫ ও প্রতিবন্ধীর ১ শতাংশ কোটা বাতিল করা হয়।

এই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে রিট করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সে রুল যথাযথ ঘোষণা করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এই রায়ের পর সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

মুক্তিযোদ্ধাদের সব সময়ই সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। যে, যেই দলই করুক না কেনো; মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানিদের সম্মান করতে হবে। এমনটা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের রিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতা কখনোই বৃথা যেতে পারে না। শিক্ষার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, সরকার তাই করবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গবেষণার জন্য আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ফেলোশীপ প্রদান শুরু করে। তবে বিএনপির আমলে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তাই, গবেষণা অর্ধেক রেখে, অনেকেই ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল নির্দিষ্ট করেছি। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব। আমাদের জনশক্তি স্মার্ট জনশক্তি হবে। আমাদেরকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমাদের এখানে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী আছে তারা যেন সবদিক থেকে সুযোগ সুবিধা পায়। তারাও যেন এগিয়ে যায়। শিক্ষায় তারাও যেন পিছিয়ে না পড়ে। সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ইস্যুতে চলমান আন্দোলনে বিএনপির যোগসাজশ রয়েছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, আন্দোলনকারীদের জবাব দিতে ছাত্রলীগসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের সবাই প্রস্তুত রয়েছেন।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেষ্টা চলছে। এতে বিএনপির সমর্থন ও যোগসাজশ রয়েছে। গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের অস্তিত্বকে আঘাত করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী স্লোগানেই এ আশঙ্কা প্রমাণিত।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এ দেশের মাটিতে রাজাকারের ঠাঁই নেই, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যথার্থ ছিল। পরাজিত শক্তির আস্ফালন মেনে নেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নিজেদের রাজাকার বলে স্লোগান দেয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মনে রাখলে তারা নিজেদের রাজাকার দাবি করতে লজ্জা পেতো। সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে মন্ত্রিপরিষদের আয়োজনে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সাক্ষর এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সরকারের বদনাম হবে কিনা তা দেখার দরকার নেই, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠানে সমস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং সিনিয়র সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ইশতেহার মেনেই উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোলে অবশ্যই উন্নতি করা সম্ভব।

কৃচ্ছ্রতা সাধনের পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কর্মক্ষেত্রে যে অর্থ ব্যয় হয় তার স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, দুর্নীতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যখন হাত যখন দিয়েছি, আমি ছাড়বো না। দুর্নীতিবাজ ধরছি বলেই এখন সবাই জানতে পারছেন। আমার বাসায় কাজ করে গেছে, সেও এখন ৪শ’ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি তার চলেই না। তার অপরাধ জানতে পেরেছি, পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।

আজ রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে, তাদের থামিয়েছি। এখন আমরা দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছি, দুর্নীতবাজদের ধরছি। এটা চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, অনেকে আমাকে বলেন– এটা করলে সরকারের ইমেজ নষ্ট হবে। আমি সেটা মনে করি না। যারা অপরাধ করছে, দুর্নীতিতে জড়াচ্ছে; তাদেরকে ধরতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। দুর্নীতি যেখানে হোক, যেই হোক, আমি তাকে ধরবো। জিরো টলারেন্স যখন বলেছি, তখন এটা করেই ছাড়বো।

অনেক সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভ্যাকসিন টেন্ডার ছাড়াই দ্রুত কিনতে হয়েছে, মানুষকে বাঁচিয়েছি। নিয়মনীতি দেখতে গেলে তখন মানুষ বাঁচাতে পারতাম না। টেন্ডারে কিনতে গেলে কতদিন লাগতো? এখন যদি কেউ সেখানে দুর্নীতি খুঁজতে যান, যেতে পারেন। তবে সাংবাদিকদের তথ্য খোঁজা এবং ফাইল চুরি কখনও এক বিষয় নয়।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার (১৪ জুলাই) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।

রায়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেয়া রায় ও আদেশ, ২০১৩ সালের লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের তা বহাল ও সংশোধিত আদেশ এবং ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারির অফিস আদেশের (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনির কোটা) আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়া হলো। একইসঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি-ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব, আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতে নির্দেশ দেয়া হলো।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, প্রয়োজনে উল্লিখিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা পরিবর্তন ও হার কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে এ রায় বিবাদীদের জন্য কোনো বাধা তৈরি করবে না। যেকোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শুন্য পদ পূরণ করায় সরকারের স্বাধীনতা রয়েছে।

রায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান বলেন, গত বুধবার (১০ জুলাই) আপিল বিভাগ কোটার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৭ আগস্ট শুনানির দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় কার্যকর হবে না।

এর আগে, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটাপদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। পরে ১০ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া রায়ে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দেন আপিল বিভাগ।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।