বিশ্ব

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তিনি সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন। আজ শনিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে বিজয়ী ঘোষণার পর দেওয়া প্রথম ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

আজ শনিবার ইরানের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ জানায়, দ্বিতীয় দফায় ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান। তিনি দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।

বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেব। আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক। দেশের অগ্রগতির জন্য আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত।'

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তিনি সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন। আজ শনিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে বিজয়ী ঘোষণার পর দেওয়া প্রথম ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

আজ শনিবার ইরানের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ জানায়, দ্বিতীয় দফায় ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান। তিনি দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।

বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেব। আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক। দেশের অগ্রগতির জন্য আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’

প্রথম দফায় চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে একমাত্র সংস্কারপন্থী প্রার্থী ছিলেন পেজেশকিয়ান। তবে নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম দফায় কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় গত শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোট হয়। প্রথম দফায় প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং অতি রক্ষণশীল সাইদ জালিলির মধ্যে দ্বিতীয় দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।

ইরানের নির্বাচন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, তিন কোটির বেশি ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ১ কোটি ৬০ লাখের বেশি ভোট। আর সাইদ জালিলি পেয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি ভোট।

কয়েক বছর ধরে ইরানে রক্ষণশীল ও অতি রক্ষণশীল শিবিরের আধিপত্যের পর পেজেশকিয়ানের জয় দেশটির সংস্কারপন্থীদের আশাবাদী করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইরানের প্রধান সংস্কারপন্থী জোট তাঁকে সমর্থন দিয়েছিল। সাবেক দুই সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে আটজন, কনজারভেটিভ পার্টি থেকে দুজনসহ অন্যান্য দলের মনোনয়নে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোট ৩৪ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে নতুন করে আর কেউ জয়ী হতে পারেননি।

প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ হিসেবে রুশনারা আলী প্রথম ২০১০ সালে টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনালগ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ওই আসন থেকে তিনি টানা চারবার পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তিনি বেথনালগ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসন থেকে ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সব মিলিয়ে তিনি টানা পাঁচবার সদস্য নির্বাচিত হলেন।

গতবারের তুলনায় এবার রুশনারা আলীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কমলেও লেবার পার্টির এই আসন ধরে রেখেছেন তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্বতন্ত্র প্রার্থী আজমল মাশরুর। এবার আজমলের সঙ্গে তাঁর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। আজমল ১৪ হাজার ২০৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।

রুশনারা আলী ২০১০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তাঁর বয়স যখন সাত বছর, তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তাঁর পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক করেছেন।

ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে টানা চতুর্থবার লেবার পার্টির মনোনয়নে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন রুপা হক। এবারের নির্বাচনে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২২ হাজার ৩৪০। তাঁর নিকটতম প্রতিধন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী জেমস উইন্ডসর ক্লাইভ পেয়েছেন ৮ হাজার ৩৪৫ ভোট।

২০১৫ সালে লেবার পার্টির মনোনয়নে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন রুপা হক। এরপর টানা তিনবার তিনি পশ্চিম লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৬ সালের অক্টোবরে লেবার পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রুপা হক। তাঁকে সর্বদলীয় সংসদীয় মিউজিক গ্রুপের ভাইস চেয়ার এবং ক্রসরেলের সর্বদলীয় সংসদীয় পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল।

রুপা হকের পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের পাবনা জেলার মুকসেদপুরে। তাঁর বাবা মোহাম্মদ হক ও মা রুশনারা হক ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। রুপা হক রাজনীতিতে আসার আগে শিক্ষক ও লেখক ছিলেন। তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার ও ২০০৪ থেকে ইউনিভার্সিটি অব কিংস্টনে শিক্ষকতা করেছেন।

রুপা হক ট্রিবিউন, দ্য গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত কলাম লিখতেন। তিনি ইস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে যুব সংস্কৃতির ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক এবারের নির্বাচনে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন ৮ হাজার ৪৬২ ভোট।

২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিক প্রথম যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। কনজারভেটিভ পার্টির একসময়ের নিরাপদ এই আসন লেবার পার্টিকে উপহার দিয়ে তিনি এখন আসনটিকে লেবার পার্টির নিরাপদ আসনে রূপান্তর করেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১৬ সাল থেকে তিনি ছায়া শিক্ষামন্ত্রী, সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ার, নারী ও সমতা নির্বাচন কমিটির সদস্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছেন।

সফিক আহমেদ সিদ্দিক ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুল, হ্যাম্পস্টেডের রয়্যাল স্কুল ও মিল হিল স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। পরে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি ও কিংস কলেজ লন্ডন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ২০১১ সালে সরকার, রাজনীতি ও পলিসি বিষয়ে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া টিউলিপ ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এর মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর পথচলা শুরু।

লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে দ্বিতীয়বারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আপসানা বেগম। তিনি পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৩৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রার্থী গ্রিন পার্টির নাথালি বেইনফিট পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৭৫ ভোট।

আপসানার এই আসন নিয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বেশি আলোচনা ছিল তাঁর সাবেক স্বামীর কারণে। তবে আপসানার সাবেক স্বামী এহতেশামুল হক তাঁর ধারেকাছেও আসতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী এহতেশামুল ৪ হাজার ৫৫৪ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন।

২০১৯ সালে আপসানা লেবার পার্টির মনোনয়নে প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ওয়েস্টমিনস্টার পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম হিজাব পরিহিত সংসদ সদস্য। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সোচ্চার ভূমিকা পালন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি।

আপসানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাওয়ার হ্যামলেটসেই। তাঁর বাবা টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর মনির উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশে তাঁদের আদি বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। রাজনীতি বিষয়ে কুইনমেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে স্নাতক এবং ২০১২ সালে সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ও কমিউনিটি লিডারশিপ বিষয়ে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন তিনি।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টি পেয়েছে ৭০টি আসনে জয়। লন্ডনে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘পরিবর্তন এখন থেকেই শুরু হলো।’ উচ্ছ্বসিত জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আনন্দিত।’

যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরে গেল কনজারভেটিভ পার্টি। বিদায় নিতে হবে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে। তিনি পরাজয় মেনে নিয়েছেন।

স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।

এবারের নির্বাচনে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। ৩৫টি রাজনৈতিক দল মাত্র একজন করে প্রার্থী দেয়।

রেকর্ড ভেঙে এবার ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একেকটি আসনে গড়ে ৭ জন করে প্রার্থী। ৩১৭টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৫৯ জন।

যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উপেক্ষা করে গাজায় যুদ্ধবিরতি চান ইসরাইলি জেনারেলরা। হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য এই যুদ্ধবিরতি জরুরি বলে মনে কারেন এসব জেনারেলরা। এছাড়া লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে দমনের ক্ষেত্রেও গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন বলেন মনে করেন তারা। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) প্রকাশিত মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ইসরাইলের সাবেক ও বর্তমান ৬ সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

এই ৬ সেনা কর্মকর্তা মনে করেন, হামাসের হাতে থাকা আরও প্রায় ১২০ জিম্মিকে দ্রুত উদ্ধারে যুদ্ধবিরতি জরুরি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা মনে করেন—তাদের বাহিনী, এখন বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘতম যুদ্ধের জন্য সুসজ্জিত নয়। তারা বলছেন, হিজবুল্লাহর সঙ্গে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হলে বাহিনীকে পুনরায় সজ্জিত করার জন্য সময় প্রয়োজন।

তারা জানিয়েছেন, সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভিসহ প্রায় ৩০ জন জ্যেষ্ঠ জেনারেলের সমন্বয়ে গঠিত ইসরাইলের শীর্ষ সামরিক নীতি নির্ধারণী সংস্থা জেনারেল স্টাফ ফোরাম গাজায় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে পারে বলে মতৈক্যে পৌঁছেছে। 

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই একটি গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে যে—এমনটা না হলে জেনারেল হালেভির পদত্যাগ করতে পারেন। অবশ্য এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, ইসরাইলের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াল হুলাতা বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী জিম্মি চুক্তি ও যুদ্ধবিরতিকে পূর্ণ সমর্থন করছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি লেবাননে উত্তেজনা হ্রাসের সম্ভাবনা বাড়াবে এবং হিজবুল্লাহর সঙ্গে একটি সম্ভাব্য বৃহত্তর সংঘাতের ক্ষেত্রে (ইসরাইলকে) প্রস্তুত হওয়ার পর্যাপ্ত সময় দেবে।’ 

গাজায় যুদ্ধ পরিচালনা সংক্রান্ত কৌশলে সশস্ত্র বাহিনীর পরিবর্তন ও নেতানিয়াহু সরকারের সুনির্দিষ্ট ‘গাজা পরিকল্পনার রূপরেখা’ না থাকার কারণে সমরবিদদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। সরকারি দিকনির্দেশনার অভাবে গাজায় একটি ‘পাওয়ার ভ্যাকুয়াম’ বা শক্তির শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে, ইসরাইলি বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের একটি এলাকা থেকে সরিয়ে দিলেও শিগগিরই সেই এলাকা আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সমর নেতারা প্রকাশ্যে তাদের ব্যক্তিগত অসন্তোষ তুলে ধরছেন। 

নেতানিয়াহু হামাসকে নির্মূল করা এবং জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করাসহ যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকসহ বিশেষজ্ঞেরা এসব লক্ষ্য অর্জনকে সুদূর পরাহত বলে আখ্যা দিয়েছেন। গাজা আগ্রাসনের ৯ মাস পর, ইসরাইলি জেনারেলরা উপসংহারে পৌঁছেছেন যে—জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য অব্যাহত সামরিক অভিযান তাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। তারা আরও মনে করছেন, গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত হামাসকে অক্ষতই রাখবে এবং বিপরীতে ইসরাইলি বাহিনীর সম্পদ ও মনোবল নষ্ট হবে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর জনসাধারণের জন্য যেসব বিবৃতি দিচ্ছে, সেখানে সরাসরি যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন না করা হচ্ছে না। তবে এই বিষয়টি নেতিবাচক হতে পারে বলে মনে করেন ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি। তিনি ইঙ্গিত করেছেন, বর্তমান কৌশল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। 

তবে জেনারেলরা গাজায় যুদ্ধবিরতি চাইলেও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে একই সঙ্গে দেশের উত্তর সীমান্তে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বেশির ভাগ অংশ পুনরায় মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইসরাইল তার সামরিক বাহিনীকে চাপে ফেলেছে এবং বর্তমানে এর রসদ-সরঞ্জাম ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। নিয়মিত সেনাদের বাইরে রিজার্ভ সেনাদের মনোবল কমে গেছে। এরই মধ্যে ৪ হাজার সেনা আহত হয়েছে গাজা যুদ্ধে। এই অবস্থায় সরঞ্জামের ঘাটতির বিষয়টি আমলে নিয়ে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী সংঘাতের পরিধি বাড়ানোর বিষয়ে সতর্ক। 

গত সপ্তাহে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন আয়োজিত প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর থেকেই জো বাইডেনকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান উঠেছে। তবে নিজের এমন পারফরম্যান্সের কারণ জানিয়েছেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। 

বুধবার (৩ জুলাই) বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন সাংবাদিকদের বলেছেন যে, বিতর্কের আগে বিশ্বজুড়ে কয়েকবার ভ্রমণ করা তার জন্য ঠিক ছিল না। 

ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেন বলেন, আমি স্টাফদের কথা শুনিনি...এবং বিতর্কের মঞ্চে প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। 

তবে বিবিসি বলছে, ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের সর্বশেষ সফর ছিল ১৫ জুন, যা বিতর্ক শুরুর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে। রিপাবলিকান প্রার্থী এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের নির্বাচনী বিতর্ক হয় গত ২৭ জুন। 

এর আগে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিতর্কের দিনও প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঠাণ্ডার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। তবে গতকাল বাইডেন অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেননি।

এদিকে বিতর্কে এমন বেহাল পারফরম্যান্সের পর থেকেই বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জোরালো হচ্ছে। ডেমোক্রেটদের মধ্যেও আতংক ছড়িয়েছে। 

তবে বাইডেনের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছে ভিন্ন বার্তা। প্রেসিডেন্টের পরিবার চান, বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই থেকে সরে না আসুক। গত সোমবার ক্যাম্প ডেভিডে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগ দেন বাইডেন। সেখানে নানা আলোচনার মধ্যে বাইডেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা উঠে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান বলছে, বৈঠকে পরিবারের সদস্যরা বাইডেনকে বলেছেন, তিনি আরও চার বছর আমেরিকানদের সেবা দিতে পারবেন।  

গত ২৭ জুনের বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলার সময় বাইডেন ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনেন এবং পরস্পরকে তীব্র বাক্যবাণে জর্জরিত করার চেষ্টা করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ও ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসীর বিষয়ে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন। অন্যদিকে, আদালতে সম্প্রতি ট্রাম্পের সাজার প্রসঙ্গ তুলে তাকে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।

বিতর্কে ট্রাম্প শেষ করেছেন এই বলে যে, আমেরিকার মানুষ এখন জাহান্নামে বাস করছে। ট্রাম্প বলেন, সাড়ে তিন বছর ধরে আমরা জাহান্নামে বাস করছি।

অন্যদিকে, শেষ বক্তব্যে বাইডেন আমেরিকানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বলেন, তিনি কর কমিয়ে আনতে চান। একই সঙ্গে দাবি করেন যে ট্রাম্প কর বাড়িয়ে দেবেন। 

জো বাইডেন পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন। এর আগে ট্রাম্প সম্প্রতি জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বন্দুক আইনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টি তুলেছিলেন। 

সিএনএনের জরিপে বলা হয়েছে, অধিকাংশ দর্শক এই মত দিয়েছেন যে, জো বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। সিএনএনের তাৎক্ষণিক জরিপ অনুযায়ী, বিতর্ক দেখেছেন এমন নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প ভালো করেছেন। আর মাত্র ৩৩ শতাংশ বাইডেনের পক্ষে মত দিয়েছেন। 

তবে সিএনএন বলছে, জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশটির সব ভোটারদের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করেন না। যারা বিতর্কটি দেখেছেন, আর এই জরিপে অংশ নিয়েছেন, শুধু তাদের মতামতই এই ফলাফলে প্রতিফলিত হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে রিপাবলিকপন্থীদের সংখ্যা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

বিতর্কটি যারা দেখেছেন, জরিপে অংশ নেওয়া এমন ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতার প্রশ্নে বাইডেনের ওপর তাদের আস্থা নেই।

গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের ১৯৪০ জন সেনা নিহত হয়েছে।সেইসঙ্গে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের বেশ কিছু এলাকা নিজেদের দখলে নিয়েছে।

এক বিবৃতিতে এমনটাই দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনের এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে ইউক্রেনের ৪৭৫ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ৪০৫ সেনা এবং রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ১২০ সেনা নিহত হয়। 

এছাড়াও রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ৬২০ জন সেনা নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।

এদিকে খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ৩২০ জন সেনা মারা গেছে। ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে রাশিয়া। 

এ বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোকে রক্ষার জন্য বাফার জোন তৈরি করার লক্ষ্যে এই অভিযান চালানো হয়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযান চালিয়ে তাদের সেনারা খারকিভ ও দোনেৎস্কের দুটি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। 

তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পশ্চিমবঙ্গের মালদহের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে গ্রামবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন। গ্রামের ক্ষিপ্ত নারীরা তাকে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করেছেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, নিজেকে বাঁচাতে অবশেষে নৌকায় উঠে পালাতে হয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার দুপুরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রশিদপুর গ্রামের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মন্ত্রী তাজমুল হোসেন। তার সঙ্গে তখন বিডিও তাপসকুমার পাল ও অন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও ছিলেন। 

সেখানে যাওয়ার পরই তাজমুলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী। তারা বলেন, গত কয়েক দিনে ফুলহার নদীর পানি অনেক বেড়েছে। এতে গ্রামের কয়েকটি বাড়ি এবং দোকান ভেসে গেছে। কিন্তু সরকারের কেউ খবরও নেয়নি। এ অভিযোগে এক পর্যায়ে মন্ত্রী ও প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ গ্রামের নারীরা রীতিমতো হাতে লাঠি নিয়ে তাদের তাড়া করেন। 

এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আর নৌকায় করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয় মন্ত্রী তাজমুলকে। তিনি বলেন, ‘রশিদপুর গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপ। সেচ বিভাগ কিছু কাজ করেছে। কিন্তু আরও কাজ বাকি আছে।’ 

গ্রামবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়া বিডিও তাপস বলেন, ‘গ্রামবাসীর ক্ষোভের কথা শুনলাম। কী করা যায়, তা ওপর মহলের সঙ্গে কথা বলে করতে হবে।’

ইসরাইলের একটি যাত্রীবাহী বিমানকে প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল না দিয়েই ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে তুরস্কের আন্তালিয়া বিমানবন্দরের কর্মীরা। 

সোমবার ইসরাইলের বিমানটি তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আন্তালিয়া বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করলে এ ঘটনা ঘটে। 

বিমানটিকে জ্বালানি তেল দিতে অস্বীকৃতি জানানোর মধ্য দিয়ে মূলত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনী যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তারই প্রতিবাদ জানিয়েছে তুর্কি বিমানবন্দরের কর্মীরা। 

জানা গেছে, এদিন পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ থেকে তেলআবিবে যাচ্ছিল LY5102 বিমানটি। পথে একজন অসুস্থ যাত্রীর কারণে আন্তালিয়া বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে ফ্লাইটটি। 

এ সময় বিমানটির জ্বালানির প্রয়োজন হলে ইসরাইলি বিমানে জ্বালানি সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানায় তুর্কি বিমানবন্দরের কর্মীরা। এ অবস্থায় বিমানটি জ্বালানি তেল নেওয়ার জন্য গ্রিসের উদ্দেশে উড়াল দেয়। সোমবার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ইসরাইলের গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল। 

এদিকে তুরস্কের কূটনৈতিক সূত্র বলছে ভিন্ন কথা। সূত্রটি জানিয়েছে, মানবিক বিবেচনায় বিমানটিতে জ্বালানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে প্রাসঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কাছাকাছি সময়ে বিমানটির ক্যাপ্টেন নিজ ইচ্ছায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সূত্র: ইরনা

হামাসের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্র সরকার হামাসকে দখলদার ইসরাইলের প্রস্তাবিত একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। শনিবার বৈরুতে হামাসের লেবানন প্রতিনিধি ওসামা হামদান সংবাদ সম্মেলনে ওয়াশিংটনের চাপ সৃষ্টি করার এ অভিযোগ জানান।

তবে তেলআবিবের দেওয়া ওই প্রস্তাবে হামাস গাজায় ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে উপত্যকা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের যে শর্ত দিয়েছে, তা মেনে নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

ওসামা হামদান বলেন, মার্কিন প্রশাসন ইসরাইলি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে অবিকৃত রেখে তা হামাসকে মেনে নেয়ার জন্য চাপাচাপি করছে। এটি হচ্ছে নিজের নোংরা চেহারাকে চাকাচিক্য করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রশাসনের একটি অপচেষ্টা।

তিনি বলেন, ইসরাইল গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় যে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে আসছে, তাতে সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তেলআবিব দেশটির অস্ত্রের চালান না পেলে ইসরাইলকে বহু আগেই গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হত। 

এ সময় যুদ্ধের ময়দানে ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করা সত্ত্বেও, মার্কিন সরকার যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন হামাসের এই মুখপাত্র।

হামদান বলেন, হামাস গাজায় যে যুদ্ধবিরতি চায়, সেটি হতে হবে স্থায়ী এবং উপত্যকা থেকে সব ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার গাজায় ফিলিস্তিনিদের আটক তার পণবন্দিদের মুক্ত করে নিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি দিতে চায়। 

এর আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরাসরি বলে দিয়েছেন, পণবন্দিদের মুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ হবে না বরং হামাসকে ‘ধ্বংস’ করার মধ্য দিয়ে গাজা আগ্রাসন বন্ধ হবে।

তবে হামাসকে ধ্বংস করার এই হুমকি মেনে নিয়ে ইসরাইলি পণবন্দিদের মুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন ওসামা হামদান। আর এ কারণেই গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা বর্তমানে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। 

তবে ভেতরে ভেতরে ইসরাইলের মনোবাসনা পূরণ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেটা এখন মোটেও অস্পস্ট নয় বলে দাবি করেন হামাসের এই প্রতিনিধি।

শনিবার রাতে বৈরুতে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে হামদান আরও বলেন, আমরা আবার ঘোষণা করছি যে, আমরা যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আন্তরিক; তবে তা হতে হবে স্থায়ী এবং ইসরাইলের সব সেনা গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এরপরই দুপক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি হবে, তার আগে নয়।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

সেইসঙ্গে গাজা ভূখণ্ডে চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৮৭৭ জনে পৌঁছেছে এবং আহত হয়েছেন আরও ৮৬ হাজার ৮৫৮ জন। সূত্র: মেহের নিউজ

আরব লীগের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে লেবাননভিত্তিক ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নাম। 

শনিবার (২৯ জুন) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে আরব লীগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হোসসাম জাকি বলেছেন, হিজবুল্লাহ এখন থেকে আর সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। খবর আনাদোলুর।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈরুতে সফর শেষ করার পরদিন মিশরীয় আল-কাহেরা নিউজ চ্যানেলে এ কথা বলেন জাকি। তিনি বলেন, ‘আরব লীগের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তগুলোতে হিজবুল্লাহকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করেই সংস্থার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল এবং (হিজবুল্লাহর সঙ্গে) যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। তবে হিজবুল্লাহ এখন থেকে আর সন্ত্রাসী সংগঠন নয়।’

এ ঘোষণা এমন এক সময়ে এল, যখন হিজবুল্লাহ ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই করে যাচ্ছে। আরব লীগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘লীগের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সম্মত হয়েছে যে, হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আর বিবেচনা করা উচিত নয়।’ 

এ সময় তিনি জানান, আরব লীগের সদস্য রাষ্ট্র ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের শর্তগুলোও পূরণ করা হয়েছে। 

এর আগে, ২০১৬ সালের ১১ মার্চ হিজবুল্লাহকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে আরব লীগ। ইসরাইলের ইহুদিবাদী শাসকের মিত্র পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর চাপের ফলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরাইলের ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর মোকাবিলায় এবং গাজায় গণহত্যা বন্ধে ফিলিস্তিনেদের পাশে দাঁড়িয়ে হিজবুল্লাহ যেভাবে লড়ে যাচ্ছে, তা আরব দেশগুলোর জনগণের মাঝে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। এটিই হয়তো আরব লীগের দেশগুলোকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।