বিশ্ব

সংসদে আগুন ধরিয়ে দেওয়াসহ রক্তাক্ত বিক্ষোভের জেরে অবশেষে বিতর্কিত ‘ট্যাক্স বৃদ্ধি সম্বলিত অর্থ বিল’ প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিলেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো।

বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে, কেনিয়ানরা বিলটির বিষয়ে ‘কিছুই চায় না’।

কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট এসময় নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি যে, আমি এই বিলে স্বাক্ষর করব না’।

রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত কেনিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (কেএনএইচআরসি) দেওয়া তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবারের বিক্ষোভে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন।

উইলিয়াম রুটো বলেন, তিনি এখন তরুণদের সঙ্গে সংলাপে বসবেন, যারা ২০২২ সালের নির্বাচনের পর দেশটিতে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় এই বিক্ষোভের অগ্রসেনা ছিলেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি কেনিয়ার জনগণের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেছি, যারা বিক্ষোভের মাধ্যমে উচ্চস্বরে বলেছে যে, তারা এই অর্থ বিল চায় না। আর তাই আমি স্বীকার করছি যে, আমি ২০২৪ অর্থ বিলে স্বাক্ষর করব না এবং এটি দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে’।  

সম্প্রতি কেনিয়ায় রুটির ওপর ১৬ শতাংশ, মোটর গাড়ির ওপর ২.৫ শতাংশ কর আরোপ করে সরকার। আফ্রিকান গরিব দেশটির প্রধান খাদ্য রুটির এই অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ বিক্ষোভ জানাচ্ছিলেন প্রচুর মানুষ।

বিলটির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সত্ত্বেও মঙ্গলবার কেনিয়ার সংসদে বিলটি পাস হয়। এর জবাব হিসেবে বিক্ষোভকারীরা সংসদে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় এবং সংসদ ভবনের কিছু অংশে আগুন দেয়। এসময় আইনসভার কর্তৃত্বের প্রতীক জাকজমক দণ্ডটি চুরি হয়ে যায়।

এমন প্রেক্ষাপটে পেসিডেন্ট রুটো প্রথমে শক্ত হাতে দমন করা নীতি গ্রহণ করেন। তিনি সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়ে বলেন যে, দেশে কোনোরকম ‘সহিংসতা ও নৈরাজ্য’ সহ্য করা হবে না।

কিন্তু বিক্ষোভে হতাহতের ঘটনায় জনগণের ক্ষোভ বেড়ে যাওয়ায় বুধবার প্রেসিডেন্ট তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন এবং বিলটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

এদিকে বিক্ষোভের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান ওয়াঞ্জেরি এনডেরু জানিয়েছেন, বিক্ষোভের সময় যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা ছিল ‘যেন আমরা যুদ্ধের ময়দানে ছিলাম।’ 

দেশটির ক্যাথলিক বিশপরাও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন এবং ‘বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি না চালানোর জন্য পুলিশের প্রতি আবেদন জানান’। পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ থাকার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও কেনিয়ায় বিক্ষোভ ও বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত সাংবাদিক ও চিকিৎসা কর্মীদের হতাহতের ঘটনায় দুঃখ ও গভীর শোক প্রকাশ করেন।

তিনি কেনিয়ার কর্তৃপক্ষকে ‘সংযম চর্চা' করার জন্য এবং বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি

ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বোনসহ ১০ স্বজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে উত্তর গাজার আল-শাতি শরণার্থীশিবিরে হানিয়ার পরিবারের বাড়িতে এ হামলা চালানো হয়। গাজার জরুরি পরিষেবা সংস্থা এ কথাগুলো জানিয়েছে।

গাজার জরুরি পরিষেবা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘বিমান হামলায় ১০ জন শহীদ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বোন জাহরা হানিয়াও রয়েছেন।'

বাসাল বলেন, ‘কয়েকজনের মরদেহ এখনো বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে। মরদেহগুলো বের করে আনার মতো সরঞ্জাম আমাদের কাছে নেই।’ উদ্ধারকর্মীরা অন্য মরদেহগুলো গাজা নগরীর আল-আহলি হাসপাতালে নিয়ে যান বলেও জানান তিনি।

হামলার বিষয়ে জানতে এএফপির পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এ ঘটনার বিষয়ে তারা অবহিত জানালেও হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

এদিকে রাফাসহ গাজার অন্য এলাকায়ও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৩৯ জন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৭ হাজার ৬৫৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৬ হাজারের বেশি।

হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনা এড়ানোর আহ্বান

লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে উত্তেজনা এড়াতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

গাজা থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে এ বৈঠকে আলোচনা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ব্লিঙ্কেন ও গ্যালান্টের মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। গাজায় থাকা সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করাসহ ফিলিস্তিনি জনগণের ভোগান্তি লাঘবে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ কূটনীতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন ব্লিঙ্কেন।

ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে সম্প্রতি সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা বেড়ে চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে, সে জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করার সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধান উইলিয়াম বার্নস। ওয়াশিংটন সফরকালে তাঁর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন গ্যালান্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। আজ বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডসে দেশটির একটি আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগের পর চূড়ান্তভাবে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন অ্যাসাঞ্জ।

অ্যাসাঞ্জ যে মার্কিন আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করবেন, তা গতকাল মঙ্গলবারই জানা গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁসের যে ফৌজদারি অভিযোগ অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, আদালতে তা স্বীকার করবেন।

২০১০ ও ২০১১ সালে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক-কূটনৈতিক নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি মামলার তদন্ত করছে মার্কিন বিচার বিভাগ। পাঁচ বছর ধরে তিনি যুক্তরাজ্যের কারাগারে আটক ছিলেন। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তবে যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে একই সময় কারাভোগ করেছেন তিনি। মার্কিন বিচার বিভাগের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, কারাগারে থাকা ওই সময়কে তাঁর সাজাভোগের সময় হিসেবে ধরা হবে। ফলে তাঁকে নতুন করে আর কারাগারে থাকতে হবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে উইকিলিকস জানিয়েছে, শুনানি শেষে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন অ্যাসাঞ্জ।

 

ইসরাইলের একটি নৌঘাঁটিসহ ৬টি স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। শুক্রবার ‘নিখুঁতভাবে’ আঘাত হানতে সক্ষম এক ঝাঁক আত্মঘাতী ‘কামিকাজে’ ড্রোন দিয়ে ওই হামলা চালানো হয়।

এতে ইসরাইলের ওই নৌঘাঁটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

এদিন এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, ড্রোনগুলো ইসরাইলের ‘রাস আন-নাকুরা’ ঘাঁটিতে অবস্থিত এমন কয়েকটি ভবনে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে। যেসব ভবন ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা ও সাধারণ সেনারা ব্যবহার করে থাকেন। হামলায় নৌঘাঁটিটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং নিশ্চিতভাবে বহু সেনা হতাহত হয়েছে। 

এর আগে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। যাতে একজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হন। এর প্রতিবাদেই শুক্রবার হামলা চালায় হিজবুল্লাহ।

বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাতে এবং দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে বৃহস্পতিবারের ইসরাইলি হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই নৌঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে।  

এদিকে হিজবুল্লাহর হামলার বিষয়ে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে শুক্রবার রাতে ইসরাইলের রিজার্ভ জেনারেল ইতজাক ব্রিক বলেছেন, হিজবুল্লাহর ওপর যেকোনো হামলা এই অঞ্চলে ব্যাপক যুদ্ধের জন্ম দেবে।

আরেক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরাইলের শেবা কৃষিখামারের রুওয়াইসাত আল-কার্ন ও জিবদিন ঘাঁটি এবং কুফার শুবা পাহাড়ের রামথা ও আল-সামাকা ঘাঁটি লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করেছে। এতে ইসরাইলের বহু ক্ষতি হয়েছে।

গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সমর্থনে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। গত সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার তালেব সামি আব্দাল্লাহকে হত্যা করার পর ইসরাইলবিরোধী হামলা জোরদার করেছে লেবানন ভিত্তিক সংগঠনটি।

এর জেরে শীর্ষ পর্যায়ের ইহুদি সেনা কর্মকর্তারা সম্প্রতি লেবাননে ‘ব্যাপক-মাত্রায়’ হামলা চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেন। গত মঙ্গলবার ইসরাইলি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা লেবাননে অভিযান চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছে।

একই দিন হিজবুল্লাহ গোয়েন্দা ড্রোন পাঠিয়ে ইসরাইলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করে। এতে রীতিমতো ‘হকচকিত’ হয়ে যায় তেল আবিব।

এরপর বুধবার হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, লেবাননে ব্যাপক মাত্রায় আগ্রাসন চালালে ইসরাইলের এক ইঞ্চি ভূমিও হিজবুল্লাহর রকেট হামলা থেকে বাঁচতে পারবে না। একই সঙ্গে তিনি ইসরাইলকে আগ্রাসন চালানোর কাজে সহযোগিতা করলে সাইপ্রাসেও হামলা চালানোর হুমকি দেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়াকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে কিয়েভকে যদি সিউল অস্ত্র দেয়, তবে বড় ধরনের ভুল করবে।

রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিতে কোনো পক্ষ আগ্রাসনের শিকার হলে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সিউলের পক্ষ থেকে কিয়েভকে অস্ত্র দেওয়ার সম্ভাবনার কথা হয়। এর জবাবে পুতিন সিউলকে সতর্ক করে দেন।

পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ উত্তর কোরিয়া সফর ও দেশটির নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের এক দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কথাগুলো বলেন পুতিন। তিনি বলেন, সিউল যদি কিয়েভকে অস্ত্র সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে মস্কো এমন সিদ্ধান্ত নেবে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান নেতৃত্বকে খুশি করার সম্ভাবনা কম।

পুতিন আরও বলেছেন, উত্তর কোরিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে রাশিয়া। মূলত ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশোধ হিসেবে মস্কো এ পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে আরও বলেন, ‘যাঁরা কিয়েভকে অস্ত্র সরবরাহ করে ভাবছেন, তাঁরা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াচ্ছেন না, তাঁদের বলছি, রাশিয়ার পক্ষ থেকে পিয়ংইয়ংসহ বিশ্বের অন্য অঞ্চলেও অস্ত্র সরবরাহ ও সংরক্ষণ করার অধিকার রয়েছে।’

এদিকে গতকাল পুতিনের ওই মন্তব্যের পর আজ শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বলা হয়, ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের নানা উপায় তারা বিবেচনা করছে। তাদের অবস্থান নির্ভর করছে রাশিয়া এ বিষয়ে কীভাবে অগ্রসর হবে, তার ওপর। সিউলে রুশ রাষ্ট্রদূত জর্জি জিনোভিভকে ডেকে তারা চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং দ্রুত চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে উদ্বেগের সঙ্গেই দেখছে পশ্চিমা দেশগুলো।

চলতি মাসের শুরুতে পুতিন হুমকি দিয়েছিলেন, রাশিয়া পশ্চিমা প্রতিপক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে। কারণ, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে অতি সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হানতে পারা অস্ত্র সরবরাহ করছে এবং রাশিয়ার ভেতর লক্ষ্যবস্তুতে গুলি চালানোর অনুমতি দিচ্ছে।

লেবাননের ইরানপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে পুরোদমে যুদ্ধ বেধে গেলে ইসরায়েল ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা। তাঁদের ভাষ্যমতে, আয়রন ডোমসহ ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোতে যত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তার চেয়ে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের সংখ্যা বেশি। সে কারণে তাদের হামলা পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব না–ও হতে পারে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে সিএনএনের। তাঁরা বলেছেন, ইসরায়েল ভয় পাচ্ছে—হিজবুল্লাহর বিপুল পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মুখে ঝুঁকিতে পড়তে পারে আয়রন ডোম। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। আর এমন সময় বিষয়টি নিয়ে কথা উঠছে, যখন লেবাননে স্থল ও আকাশপথে হামলা চালানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই আয়রন ডোম। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, এই ব্যবস্থার পেছনে ২৯০ কোটি ডলারের খরচ করেছে তারা। আয়রন ডোম নিয়ে গর্ব করে থাকে ইসরায়েলি বাহিনীও। তাদের দাবি, গত বছর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের চালানো রকেট হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে আয়রন ডোমের সফলতার হার ছিল ৯৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

 

তবে ইসলামিক জিহাদের চেয়ে হিজবুল্লাহ অনেক বেশি শক্তিশালী। সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে—এমন ক্ষেপণাস্ত্র ও অস্ত্রশস্ত্র বছরের পর বছর ধরে সংগঠনটিকে দিয়ে আসছে ইরান। বর্তমানে তাদের হাতে এমন অস্ত্রের বড় মজুত আছে বলে ধারণা করা হয়। ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এসব অস্ত্র দিয়ে হিজবুল্লাহ বড় ধরনের হামলা চালালেই কেবল সেগুলো ঠেকানোর সক্ষমতা হারাতে পারে আয়রন ডোম।

এদিকে এরই মধ্যে নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছে হিজবুল্লাহ। চলতি মাসের শুরুর দিকে তাদের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তর ইসরায়েলে আয়রন ডোমের একটি ব্যাটারিতে হামলা চালিয়েছে একটি ড্রোন। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহেই ৯ মিনিটের আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ। ড্রোন থেকে ধারণ করা ওই ভিডিওতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার চিত্র ধরা পড়েছে।

 

হিজবুল্লাহর হাতে দেড় লাখ রকেট–ক্ষেপণাস্ত্র

হিজবুল্লাহর হাতে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও রকেট আছে, সেগুলোর সক্ষমতা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অস্ত্রশস্ত্রের চেয়ে বেশি। হিজবুল্লাহর এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বেশির ভাগই স্বল্পপাল্লার। এরপরও সেগুলোর কিছু কিছু ইসরায়েলের বেশ ভেতরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। ইসরায়েলি বাহিনীর ধারণা, সংগঠনটির হাতে প্রায় দেড় লাখ ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট আছে।

এদিকে মার্কিন সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর ৪০ থেকে ৫০ হাজার যোদ্ধা রয়েছেন। তবে গত বুধবার সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ জানিয়েছেন, এই সংখ্যাটা এক লাখের অনেক বেশি। এর মধ্যে হিজবুল্লাহর বিশেষ বাহিনী ‘রেদওয়ান ফোর্সের’ সদস্যরাও রয়েছেন। তাঁদের সিরিয়ায় বাশার আল–আসাদ সরকারের পক্ষে লড়াই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

আবগারি দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন ভারতের দিল্লির মূখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দিল্লির একটি আদালত তাকে জামিন দেন। আম আদমি পার্টির প্রধান আগামীকাল শুক্রবার (২১ জুন) জেল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। জামিনের আদেশের চিঠি কারাগারে পৌঁছানোর পরই বের হতে পারবেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বৃহস্পতিবার দিল্লির রউস অ্যাভিনিউ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক ন্যায় বিন্দু এই জামিন আদেশ দেন। তবে, জামিনের বন্ড হিসেবে কেজরিওয়ালকে ১ লাখ রুপি জমা দেয়ার আদেশ দেন আদালত।
 
নিম্ন আদালতের এই রায়ের পর ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থগিতাদেশ চেয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তবে, সেই আবেদন খারিজ করেন বিচারক।
 
এদিকে, কেজরিওয়ালের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, আবগারি দুর্নীতি মামলায় আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধানের বিরুদ্ধে ইডির হাতে কোনো প্রমাণ নেই। এই মামলায় যারা রাজসাক্ষী হয়েছেন, তাদের বয়ানের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মামলাটি।
 
নির্বাচন সামনে রেখে অর্থপাচারের অভিযোগে গত ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই গ্রেফতার অবৈধ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে মামলা করেন কেজরিওয়াল।
 
৫০ দিন কারাভোগের পর নির্বাচনী প্রচারের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এই জামিনের মেয়াদ ছিল নির্বাচনের শেষদিন অর্থাৎ গত ১ জুন পর্যন্ত।
 
কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার পরই শারীরিক কারণ দেখিয়ে কেজরিওয়াল তার জামিনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে তিনি কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে চান।
 
তবে তার এ আবেদন গ্রহণ করেননি আদালত। যার ফলে ২১ দিন জামিনে বাইরে থাকার পর রোববার বিকেলে তিহার জেলে আত্মসমর্পণ করতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।

যুক্তরাজ্যে পরবর্তী নির্বাচনে লেবার পার্টি জিতবে ও সরকার গঠন করবে—এমন সম্ভাবনা রয়েছে। লেবার পার্টির জমানায় করহার বাড়তে পারে—এমন আশঙ্কায় রেকর্ডসংখ্যক ধনী চলতি বছর যুক্তরাজ্য ছাড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অভিবাসনবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের এক সাময়িক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, চলতি বছর যুক্তরাজ্যের প্রায় ৯ হাজার ৫০০ জন ধনী দেশ ছাড়তে পারেন, যাঁদের অন্তত ১০ লাখ পাউন্ড নগদ ও বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ আছে। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে এর প্রায় অর্ধেক মানুষ যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন।

ইনস্টিটিউট ফর গভর্নমেন্টের প্রধান নির্বাহী হানা হোয়াইট বলেছেন, হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, নানাবিধি কারণে যুক্তরাজ্য আর ধনীদের জন্য আকর্ষণীয় থাকছে না। ব্রেক্সিটের জের এখনো চলছে; সেই সঙ্গে সিটি অব লন্ডনও আর বিশ্বের আর্থিক জগতের কেন্দ্র হিসেবে গণ্য হচ্ছে না।

নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথ নামের একটি বিনিয়োগ কোম্পানির তথ্য-পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী, প্রেসিডেন্ট, পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা অংশীদার—এ শ্রেণির মানুষেরা দেশটিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে থাকলে তাদের বিবেচনার মধ্যে নেওয়া হয়।

তবে এ প্রবণতা নতুন কিছু নয়। বিশ্বজুড়ে ধনীদের গণহারে অভিবাসন করার যে ধারা তৈরি হয়েছে, এটি তারই অংশ। ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১৬ হাজার ৫০০ ধনী যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন। হেনলি প্রাইভেট ওয়েলথ মাইগ্রেশন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছর বিশ্বের ১ লাখ ২৮ হাজার ধনী অভিবাসন করতে পারেন, গত বছরের চেয়ে যা ৮ হাজার বেশি।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের ব্যক্তিশ্রেণির ভোক্তাবিষয়ক শাখার প্রধান ডমিনিক ভলেক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, পৃথিবীতে এখন ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার সঙ্গে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা চলছে; এ পরিস্থিতিতে ধনীরা রেকর্ড সংখ্যায় দেশ ছাড়ছেন।

বিশ্বের যে ১৫টি দেশে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ধনীর বসবাস, সেগুলোর মধ্যে অতি ধনীদের যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের চেয়ে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে কেবল চীন, এ বছর ১৫ হাজার ২০০ অতি ধনী দেশটি ছেড়ে যেতে পারেন।

২০১৩ সালের পর যুক্তরাজ্য বাদে জাপান ও হংকংয়ের অতি ধনীর সংখ্যা কমেছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সে অতি ধনীর সংখ্যা বেড়েছে।

ব্রেক্সিটের কারণে যুক্তরাজ্যের মানুষের ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশে অবাধ যাতায়াত বন্ধ হয়েছে; সেই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন নতুন বাধা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের সঙ্গে আছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা।

যুক্তরাজ্যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত পাঁচজন প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য শাসন করেছেন; এর মধ্যে ২০২২ সালে লিজ ট্রাসের ৪৫ দিনের সরকারও ছিল। তিনি কর হ্রাস করে আর সরকারের ঋণ বৃদ্ধি করে ব্যয় মেটাতে চেয়েছিলেন। এ সিদ্ধান্তে পাউন্ডের ব্যাপক দরপতন হয় এবং শেষমেশ ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।

এ ধরনের অস্থিতিশীলতার কারণে নীতিপ্রণেতাদের পক্ষে দেশটির শ্লথ অর্থনীতির গতি বাড়ানো বা বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না।

আগামী মাসেই যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটারদের নিয়ে করা মতামত জরিপে দেখা গেছে, কির স্টারমারের লেবার পার্টি প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি সমর্থন পেয়ে এগিয়ে আছে। প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগানো ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লেবার পার্টি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।

স্টারমার ও সম্ভাব্য পরবর্তী অর্থমন্ত্রী র‍্যাচেল রিভস নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে আয়কর ও বিক্রয়কর বৃদ্ধি করা হবে না। এ ছাড়া ঋষি সুনাকের সরকার যে রাজস্বনীতি প্রণয়ন করেছে, সেই নীতিতেও অটল থাকবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

কিন্তু নির্বাচিত হলে লেবার পার্টি সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধিতে অঙ্গীকারবদ্ধ, যেমন ধনীদের আয়কর। এমনিতেই ধনীরা যুক্তরাজ্যে ছেড়ে যাচ্ছেন; সেই সঙ্গে এমন নীতির কারণে ধনীদের দেশ ছাড়ার প্রবণতা আরও বাড়তে পারে।

নির্বাচনের আগে ৫ লাখ অভিবাসীকে বৈধতা দিতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যারা কমপক্ষে ১০ বছর আমেরিকায় আছেন, তারা পাবেন এই বৈধতা। ফলে আমেরিকা থেকে তাদের আর বিতাড়িতও হতে হবে না। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বাইডেন প্রশাসনের এমন নীতিকে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর প্রায় ৪ মাস। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করার ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। অন্তত ১০ বছর ধরে যারা দেশটি বসবাস করছেন, এমন ৫ লাখ দম্পতিকে কাজের অনুমতি দেবে প্রশাসন। একই সঙ্গে বৈধভাবে আমেরিকায় কাজ করতে পারবেন তারা। আর এ পদক্ষেপ তাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে যারা কোনো মার্কিন নাগরিককে বৈধভাবে বিয়ে করেছেন।

জো বাইডেন বলেন, ‘আমি আজ নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা দিচ্ছি, যার মাধ্যমে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, দক্ষ কর্মীদের ভিসার বৈধতা দিতে সহায়ক হবে। কারণ, আমাদের অর্থনীতি বৃদ্ধিতে এটা সহায়তা করবে। এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত।

স্পাউস ছাড়াও ২১ বছরের কমবয়সী অভিবাসীদের প্রায় ৫০ হাজার অনাগরিক সন্তানকেও আইনি মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে, যাদের বাবা বা মা কোনো মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছেন।

প্যারোল ইন প্লেস নামে এ পদক্ষেপটি অভিবাসীদের জন্য গ্রিন কার্ড ও নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ আরও সহজ করবে। আমেরিকার কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা স্নাতক সম্পন্ন করেছেন, তাদেরও আনা হবে এ নীতির আওতায়। বৈধ হতে খুব দ্রুতই প্রার্থীরা আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।  

নতুন নীতির বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলেছেন, এটি বাইডেন প্রশাসনের একটি বুদ্ধিদীপ্ত রাজনৈতিক পদক্ষেপ, যা আগামী নির্বাচনে তাঁকে সাহায্য করবে। আসন্ন নির্বাচনে নেভাদা ও অ্যারিজোনার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে লাতিন ভোটারদের সমর্থন পেতে মরিয়া বাইডেন। এর অংশ হিসেবেই তিনি এমন পদক্ষেপ নিলেন বলে মত বিশ্লেষকদের।

নিজের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে উত্তর কোরিয়া সফরে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনের দুই দিনের এই সফরে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি অংশীদারি চুক্তি সই হতে পারে।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পুতিন পিয়ংইয়ংয়ে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন।

পুতিন সর্বশেষ উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন ২০০০ সালের জুলাইয়ে। অর্থাৎ তিনি ২৪ বছর পর উত্তর কোরিয়া সফরে গেলেন।

পুতিনের যাঁরা সফরসঙ্গী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
এ ছাড়া পুতিনের সফরসঙ্গীদের মধ্যে আছেন প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুরভ, আলেক্সান্ডার নোভাক, প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ, উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যালেক্সি ক্রিভোরুচকো, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো, পরিবহনমন্ত্রী রোমান স্টারোভোইত, রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রধান ইউরি বরিসভ, রেলওয়েপ্রধান ওলেগ বেলোজেরভ ও রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ কোঝেমিয়াকো।

গতকাল পূর্ব সাইবেরিয়ার শহর ইয়াকুতস্ক থেকে উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন পুতিন। অন্তত একটি যুদ্ধবিমান পুতিনকে বহনকারী উড়োজাহাজটি পাহারা দিয়ে উত্তর কোরিয়া নিয়ে যায়।

পিয়ংইয়ংয়ে পুতিনকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পুতিনের আগমন উপলক্ষে পতাকা, তাঁর ছবি, বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো পিয়ংইয়ং।

উত্তর কোরিয়া সফর শেষে বৃহস্পতি ও শুক্রবার (২০ ও ২১ জুন) ভিয়েতনাম সফরে যাবেন পুতিন। 

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।