বিশ্ব

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের প্রধান শিশু হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ ছাড়া দেশটির অন্যান্য শহরেও বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রুশ সেনারা। 

সোমবার এই হামলায় আড়াউ বছরের যুদ্ধে জর্জরিত দেশটিতে আরও অন্তত ৪১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। খবর রয়টার্সের।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিন শিশুসহ নিহতের সংখ্যা ৩৭ জন। আর আহত হয়েছেন ১৭০ জনের বেশি মানুষ।তবে বিভিন্ন অঞ্চলে হামলার স্থান থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৪১ জন মারা গেছেন।

তিনি বলেন, কিয়েভের একটি শিশু হাসপাতাল, মাতৃসদন কেন্দ্র, শিশু নার্সারি ও একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্রসহ ১০০টির বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রুশ সন্ত্রাসীদের অবশ্যই এর জবাব দিতে হবে। উদ্বিগ্ন হলেই সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে যাবে না। সমবেদনা কোনো অস্ত্র না।

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী কিয়েভের প্রতিরক্ষা শিল্প কাঠামো ও বিমান ঘাঁটি নিশানা করে হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়া সচরাচর দিনের বেলায় ইউক্রেনে বিমান হামলা চালায় না। তবে সোমবারের (৮ এপ্রিল) বিরল এই বিমান হামলার পর বাবা-মায়েরা শিশুদের ধরে হাসপাতালের বাইরে রাস্তায় হাঁটছিলেন। তারা হতবাক ও কান্না করছিলেন। হাসপাতালের জানালা ভেঙে গেছে। এদিন কিয়েভের শত শত বাসিন্দাকে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে সহায়তা করতে দেখা গেছে।

৩৩ বছর বয়সী স্বিতলানা ক্রাভচেঙ্কো রয়টার্সকে বলেন, এটা ভয়াবহ। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমি (আমার শিশুকে) ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলাম। আমি তাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম যেন সে নিঃশ্বাস নিতে পারে।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যা ও আগ্রাসন পুরো মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল। তিনি গাজায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার (৫ জুলাই) স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।  খবর পার্স টুডে।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গাজা পরিস্থিতি পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের ওপর প্রভাব ফেলছে এবং ক্রমেই তা চলমান সংঘাত বাড়িয়ে তুলছে যার ফলাফল আমরা দেখছি দক্ষিণ লেবাননে।’ তাই গাজায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় ইসরায়েলীদের এ বর্বরতার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতার কঠোর সমালোচনা করেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের প্রতিদিন সংঘর্ষ হচ্ছে। এছাড়া, গাজা উপত্যকায় গত ৯ মাসে ইসরাইল ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। 

 

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত চুক্তির একটি সংশোধিত প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে হামাস-ইসরাইল। গতকাল (শনিবার) হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চুক্তির একটি সংশোধিত প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে হামাস-ইসরাইল। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে মধ্যস্থতাকারীরা একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি, ত্রাণ বিতরণ ও ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দেবে। এই নিশ্চয়তা চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। 

এই চুক্তিটিতে হামাস তাদের একটি দাবি থেকে সরে এসেছে। তাদের দাবি ছিল, ইসরাইল প্রথমে চুক্তিতে স্বাক্ষর করার আগে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।

গোপন এক সূত্রের বরাতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, এই চুক্তির মধ্যে একটি ‘সম্পূর্ণ’ ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা কয়েকশ’ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে নির্দিষ্টসংখ্যক ইসরাইলি বন্দির মুক্তির বিষয় থাকবে। হামাস বলেছে, প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের সমঝোতা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনার সুযোগ দিতে হবে। 

শান্তি প্রচেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছিলেন, প্রস্তাবটি ইসরাইল গ্রহণ করলে একটি কাঠামো চুক্তি হতে পারে। এতে গাজায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে নয় মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।

আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টার সাথে সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছেন, প্রস্তাবটি যদি ইসরাইল মেনে নেয়, তবে এর মধ্য দিয়ে চুক্তির রূপরেখা তৈরি করা যেতে পারে। আর এতে গাজায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার ৯ মাসের যুদ্ধের অবসান হতে পারে।

এর আগে হামাসের দাবিকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছিল তেলআবিব। শনিবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এক মুখপাত্রের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি। গত শুক্রবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয়, আগামী সপ্তাহে আলোচনা চলবে এবং দুপক্ষের মধ্যে এখনো যে মতবিরোধ রয়েছে, তার ওপর আলোচনা করা হবে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। জানা যায়, একটি লরি ও মিনিবাসের মধ্যে সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতদের মধ্যে ৬ বছরের এক শিশুসহ বাসে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া দুই চালকও মারা গেছেন। একই ঘটনায় আরও এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন।

আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওলেকসান্ডার কোভাল টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছেন, শনিবার (৬ জুলাই) ১টা ৪৫ দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কীভাবে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে তার কারণ খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। 

মর্মান্তিক ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তিনি সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন। আজ শনিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে বিজয়ী ঘোষণার পর দেওয়া প্রথম ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

আজ শনিবার ইরানের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ জানায়, দ্বিতীয় দফায় ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান। তিনি দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।

বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেব। আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক। দেশের অগ্রগতির জন্য আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত।'

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তিনি সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন। আজ শনিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে বিজয়ী ঘোষণার পর দেওয়া প্রথম ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

আজ শনিবার ইরানের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ জানায়, দ্বিতীয় দফায় ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান। তিনি দেশটির নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।

বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেব। আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক। দেশের অগ্রগতির জন্য আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’

প্রথম দফায় চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে একমাত্র সংস্কারপন্থী প্রার্থী ছিলেন পেজেশকিয়ান। তবে নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম দফায় কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় গত শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোট হয়। প্রথম দফায় প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং অতি রক্ষণশীল সাইদ জালিলির মধ্যে দ্বিতীয় দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।

ইরানের নির্বাচন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, তিন কোটির বেশি ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ১ কোটি ৬০ লাখের বেশি ভোট। আর সাইদ জালিলি পেয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি ভোট।

কয়েক বছর ধরে ইরানে রক্ষণশীল ও অতি রক্ষণশীল শিবিরের আধিপত্যের পর পেজেশকিয়ানের জয় দেশটির সংস্কারপন্থীদের আশাবাদী করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইরানের প্রধান সংস্কারপন্থী জোট তাঁকে সমর্থন দিয়েছিল। সাবেক দুই সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে আটজন, কনজারভেটিভ পার্টি থেকে দুজনসহ অন্যান্য দলের মনোনয়নে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোট ৩৪ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে নতুন করে আর কেউ জয়ী হতে পারেননি।

প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ হিসেবে রুশনারা আলী প্রথম ২০১০ সালে টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনালগ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ওই আসন থেকে তিনি টানা চারবার পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তিনি বেথনালগ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসন থেকে ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সব মিলিয়ে তিনি টানা পাঁচবার সদস্য নির্বাচিত হলেন।

গতবারের তুলনায় এবার রুশনারা আলীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কমলেও লেবার পার্টির এই আসন ধরে রেখেছেন তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্বতন্ত্র প্রার্থী আজমল মাশরুর। এবার আজমলের সঙ্গে তাঁর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। আজমল ১৪ হাজার ২০৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।

রুশনারা আলী ২০১০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তাঁর বয়স যখন সাত বছর, তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তাঁর পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক করেছেন।

ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে টানা চতুর্থবার লেবার পার্টির মনোনয়নে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন রুপা হক। এবারের নির্বাচনে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২২ হাজার ৩৪০। তাঁর নিকটতম প্রতিধন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী জেমস উইন্ডসর ক্লাইভ পেয়েছেন ৮ হাজার ৩৪৫ ভোট।

২০১৫ সালে লেবার পার্টির মনোনয়নে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন রুপা হক। এরপর টানা তিনবার তিনি পশ্চিম লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৬ সালের অক্টোবরে লেবার পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রুপা হক। তাঁকে সর্বদলীয় সংসদীয় মিউজিক গ্রুপের ভাইস চেয়ার এবং ক্রসরেলের সর্বদলীয় সংসদীয় পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল।

রুপা হকের পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের পাবনা জেলার মুকসেদপুরে। তাঁর বাবা মোহাম্মদ হক ও মা রুশনারা হক ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। রুপা হক রাজনীতিতে আসার আগে শিক্ষক ও লেখক ছিলেন। তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার ও ২০০৪ থেকে ইউনিভার্সিটি অব কিংস্টনে শিক্ষকতা করেছেন।

রুপা হক ট্রিবিউন, দ্য গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত কলাম লিখতেন। তিনি ইস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে যুব সংস্কৃতির ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক এবারের নির্বাচনে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন ৮ হাজার ৪৬২ ভোট।

২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিক প্রথম যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। কনজারভেটিভ পার্টির একসময়ের নিরাপদ এই আসন লেবার পার্টিকে উপহার দিয়ে তিনি এখন আসনটিকে লেবার পার্টির নিরাপদ আসনে রূপান্তর করেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১৬ সাল থেকে তিনি ছায়া শিক্ষামন্ত্রী, সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ার, নারী ও সমতা নির্বাচন কমিটির সদস্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছেন।

সফিক আহমেদ সিদ্দিক ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুল, হ্যাম্পস্টেডের রয়্যাল স্কুল ও মিল হিল স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। পরে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি ও কিংস কলেজ লন্ডন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ২০১১ সালে সরকার, রাজনীতি ও পলিসি বিষয়ে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া টিউলিপ ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এর মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর পথচলা শুরু।

লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে দ্বিতীয়বারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আপসানা বেগম। তিনি পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৩৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রার্থী গ্রিন পার্টির নাথালি বেইনফিট পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৭৫ ভোট।

আপসানার এই আসন নিয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বেশি আলোচনা ছিল তাঁর সাবেক স্বামীর কারণে। তবে আপসানার সাবেক স্বামী এহতেশামুল হক তাঁর ধারেকাছেও আসতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী এহতেশামুল ৪ হাজার ৫৫৪ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন।

২০১৯ সালে আপসানা লেবার পার্টির মনোনয়নে প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ওয়েস্টমিনস্টার পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম হিজাব পরিহিত সংসদ সদস্য। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সোচ্চার ভূমিকা পালন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি।

আপসানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাওয়ার হ্যামলেটসেই। তাঁর বাবা টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর মনির উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশে তাঁদের আদি বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। রাজনীতি বিষয়ে কুইনমেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে স্নাতক এবং ২০১২ সালে সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ও কমিউনিটি লিডারশিপ বিষয়ে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন তিনি।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টি পেয়েছে ৭০টি আসনে জয়। লন্ডনে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘পরিবর্তন এখন থেকেই শুরু হলো।’ উচ্ছ্বসিত জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আনন্দিত।’

যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরে গেল কনজারভেটিভ পার্টি। বিদায় নিতে হবে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে। তিনি পরাজয় মেনে নিয়েছেন।

স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।

এবারের নির্বাচনে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। ৩৫টি রাজনৈতিক দল মাত্র একজন করে প্রার্থী দেয়।

রেকর্ড ভেঙে এবার ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একেকটি আসনে গড়ে ৭ জন করে প্রার্থী। ৩১৭টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৫৯ জন।

যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উপেক্ষা করে গাজায় যুদ্ধবিরতি চান ইসরাইলি জেনারেলরা। হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য এই যুদ্ধবিরতি জরুরি বলে মনে কারেন এসব জেনারেলরা। এছাড়া লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে দমনের ক্ষেত্রেও গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন বলেন মনে করেন তারা। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) প্রকাশিত মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ইসরাইলের সাবেক ও বর্তমান ৬ সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

এই ৬ সেনা কর্মকর্তা মনে করেন, হামাসের হাতে থাকা আরও প্রায় ১২০ জিম্মিকে দ্রুত উদ্ধারে যুদ্ধবিরতি জরুরি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা মনে করেন—তাদের বাহিনী, এখন বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘতম যুদ্ধের জন্য সুসজ্জিত নয়। তারা বলছেন, হিজবুল্লাহর সঙ্গে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হলে বাহিনীকে পুনরায় সজ্জিত করার জন্য সময় প্রয়োজন।

তারা জানিয়েছেন, সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভিসহ প্রায় ৩০ জন জ্যেষ্ঠ জেনারেলের সমন্বয়ে গঠিত ইসরাইলের শীর্ষ সামরিক নীতি নির্ধারণী সংস্থা জেনারেল স্টাফ ফোরাম গাজায় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে পারে বলে মতৈক্যে পৌঁছেছে। 

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই একটি গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে যে—এমনটা না হলে জেনারেল হালেভির পদত্যাগ করতে পারেন। অবশ্য এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, ইসরাইলের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াল হুলাতা বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী জিম্মি চুক্তি ও যুদ্ধবিরতিকে পূর্ণ সমর্থন করছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি লেবাননে উত্তেজনা হ্রাসের সম্ভাবনা বাড়াবে এবং হিজবুল্লাহর সঙ্গে একটি সম্ভাব্য বৃহত্তর সংঘাতের ক্ষেত্রে (ইসরাইলকে) প্রস্তুত হওয়ার পর্যাপ্ত সময় দেবে।’ 

গাজায় যুদ্ধ পরিচালনা সংক্রান্ত কৌশলে সশস্ত্র বাহিনীর পরিবর্তন ও নেতানিয়াহু সরকারের সুনির্দিষ্ট ‘গাজা পরিকল্পনার রূপরেখা’ না থাকার কারণে সমরবিদদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। সরকারি দিকনির্দেশনার অভাবে গাজায় একটি ‘পাওয়ার ভ্যাকুয়াম’ বা শক্তির শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে, ইসরাইলি বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের একটি এলাকা থেকে সরিয়ে দিলেও শিগগিরই সেই এলাকা আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সমর নেতারা প্রকাশ্যে তাদের ব্যক্তিগত অসন্তোষ তুলে ধরছেন। 

নেতানিয়াহু হামাসকে নির্মূল করা এবং জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করাসহ যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকসহ বিশেষজ্ঞেরা এসব লক্ষ্য অর্জনকে সুদূর পরাহত বলে আখ্যা দিয়েছেন। গাজা আগ্রাসনের ৯ মাস পর, ইসরাইলি জেনারেলরা উপসংহারে পৌঁছেছেন যে—জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য অব্যাহত সামরিক অভিযান তাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। তারা আরও মনে করছেন, গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত হামাসকে অক্ষতই রাখবে এবং বিপরীতে ইসরাইলি বাহিনীর সম্পদ ও মনোবল নষ্ট হবে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর জনসাধারণের জন্য যেসব বিবৃতি দিচ্ছে, সেখানে সরাসরি যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন না করা হচ্ছে না। তবে এই বিষয়টি নেতিবাচক হতে পারে বলে মনে করেন ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি। তিনি ইঙ্গিত করেছেন, বর্তমান কৌশল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। 

তবে জেনারেলরা গাজায় যুদ্ধবিরতি চাইলেও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে একই সঙ্গে দেশের উত্তর সীমান্তে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বেশির ভাগ অংশ পুনরায় মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইসরাইল তার সামরিক বাহিনীকে চাপে ফেলেছে এবং বর্তমানে এর রসদ-সরঞ্জাম ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। নিয়মিত সেনাদের বাইরে রিজার্ভ সেনাদের মনোবল কমে গেছে। এরই মধ্যে ৪ হাজার সেনা আহত হয়েছে গাজা যুদ্ধে। এই অবস্থায় সরঞ্জামের ঘাটতির বিষয়টি আমলে নিয়ে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী সংঘাতের পরিধি বাড়ানোর বিষয়ে সতর্ক। 

গত সপ্তাহে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন আয়োজিত প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর থেকেই জো বাইডেনকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান উঠেছে। তবে নিজের এমন পারফরম্যান্সের কারণ জানিয়েছেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। 

বুধবার (৩ জুলাই) বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন সাংবাদিকদের বলেছেন যে, বিতর্কের আগে বিশ্বজুড়ে কয়েকবার ভ্রমণ করা তার জন্য ঠিক ছিল না। 

ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেন বলেন, আমি স্টাফদের কথা শুনিনি...এবং বিতর্কের মঞ্চে প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। 

তবে বিবিসি বলছে, ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের সর্বশেষ সফর ছিল ১৫ জুন, যা বিতর্ক শুরুর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে। রিপাবলিকান প্রার্থী এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের নির্বাচনী বিতর্ক হয় গত ২৭ জুন। 

এর আগে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিতর্কের দিনও প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঠাণ্ডার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। তবে গতকাল বাইডেন অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেননি।

এদিকে বিতর্কে এমন বেহাল পারফরম্যান্সের পর থেকেই বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জোরালো হচ্ছে। ডেমোক্রেটদের মধ্যেও আতংক ছড়িয়েছে। 

তবে বাইডেনের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছে ভিন্ন বার্তা। প্রেসিডেন্টের পরিবার চান, বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই থেকে সরে না আসুক। গত সোমবার ক্যাম্প ডেভিডে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগ দেন বাইডেন। সেখানে নানা আলোচনার মধ্যে বাইডেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা উঠে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান বলছে, বৈঠকে পরিবারের সদস্যরা বাইডেনকে বলেছেন, তিনি আরও চার বছর আমেরিকানদের সেবা দিতে পারবেন।  

গত ২৭ জুনের বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলার সময় বাইডেন ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনেন এবং পরস্পরকে তীব্র বাক্যবাণে জর্জরিত করার চেষ্টা করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ও ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসীর বিষয়ে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন। অন্যদিকে, আদালতে সম্প্রতি ট্রাম্পের সাজার প্রসঙ্গ তুলে তাকে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।

বিতর্কে ট্রাম্প শেষ করেছেন এই বলে যে, আমেরিকার মানুষ এখন জাহান্নামে বাস করছে। ট্রাম্প বলেন, সাড়ে তিন বছর ধরে আমরা জাহান্নামে বাস করছি।

অন্যদিকে, শেষ বক্তব্যে বাইডেন আমেরিকানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বলেন, তিনি কর কমিয়ে আনতে চান। একই সঙ্গে দাবি করেন যে ট্রাম্প কর বাড়িয়ে দেবেন। 

জো বাইডেন পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন। এর আগে ট্রাম্প সম্প্রতি জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বন্দুক আইনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টি তুলেছিলেন। 

সিএনএনের জরিপে বলা হয়েছে, অধিকাংশ দর্শক এই মত দিয়েছেন যে, জো বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। সিএনএনের তাৎক্ষণিক জরিপ অনুযায়ী, বিতর্ক দেখেছেন এমন নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প ভালো করেছেন। আর মাত্র ৩৩ শতাংশ বাইডেনের পক্ষে মত দিয়েছেন। 

তবে সিএনএন বলছে, জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশটির সব ভোটারদের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করেন না। যারা বিতর্কটি দেখেছেন, আর এই জরিপে অংশ নিয়েছেন, শুধু তাদের মতামতই এই ফলাফলে প্রতিফলিত হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে রিপাবলিকপন্থীদের সংখ্যা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

বিতর্কটি যারা দেখেছেন, জরিপে অংশ নেওয়া এমন ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতার প্রশ্নে বাইডেনের ওপর তাদের আস্থা নেই।

গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের ১৯৪০ জন সেনা নিহত হয়েছে।সেইসঙ্গে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের বেশ কিছু এলাকা নিজেদের দখলে নিয়েছে।

এক বিবৃতিতে এমনটাই দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনের এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে ইউক্রেনের ৪৭৫ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ৪০৫ সেনা এবং রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ১২০ সেনা নিহত হয়। 

এছাড়াও রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনাদলের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ৬২০ জন সেনা নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।

এদিকে খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে ইউক্রেনের ৩২০ জন সেনা মারা গেছে। ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে রাশিয়া। 

এ বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোকে রক্ষার জন্য বাফার জোন তৈরি করার লক্ষ্যে এই অভিযান চালানো হয়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযান চালিয়ে তাদের সেনারা খারকিভ ও দোনেৎস্কের দুটি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। 

তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।