রাজনীতি

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। সবগুলো অভিযোগের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সুবিচার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন ও আসবাবপত্র মেরামত কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে একথা জানান তিনি।

এসময় আসিফ নজরুল বলেন, ১ নভেম্বর থেকে ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনে বিচারকাজ শুরু হবে। আর ট্রাইব্যুনালের বিচার হবে, সুবিচার। যাতে সবপক্ষেরই সন্তোষ থাকে।

এর আগে, সোমবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা বলেছিলেন ট্রাইব্যুনালে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এক্ষেত্রে বিচারে শেখ হাসিনা দোষী সাব্যস্ত হলে এবং তখন তিনি ভারতে অবস্থান করলে বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী তাকে ফিরিয়ে আনার আবেদন করা হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ভারত আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের বাংলাদেশের ক্ষমতায় চায়। তিনি বলেন, ‘অতিসম্প্রতি ভারতের কথায় এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে তারা আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগীদের ক্ষমতায় চায় যাতে তারা বাংলাদেশে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে। বাংলাদেশ এবং এর জনগণের সমর্থন ও বন্ধুত্বের প্রয়োজন ভারতের নেই। ভারত অত্যাচারী ও গণতন্ত্র হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে দিল্লিতে তাদের অতিথি করেছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান ও বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মনিরুল ইসলামসহ দলটি সমর্থিত পুলিশরা সহজেই ভারতের অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা থেকে মনে হয়, এই লোকদের পাসপোর্ট এবং ভারতীয় ভিসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু, যখন বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের কথা আসে, তখন তাদের (বাংলাদেশিদের) ভিসা, পাসপোর্টের প্রয়োজন হয় এবং তাদের অনেক প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যকে দুই মাস ধরে জোরপূর্বক নিখোঁজ করার পর তাকে ভারতে পাওয়া যায়। ভারত তাকে রেহাই দেয়নি, বরং তাকে মামলার মুখোমুখি করা হয় এবং পরে তাকে সেখানে কারাগারে পাঠানো হয়।’

ভারতের পক্ষপাতিত্বের সমালোচনা করে বিএনপিনেতা রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ছাড়া বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ভারত একপেশে নীতি পালন করেছে।’

দুর্গাপূজা প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শোনা যায়, প্রতিবেশী দেশ ভেবেছিল বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা হবে না। নানাভাবে প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যম ও নীতিনির্ধারকরা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যকার সম্প্রীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চায়। তবে এ দেশে সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজ করে বলেই দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়েছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘এ ছাড়া বিএনপি, তার সহযোগী সংগঠন ও অন্যান্য দল দুর্গাপূজা উৎসবে স্থায়িত্ব বজায় রাখার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছে, যেমন তারা মন্দির ও পূজামণ্ডপ পাহারা দিয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঘাতক হাসিনার এজেন্টরা মন্দির ও পূজামণ্ডপে নির্মমভাবে হামলা চালালেও এর দায় বিএনপিসহ অন্যান্য সংগঠনের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা এম এ মালেক সম্প্রতি দেশে ফিরে এসেছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘মালেক ইউরোপের দেশগুলো সফরে গিয়ে ফ্যাসিবাদ, নিষ্ঠুরতা ও দুঃশাসনের প্রতীক হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদ করায় ১৭ বছর দেশে ফিরতে পারেননি। বিদেশে বসে তিনি রাজপথে নেমে আন্দোলন করেছেন এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের ওপর শেখ হাসিনার নির্যাতনের সমালোচনা করেন। তার মতো বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের কারণে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী হওয়া শেখ হাসিনার জুলুম, দুঃশাসন ও নির্যাতন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সামনে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। এ সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহদের মধ্যে ৩০ জনের প্রত্যেকের হাতে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।

আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে বার্ন ইউনিটের ছয় তলায় ৬১৭ নম্বর রুমে এই চেক হস্তান্তর করা হয়।

চেক হস্তান্তরের সময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম,আসিফ মাহমুদ সজীব ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ উপস্থিত ছিলেন। 

এ সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানান, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কাজ গুছিয়ে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে; এই সংগঠনের মাধ্যমে আহত ও শহীদের পরিবারের অর্থ সহায়তা দেয়া হবে।

তিনি জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ও নিহতদের তথ্য জানাতে ১৬০০০ এই নাম্বার চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই নাম্বার চালু থাকবে। আহতরা পরবর্তীতে কিভাবে চলবে সেটা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তাদের দায়িত্ব সরকার ও ফাউন্ডেশন নিবে। ঢাকার বাইরের আহতদেরও অর্থ পাঠিয়ে সাহায্য করা হবে বলেও জানান তিনি।

নাহিদ বলেন, ইতোমধ্যে অনেককে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত হতাহত ১৭৬ জনকে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকা সাহায্য দেয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মামলার ক্ষেত্রে লিগ্যাল টিম কাজ করছে।

তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, দলীয় নামে শহীদদের তালিকা তৈরীর চেষ্টা হচ্ছে। তবে শহীদদের কোনো দলীয় ব্যানারের নামে সংকুচিত করা উচিত নয় বলে জানান তিনি। গণহত্যায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক স্নিগ্ধ বলেন, আমরা একটি ফাউন্ডেশন করেছিলাম। সেখানে আমাদের ঘোষণা ছিল শহীদদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা করে দেয়া হবে। এ ছাড়া, তাদেরকে আরও আর্থিক অনুদান দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্বৈরাচারের দোসররা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে, কোনো গুজব কিংবা বিভ্রান্তিতে পা দেয়া যাবে না। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে নিহত জিহাদ দিবসের আলোচনায় বিএনপি নেতারা এ কথা বলেন। শত্রু না হয়ে পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বি হতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানান তারা। বর্তমান সংবিধানে কিছু সংশোধনী এনে তারা দ্রুত নির্বাচন দেয়ারও তাগিদ দেন।

 

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভায় বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এ আন্দোলন হয়েছে, তা এখনো পুরণ হয়নি।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নানা রকম বিভ্রান্তির চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাদের হুশিয়ার থাকতে হবে। এমনো আছে আমরা চিনতে ভুল করছি। মনে হচ্ছে আমাদের পক্ষে কিন্তু ওই লোকগুলো আমাদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করার স্লোগান দেয়।’

বিচার বিভাগের সংস্কার ও নীতিমালা তৈরির আগে সুপ্রিমকোর্টে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপি নেতারা। 

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যে সংবিধান আছে, সেই সংবিধানে প্রয়োজনীয় গণমুখী সংস্কারের নির্দেশনা দিবেন।’

হাসিনা সরকারের দোসররা এখনো দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানান বিএনপি নেতারা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান, ‘বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে থেকে পূজার মধ্যে যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। আপনারা সতর্ক থাকবেন।’

এর আগে রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে জেহাদ স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সরকারি চাকরিতে আবেদন বিনামূল্যে করতে হবে। কোনো ফি রাখা যাবে না। সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আগামী ২ বছরের জন্য ৩৫ বছর, পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে ৩৩ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। এমন প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

এর আগে, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এসময় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্রজনতার অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ।

সংস্কারের প্রস্তাবনা তুলে ধরে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে অন্তবর্তী সরকারের কাছে সংক্ষিপ্ত প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারে দলের পক্ষ থেকে মূল ৪১টি প্রস্তাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। বিচার বিভাগ সংস্কার করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আইন কমিশন গঠন করতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠন করতে হবে। সর্বোচ্চ পাঁচ ও তিন বছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। সংসদে বিরোধীদলের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।

ডা. তাহের বলেন– জনপ্রশাসনে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততাকে প্রাধান্য দিতে হবে। চাকরিতে বিরাজমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে। যারা চাকরিতে থেকে দুর্নীতি ও অন্যায় করেছেন, তাদের বহিষ্কার করতে হবে। দুদকে যোগ্য, দক্ষ ও সৎ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। এক ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। সকল শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের ইতিহাস এবং মহানবী (সা.) এর জীবনী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে ফেরত আনতে হবে। নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল করতে হবে। পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। বিগত সরকারের আমলে সম্পাদিত চুক্তি রিভিউ করতে হবে। এজন্য একটি রিভিউ কমিশন গঠন করা যেতে পারে। বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক বিষয়কে সামনে রেখে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। নাটক, কন্টেন্ট থেকে অশ্লীলতা দূর করতে হবে। ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো কন্টেন্ট দূর করতে হবে। মূর্তি নির্ভর ভাস্কর্য তৈরি না করে দেশীয় প্রকৃতি তুলে ধরতে হবে।

দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।যেখানে ধর্মে ধর্মে বিভেদ ও ঘৃণার কোনো রাজনীতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গা পূজার মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে একথা জানান তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, হিন্দুদের আট দফার বিষয়ে বিএনপির যথেষ্ট সহানুভূতি আছে। বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলই হিন্দুদের উপর অত্যাচার ও দখলদারিত্বের সাথে জড়িত ছিলো বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রতিটি ঘটনারই বিচার হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল আরও জানান, বিদেশি কিছু মিডিয়া বাংলাদেশের সম্প্রীতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাজনৈতিক কারণ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

কোটা উঠিয়ে দিয়ে লটারির মাধ্যমে রাজউকের প্লট বরাদ্দ দেয়ার কথা বলেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। সোমবার (৭ অক্টোবর) রাজউক ভবনে বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ‘তরুণদের সম্পৃক্ত করি, উন্নত নগর গড়ি’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

গণপূর্ত উপদেষ্টা বলেন, নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে যদি পরিকল্পনা নিতে চাই তাহলে এটা এখনই করা উচিত। এরপরে করতে গেলে হয়তো বেশি দেরি হয়ে যাবে। তরুণরা আছেন, বিভিন্ন সংগঠন আছেন, নাগরিকদের বিভিন্ন প্রফেশনাল বডি আছে, তাদের সম্পৃক্ত করা দরকার। আমাদের শহরগুলোকে সবুজ, গণবান্ধব ও শিশুদের জন্য এমন করা যেন তারা বড় হয়ে দেশকে গড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, কোটার কারণে আমরা এতগুলো প্লট নিবো, কোটার কারণে আমরা এতগুলা প্লট করবো বলে যে কথা শোনা যায়, সব কোটা উঠিয়ে দেন। জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন না কেন? লটারির মাধ্যমে কেন ঢাকা শহরের প্লট দেয়া হয় না? এই ফ্যাসিলিটিগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করে নগরায়ন গ্রহণযোগ্য নয়। এসময় প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজউকের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খান।

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)-এর একটি প্রতিনিধিদল। আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে এবি পার্টি কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন আইআরআই-এর ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রোগ্রাম পরিচালক জোশুয়া রোজেনব্লাম, ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ক্রিস্টোফার ব্রেনান, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ, বাংলাদেশ অফিসের প্রোগ্রাম ম্যানেজার রুকসানা হক প্রমুখ।

এবি পার্টির প্রতিনিধি দলে ছিলেন পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন, সহকারী সদস্য সচিব ও শ্যাডো কমিটি বিষয়ক ইনচার্জ ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল সানি আবদুল হক এবং এবি মহিলা পার্টির ইনচার্জ ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল নাসরীন সুলতানা মিলি উপস্থিত ছিলেন।

দলটির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল জানান, এবি পার্টি কীভাবে পলিসি ভিত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক রূপকল্প পরিবর্তন করতে চায় এবং নতুন প্রজন্মের রাজনীতি সম্পর্কে তারা প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন।

এবি পার্টি কীভাবে পলিসি ভিত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক রূপকল্প পরিবর্তন করতে চায় এবং নতুন প্রজন্মের রাজনীতি সম্পর্কে তারা প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন। এসময় সারাদেশে দলীয় কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বিশেষ করে রাজধানীর বাইরে সংগঠন বিস্তারের বিষয়ে অবহিত করা হয়।

এবি পার্টি আইআরআই প্রতিনিধিদলকে জানায়, কোনো ভয় বা ভীতি ছাড়াই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় কাজ করার জন্য এখন উপযুক্ত সময়। আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকের কথাও উঠে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে এবি পার্টির সদস্যসচিব প্রধান উপদেষ্টার নিকট ৬টি পর্যবেক্ষণ ও ১১ দফা প্রস্তাবের বিষয়ে অবহিত করেছেন।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, প্রধান শহরগুলোতে যানজটের কারণে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়েছেন। এবি পার্টি মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সাথে সাথে বন্যা কবলিত এলাকায় লক্ষাধিক লোকের অসুবিধার পরিমাণ ব্যাখ্যা করেছে।

এবি পার্টি বিগত স্বৈরাচারী সরকার শাসনামলে একাধিক গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং অর্থ পাচার নিয়ে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার বিষয়ে পার্টির চিন্তাভাবনা প্রতিনিধিদলকে অবহিত করে। এসময় এবি পার্টি হাজার হাজার যুবকের ঐতিহাসিক আত্মত্যাগকে স্মরণ করে একটি নতুন ধরনের প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়তে ও সত্যিকারের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র এবং সবার জন্য কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করে। আইআরআই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবি পার্টির কার্যক্রমকে স্বাগত জানান।

প্রশাসনের দুর্বলতা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে এ কথা জানান তিনি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গার্মেন্টস শিল্পের অসন্তুষ্টিসহ দূর্গা পূজার নিরাপত্তার বিষয়ে কথা হয়েছে। শ্রমিকদের পাওনার ব্যাপারে সরকারকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছি।

আবার যাতে ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে সেজন্য সংস্কার দরকার বলে সরকারকে জানিয়েছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। এ সময় তিনি বলেন, প্রশাসনের দূর্বলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে নির্ভর করছে বলেও মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নিয়মিত বৈঠকের জন্য একটি কাঠামো তৈরির জন্য বলেছি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।