রাজনীতি

রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। এগুলো রক্ষা করতে না পারা সরকারের দুর্বলতা। এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে মন্ত্রীদের পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু। রোববার (২৮ জুলাই) দলটির বনানীর কার্যালয়ে জরুরি যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

মজিবুল হক চুন্নু বলেন, সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণেই দেশ আজ অস্থিতিশীল। সাম্প্রতিক সহিংসতার দেশজুড়ে গণগ্রেফতার চলছে। এতে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরাও বাদ যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আপিল বিভাগের রায় সংসদে আইন হিসেবে পাস করা জরুরি। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন হয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দাও জানান তিনি।

স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র ও তাদের দোসররা একত্র হয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আজ রোববার (২৮ জুলাই) বিকেলে সংহিংসতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশের ক্ষতিগ্রস্থ স্থাপনা পরিদর্শন শেষে একথা জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে পিছিয়ে দিতে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র যে অরাজকতা চালিয়েছে, জনগণের সহায়তায় তা প্রতিহত করা হয়েছে। এই চক্রটি এখনও সক্রিয় উল্লেখ করে জনগণকে সর্তক থাকার অনুরোধ করেন মন্ত্রী।

তাজুল ইসলাম বলেন, কোটা আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতায় বিভিন্ন যানবাহন ও স্থাপনা মিলিয়ে ১০ থেকে ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে। নিজ নিজ জায়গা থেকে এ সকল চক্রান্তকে আমরা যদি মোকাবেলা না করতে পারি, তাহলে এদেশের মানুষের আকাঙ্খা পূর্ণ হবে না। দেশ 

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে গণহত্যা চালাচ্ছে সরকার। এখন পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব ঘটনার দায় সরকারকেই নিতে হবে। চলমান গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে তদন্তের দাবিও জানান তিনি।

মাসউদ আরও বলেন, ‘আমরা তিনটি বিষয় স্পষ্ট করছি। এর আগে ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারির পর সেটি ৬ বছরও টেকেনি। তাই পরিপত্র-পরিপত্র খেলা বন্ধ করে স্টেকহোল্ডারদের, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি স্বাধীন স্থায়ী কমিশন গঠন ও কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আইন পাস করতে হবে।’

‘পুলিশ কনস্টেবল থেকে মন্ত্রী- যতজন শিক্ষার্থী হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনতে হবে।’

‘এবং যতজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে তাদের মামলা প্রত্যাহার করে গুম ও আটক শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। তা না হলে ‘বাংলা ব্লকেডের’ চেয়েও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

এ সমন্বয়ক দাবি করেন, সাড়ে ৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। কয়েকজন সমন্বয়ককে চিকিৎসারত অবস্থায় তুলে নিয়ে নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও যুক্ত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশীদ। এ সময় আগামীকাল রোববার (২৮ জুলাই) সারাদেশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন কর্মসূচি করারও ঘোষণা দেন তারা।

১. ছবি আপলোডের সময় আগের যে সকল ছবি আপলোড করা আছে ঐগুলো দেখাবে। এবং ঐগুলো রি-ইউজ করার সুযোগ থাকবে।

২. প্রধান ক্যাটাগরি এবং অন্যান্য ক্যাটাগরি নামে দুটি বার আছে। কিন্তু সাব ক্যাটাগরি ব্যবহার করা যায় না। এবং প্রথমবার নিউজ আপলোডের সময় সাব ক্যাটাগরি শো করলেও দ্বিতীয় বার বা নিউজ এডিট করতে গেলে সাব বার আসে না।

৩. চাইলেই কোন বার (রাজনীতি, বিশ্ব, অর্থনীতি) খোলা যায়। হেডারে শো করলেও নিচের দিকে যেখানে নিউজ শো হয় সেখানে শো হয় না।

৪. পাঁটি বার এর লোকেশন পরিবর্তন হবে। “রাজনীত“ যাবে “বিশ্ব”র স্থানে।  “বিশ্ব” যাবে “প্রযুক্তি”র স্থানে। “প্রযুক্তি” যাবে “রাজনীতি”র স্থানে। “শিল্প সাহিত্য” যাবে “অপরাধ” এর স্থানে। অপরাধ যাবে “শিল্প সাহিত্য” এর স্থানে।

৫. সর্বশেষ এবং জনপ্রিয় খবর হবে মোট ১৫টি বা এর কম। জনপ্রিয়র সিরিয়াল বর্তমান পদ্বতিতে হবে না।

৬. “বিশ্ব” এর প্রতি হেডলাইনের সামনে লাল বৃত্ত্ব না দিয়ে নিউজের ছবি দিন। আন্ডার লাইন দরকার নাই। হেডিং লেফট এলাইনমেন্ট দিন।

৭. নিউজে ক্লিক করলে হেডিং এর উপর নিচে অনেক খালি যায়গা আছে ঐগুলো কমিয়ে দিন। 

৮. কলমের সিম্বল মুছে ঐস্থানে ছবি দিতে পারেন। এবং এটি নিউজ আপলোড এর সময় বাধ্যতামূলক করবেন না। যদি চায় তবে ছবি+নাম আসবে না হলে আসবে না। এবং ছবি নাম যখন থাকবে না তখন যায়গা ফাকা থাকবে না।

৯. নিউজ শেষে অন্যান্য নিউজের সকল নিউজ আসে। সকল নিউজ না দেখিয়ে হেডিং দেখাতে পারেন।

১০. নিউজ আপলোডের সময় নিউজ বডিতে এলাইনমেন্ট সেন্টার সেট করা এটি জাস্টিফাই করতে হয়। আপনি জাস্টিফাই সেট করে রাখবেন যদি চায় এলাইনমেন্ট চেঞ্জ করবে।

১১. প্রচ্ছদে যে সকল বারে নিউজের বডির সাইজ এবং হেডিংএর সাইজ এক এগুলো পরিবর্তন করবেন। এবং হেডিং এবং বডির মাঝের স্থানের দুরত্ব বেশি না হয়।

একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিক হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে কোটা আন্দোলনকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এই আন্দোলন আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নেই। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

কোটা আন্দোলন ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। দ্রুত এই ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উদঘাটিত হবে বলেও জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সন্ত্রাস-সহিংসতার মাধ্যমে যারা এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময়, সব নেতাকর্মীদের পথে থেকে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন রয়েছে তবে এর সাথে বিএনপির কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নেই —এমন মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত। এই আন্দোলনে বিএনপির নৈতিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

বুধবার (১৭ জুলাই) বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে গায়েবানা জানাজা শেষে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বদিচ্ছা থাকলেই আলোচনার ভিত্তিতে এই সংকটের সমাধান করা যেত। কিন্তু সরকার তা না করে ককটেল উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে।

এর আগে, কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে পূর্বঘোষিত গায়েবানা জানাজাকে ঘিরে বায়তুল মোকাররম উত্তরগেটে পুলিশের সাথে দলটির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির অভিযোগ, গায়েবানা জানাজার আগে ও পরে অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হলে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময়, শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে দলীয় সকল ধরনের রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন হল প্রাধ্যক্ষরা।

বুধবার (১৭ জুলাই) মধ্যরাত থেকে এ ঘোষণা দেয়া শুরু হয়।

যেসব হলে বন্ধ করা হয়েছে ছাত্র রাজনীতি:

এখন পর্যন্ত এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে শহীদুল্লাহ হল‌, ফজলুল হক মুসলিম হল, অমর একুশে হল, রোকেয়া হল, মহসীন হল, কুয়েত মৈত্রী হল, জহুরুল হক হল, শামসুননাহার হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, জসীমউদ্দিন হল, স্যার এ. এফ. রহমান হল, জগন্নাথ হল, জিয়া হল, মাস্টারদা সূর্য সেন হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বিজয় একাত্তর হল ও সুফিয়া কামাল হলের নাম।

এদিকে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আজ বুধবার (১৭ জুলাই) গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল কর্মসূচি পালন করবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দুপুর ২টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

অন্যদিকে, একইদিন বিকেল তিনটায় বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ছাত্রলীগ কর্মী মো: সবুজ আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ছাত্রলীগ।

সাভার থেকে কাজী বিপ্লব : কোটা সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনরত অবস্থায় রয়েছে। তাদের এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন বেসরকারি কলেজের হাজারো শিক্ষার্থীরাও যোগ হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

বুধবার দুপুরের পর থেকে সাভারের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পোশাক পরে ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যোগদান করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে।

এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তাঘাট প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এসে অবস্থান নেয়।

পরে তারা কোটার পরিবর্তে মেধা কে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানায় এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। 

এ বিষয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন গতকালকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের উপর হামলা চালায় আমরা ভিসির বাস ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েও হামলার শিকার হয়েছি। এই হামলায় প্রায় দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং কোটা সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।

কোটা আন্দোলনকারীদের “আমরা সবাই রাজাকার” স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সাংস্কৃতিক ফেডারেশনসমূহ। মঙ্গলবার ১৬ জুলাই এক বিবৃতিতে এই কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে ফেডারেশনসমূহ উল্লেখ করেছে, কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ১৪ জুলাই রোববার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার” ও “আমরা সবাই রাজাকার” বলে যে স্লোগান দিয়েছে তাতে পুরো জাতি বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আলোকিত দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষার্থীরা যখন নিজেদের ‘‘রাজাকার’’ উল্লেখ করে স্লোগান দেয় তখন মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নির্মম নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী-শিশুসহ সবার প্রতি চূড়ান্ত অবমাননা করা হয়।  অথচ এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর রাজাকাররা শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিল।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়, ‘‘ওই শিক্ষার্থীরা তাদের ভুল বুঝতে পারবে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দাবি আদায়ের পথে চলবে।’’

বিবৃতিদাতারা বলেন, যেকোনো বিষয়ে মত, ভিন্ন মত থাকলে আলাপ-আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসম্মানজনক বক্তব্য, কটাক্ষ করা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য ও ঔদ্ধত্যের শামিল।’

শিক্ষার্থীদের গর্বের সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান “জয় বাংলা” উচ্চারণ করার আহ্বান জানিয়েছে বিবৃতিদাতা সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলো।

বিবৃতিদাতা সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলো হল: বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ, বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ, বাংলাদেশ যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এবং বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের ৬ নেতা পদত্যাগ করেছেন। এ ছাড়া সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে রাতে বিভিন্ন হলে মিছিল করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৪ জুলাই) রাতে নিজ নিজ ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ঢাবি ছাত্রলীগের পদধারী ৬ নেতা।

পদত্যাগ করা ছাত্রলীগের নেতারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখার গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক মাছুম শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখার মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপ-সম্পাদক রাতুল আহমেদ শ্রাবণ, কলাভবন ছাত্রলীগের এক নম্বর সহ-সম্পাদক মো. মুহাইমিনুল ইসলাম, আইন অনুষদ শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক আশিকুর রহমান জিম, কবি জসীমউদ্দীন হলের রাসেল হোসেন এবং রাফিউল ইসলাম রাফি। 

পদত্যাগ করে মুহাইমিনুল ইসলাম ফেসবুকে লেখেন, ‘পদত্যাগ করলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবন শাখা ছাত্রলীগের এক নম্বর সহসম্পাদক পদ থেকে।’

আশিকুর রহমান জিম তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি আশিকুর রহমান জীম, মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য থেকে পদত্যাগ ঘোষণা করছি এবং আইন অনুষদ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক থেকে পদত্যাগ ঘোষণা করছি।’

একই পোস্ট দিয়ে কবে জসীমউদ্দীন হলে রাসেল হোসেন এবং রাফিউল ইসলাম রাফি পদত্যাগ করেছেন। দুজনই লিখেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কবি জসিম উদদীন হল শাখা থেকে নিজেকে বহিষ্কার করলাম। কারণ আমি রাজাকারের নাতি। আমাকে কোনো প্রোগ্রামে কেউ ডাকবেন না। ইটস লাউড এন্ড ক্লিয়ার।

রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।

সরকারপ্রধানের এমন বক্তব্যের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন কোটার বিরোধিতা করে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর পরপরই রাতে ছাত্রলীগের ৬ নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।