অপরাধ

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও পাচাররোধে করণীয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)-এর সাথে বৈঠকে বসেছে দুদক। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এফবিআই লিগ্যাল অ্যাটাচে রবার্ট ক্যামেরুনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুদকের প্রধান কার্যালয় সেগুনবাগিচায় আসে।

দলটি দুদকের মানি লন্ডারিং ও লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসেছে। সভায় মানিলন্ডারিংরোধে করনীয়, কারিগরি সহায়তা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের টাকা ফেরাতে টাস্কফোর্স কীভাবে এফবিআইকে পাশে পাবে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

যৌথ টাস্কফোর্সে তাদের সরাসরি অংশগ্রহণ থাকবে নাকি পরামর্শক হিসেবে থাকবে তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া এফবিআইয়ের সঙ্গে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করায় জোর প্রচেষ্টা থাকবে বলে জানা গেছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কমিশনের বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুদক কমিশনার জহুরুল হক স্বাক্ষরিত মামলা প্রত্যাহারের অনুমোদনপত্র আদালতে দাখিল করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেন এ বিষয়ে দুদকের আবেদনের শুনানি করে খালিদীকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির মৌখিক আদেশ দেন। আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিচারক সেই লিখিত আদেশে সই করেন।

মামলা প্রত্যাহারের আবেদনে বলা হয়, ক্রিমিনাল ‘ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৫৮ এর ১০ (৪) ধারা ও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৫ ধারার বিধানের আলোকে দুদক এ মামলার প্রসিকিউশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহারসহ তাদের কোনো সম্পদ ক্রোক, অবরুদ্ধে ও বিদেশ গমনের নিষেধাজ্ঞা থাকলে তার সকল দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া প্রয়োজন।

বিচারক রোববার তার লিখিত আদেশে বলেন, তৌফিক ইমরোজ খালিদীকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হল। মামলা প্রত্যাহার হওয়ায় তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিদেশযাত্রায় আর কোনো বাধা নেই।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তাদের আমলে দায়ের করা মামলা থেকে রেহাই ও জামিন দেয়া হচ্ছে রাজনীতিবিদসহ দেশের বিশিষ্টজনদের। এরই ধারাবাহিকতায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা প্রত্যাহার করে নিতে আবেদন করে দুদক।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩০ জুলাই মামলাটি দায়ের করেন। গত ২৫ এপ্রিল এই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

খালিদীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তিনি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন। তিনি আদালতে বলেছেন, এ অভিযোগ এতোটাই হাস্যকর, যুক্তিহীন ও ভিত্তিহীন যে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতাকে তা গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

রিমান্ড চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। এমন পরিস্থিতিতে রিমান্ড শেষ না করেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে, গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডি থানার মোতালেব হত্যা মামলায় তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

গত ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্য রাতে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে যৌথবাহিনী। এরপর আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ধানমন্ডির জিগাতলায় মোতালেব নামে এক কিশোর নিহতের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এই মামলার ২৩ নম্বর আসামি শাজাহান খান। তিনি ছাড়াও মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের বেশকয়েকজন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শাজাহান খান মাদারীপুর-২ আসন থেকে টানা আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একই আসন থেকে পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৯ সালে শাজাহান খানকে প্রথম নৌপরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। মন্ত্রী থাকা সময় তার বিরূদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তবে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে তিনি সবচেয়ে বিতর্কিত হন। সেসময় রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর বাসচাপা নিয়ে মন্তব্য করেন শ্রমিক ফেডারেশনের এই কার্যকরী সভাপতি।

ফরমায়েশি সাজা দেয়ার নির্দেশ ছিল; হুমকি আর চাপ দেয় রাষ্ট্রযন্ত্র। কিন্তু, তিনি তা মানেননি; খালাস দিয়েছেন আসামিকে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ফলাফল- প্রাণভয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। দেশান্তরী হয়েও রক্ষা হয়নি যেন। এখন বিগত সরকারের পতনের পর দেশে ফেরার আর দেশসেবার আকুলতা তার কণ্ঠে। বলছি, বিচারপতি মোতাহের হোসেনের কথা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অর্থ পাচার মামলায় খালাস দেয়ায়; যাকে বরণ করতে হয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ। কী ঘটেছিল সেসময় এনিয়ে ভার্চুয়ালি যমুনা টেলিভিশনের সাথে কথা বলেছেন অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোতাহের হোসেন অর্থ পাচার মামলায় বেকসুর খালাস দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। সেসময়ের কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যেন জানান দিয়েছিলেন নিজের কঠোর অবস্থানের। কেবল ন্যায়বিচার করতে গিয়ে বদলে যায় তার জীবন।

তারেক রহমানকে খালাস দেয়ায় কী হয়েছিল সেসময়? মামলার রায়ের আগেই বা কী ঘটেছিল? বিচারক মোতাহের হোসেন জানান, তিনি কখনও ছিলেন পিস্তলের মুখে। তৎকালীন আইনমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও সাবেক আইন সচিব জহিরুল হক দুলালের নির্দেশনায় ফরমায়েসী রায় ঘোষণার জন্য চাপ দেয়া হয় তাকে।

ঘটনার পূর্বের কাহিনী বর্ণনা দিতে গিয়ে ফিনল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা বিচারক মোতাহের হোসেন শোনালেন ভয়ঙ্কর সেসব ঘটনা।

তিনি বলেন, তদানীন্তন ঢাকার জেলা জজ, মেট্রোপলিটন সেশন জজ তারা আমার চেম্বারে এসে হুমকি দেয়। বলে, আপনি যদি তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে চেম্বার থেকে বের হন, তাহলে কিন্তু আপনার লাশ আর পাওয়া যাবে না। গুম হয়ে যাবেন। তৎকালীন আইনসচিব শেখ জহিরুল হক ও মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা (যুগ্ম সচিব) তারা নানাভাবে অস্ত্রের মুখে হুমকি দিতো আমাকে। একবার বন্দুক বের করে আমার বুকে ধরে, বলে একবার ট্রিগার চাপলে ১০টি গুলি আপনার বুক ভেদ করে চলে যাবে। আপনি তারেক রহমানকে সাজা দেবেন কিনা বলেন?

এই বিচারকের মতে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সেই মামলার স্বাক্ষ্যপ্রমাণ অনুযায়ী সাজা দেয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দিতে, লিখিত রায়ে স্বাক্ষর করার চাপও ছিল মোতাহের হোসেনের ওপর। ব্যক্তিগতভাবে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়ার মামলার বিচার করা এই বিচারকের কখনও সাক্ষাৎ বা আলাপ হয়নি তারেক রহমানের সাথে। শুধু দৃঢ় অবস্থান ছিল ন্যায়বিচার নিশ্চিতে।

বিচারক মোতাহের হোসেন বলেন, সরকারি স্বাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য দিয়ে কোনোদিন কোনো আসামীকে দোষীসাব্যস্ত করা যায় না। তার বিপক্ষে স্বাক্ষীপ্রমাণ ছিল না। এরকম একটি মামলায় তিনি নিরীহ, তাকে প্রধানমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রীর হুকুমে শাস্তি দেবো এটি আমার বিবেক সায় দেয়নি। আমি নিশ্চিত ছিলাম, আমি সত্য বিচার করবো ও ন্যায়সঙ্গত রায় দেবো।

তবে ফরমায়েসি রায় না দেয়ার খেসারতও দিতে হয়েছে মোতাহের হোসেনকে। দেশ ছাড়তে হয় প্রাণভয়ে। প্রথমে মালয়েশিয়া, এরপর সেখান থেকেও বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার ভয়ে পালিয়ে যেতে হয় নেপালে। আর ২০২২ সালে ছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নেন ফিনল্যান্ডে।

বিষয়টি নিয়ে বিচারক মোতাহের হোসেন বলেন, মালয়েশিয়া থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করার জন্য ৩৪জন গোয়েন্দা ও চারজন মন্ত্রী দেশটিতে যায়। এই সংবাদ পাওয়ার পর আমি বাসায় না গিয়ে ৫-৭শ মাইল দূরে চলে যাই। জঙ্গলে গিয়ে ১৬ দিন বাস করি।

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর আশাবাদী বিচারক মোতাহের হোসেন। দেশ ফিরতে চান দ্রুত সময়ে। তিনি বলেন, দেশ ছাড়ার পর আইন ও সংবিধান নিয়ে গবেষণা করছি। যদি দেশের সেবা করার ও আইন সংস্কারের কাজের সুযোগ পাই তাহলে দেশে ফিরে আবারও সেবা করতে চাই।

প্রসঙ্গত, তারেক রহমানকে খালাস দিয়ে বিচারপতি মোতাহের হোসেনের দেয়া সেই রায়ের পর ২০১৪ সালে দুদক তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে। ৮ বছর পর করে মামলাও। সম্প্রতি এই মামলা থেকে খালাস পান আলোচিত এই অবসরপ্রাপ্ত বিচারক।

বিডিআর বিদ্রোহের ‘আসল রহস্য’ এখনও উন্মোচিত হয়নি বলে দাবি করেছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ। এ ঘটনার পুনঃতদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবিও জানান তিনি।

আলোচিত ‘ওয়ান-ইলেভেন’র প্রধানতম চরিত্র মঈন ইউ আহমেদ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে নিজের এসব ভাষ্য তুলে ধরেন। ওই ঘটনায় এবারই প্রথম কথা বললেন বিদেশে অবস্থানরত মঈন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মঈন ইউ আহমেদ। 

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মঈন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দেই, তখন আমাকে বলা হয়, যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী? এই তদন্ত করতে সরকারের কাছ থেকে যে সাহায্য প্রয়োজন, তা আমরা পাইনি।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরেও প্রকৃত ঘটনা জানতে পারেনি দেশের মানুষ। হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে বিগত বছরে শুধু সাবেক সরকারের কথা শুনতে হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা অনেক কিছুই জানা নেই। জনগণও জানতে পারেনি।

বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করে জড়িতদের বের করতে সক্ষম হবেন এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেসময় অনেকের অসহযোগিতা এবং অনেকে জেলে থাকায় তদন্তের কাজ ঠিকভাবে করা যায়নি। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ ঘটনার পুনঃতদন্ত করার আহ্বান জানান তিনি।

ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কড়া বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভারতে বসে দেশ সম্পর্কে হাসিনার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতিকে ‘অবন্ধুসুলভ’ আচরণ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারত তাকে রাখতে চাইলে, তাকে চুপ থাকতে হবে।

গত রোববার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেয়া এই সাক্ষাৎকারটি আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। না হলে বাংলাদেশের মানুষের শান্তি হবে না। যে নৃশংসতা তিনি দেখিয়েছেন তার সমাধান বিচারের মাধ্যমেই হতে হবে।

ভারতে থেকে শেখ হাসিনার করা বিভিন্ন রাজনৈতিক মন্তব্যের সমালোচনাও করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এটি অবন্ধুসুলভ আচরণ, যা দুই দেশেই অস্বস্তি তৈরি করছে। এ সময় তিনি শেখ হাসিনাকে চুপ থাকার হুঁশিয়ারি দেন।

ড. ইউনূস বলেন, ভারতে তার অবস্থান নিয়ে কেউ স্বস্তিতে নেই। বিচারের জন্য তাকে আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই। তিনি ভারতে আছেন এবং মাঝে-মধ্যেই কথা বলছেন। এটি সমস্যাজনক। তিনি যদি চুপ থাকতেন, তাহলে আমরা তা ভুলে যেতাম। তিনি নিজের জগত নিয়ে থাকলে মানুষও তা ভুলে যেত। কিন্তু তিনি ভারতে বসে কথা বলে যাচ্ছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন। এটা কেউ পছন্দ করছে না।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনকে ৮ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। এবং রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে, বুধবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে তাকে চীফ মেট্রোপলিটিন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আনা হয়। এ সময় মামলার তদন্তের স্বার্থে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গতকাল মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে মামলা থাকায় সেনা হেফাজতে থাকাকালীন আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। পরে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশ পুলিশের ৩১তম মহাপরিদর্শক ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর থেকে তাকে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। এরপর দুই দফায় তাকে আইজিপি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় সরকার। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের দুইদিন পর তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। ৫ আগস্ট থেকে সেনা হেফাজতেই ছিলেন তিনি।

এরআগে, তিনি র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‍্যাব) মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

গতকাল মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরার ১৬ নং সেক্টর থেকে গ্রেফতার হন তিনি।

শহীদুল হক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৮৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জ জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, ডিআইজি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, রাজশাহী রেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জে দায়িত্বও পালন করেন তিনি। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও পুলিশের ভিন্ন ভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ২০১৪ সালের শেষদিকে আইজিপির দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসরে যান শহীদুল হক।

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিলীপ কুমার আগরওয়ালকে আটক করেছে র‍্যাব। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে তাঁর গুলশানের কার্যালয় থেকে তাঁকে আটক করা হয়। 

রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান।

তিনি জানান, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালকে রাজধানীর গুলশান থেকে আটক করেছে র‍্যাব–১

র‍্যাব–১–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিলীপ কুমার আগরওয়ালকে আটক করা হয়েছে। রাতে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। 

র‍্যাব–১ এর অধিনায়ক বলেন, তাঁকে আটক করতেই গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‍্যাব। তাঁকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হবে। 

এর আগে বিকেলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান জানান, রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় নামমাত্র শোরুম দিয়ে ডায়মন্ডের বদলে উন্নত মানের কাচের টুকরো বিক্রি করার অভিযোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীলিপ কুমার আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি। 

তিনি বলেন, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীলিপ কুমার আগরওয়ালের বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে সোনা ও হিরা আমদানির নামে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন জেলায় নামমাত্র শোরুম দিয়ে ডায়মন্ডের নামে উন্নতমানের কাচের টুকরো বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। এসব অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বেধে দেয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ রাত ১২টায়। এরপরই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে শুরু হবে যৌথ বাহিনীর অভিযান। সাথে অভিযান চলবে মাদকের বিরুদ্ধেও। আইনের আওতায় আনা হবে মাদকের গডফাদারদেরও।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে অভিযান শুরুর বিষয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে উপদেষ্টা বলেন, হাতিয়ার কালেকশনে (অস্ত্র উদ্ধারে) এই অভিযান চলবে। অনুমোদনহীন অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাওয়া ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হবে। এ সংক্রান্ত আইনের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক মামলা দায়েরও করা হবে। সুনির্দিষ্টভাবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, দুর্গাপূজা আসন্ন। বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসব যেন শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায়, সে ব্যাপারেও সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পূজা ভালোভাবেই হবে, কোথাও কোনো সমস্যা হবে না।

মিয়ানমার সীমান্তেও কিছু সমস্যা আছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এ বিষয় নিয়েও আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে

পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের আরও চার কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছেন এক উপপুলিশ মহাপরিদর্শক ও তিন জন অতিরিক্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন, অপরাধ তদন্ত বিভাগের উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) মো. ইমাম হোসেন, হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক খন্দকার লুৎফুল কবির, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মীর রেজাউল আলম এবং নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৫৭ নং এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী তাদেরকে জনস্বার্থে অবসরে পাঠানো হলো। অবসরকালীন সময়ে তারা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধা প্রাপ্ত হবেন বলেও উল্লেখ করা হয় প্রজ্ঞাপনে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।