অপরাধ

রাজধানীর খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) তাদের আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।

জানা যায়, গত ১৯ জুলাই পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়ে রিকশা চালক কামাল উদ্দিন নিহত হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ফাতেমা পল্টন থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এর আগে, গত ৬ আগস্ট আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে ঢাকার শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় বলে খবর পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল বলে গত মঙ্গলবার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইসিটি মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের জন্য দায়ী করা হয়েছে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও সাবেক এনটিএমসির ডিজিকেও।

এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে, মঙ্গলবার রাতে নৌপথে পালানোর সময় কোস্টগার্ডের হাতে গ্রেফতার হন সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বুধবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত এই আদেশ দেন।

গত ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে হতাহতের ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চায় ডিবি পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জানা গেছে, শুনানিতে আসামিদের পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না।

এর আগে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে তাদেরকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে, আদালতে প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর পর তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ডিম ছুঁড়ে মারেন। এ সময় তারা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর তাদেরকে আদালতে তোলার পর প্রধান ফটকের সামনেও বিক্ষোভ করেন তারা।

অপরদিকে, বুধবার বিকেল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়ন করা হয়।

এছাড়া, যমুনা টিভির অনুসন্ধানে জানা যায়, রাতভর ডিবি অফিসের হাজতখানায় ছিলেন সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক। তাদের জন্য ছিল না কোনও বিশেষ ব্যবস্থা। আসামিদের জন্য নির্ধারিত স্বাভাবিক খাবার খেতে দেয়া হয় তাদের।

এছাড়া, ভিআইপি আসামির ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে বিশেষ ব্যবস্থা রাখে গোয়েন্দা পুলিশ। কখনও কখনও পরিবার থেকে পাঠানো খাবার খেতে দেয়া হয়। বিছানায় ঘুমাতে দেয়া হয়। কিন্তু সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের ক্ষেত্রে এসব কিছুই হয়নি। অন্য আসামিদের মতো হাজতের মেঝেতেই ঘুমাতে হয় তাদেরকে।

প্রসঙ্গত, নৌপথে পালানোর সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে কোস্টগার্ডের হাতে গ্রেফতার হন সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর পুলিশের মাধ্যমে গতরাত রাত ১০টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে দু’জনকে নেয়া হয়।

৭ দফা দাবিতে শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয় শহীদ পরিবার ও নিপীড়িত ছাত্র জনতা। আজ বুধবার (১৪) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, যারা এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে, প্রাণ দিয়েছে, তাদের শহীদের মর্যাদা দিতে হবে। যারা চিকিৎসাধীন রয়েছে, তাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে বহন করতে হবে।

৭ দফা দাবি উপস্থাপন করে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। তারা বলেন, জাতিসংঘের অধীনে গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ, শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা গঠন করতে হবে।

এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে তারা আহ্বান জানান, ইন্টারপোলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

গুমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী। আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) সকালে এ্যাডভোকেট সোহেল রানা বাদী হয়ে সিএমএম আদালতে এই মামলা করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে রাজধানীর উত্তরা থেকে গুম করা হয় তাকে। ১৮৫ দিন গুম ছিলেন বলে দাবি করেন এই আইনজীবী। অ্যাডভোকেট সোহেল রানার দাবি, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে তাকেও গুম করা হয়েছিল।

এই অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক ও র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ অজ্ঞাত আরও ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবু সায়েদ নামের এক মুদিদোকানিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এজহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দেন আদালত।

সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদসহ ১৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিএনপি। বুধবার (১৪ আগস্ট) সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন খান বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেছেন।

২০২২ ও ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে লুটপাট-অস্ত্র উদ্ধারের নাটকসহ হয়রানির অভিযোগে পল্টন থানায় দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে। সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, তৎকালীন ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

এদিকে, গুমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী। আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) সকালে এ্যাডভোকেট সোহেল রানা বাদী হয়ে সিএমএম আদালতে এই মামলা করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে রাজধানীর উত্তরা থেকে গুম করা হয় তাকে। ১৮৫ দিন গুম ছিলেন বলে দাবি করেন এই আইনজীবী। অ্যাডভোকেট সোহেল রানার দাবি, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে তাকেও গুম করা হয়েছিল।

এই অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক ও র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ অজ্ঞাত আরও ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর রাত ১০টার দিকে তাদেরকে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়। জানা গেছে, আদালতে ওঠানোর পর হত্যা মামলায় এই দুজনের ৭ দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ।

ডিবি সূত্র বলছে, আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে তাদেরকে সিএমএম কোর্টে তোলা হবে। ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে হতাহতের ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার এক মামলায় বিগত সরকারের এই দুই শীর্ষ কুশীলবকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এদিকে যমুনা টিভির অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাতভর ডিবি অফিসের হাজতখানায় ছিলেন সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক। ছিলো না কোনো বিশেষ ব্যবস্থা। আসামিদের জন্য নির্ধারিত স্বাভাবিক খাবার খেতে দেয়া হয় তাদের।

এছাড়া, ভিআইপি আসামির ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে বিশেষ ব্যবস্থা রাখে গোয়েন্দা পুলিশ। কখনও কখনও পরিবার থেকে পাঠানো খাবার খেতে দেয়া হয়। বিছানায় ঘুমাতে দেয়া হয়। কিন্তু সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের ক্ষেত্রে এসব কিছুই হয়নি। অন্য আসামিদের মতো হাজতের মেঝেতেই ঘুমাতে হয় তাদেরকে।

এদিকে হেভিওয়েট আসামি গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার রাতে ডিবি অফিসের মধ্যে ছিল রুদ্ধশ্বাস অবস্থা। আসামিকে কখন-কোথায় আনা হচ্ছে, কী করা হচ্ছে অধিকাংশ কর্মকর্তাই তা জানতে পারেননি। হাতেগোনা দু-একজন কর্মকর্তা মামলা ও আইনী প্রক্রিয়া দেখভাল করছেন।

শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি দাবি করেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানী ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকার নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ও মন্ত্রীরা গা ঢাকা দেন। কেউ কেউ আবার এর আগেই দেশত্যাগ করেন। আর ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে আটক করা হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক দুই মন্ত্রীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এস এম আমীর হামজা শাতিল নামে রাজধানীর একজন ব্যবসায়ী বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এর শুনানি হবে বলে জানা গেছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া, অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তা বা পুলিশের সদস্য ও তৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় আসামি করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার পর এই প্রথম তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা হলো।

এস এম আমীর হামজা শাতিল একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে একজন নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এই মামলা করেছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওই সব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র জনতা নিহত ও আহত হন। গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন।

বাদী আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সোমবার (১২ আগস্ট) সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে পরিচিত বিএফআইইউ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, স্থগিত করা ব্যাংক হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিলাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী প্রভৃতি) তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠাতে হবে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও দেশত্যাগের পর এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী এবং তাদের মেয়ের অ্যাকাউন্ট স্থগিতের নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ। সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও তার স্ত্রী শারমিন মুশতারীর অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে। আজ এ আদেশ দেয়া হয়

উল্লেখ্য, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ‘আরমিট গ্রুপ’ এর চেয়ারম্যান। তার স্ত্রী রুখমিলা জামান ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে তখনকার ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অন্তত ২৬০টি সম্পত্তি রয়েছে। এসবের জন্য তিনি অন্তত ১৩৪ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন পাউন্ড বা এক হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন। যুক্তরাজ্যে সম্পদের বিপরীতে আরও অন্তত ৫৩৭টি সম্পদ তিনি মর্টগেজ রেখেছেন। যদিও নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দেয়া হলফনামার সঙ্গে তিনি যে আয়কর রিটার্ন দিয়েছেন, সেখানে তার কোনো বৈদেশিক আয় নেই বলে উল্লেখ করেন।

আব্দুল্লাহ আল মোমিন: পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি করে দুই শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় পাবনা সদর আসনের সাবেক এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্স ও ভারারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান সহ দলটির ১০৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। রোববার নিহত দুই শিক্ষার্থীর বাবা যৌথভাবে বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

৪ আগস্ট নিহত ওই শিক্ষার্থী হলো- পাবনা সদর উপজেলার বেতেপাড়া গ্রামের মোঃ কালামের ছেলে মাহবুব হাসান নিলয় (১৬) ও চর বলরামপুরের দুলালের ছেলে জাহিদুল। তাদের মধ্যে জাহিদুল পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের পঞ্চম বর্ষে এবং নিলয় শহরের ছিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। 

এমপি প্রিন্স ছাড়া মামলার মূল আসামিরা হলেন- পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খানসহ তাঁর তিন ভাই পাবনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সোহেল, পাবনা পৌরসভার মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল হাসান শাহিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন, পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ বাবু, সাবেক সেক্রেটারি তৌফিক ইমাম খান, বালু ব্যবসায়ী ও দোগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হাসান প্রমুখ। 

এজাহার বলা হয়, ৪ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের মিছিলে প্রকাশ্যে পিস্তল ও শটগান দিয়ে গুলি ছোড়েন পাবনা সদর আসনের সাবেক এমপি প্রিন্সসহ অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা। এতে ঘটনাস্থলেই জাহিদুল ও নিলয় নিহত হন। এ ছাড়া একই দিন পৃথক ঘটনায় ফাহিম হোসেন রাজ্জাক (১৭) নামের আরেক ছাত্রেরও মৃত্যু হয়। 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, ঐ দিন সাবেক এমপি প্রিন্স ও আবু সাঈদ খান সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী নিয়ে পিস্তল থেকে গুলি ছুড়ছে ছুড়তে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করছেন। তাঁর পাশে অনেকের হাতে ছিল শটগান, লোহার রড ও জিআই পাইপ।

এদিকে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা ইস্তফা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের এসব নেতাকর্মীর সবাই গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নিহতদের  বাবা ও বৈষম্য বিরুধী ছাত্র জনতা।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে সাবেক এমপি প্রিন্সের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম  জানিয়েছেন  পাবনার সব থানার কার্যক্রম এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। স্বাভাবিক হওয়ার পর আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।