আব্দুল্লাহ আল মোমিন: পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি করে দুই শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় পাবনা সদর আসনের সাবেক এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্স ও ভারারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান সহ দলটির ১০৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। রোববার নিহত দুই শিক্ষার্থীর বাবা যৌথভাবে বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
৪ আগস্ট নিহত ওই শিক্ষার্থী হলো- পাবনা সদর উপজেলার বেতেপাড়া গ্রামের মোঃ কালামের ছেলে মাহবুব হাসান নিলয় (১৬) ও চর বলরামপুরের দুলালের ছেলে জাহিদুল। তাদের মধ্যে জাহিদুল পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের পঞ্চম বর্ষে এবং নিলয় শহরের ছিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
এমপি প্রিন্স ছাড়া মামলার মূল আসামিরা হলেন- পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খানসহ তাঁর তিন ভাই পাবনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সোহেল, পাবনা পৌরসভার মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল হাসান শাহিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন, পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ বাবু, সাবেক সেক্রেটারি তৌফিক ইমাম খান, বালু ব্যবসায়ী ও দোগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হাসান প্রমুখ।
এজাহার বলা হয়, ৪ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের মিছিলে প্রকাশ্যে পিস্তল ও শটগান দিয়ে গুলি ছোড়েন পাবনা সদর আসনের সাবেক এমপি প্রিন্সসহ অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা। এতে ঘটনাস্থলেই জাহিদুল ও নিলয় নিহত হন। এ ছাড়া একই দিন পৃথক ঘটনায় ফাহিম হোসেন রাজ্জাক (১৭) নামের আরেক ছাত্রেরও মৃত্যু হয়।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, ঐ দিন সাবেক এমপি প্রিন্স ও আবু সাঈদ খান সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী নিয়ে পিস্তল থেকে গুলি ছুড়ছে ছুড়তে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করছেন। তাঁর পাশে অনেকের হাতে ছিল শটগান, লোহার রড ও জিআই পাইপ।
এদিকে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা ইস্তফা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের এসব নেতাকর্মীর সবাই গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নিহতদের বাবা ও বৈষম্য বিরুধী ছাত্র জনতা।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে সাবেক এমপি প্রিন্সের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানিয়েছেন পাবনার সব থানার কার্যক্রম এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। স্বাভাবিক হওয়ার পর আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।