বাংলাদেশ

অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৮ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। গতকাল বুধবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর মহকুমার খড়দহ ও টিটাগর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে আট বাংলাদেশিকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিতে ব্যারাকপুর আদালতে আবেদন করে খড়দহ থানার পুলিশ।

জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বাবলু শেখ, ফারুক শেখ ও আলি শেখ বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে বসবাস করছিলেন। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। তাদের কাছে কোনো বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা পাওয়া যায়নি।

দেশটির পুলিশ জানায়, প্রত্যেকেই দালালের মাধ্যমে নদীয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। তারা সবাই আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মী হিসাবে পরিচিত। রাজনৈতিক পালা বদলের পর গোপনে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেন তারা। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলেও জানায় পুলিশ।

গেল দেড় দশকে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভয়ারণ্য হয়ে উঠে টেলিকম খাত। সালমান এফ রহমান সিন্ডিকেটের প্রভাব-বলয়ে বন্দি হয়ে পড়েন কর্মকর্তারা। বেসুমার অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে লুটে নেয়া হয় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার সুবিধা।

ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ) সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। প্রকৃত দরের চেয়ে কম ঘোষণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয় এসব অর্থ।

প্রাথমিক তদন্তে আইন বহির্ভূতভাবে আইওএফ গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব ভাগাভাগিতে অনিয়ম পেয়েছে বিটিআরসি। আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স, আইআইজিসহ বিভিন্ন খাতের লাইসেন্স প্রদানে অনিয়ম এবং রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে নেয়া হচ্ছে কঠোর পদক্ষেপ।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, লভ্যাংশ শেয়ার করা হয় লটারিতে, এখানে যে একটি গ্যাপ, এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এটি সিরিয়াসলি দেখার আছে।

২০১৫ সালে আইওএফ সিন্ডিকেট গঠনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কল ব্যবসা দখলে নেয় সালমান এফ রহমানের সিন্ডিকেট। অভিযোগ আছে, ভয়েস কলে নামমাত্র ট্যারিফ নির্ধারণ করার জন্য বিটিআরসিকে বাধ্য করেন আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা। বিষয়টি আমলে নিয়ে ট্যারিফ কাঠামো পরীক্ষা-নীরিক্ষার কাজ শুরু করেছে বিটিআরসি।

মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, কল টার্মিনেশন রেট বিশ্বে যেসব দেশে কম, তার মধ্যে একটি বাংলাদেশ। তাতে লাভ হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ক্যারিয়ারের, আর ক্ষতি হচ্ছে সরকারের। লাভ পাচ্ছে না সরকার। এই ট্যারিফটা কতটুকু বৃদ্ধি করা যাবে, কিংবা আদৌ করা যাবে কি না তা যাছাই করা দরকার। যা আমরা শুরু করেছি।

রাজস্ব ফাঁফি দেয়ার পাশাপাশি আইওএফ সিন্ডিকেট মোবাইল অপারেটরদেরও টাকা ফাঁকি দিয়েছে। বিটিআরসির কাছে এমন অভিযোগ জানিয়েছে জানিয়েছে অপারেটরা।

রবির করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের চিফ সাহেদুল আলম বলেন, আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম ইকো সিস্টেমে যে স্টেপটা করা হয়েছিল, সেটি কিন্তু বিটিআরসির আইএলডিটিএস পলিসি ছিল সেটিরই একটি ব্যত্যয় ছিল। সেক্ষেত্রে আমাদেরও একটি বড় ধরনের লোকসান হয়েছে প্রতি মাসে। আমরা সব অপারেটররা যদি বলি, সরকার প্রথম দিকে যদি ১শ’ থেকে দেড়শ কোটি টাকা লোকসান করে, তাহলে আমরাও ৭০-৮০ কোটি টাকা লোকসান করেছি প্রতি মাসে।

আইওএফসহ টেলিকম খাতের সিন্ডকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করতে আইএলডিটিএস পলিসি পর্যালোচনার পরামর্শ প্রযুক্তিবিদদের।

প্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরে যে ঘটনা ঘটেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই ক্ষেত্রেও প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমার মনে হয়, এখন একটা সময় এসেছে, আমাদের এই পলিসিগুলো.. আইএলডিটিএস পলিসি অনেক পুরনো, ২০০৮ সালের পলিসি আজকের বাস্তবতায় পুনর্বিবেচনা করার দাবি রাখে।

ঢাকায় দূতাবাস খোলার বিষয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ। এছাড়া দেশটি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনের সাইডলাইনে বৃহস্পতিবার (নভেম্বর ১৪) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন ভেন্যুতে সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় নিতে ও গভীর করতে দুই দেশ কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে এক চুক্তি সম্পাদনে আজারবাইজানের সরকারের একটি উচ্চ-পর্যায়ের দল আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশ সফর করবে।

এসময় আজারবাইজান রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারকেও অভিনন্দন জানান। প্রধান উপদেষ্টাও এসময় দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বান জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আহতদের চিকিৎসা মোটামুটি হলেও তারা তেমন আর্থিক সহযোগিতা পাননি। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু) আহতদের দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আহতদের পরিস্থিতি এখনও ভালো নয়। কিছু আহতের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। তাদের দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি। বিএনপির পক্ষ থেকে আহতদের ৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর আগেও তাদেরকে সহযোগিতা করা হয়েছে।

এ সময় ফ্যাসিবাদী শক্তি কিভাবে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ায় এবং রাজনীতি করতে চায়-এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আমদানি করা জলবিদ্যুতে ঝুঁকছে বাংলাদেশ। সরকারের এই অবস্থান স্পষ্ট করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে কাজ করছে সরকার।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৯) শেষে এসব কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, জলবিদ্যুতের জন্য দক্ষিণ এশীয় গ্রিড তৈরির ওপর জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। নেপালের পাশাপাশি ভুটান থেকেও আমদানির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তবে সে জন্য লাগবে ভারতের অনাপত্তি।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দক্ষিণ এশীয় গ্রিড করার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সার্ককে কার্যকর করাও ডক্টর ইউনূসের কূটনীতির অগ্রাধিকার।

বাংলাদেশ ও নেপালের দূরত্ব কমবেশি ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। গ্রিড হলে নেপালের জলবিদ্যুৎ সহজলভ্য হবে। বাংলাদেশ বর্তমানে ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ পায়।

রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলাই বিপ্লবে আহতদের ৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে আহতদের দেখতে গিয়ে দলটির পক্ষ থেকে এ অনুদান প্রদান করা হয়।

হাসপাতাল পরিদর্শনে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এসময় তারা আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবরও নেন।

পরে সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, কিছু মানুষের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। তাদের দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান তিনি।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব আহত ও শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে বলেও জানান তিনি। এসময়, ফ্যাসিবাদী শক্তি কীভাবে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ায়, কীভাবে রাজনীতি করতে চায় এমন প্রশ্নও তোলেন সালাহ উদ্দিন।

আইন করে কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ে দায়মুক্তি দেয়া অবৈধ ছিলো বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

হাইকোর্ট বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধিতে বিশেষ আইন ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি দেয়া হয়। এছাড়া ক্রয় সংক্রান্ত ৬ ধারা অনুযায়ী মন্ত্রীকে একক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলের শুনানি শেষে গত ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সিনথিয়া ফরিদ।

গত ২ সেপ্টেম্বর কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধিতে করা বিশেষ বিধান কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর আগে, কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি এবং ক্রয় সংক্রান্ত ৬ (২) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ছয় হাজারের বেশি অবৈধ অস্ত্র এবং প্রায় ২ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে আড়াই হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস-এ আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ ইন্তেখাব হায়দার খান।

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান করতে তিনি জানান, এই মুহূর্তে দেশের ৬২টি জেলায় সেনাসদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা, গণমাধ্যম ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কর্নেল স্টাফ ইন্তেখাব হায়দার বলেন, সারাদেশে সাতশর বেশি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে সেনাবাহিনী। যার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ১৪১টি, সরকারি সংস্থা বা অফিস সংক্রান্ত ৮৬টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৯৮টি এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ৩৮৮টি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সময়মতো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অনেক অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ও বহু মানুষের জানমালের ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।

এছাড়াও অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার, বিভিন্ন অপরাধী ও নাশকতামূলক কাজের ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার কার্যক্রমে সেনাবাহিনী সক্রিয় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ইন্তেখাব হায়দার খান। তিনি বলেন, যৌথ অভিযানে ৭০০ জনের বেশি মাদক ব্যবসায়ী অথবা মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজাসহ অন্যান্য অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে যারা আহত হয়েছেন সেনাবাহিনী তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে বলে উল্লেখ করেন সেনা কর্মকর্তা ইন্তেখাব হায়দার খান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৯৫ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিরোধের ব্যাপারে সেনাবাহিনী অত্যন্ত সচেতন জানিয়ে কর্নেল স্টাফ ইন্তেখাব আরও বলেন, এ বিষয়ে তাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে, যেকোনো ধরনের পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী যেন বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হতে না দেয়। তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এটা প্রতিরোধ করার। বিচার বহিভূর্ত হত্যা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে সেনাবাহিনী সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিন মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত দুজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে ময়মনসিংহের পৃথক পৃথক স্থান থেকে তাদের মরদেহ তোলা হয়।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর ভাটিকাশর কবরস্থান থেকে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহিনের মরদেহ তোলা হয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে রাজউক কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় মাহিন। গত ২১ আগস্ট তার বাবা জামিল হোসেন উত্তরা পশ্চিম থানায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের নাম ও অজ্ঞাত পরিচয় ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।

অন্যদিকে এদিন সকাল ১০টার দিকে নগরের কালীবাড়ি কবরস্থান থেকে নাজমুল ইসলাম রাজুর মরদেহ উত্তোলন করা হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের খবরে আনন্দ মিছিলে অংশ নিতে গিয়ে উত্তরা পূর্ব থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন পোশাককর্মী নাজমুল।

তার মৃত্যুর ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা করেন ছোট ভাই রেজাউল। ২৫ আগস্ট থানায় করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

আদালতের আদেশে মাহিনের মরদেহ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ আল ইমরান। তার উপস্থিতিতে দাফনের ৩ মাস ৭ দিন পর মাহিনের মরদেহ উত্তোলন করা হলো। অন্যদিকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসএম নাজমুস ছালেহীনের উপস্থিতিতে দাফনের ৩ মাস ৬ দিন পর নাজমুলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। মরদেহ কবর থেকে তোলার সময় সিআইডি, থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।