বাংলাদেশ

টানা অষ্টম দিনে গড়াল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি। ফলে অচলাবস্থা বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে ১ জুলাই থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এই কর্মসূচির কারণে তালা ঝুলছে শ্রেণিকক্ষ ও অফিসে। এ কারণে ক্লাস, পরীক্ষা হচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল, বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা–কর্মচারীর অংশগ্রহণে একটি বড় মিছিল হয়েছে। মিছিলটি ক্যাম্পাস ঘুরে মিছিলকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের (প্রশাসনিক) সামনে অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে শিক্ষকেরা জমায়েত হচ্ছেন। প্রতিদিন দুপুরে তাঁরা এখানে জমায়েত হয়ে বেশ কিছু সময় অবস্থান করেন। সেখানে বক্তব্য দিয়ে নিজেদের দাবির কথা তুলে ধরেন।

এ রকম পরিস্থিতি বেশি দিন চললে উচ্চশিক্ষার পুরোনো ব্যাধি সেশনজট আবার তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা বা বৈঠক হওয়ার খবর আছে কি না, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভুঁইয়া আজ প্রথম আলোকে বলেন, যোগাযোগ চলছে। তবে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

রয়ে গেছে। সংস্থাটির পরিকল্পনা ঘাটতির কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ১৫৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি চট্টগ্রাম নগরের ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে’-এর উদ্বোধন করেছিলেন।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফা সময় বৃদ্ধি করে মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। এ সময়ে প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। কিন্তু বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ করতে পারেনি সিডিএ। এখন আরেক দফা সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত করার জন্য আবেদন করেছে সংস্থাটি। 

চালুর জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সম্প্রতি লালখানবাজার এলাকায়জুয়েল শীল

উদ্বোধনের সাড়ে সাত মাস পরও যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি চট্টগ্রাম নগরের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মিত এই এক্সপ্রেসওয়ে গাড়ি চলাচলে আরও অন্তত দুই মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ আগস্ট মাসে গাড়ি চলাচল শুরু হবে, এমনটা বলছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের মার্চে গাড়ি চলাচল শুরুর কথা জানিয়েছিল সংস্থাটি। 

সিডিএ জানায়, মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হলেও নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কিছু কাজ এখনো বাকি রয়ে গেছে। সংস্থাটির পরিকল্পনা ঘাটতির কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ১৫৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি চট্টগ্রাম নগরের ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে’-এর উদ্বোধন করেছিলেন।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফা সময় বৃদ্ধি করে মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। এ সময়ে প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। কিন্তু বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ করতে পারেনি সিডিএ। এখন আরেক দফা সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত করার জন্য আবেদন করেছে সংস্থাটি। 

সিডিএ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে গত এপ্রিলে। তখন থেকে যান চলাচলের উপযোগী হয়ে যায় এক্সপ্রেসওয়ে। কিন্তু সড়কবাতি, ক্লোজড সার্কিট টিভি (সিসিটিভি) ক্যামেরা স্থাপনের কাজ বাকি রয়েছে। 

এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুমোদনের সময় টোল আদায়ের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। কিন্তু মূল অবকাঠামো নির্মাণের জন্য দরপত্র দিলেও সেখানে টোল প্লাজার বিষয়টি উল্লেখ ছিল না। ছিল না সড়কবাতি ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজও। নির্মাণকাজের শেষ পর্যায়ে এসে গত বছরের এপ্রিলে এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণ এবং টোল প্লাজা স্থাপনের জন্য দরপত্র দিয়েছিল। কিন্তু টোল প্লাজা স্থাপনের দরপত্র বাতিল হয়ে যায়। টোল প্লাজার জন্য আবার নতুন করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান করে সিডিএ। 

সিডিএর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান র‍্যাঙ্কিন লিমিটেড। 

টানা পঞ্চম দিনের মতো বন্ধ রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম। এতে সেশনজটের আশঙ্কা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৭ জুলাই) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে শিক্ষকদের পূর্বনির্ধারিত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষকরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান একাডেমিক অচলাবস্থার দায় কোনোভাবেই শিক্ষকরা নেবে না। এ দায় আমরা এককভাবে সরকারকেও দিতে চাই না। সরকারের যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগ পেনশন সংক্রান্ত এ বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার জন্য তারাই দায়ী।

 

রাবি শিক্ষ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক সরকার জানান, এটি শুধু শিক্ষকদের নয়, শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার আন্দোলন। আমরা বাধ্য হয়েই সর্বাত্মক আন্দোলনের মতো কঠোর কর্মসূচি পালন করছি। তবে আমাদের দাবি পূরণ হয়ে গেলে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের এ ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গত ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্ধদিবস এবং ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হয়। এছাড়াও ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।

 

পড়াশোনা বাদ দিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (৭ জুলাই) বেলা পৌনে ১১টার দিকে গণভবনে যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কোটা বাতিলের আন্দোলন হচ্ছে। কোটা বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে বহাল হয়েছে। পড়াশোনা বাদ দিয়ে ছেলে-মেয়েরা আন্দোলন করছে। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

সার্বজনীন পেনশন স্কিমের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিবিদসহ সবার সার্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়া দরকার। 

বিএনপি সমাজের বোঝা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের সন্ত্রাসী চেহারা মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। বিএনপি-জামায়াত যেন আর ক্ষমতায় ফিরতে না পারে, সেজন্য মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় যেভাবে নিযার্তন করেছে তা নিন্দারও যোগ্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, দলটি ভোট চুরি করে মাত্র দেড় মাস টিকেছিল। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ২০০১ সালে ক্ষমতায় গিয়েছিল বিএনপি। ভোট চুরির অবপাদে ২ বার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে তারা।

অনুষ্ঠানে যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বিত উন্নয়ন উদ্যোগ, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ অবকাঠামো নির্মাণ এবং জ্বালানি সরবরাহের সক্ষমতা বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চীনের কাছ থেকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহযোগিতা চাইতে পারে বাংলাদেশ।

এরমধ্যে দেশের চলমান রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় ৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা এবং ১২টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাকি ১৫ বিলিয়ন ডলার প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ঋণ চাওয়া হতে পারে।

আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বাংলাদেশ চীনের কাছে এই বিপুল পরিমাণ আর্থিক ও উন্নয়ন সহযোগিতা চাইতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর এবারের চীন সফরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেতে পারে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে “সাউদার্ন ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এসআইডিআই)” শীর্ষক একটি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা। পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বিত উন্নয়নের এই উদ্যোগে উন্নত সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পায়রা সমুদ্রবন্দর হয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত উন্নত রেল যোগাযোগ বিস্তৃত করতে চায় সরকার।

এছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনায় উন্নয়ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া আইসিটি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, লজিস্টিকস এবং একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, এই উন্নয়ন উদ্যোগের আওতায় ওই অঞ্চলের একটি কৌশলগত স্থানে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ির প্ল্যান্ট, একটি হাই-টেক পার্ক এবং একটি লজিস্টিক হাব স্থাপন করতে চায় সরকার। দ্য বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভের আওতায় এই উন্নয়ন পরিকল্পনা চীনের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এবারের চীন সফরে বাংলাদেশের এই কৌশল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চীনের কাছে বিশেষ সহযোগিতার আহ্বান জানাবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার হাল ফেরাতে এখন থেকে সপ্তাহের বেশির ভাগ সময় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার ঢাকায় অবস্থান করবেন। বাকি দিনগুলো ঢাকার বাইরে কাটানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি অবহিত করেছেন।

রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআর,বিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ কর্মসূচি’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “দুদিন ঢাকায় থাকব আর বাকি কয়দিন সারা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিদর্শন করব। আমি যদি গ্রামের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারি, যদি উপজেলা, জেলার কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে যথাযথ চিকিৎসা হয়, তাহলে ঢাকা শহরে রোগীর ভিড় হবে না।”

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে গ্রামের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন ঘটাতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রাইমারি হেলথ কেয়ারকে যদি শক্তিশালী করতে পারি, তাহলে আমাদের সমস্যা থাকবে না। আইসিডিডিআর,বি তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

“তারা প্রশংসনীয়ভাবে গ্রামগঞ্জে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই টার্গেট নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।”

সেমিনারে আইসিডিডিআর,বির মাতৃ এবং শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের এমিরেটাস সায়েন্টিস্ট জেনা দেরাখশানি হামাদানি একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

এতে বলা হয়, খেলাধুলাভিত্তিক শিশু লালন-পালন কর্মসূচি শিশুদের জ্ঞান, ভাষা, শারীরিক এবং আচরণগত বিকাশ উন্নত করে। এই কর্মসূচি নরসিংদী, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষীপুর জেলার ২১টি উপজেলার ৬১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ৪৮৫ জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রাথমিক শৈশব বিকাশ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, যারা পরে ১ হাজার ৮২১ জন স্বাস্থ্য কর্মীদের এই সেবা প্রদানের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৬ থেকে ৩৬ মাস বয়সী শিশুদের ১৪ হাজারের বেশি মা প্রশিক্ষিত হয়েছেন।

হামাদানি বলেন, “বয়স উপযোগী খেলাধুলার মাধ্যমে শিশু বিকাশ ত্বরান্বিত করা যেতে পারে। আশা করি আমরা দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে কার্যক্রমটি কার্যকরভাবে স¤প্রসারণ করতে পারব এবং একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করতে পারব।” স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম, আইসিডিডিআর,বির প্রধান নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

বাগেরহাটের শরণখোলায় প্রকল্পের কাজ না করে হাটবাজার রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন সাবেক ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম। জুন মাসের বার্ষিক হিসাব শেষে চেয়ারম্যানরা এ খবর জানতে পেরে হতবাক হয়ে পড়েন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে সাবেক এই ইউএনওর কাছ থেকে ঐ টাকা ফেরত আনার দাবি জানান তারা।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উপজেলার হাটবাজার রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ২৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার কাগজে কলমে ৪টি প্রকল্প গ্রহণ করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম। প্রকল্পগুলো হচ্ছে, রায়েন্দা ইউনিয়নের রায়েন্দা বাজারের সবজি মার্কেটে টল শেড নির্মাণ বাবদ ৯ লাখ টাকা ও টল শেড (ট্রাসের কাজ) নির্মাণ বাবদ ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার দুটি প্রকল্প। এ ছাড়া খোন্তাকাটা ইউনিয়নের খোন্তাকাটা বাজারের ড্রেন নির্মাণ বাবদ ৫ লাখ টাকা এবং সাউথখালী ইউনিয়নের তাফালবাড়ি বাজারের ড্রেন নির্মাণ বাবদ ৫ লাখ টাকার পৃথক দুইটি প্রকল্প তৈরি করা হয়।

এরপর ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখের হাটবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে ইউএনও জাহিদুল ইসলাম একাই স্বাক্ষর করে রেজুলেশন তৈরি করে ওই প্রকল্প অনুমোদন দেখান। পরে তিনি প্রকল্পের টাকা সুবিধামতো সময়ে উত্তোলন করেন। এরপর তিনি গত ২ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ শরণখোলা থেকে পাবনার শাঁথিয়া উপজেলায় বদলি হয়ে যান।

এ ব্যাপারে খোন্তাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন, আমার ইউনিয়নে ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের কথা জানতে পেরে তৎকালীন ইউএনও’র কাছে খোঁজখবর নিয়েছিলাম। বিষয়টি জেনে ফেলেছি এ কারণে তিনি আমার ইউনিয়নের প্রকল্পটি পরিবর্তন করে একই তারিখের আরেকটি রেজুলেশন তৈরি করে ধানসাগর ইউনিয়নে অন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দেখিয়েছেন। তবে হাটবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে ওই রেজুলেশনে আমার কোনো স্বাক্ষর নেই।

সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রাজিব বলেন, আমার ইউনিয়নের তাফালবাড়ি বাজারে ড্রেন নির্মাণের একটি প্রকল্প দেখিয়ে সাবেক ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম ৫ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। অথচ এ ধরনের কোনো কাজ আমার ইউনিয়নে হয়নি। এ ছাড়া হাটবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে আমি এর কিছুই জানি না।

ধানসাগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাইনুল ইসলাম টিপু বলেন, আমার ইউনিয়নের রাজাপুর বাজারের টলশেড মেরামতের নামে দুইটি টল শেডের ঢেউটিন পরিবর্তন করেছে। তাতে সর্বোচ্চ ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। অথচ ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন সাবেক ইউএনও। আমি ওই কমিটির সদস্য হয়ে এর কিছুই জানি না। তদন্ত করে ইউএনও’র কাছ থেকে ওই টাকা ফেরত আনার দাবি জানান তিনি।

রাজাপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম কবির তালুকদার বলেন, দুইটি শেডে ২২ মিলি মিটারের মাত্র ১০ বান্ডিল টিন লাগিয়ে তিনি ৫ লাখ টাকা হজম করেছেন। অথচ টলশেড দুটি এখনও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

ধানসাগর, খোন্তাকাটা ও সাউথখালীর সংশ্লিষ্ট তিন চেয়ারম্যান জানান, উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করলে তা উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে প্রাক্কলন তৈরি করতে হয়। এ ছাড়া ওই খাতের অর্থে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সব সময় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। কিন্তু সাবেক ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম টাকা আত্মসাৎ করতে কোনো কিছুর তোয়াক্কা করেননি। অনিক এন্টারপ্রাইজ নামের একজন ঠিকাদারের চেক ব্যবহার করে সাউথখালী ও ধানসাগর ইউনিয়নের দুইটি প্রকল্পের ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু রায়েন্দা ইউনিয়নের কাজ দু’টি বাগেরহাট-৪ আসনের এমপি বদিউজ্জামান সোহাগ উদ্বোধন করায় তিনি ওই প্রকল্পের টাকা নিতে পারেননি।

ওই প্রকল্পের টাকা রায়েন্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তার কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছেন। জানতে চাইলে অনিক এন্ট্রারপ্রাইজের প্রোপাইটর মো. অনিক হোসেন গাজী বলেন, উপজেলা হাটবাজার রক্ষণাবেক্ষণ খাতের কোনো কাজ আমি করি নাই। সাবেক ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম আমার কাছ থেকে শুধু চেক চেয়ে নিয়েছিল। ওই চেক নিয়ে তিনি কী করেছেন তা আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা প্রকৌশলী ও হাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মো. ফেরদৌস আলম বলেন, ওই চার প্রকল্পের তিনি কোনো প্রাক্কলন তৈরি করেননি। এ ছাড়া কীভাবে ইউএনও টাকা উত্তোলন করেছেন তাও তিনি জানেন না।

বর্তমান শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদিপ্ত কুমার সিংহ বলেন, আমি এ উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি চেয়ারম্যানদের কাছে খোঁজখবর নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শরণখোলার সাবেক ইউএনও ও বর্তমানে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় ইউএনও হিসেবে কর্মরত মো. জাহিদুল ইসলাম দাবি করে বলেন, চেয়ারম্যানদেরসহ কমিটির সবাইকে নিয়ে প্রকল্প অনুমোদন করে আরএফটির (রিকোয়েস্ট ফর টেন্ডার) মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে ঠিকাদার কাজ না করলে সেটা আমার দেখার বিষয় না। এ ছাড়া রেজুলেশনে একটু ভুল হওয়ায় দ্বিতীয় রেজুলেশনটি তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ‘ইকেবানা’ উপহার পাঠিয়েছেন ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত জাপানি নাগরিক হিরোশি তানাকার মেয়ে আতসুকো তানাকা।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এই উপহার গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এই উপহার এবং আতসুকো তানাকার একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌঁছে দেন।

উপহারের ফুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রশান্তি নিয়ে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, সভায় ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা যুগোপযোগী করে নীতিমালা তৈরি করা, ২০১২ সালের শুদ্ধাচার নীতিমালা সংশোধনসহ আপডেট করার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ সচিব সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আজ। সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

 
সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ বিষয়ে আজকের সচিব সভায় কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন মাহবুব হোসেন। যদিও সভাটি এ কারণেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য এটি বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সচিব সভা। ১১ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর প্রথম সচিব সভাটি হয়েছিল ৫ ফেব্রুয়ারি। ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। তবে আজকের সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাবিনেট সচিব মাহবুব হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই আজকের সভাটি অনুষ্ঠিত হলো।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।