বাংলাদেশ

ছাদ কৃষির প্রদর্শনীর আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। রাজধানীর গুলশান নগর ভবনে রিবেটযোগ্য ছাদবাগানকারী বা বৃক্ষরোপণকারীদের যোগ্যতা ও বাছাই পদ্ধতি নির্ধারণ এবং মশকবাহিত রোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে নীতিমালা প্রণয়নবিষয়ক এক সভায় এ ঘোষণা দেন তিনি।

মেয়র আতিকুল বলেন, ঢাকায় বাগান বা কৃষির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। ছাদই কৃষির জন্য একটি বড় ক্ষেত্র হতে পারে। কোনো ছাদে বাগান বা কৃষি থাকলে সেই ছাদে উঠতে ভালো লাগে। এর মাধ্যমে তাজা ফলমূল ও শাকসবজি পাওয়া যায়। এটি বিল্ডিংয়ের তাপমাত্রা কমাতেও সহায়তা করে। ছাদ কৃষি পরিবেশ রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও ভ‚মিকা রাখে। নভেম্বরে প্রদর্শনীর আয়োজন করার জন্য ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ছাদবাগান করলে ১০ শতাংশ কর ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমাদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় সব সিটি করপোরেশনের জন্য পরিকল্পিত ছাদবাগানের ওপর কর ছারের অনুমোদন দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। রিবেটযোগ্য ছাদবাগানকারী বা বৃক্ষরোপণকারীদের যোগ্যতা ও বাছাই পদ্ধতি নির্ধারণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন হলে হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড় পাবেন নগরবাসী।

চ্যানেল আই’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ সভায় অংশ নিয়ে বলেন, আমার আহবান থাকবে সিটি করপোরেশন যেন পরে ছাদ কৃষি নিয়ে এলাকাভিত্তিক প্রদর্শনী করার উদ্যোগ নেয়।

সভায় আরও অংশ নেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক কেজেএম আব্দুল আউয়াল, ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল­াহ আল বাকী প্রমুখ।

বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার রিয়াদে অনুষ্ঠিত এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের নেতৃত্বে দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ গুরুত্বারোপ করেন। 

এ বৈঠকে বাংলাদেশে বিশেষত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এবং দেশের অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সৌদি বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মু. নজরুল ইসলাম, মহাপরিচালক (পশ্চিম এশিয়া) মো. শফিকুর রহমান ও মহাপরিচালক (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর) মো. আরিফ নাজমুল হাসান এবং সৌদি কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদকে (জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল-জেবিসি) দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে তাদের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। সৌদি আরব থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তির বিষয়েও তারা আলোচনা করেন।

সৌদি আরবে ৩০ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সৌদি আরবে বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিতে আরও স্বচ্ছতা আনা এবং স্বার্থান্বেষী মহলের শ্রমিক হয়রানি বন্ধে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সৌদি আরবে ব্যবসারত বাংলাদেশি প্রবাসীদের রেজিস্ট্রেশনের বিশেষ সুযোগ প্রদানের অনুরোধ জানান।

পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা চাইলে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকে গাজায় ইসরাইলের বর্বরতা নিরসনকল্পে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের ওপরও তারা গুরুত্বারোপ করেন। 

দেড় ঘণ্টাব্যাপী হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকে সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ বিন সালমানের আসন্ন বাংলাদেশ সফরের বিষয়েও আলোচনা হয়। পাশাপাশি তারা আগামী বছর সৌদি-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনে যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ কমিশনের বৈঠককে মন্ত্রী পর্যায়ে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেন।

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালকে বগুড়ায় বদলি করা হয়েছে।

রোববার এই বিষয়ে আদেশ জারি করে এনবিআর। বগুড়া কর অঞ্চলের পরিদর্শী রেঞ্জ-১ হবে তার নতুন কর্মস্থল।

এনবিআরের আদেশে বদলির কারণ বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে ‘জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে’। 

একই আদেশে বগুড়া কর অঞ্চলের পরিদর্শী রেঞ্জ-১–এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানকে এনবিআরের প্রথম সচিব (কর) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

এদিকে সোমবার সকালে আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে গিয়ে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালকে তার কক্ষে পাওয়া যায়নি। তার সহকর্মীরা জানান, তিনি অফিসে আসেননি। 

গত বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিবরণ তুলে ধরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফয়সাল ও তার স্ত্রীর নামে থাকা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে ৫ কাঠার দুটি প্লট, শ্বশুরের নামে থাকা ঢাকার রমনা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট, খিলগাঁওয়ে শাশুড়ির নামে ১০ কাঠা প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।

এ ছাড়া ফয়সাল ও তার আত্মীয়-স্বজনের নামে থাকা ১৯টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৮৭টি হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

আদালতের আদেশে বলা হয়, এই জব্দের আদেশ কার্যকর থাকা অবস্থায় এসব সম্পদ হস্তান্তর বা বিনিময় করা যাবে না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে গ্র্যাজুয়েট বেকারদের সবচেয়ে বড় কারখানা! তবে এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন শিল্প–কারখানা মালিকদের প্রতি। 

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘স্মার্ট অর্থনীতি বিনির্মাণে স্মার্ট শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বক্তব্য দিলে সভাস্থল শান্ত হয়। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এটুআই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এই প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক উজ্জ্বল অনু চৌধুরী এবং এটুআই–এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী সম্পাদিত ‘ব্লেন্ডেড লার্নিং ইন স্মার্ট এডুকেশন: পার্সপেক্টিভ ফ্রম সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। 

সভা সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গটি তোলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজেস লিমিটেডের হেড অব এইচআর মো. আমিনুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়ছে। ভালো শিক্ষকেরাই পড়ান। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির এক্সপোজার হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো চাকরিপ্রার্থীদের ডেকে ডেকে আনতে পারব না। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গেস্ট লেকচারার নামে একটি পোস্ট ক্রিয়েট করা যায় কিনা। ক্যারিয়ার ম্যানেজমেন্ট নামে কোর্সও থাকতে পারে। এগুলো শিক্ষকেরা পড়াবেন না, ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টরা পড়াবেন। এটা করতে পারলে হয়তো ভালো কিছু হবে। এতে শিক্ষার্থীরা হয়তো বুঝবে ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা আসলে কী।’

এটুআই–এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে গ্র্যাজুয়েট বেকারদের সবচেয়ে বড় কারখানা। এখানে যেহেতু ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়ে, সংখ্যাটি বিশাল। সে কারণে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হবে।’

এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, ‘তরুণদের স্কিলড (দক্ষ) করতে হলে আগে যারা তাদের হ্যান্ডেল করছি, তাদের স্কিলে মনোযোগ দিতে হবে। আমি বলি না যে ৩৫ লাখকে আমি তৈরি করতে পারব। এর মধ্য থেকে হয়তো ৫ লাখকে একরকম নতুন ধাপে নিতে পারব। দশ বছরের মধ্যে একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রির কথা বলা হচ্ছে। আমি যদি অন্যভাবে বলি, কেন বেতন শুরু হবে ২০ হাজার ৩০ হাজার টাকা দিয়ে? বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে আসা ছেলেকেও ৩০ হাজার টাকা অফার করবেন! কিন্তু ১০ বছরে ইন্ডাস্ট্রির মালিক কত টাকার মালিক হয়েছেন! কোনো ইন্ডাস্ট্রির মালিক নেই, যার সম্পদ ১ হাজার কোটি টাকার কম। একদিকে ব্যাংক খাবেন, ইন্ডাস্ট্রি খাবেন, কিন্তু বেতন দেবেন ২০ হাজার! এত কম বেতন দিয়ে কোন স্কিলড লোকটা রাখবেন? কিন্তু যারা করছে, তারা মডেল, এটাই বাস্তবতা।’ 

তাঁর কথার পরিপ্রেক্ষিতে সভায় কিছুটা বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। অনেককেই বলতে শোনা যায়, এই ফোরামে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা সমীচীন নয়। 

এরপর শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘মনে হচ্ছে, উপাচার্য এটি পারসোনালি নিয়েছেন। এটি করা যাবে না। উপাচার্যের এটা মনে করার কোনো কারণ নেই যে, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আমরা তাঁকে আক্রমণ করছি। আমাদের বক্তব্য হলো, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট কোর্সের কথা বলেছেন। এগুলো তো আমরা সবাই বলি। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি এগুলো বলছে না। লেবার মার্কেট প্রাইস অনুযায়ী ইন্ডাস্ট্রি বেতন নির্ধারণ করে বলেই আমরা জানি।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মার্কিং (নম্বর পদ্ধতি) নর্থ আমেরিকান করেছি অর্থাৎ জিপিএ। কিন্তু টিচিং–লার্নিং সেটি নয়। সে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটদের যে স্কিল থাকা দরকার সেখানে ঘাটতি থাকছে। এরপর বিশাল অংশ রয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো। সেখানে ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী। আসলেই আমরা যা পড়াচ্ছি, সেটির প্রয়োজনীয়তা আসলে কী, তা নিরূপণ করতে পারছি না।’

প্যানেল আলোচনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন) অধ্যাপক ড. এ কিউ এম শফিউল আজম ‘স্মার্ট অর্থনীতির জন্য শিক্ষা’ বিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই–এর সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিডিজবস–এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ফাহিম মাশরুরসহ সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, একাডেমিয়া ও শিল্পের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিত্তবানদের ‘করভার লাঘবে’ আয়কর হার কমিয়ে অর্থবিল পাশ হচ্ছে আজ। কর ‘ন্যায্যতা নিশ্চিত’ করতে সম্পদশালীদের কোম্পানির কাজে ব্যবহৃত গাড়ির পরিবেশ সারচার্জ মওকুফ করা হচ্ছে। এছাড়া রিটার্নে আগের বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি আয় দেখানো হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ট্যাক্স ফাইল অডিটে ফেলবে না। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় পেনশন বাবদ আয়কে করের আওতার বাইরে রাখার বিধান যুক্ত করা হচ্ছে আয়কর আইনে।

তথ্যমতে, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। এরপর ৩ বছর এ করহার অব্যাহত ছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করহার বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বার্ষিক ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় থাকলে এ হার প্রযোজ্য। কিন্তু প্রভাবশালীদের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে এনবিআর। এক্ষেত্রে এনবিআর-এর যুক্তি হলো-‘করভার লাঘবে’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিত্তবানদের গাড়িতেও করছাড় দেওয়া হচ্ছে। সমাজের বিত্তবানরা সাধারণত নিজ নামে গাড়ি কেনেন না। তারা কোম্পানির নামে কেনা গাড়ি ব্যবহার করেন। কোম্পানির নামে কেনা গাড়ির সারচার্জ মওকুফ করে তাদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পক্ষান্তরে অনেক মধ্যবিত্ত একাধিক গাড়ি নিজ নামে কিনে রেন্ট-এ-কার বা উবার-পাঠাওয়ে ভাড়ায় চালান। তারা এ সুবিধা পাবেন না। তাদের পরিবেশ সারচার্জ দিতে হবে। সরকারি গাড়ির পরিবেশ সারচার্জও বাতিল করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৭ মে এনবিআর একই মালিকানাধীন একাধিক গাড়ি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় গাড়ির অগ্রিম কর নিয়মিত আয়করের অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ ধার্য করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরে সেটি পুরোনো আয়কর অধ্যাদেশে এবং সর্বশেষ নতুন আয়কর আইনে পরিবেশ সারচার্জ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

অডিটে ছাড় : হয়রানি কমিয়ে আনতে অডিটের শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। এজন্য অর্থবিলের মাধ্যমে আয়কর আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী। নতুন নিয়মে আগের বছরের চেয়ে রিটার্নে ১৫ শতাংশ আয় বেশি দেখালে ট্যাক্স ফাইল অডিটে ফেলা হবে না। সংশোধিত রিটার্নের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য থাকবে। শুধু ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা এ সুযোগ পাবেন।

আগের নিয়মেই হেবা দলিল : প্রস্তাবিত বাজেটে স্থাবর সম্পত্তি যেমন জমি-প্লট-ফ্ল্যাট দান বা হেবা দলিলের ওপর উৎসে কর আরোপ করা হয়েছিল বিধায় সাধারণ বেচাকেনার মতো হেবা দলিলে সম্পত্তি হস্তান্তরের সময় এলাকা, জমির শ্রেণি অনুযায়ী হস্তন্তরকারীকে নির্দিষ্ট হারে আয়কর দিতে হতো। সমালোচনার মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। অর্থাৎ আগের নিয়মেই উৎসে কর পরিশোধ ছাড়াই আপন ভাই-বোন, পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে, স্বামী-স্ত্রী, দাদা-দাদি, নানা-নানি ও নাতি-নাতনির সম্পর্কের মধ্যে সম্পত্তি হস্তান্তরে হেবা দলিল করা যাবে। বর্তমানে হেবা দলিলে ২ হাজার ৫১০ টাকা কর দিতে হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-রেজিস্ট্রেশন ফি ১০০, স্ট্যাম্প শুল্ক ১০০০, হলফনামা স্ট্যাম্প ৩০০, কোর্ট ফি ১০ টাকা প্রভৃতি।

ট্রাস্ট-তহবিলের মূলধনি আয়ে কর : কোম্পানির মতো তহবিল ও ট্রাস্টের মূলধনি আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স বসানো হচ্ছে। আর শেয়ারবাজারে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাপিটাল গেইন করমুক্ত থাকছে। তবে মূলধনি আয় ৫০ লাখ টাকা অতিক্রম করলে গেইন ট্যাক্স দিতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের কাছ থেকে দুই পদ্ধতিতে গেইন ট্যাক্স আদায় করা হবে। প্রথমত, শেয়ার কেনার ৫ বছরের মধ্যে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করলে ব্যক্তি করদাতার স্ল্যাব অনুযায়ী ট্যাক্স দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তি শেয়ার কিনে ৬ মাস বা এক বছর পর বিক্রি করে ৫১ লাখ টাকা মুনাফা করল, এক্ষেত্রে ৫০ লাখ টাকা করমুক্ত থাকবে। তাকে এক লাখ টাকার ওপর গেইন ট্যাক্স দিতে হবে। এই এক লাখ টাকা করদাতার মোট আয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে এবং করদাতাকে স্ল্যাব অনুযায়ী আয়কর পরিশোধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ওই ব্যক্তি শেয়ার কিনে ৫ বছর পর একই মুনাফা করলে তার করের হিসাব হবে ভিন্ন। এক্ষেত্রেও তার ৫০ লাখ টাকা করমুক্ত থাকবে। বাকি ১ লাখ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ১৫ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে।

অর্থনৈতিক অঞ্চল কর অবকাশ বহাল : ২৯ মে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এনবিআর বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের কর অবকাশসহ ৮টি কর সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়। ১০ বছর মেয়াদি কর অবকাশ সুবিধা তুলে নেওয়ার ফলে শিল্পভেদে কোম্পানিগুলোর আয়ের ওপর করহার ২০-২৭.৫ শতাংশ বা এরও বেশি প্রযোজ্য হওয়ার কথা। এছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় কারিগরি সহায়তাকারী হিসাবে কর্মরত বিদেশিদের প্রথম তিন বছরের বেতনের ওপর ৫০ শতাংশ আয়কর ছাড় পেত। সেটিও বাতিল করা হয়। এসব অঞ্চলে স্থাপিত কোম্পানির ১০ বছরের জন্য লভ্যাংশ, মূলধনি আয়, রয়্যালটি, টেকনিক্যাল নো-হাউ এবং কারিগরি সহায়তা ফির ওপরও ১০ বছরের কর অব্যাহতি ছিল, এগুলোও বাতিল করা হয়। দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের চাপে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কর অবকাশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থাৎ বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীরা আগের মতোই কর অবকাশ সুবিধা পাবে।

কালোটাকায় ট্যাক্স অ্যামনেস্টি থাকছে : নানা মহলের সমালোচনার পরও কালোটাকা সাদা করার ট্যাক্স অ্যামনেস্টি বা বিশেষ সুবিধা বহাল রাখা হচ্ছে। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা এবং বর্গমিটারপ্রতি নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে প্লট-ফ্ল্যাট রিটার্নে প্রদর্শনের সুযোগ থাকছে।

প্রসঙ্গত, প্রতিবছর বাজেটে অর্থ আইনের মাধ্যমে সরকার আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস আইনে পরিবর্তন এনে থাকে। ২০২৪ সালের অর্থ আইন জাতীয় সংসদে পাশ হবে আজ।

ছাগলকাণ্ডে ছেলে ভাইরালের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমানের একাধিক বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট ও প্লটের তথ্য বেরিয়ে আসছে। গাজীপুর, নরসিংদী ও ময়মনসিংহে খোঁজ মিলেছে তার একাধিক রিসোর্ট ও ফ্যাক্টরির। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আছে শতকোটি টাকা। তার অবৈধ সম্পদের খোঁজে নেমেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী ছিলেন কলেজ শিক্ষক। বর্তমানে তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলী গৃহিণী। প্রথম পক্ষের মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা ঢাকার নামি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শেষে কানাডা প্রবাসী। ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্নব যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করেছেন। দেশে ফিরে বিয়ে করেছেন চট্টগ্রামের এক ঋণখেলাপি শিল্পপতির মেয়ে। দ্বিতীয় ঘরের মেয়ে ইফতিমা রহমান মাধবী বারডেম মেডিকেল কলেজে পড়ছেন। আর ছাগলকাণ্ডের জন্ম দেওয়া ছেলে মুশফিকুর রহমান নটর ডেম কলেজের ছাত্র। 

ছোট ছেলে ইরফানের বয়স সাত বছর। এছাড়া মতিউরের এক ভাই নূরুল হুদা ছিলেন বেকার, বখাটে। আরেক ভাই কাইয়ুম হাওলাদার গার্মেন্টে চাকরি করতেন। বাবা আব্দুল হাকিম ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাদের মধ্যে আব্দুল হাকিম, লাকী ও কাইয়ুমের নামমাত্র আয় থাকলেও অন্য সবার ব্যয়ের উৎস ছিল মতিউরের বেতনের অর্থ।

অত্যন্ত সাধারণ পারিবারিক পরিচয়ের এ ব্যক্তিরাই এখন শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক। তাদের নামে বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি, ফ্ল্যাট, পার্ক, রিসোর্ট, শিল্পকারখানা-কী নেই। কারও নামে পুঁজিবাজারে আছে বিপুল বিনিয়োগ। অভিযোগ আছে, অতি ধূর্ত মতিউর নিজের অবৈধ আয় আড়াল করতে কাগজে-কলমে পরিবারের সবাইকে সম্পদশালী করে দিয়েছেন। নিজের নামে রেখেছেন সামান্য কিছু। যাতে আইনের ফাঁকফোকরে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে পারেন।

আয়কর ফাইলের তথ্য বলছে, তিনি মাত্র ২০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এর মধ্যে ১৩ কোটি টাকা আছে নগদ। যদিও আয়কর ফাইলের তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। ফাইলে উল্লিখিত ও বাস্তব সম্পদে দৃশ্যমান ফারাক থাকলেও এর আগে চার দফা তার অবৈধ সম্পদ খুঁজে পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবারই রহস্যজনক কারণে অভিযোগ পরিসমাপ্তি করেছে সংস্থাটি। তবে এবার দুদকের পাশাপাশি মতিউর পরিবারের সম্পদের খোঁজে নেমেছে এনবিআর-এর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল সিআইসি। একাধিক সূত্রে পাওয়া গেছে উল্লিখিত তথ্য।

জানা যায়, ছাগলকাণ্ডের শুরুর দিকে পরিস্থিতি ভিন্নখাতে নিতে ইফাতকে ছেলে হিসাবে অস্বীকার করে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন মতিউর। সেখানে দাবি করেন, শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা করে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তবে তার সবশেষ আয়কর নথিতে পুঁজিবাজারে মাত্র ৮২ লাখ টাকা বিনিয়োগের তথ্য উল্লেখ করেছেন। হাতে নগদ আছে ১২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এছাড়া ৫০ লাখ টাকার এফডিআর, ৩ কোটি টাকার অকৃষি সম্পত্তি এবং একটি মৎস্য খামারকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া আছে তার। আয়কর নথিতে তার আর কোনো সম্পত্তির কথা উল্লেখ নেই। আয়কর ফাইলের তথ্য নেওয়ার সময় এক কর্মকর্তা হাসির ছলে বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের তুলনায় স্যার অত্যন্ত গরিব।’

সরেজমিন অনুসন্ধানে মতিউরের সম্পদের ভিন্নচিত্র পাওয়া গেছে। তার পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, মতিউর, দুই স্ত্রী ও দুই পক্ষের দুই সন্তান মিলে অন্তত এক ডজন বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ৩/৪ কোটি টাকা দামের গাড়িও আছে। অথচ মতিউর ও তার স্ত্রী-সন্তানের আয়কর ফাইলে কোনো গাড়ির তথ্য নেই। জানা যায়, এ গাড়িগুলো ব্যক্তি নামে না করে স্ত্রী, ভাই ও মেয়ের মালিকানায় যেসব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, সেসব কোম্পানির নামে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। 

‘ভারতের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক না থাকলে বাংলাদেশের ‘খবর’ ছিল। এই কানেক্টিভিটি আওয়ামী লীগের অর্জন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছে।’

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (ইআরডিএফবি) আয়োজিত ‘আওয়ামী লীগের সফল ও গৌরবময় পথচলার ৭৫ বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন।

আব্দুল মোমেন বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব না থাকলে টেকসই উন্নয়ন ধরে রাখা যাবে না। এ অঞ্চলে বাংলাদেশ প্রক্সি যুদ্ধ চায় না। অনেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তবে বাস্তবতা হলো ভারতের সঙ্গে কানেক্টিভিটি আওয়ামী লীগের অর্জন। এ সম্পর্কের জন্য বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সফল এবং গৌরবময় এই ৭৫ বছরের ইতিহাসে ৪৩ বছর নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের প্রত্যাশাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছেন। তার জাদুকরি নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের তালিকায় নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে জায়গা করে নিয়েছে আরও আগেই।

মোমেন আরও বলেন, বর্তমান অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বড় প্রকল্পগুলোর উদ্যোগ নিয়েছে এই সরকার, বাস্তবায়নও প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান হতে চলেছে। ভাবা যায়, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত এই দেশে আজ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং কর্ণফুলী ট্যানেলসহ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প।

মোমেন বলেন, দুনিয়া নিয়ে ভাবার সময় আমাদের এখন এসেছে। আমরা তাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই। এজন্যই আমাদের প্রয়োজন আছে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আলম খান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া এবং রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার প্রমুখ। 

সভায় মূল আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক।

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর সেতু ভবনে এ সাক্ষাতে নতুন সরকারের গত ছয় মাসের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচি ও অগ্রাধিকার বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়। 

বৈঠককালে উভয়পক্ষ যে কোনো দেশে টেকসই গণতন্ত্র বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একমাত্র রাজনৈতিক দল, যেটি সব ক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের চর্চা করে এবং অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের প্রতিটি স্তরে দেশের সংবিধান, দলের গঠনতন্ত্র ও নির্বাচন কমিশনের বিধিবিধান অনুসরণ করে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের এই ধরনের গণতান্ত্রিক চর্চার নজির নেই। 

এদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকারের নীতিগত অবস্থানে সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এমপি ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা অসম্ভব। তাকে মুক্ত করার একমাত্র পথ হলো আইনি লড়াই। যে পথে বিএনপি হাঁটে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর একাডেমি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

কামরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায় হয়েছে কত সালে, কিন্তু এখনো তারা (বিএনপি) আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারে নাই। এটা হচ্ছে তাদের একটা ভেলকিবাজি, মিথ্যা, ধোঁকা। তারা খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রেখে তারেক রহমানকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা কর‍তে চায়। খালেদা জিয়াকে তারা মুক্ত করতে চায় না। তার মুক্তি সম্ভব একমাত্র আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে। কিন্তু তারা (বিএনপি) আদালতে যায় না।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা সমাবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকে তিনি (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় বাসায় বসবাস করছেন মুক্ত মানুষ হিসেবে। চিকিৎসা পাচ্ছেন, নেতাকর্মীরা দেখা করতে পারছেন। সবই করতে পারছেন। কিন্তু তারা (বিএনপি) খালেদা জিয়াকে আবার মুক্ত মানুষ হিসেবে রাজনীতিতে আনতে কোনো আইনি লড়াই করে না, করার মতো কোনো মানসিকতাও তাদের নাই। কারণ তারা চায়, তারেককে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করতে। এ কারণেই তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না। এখনো তারা বলে যে আন্দোলন করবে। আন্দোলন করে তারা কী করবে? কোনো লাভ নাই। আইনি লড়াই ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি কোনো অবস্থাতেই সম্ভব না।

কামরুল বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে ক্ষমতায় যাব- এমন নিশ্চয়তা পেলে নির্বাচনে যাব আর এই নিশ্চয়তা না পেলে নির্বাচনে যাব না, এটা কোনো গণতান্ত্রিক দলের চরিত্র হতে পারে না। বিএনপির সেই চরিত্র, তাই তারা নির্বাচনে আসে না। বারবার নির্বাচনে আসে না আর আমাদের অপবাদ দেয়। কিন্তু আমরাতো চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। সংসদে শক্তিশালী অপজিশন গঠন করুক কিংবা সরকার গঠন করুক, নির্বাচনের মাধ্যমে যাই হোক হবে। এটাইতো নিয়ম; কিন্তু তারা আসে না। তারা আন্দোলন করে।তারা আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও করে। এটা কোনো আন্দোলন হতে পারে না। আমরাও তো আন্দোলন করেছি। কিন্তু তাদের মতো জ্বালাও-পোড়াও করিনি।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অনেকে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা গুজব রটাচ্ছে। বলছে যে, আমাদের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু এখনো ভালো আছে। আমরা ভালো আছি। করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পরও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের স্মৃতিচারণ করে কামরুল ইসলাম বলেন, নাসিম একজন বড়মাপের নেতা। কিন্তু কর্মীদের সঙ্গে তার ভাবসাবে সেটা বোঝা যায়নি। তিনি একজন কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন। তিনি ১৪ দলকে সক্রিয় করে তুলেছেন। ১/১১ এর সময় তাকে আটক করা হয়েছিল। তাকে অনেক নির্যাতনও করা হয়েছিল, কিন্তু নেত্রীর বিপক্ষে একটা কথাও বের করতে পারেনি।

বঙ্গবন্ধু একাডেমির সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম প্রমুখ।

বাংলাদেশের উপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় শুক্রবার ঢাকাসহ ৫ বিভাগের কয়েকটি এলাকায় অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ সময় পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অফিসের ভারি বর্ষণের সতর্কবাণীতে এ তথ্য জানানো হয়।  

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট, ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আগামীকাল (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। 
 
এ সময় ভারি বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবন জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

অপর এক বার্তায় আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলেরও ওপর দিয়ে ঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।