রাজনীতি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন বাতিল চেয়ে নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও মেয়র প্রার্থী ডা.শাহাদাত হোসেনের দায়ের করা মামলায় তাকে মেয়র ঘোষণা করেছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত এ রায় দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চসিক নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও ফল বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। রায়ে সদ্য অপসারিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে অবৈধ ঘোষনা করা হয়েছে। রায়ের সময় আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে মেয়র নির্বাচিত করা হয়। এতে রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান।

ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি চসিকের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে চট্টগ্রাম প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিনের আদালতে নয়জনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা করেন ডা. শাহাদাত।

মামলার নয়জন বিবাদী হলেন— আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তা, সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, মেয়র প্রার্থী আবুল মনসুর, এম এ মতিন, খোকন চৌধুরী, ওয়াহিদ মুরাদ ও জান্নাতুল ইসলাম।

এদিকে গত ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিমকে অপসারণ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। পরে চসিকে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চালানোর জন্য বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামকে প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

হারুন অর রশীদ: গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত নিটারের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত যৌক্তিক দাবি গুলো মেনে নেওয়া হয়নি। প্রায় ১ মাস ধরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কার্যালয়ের দ্বারে দ্বারে গিয়েও দৃশ্যমান কোনো সমাধান হয়নি মনকি এখন পর্যন্ত নিটারের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়নি।

উল্লেখ্য, গত ৪ তারিখে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, ১০ তারিখে বিটিএমএ কার্যালয় এবং ১৫ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি অনুষদের ডিন কার্যালয়ে নিটারের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমাধানের উদ্দেশ্যে উপস্থিত হলেও কার্যকরী কোনো সমাধান  আসেনি।  গত  ২৫ তারিখ জিবি মিটিং এর মাধ্যমে সমাধানের কথা বলে আশ্বস্ত করা হলেও ২৩ তারিখ হোস্টেল বন্ধের একটি নোটিশ ধরিয়ে দিয়ে  সাধারণ শিক্ষার্থীদের  বিভ্রান্ত করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন অপশক্তি ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর দোষ চাপিয়ে, জোরপূর্বক অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি র অপকৌশল নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যার প্রেক্ষিতে গত ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ শিক্ষার্থীরা দৃশ্যমান সমাধানের লক্ষ্যে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এরপরেও কোনো সমাধানের সাড়া না পাওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্যাম্পাসের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে এবং এরই প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিটিএমএ কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন পালন করছে।

শোষণ মুক্ত শিক্ষার পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছে। ১. দুর্নীতিকে প্রশ্রয়, ক্ষমতার কেন্দ্রীভূতকরণ ও শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলার নেতৃত্ব দেওয়ায় বর্তমান ডিরেক্টর এর পরিবর্তে নতুন ডিরেক্টর নিয়োগ প্রদানের ব্যবস্থা করা। উল্লেখ্য, নতুন ডিরেক্টর নিয়োগের পর্যায়কালীন সময়ে ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা নেওয়া। 
২.অভিযুক্ত ১৪ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদত্যাগ, ড. মিজানুর রহমানকে নির্দোষ প্রমাণে গঠিত ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সবাইকে নিটার থেকে বাদ দিতে হবে। এছাড়া  হোস্টেল খুলে দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করাও নিটার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা।

বাগেরহাট (মোড়েলগঞ্জ) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে বিএনপির কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার বহরবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এ অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট জেলা বিএনপি নেতা কাজী খায়রুজ্জামান শিপন, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর রহমান আলম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম ঘোড়া, জেলা বিএনপির সদস্য শেখ আব্দুল হালিম খোকন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুল হক বাবুল, সদস্য সচিব সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাব্বার মোল্লা।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মোড়লগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক শিকদার ফরিদুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপি'র যুগ্ন আহবায়ক মাওলানা আব্দুল খালেক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মতিউর রহমান বাচ্চু, পৌর বিএনপির সিনিয়ার যুগ্ন আহবায়ক ফারুক হোসেন সামাদ, উপজেলা যুগ্ন আহবায়ক সাবিনা ইয়াসমিন টুলু, উপজেলা যুগ্ন আহবায়ক ফকির রাসেল আল ইসলাম, পৌর বিএনপি'র যুগ্ন আহবায়ক আসাদুজ্জামান মিলন, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি শাহিনা ফেরদৌসের, পৌর মহিলা দলের সভাপতি মুক্ত খানম মাহমুদা, বাগেরহাট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও মোড়লগঞ্জ পৌর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, যুবদল নেতা আলিম খলিফা, ছাত্রদল নেতা নিয়ামুল ইসলাম সিয়াম। কর্মীসভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোঃ আলী আশরাফ ফকির।

আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা মামলায় এ আবেদন করেন তিনি। তার অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।

তবে জামিন মেলেনি দীর্ঘ ছয় বছর পরে দেশে ফিরে আসা এই সম্পাদকের। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার পর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তবে, মাহমুদুর রহমান জামিন আবেদন করেননি জানিয়ে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আত্মসমর্পণ করে তিনি কারাগারে গিয়েছেন। আপিল করা হবে, আশা করি দ্রুতসময়ে তিনি মুক্ত হবেন। বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের জন্য তাকে প্রহসনের মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।

এর আগে পলাতক দেখিয়ে মাহমুদুর রহমানের অনুপস্থিতিতে এ মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার পর গত শুক্রবার দেশে ফেরেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত এই সম্পাদক।

এদিকে মাহমুদুর রহমানের আত্মসমর্পণকে ঘিরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আদালতের প্রধান গেটের বাইরে রয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া আদালত ভবনের বাইরেও সর্তকতায় রয়েছেন সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ  বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকদের যোগ্যতা ও ন্যায্যতার আলোকে ১০ম গ্রেডের দাবীতে সহকারী শিক্ষকদের পক্ষে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সহকারী শিক্ষক নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন করেছে।

শনিবার সকাল ১০ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় উপস্থিত হয়ে স্মারকলিপি পেশ করেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম তারেক সুলতানের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় উপদেষ্টা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর এই স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

এসময় বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত সহকারী শিক্ষক ও নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.মশিউল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক মো.রফিকুল ইসলাম, মো.বদিউজ্জামাল বাদল, উৎপল হালদার, অমিত কুমার মন্ডল, সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মশিউল ইসলাম, রিয়াজ রহমান, সাইফুল ইসলাম, সুমন আকন, হুমায়ুন কবির, কাইউম হোসেন, শারমিন আকতার, সুজন, আমেনা আকতার বিথী, সুমন পাইক, রায়হান মোস্তাকিম, ইব্রাহিম খান, আবু সুফিয়ান, আব্দুর রহিম, জাহাঙ্গীর খান, রেহেনা রিয়া, মাসুম জাকারিয়া, ওবায়দুল করিম প্রমূখ।

উপস্হিত শিক্ষক নেতাদের পক্ষে বক্তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ১ দফা ঘোষণার পর ছাত্র জনতা তীব্র আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন ছাত্র জনতার তাজা রক্তের বিনিময়ে, বৈষম্য বিহীন রাষ্ট্র বিনির্মানে, বাক স্বাধীনতা ফেরার নতুন সূর্যোদয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি বৈষম্য বিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে যেসব বুক পেতে দেওয়া আত্মদানকারী বীর শহিদ ছাত্রদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করা হয়। আমরা বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈষম্যহীন সমতার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সারথী হিসেবে আমরা প্রাথমিক শিক্ষকরা সমতার স্মার্ট নাগরিক গড়ার প্রধান নিরাময় হিসেবে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।

রাজনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাগরণ ব্যতীত শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাফল্য অর্জন সম্ভব
নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় বাংলায় ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তার বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই আজ আমি বিশ্বসম্প্রদায়ের এ মহান সংসদে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাদের গণমানুষের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের, অফুরান শক্তি আমাদের বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজের আন্দোলন প্রথমদিকে মূলত ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে তা গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এরপর সারাপৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখেছে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ একনায়কতন্ত্র, নিপীড়ন, বৈষম্য, অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজপথ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল।

আমাদের ছাত্রজনতা তাদের অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছে। তাদের এই সম্মিলিত সংকল্পের মধ্যেই আমাদের দেশের ভবিষ্যত নিহিত, যা এ দেশটিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাঝে একটি দায়িত্বশীল জাতির মর্যাদায় উন্নীত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এই গণআন্দোলন রাজনৈতিক অধিকার ও উন্নয়নের সুবিধা বঞ্চিত বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্ব চেয়েছিল। আমাদের জনগণ একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যার জন্য আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন উৎসর্গ করেছিল। আমাদের এই তরুণরা যে প্রজ্ঞা, সাহস ও প্রত্যয় দেখিয়েছে তা আমাদের অভিভূত করেছে।

বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করেও বুক পেতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল আমাদের এই তরুণরা। অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রবলভাবে সোচ্চার হয়েছিল আমাদের তরুণীরা। স্কুলপড়ুয়া কিশোর-কিশোরীরা নিঃশঙ্কচিত্তে উৎসর্গ করেছিল তাদের জীবন। শত শত মানুষ চিরতরে হারিয়েছে তাঁদের দৃষ্টিশক্তি। আমাদের মায়েরা, দিনমজুরেরা ও শহরের অগণিত মানুষ তাদের সন্তানদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছিল রাজপথে।

তপ্ত রোদ, বৃষ্টি, মৃত্যুভয়কে তোয়াক্কা না করে তারা সত্য ও ন্যায়সঙ্গত আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল ব্যাপী রাষ্ট্রযন্ত্রকে পরিচালনা করার অশুভ ষড়যন্ত্রকে পরাভূত করেছিল। জনগণের এই আন্দোলনে আমাদের জানা মতে, প্রায় আটশতেরও বেশি জীবন আমরা হারিয়েছি স্বৈরাচারী শক্তির হাতে।

উদারনীতি, বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর মানুষের গভীর বিশ্বাস থেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। ১৯৭১ সালে যে মূল্যবোধকে বুকে ধারণ করে আমাদের গণমানুষ যুদ্ধ করেছিল, সেই মূল্যবোধকে বহু বছর পরে আমাদের জেনারেশন জি নতুনভাবে দেখতে শিখিয়েছে। এরকমটি আমরা দেখেছিলাম ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সময়েও।

বাংলাদেশের এই অভ্যুত্থান আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষকে মুক্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে প্রেরণা যুগিয়ে যাবে। আমাদের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে আমি তাই বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সাথে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাই।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হাসিনা পালালেও সংকট কাটেনি। মানুষ বিশ্বাস করে, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কোনও রকম তালবাহানা সহ্য করবেন না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না হলে কখনও নিরপেক্ষ অবস্থা তৈরি হবে না।

দলটির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ্‌র স্মরণসভায় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এখনও বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করছে। চক্রান্ত করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্নরকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে আওয়ামী লীগ। সকলকে সজাগ থাকতে হবে। হিন্দুভাইরা এ দেশের নাগরিক। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, যেকোনও ঘটনা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে।

নির্বাচনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, যৌক্তিক সময় মানে অনেক বেশি সময় না। যত দ্রুত নির্বাচন করা যাবে, ততই দেশের মঙ্গল হবে। অতিদ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও রাজপথে আন্দোলন করবো।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারকে পরাজিত করার পর দম ফেলার সুযোগ পেয়েছেন বলে মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। বলেন, এই সুযোগ একদিনে তৈরি হয়নি। তারা গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রশাসন, বিচার, অর্থনৈতিক সবকিছু কুক্ষিগত করেছে। শেখ হাসিনা সরকার ভেবেছিল, সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। অত্যাচর-নিপীড়ন করে ক্ষমতা ধরে রেখে সম্পদের পাহাড় গড়ার পরিকল্পনা ছিল।

যারা একদিন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছিল, তারাই এখন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

রাষ্ট্র সংস্কার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং হালনাগাদ ভোটার তালিকা শেষে কমপক্ষে ১৮ মাস পর দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক্ষেত্রে সব ধরনের সহায়তা দেবে বলেও কথা দিয়েছে বাংলাদেশকে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সকালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

নানা বিষয়ের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে নানা সহযোগিতার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় তাদের মধ্যে। পরে বৈঠকের বিষয়ে বলতে গিয়ে আগামী নির্বাচন ঠিক কতদিন পরে হবে, তার একটি ধারণা দেন প্রদান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসাও করেছেন বলে জানানো হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।