অর্থ - বানিজ্য

টানা চার দফা দাম বাড়ানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমিয়ে সবচেয়ে ভালোমান বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ধাতুর নতুন দর নির্ধারণের কথা জানায় বাজুস। যা আজ বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ বিক্রি হবে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা।

এদিকে, আরেক ধাতু রুপার দাম দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৭১৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবো-এর সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

সোমবার (২১ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

চীনের গভর্নরকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি কেবল শুরু। আমরা এত কাছাকাছি, অথচ এত দূরে। চলুন, এই ব্যবধান ঘুচিয়ে ফেলি। আশা করি আপনি আবারও আমাদের দেশে আসবেন- আমরা শুধু ভালো প্রতিবেশীই নয়, আরও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই।

চীনে তার সাম্প্রতিক সফরের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সফর ছিল দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। তিনি চীনের উষ্ণ আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সহানুভূতিপূর্ণ বক্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

গভর্নর ইউবো আন্তরিকভাবে সাড়া দিয়ে বলেন, আমার এই সফরের লক্ষ্য হলো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা। ইউনান প্রদেশ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য চীনের উন্মুক্ত হাব হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। বৈঠকে উভয় পক্ষ যুব বিনিময়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।

গভর্নর জানান, ইউনান প্রদেশের একটি চীনা ব্যাংক ইতোমধ্যে অধ্যাপক ইউনূস প্রবর্তিত ক্ষুদ্রঋণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। চীনের বহু মানুষ এই পদ্ধতির সুফল ভোগ করছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি দুই দেশের মধ্যে সামাজিক লক্ষ্যগুলোর মিল থাকার কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি পেশাগত প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল ও ভাষা শিক্ষা এবং সামুদ্রিক খাবার, আম ও কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন খাতে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন। বলেন, আমাদের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে এবং আমাদের অঞ্চলগুলোকে আরও কাছাকাছি আনতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা গভর্নরের সব প্রস্তাবে সম্মতি জানান। আপনি যা যা বললেন-স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য ও প্রশিক্ষণ সব কিছুতেই আমরা একমত। আমরা এগুলো আগের চেয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং প্রকৃত বন্ধু হতে চাই।

বৈঠকে স্বাস্থ্য খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চীনের কুনমিং-এ চারটি হাসপাতাল নির্ধারণসহ চিকিৎসা পর্যটন চালু করতে চীনের সহযোগিতা নতুন এক অধ্যায় তৈরি করেছে। এই সহযোগিতা আমাদের অংশীদারত্বের এক নতুন সূচনা।

উভয় পক্ষ শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিময় কার্যক্রম সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বর্তমানে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনে অধ্যয়ন করছেন। এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা আরও বেশি শিক্ষার্থীকে চীনে পাঠাবো এবং চীনা ভাষা শিক্ষায় উৎসাহিত করবো।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী, যাতে দুই দেশ একযোগে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে এবং উন্নতির নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, নতুন তিনটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমছে। তিনি জানিয়েছেন, ফাইবার অ্যাট হোমের ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছেন যে, আইটিসি পর্যায়ে ১০ শতাংশ, আইআইজি পর্যায়ে ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন বা ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য হ্রাস করবেন তারা।

আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে একথা জানান তিনি।

ফেসবুক বার্তায় তিনি বলেন, এরআগে, আইএসপি লাইসেন্স প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঁচ এমবির পরিবর্তে ৫০০ টাকায় ১০ এমবি ইন্টারনেট প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তারও আগে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি সকল আইআইজি এবং আইএসপি গ্রাহকদের জন্য ১০ শতাংশ, এবং পাইকারি গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ শতাংশসহ মোট ২০ শতাংশ দাম কমিয়েছে। এ নিয়ে ইন্টারনেট লাইসেন্স রেজিমের মোট তিন থেকে চারটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শুধুমাত্র মোবাইল সেবাদাতা তিনটি বেসরকারি কোম্পানির দাম কমানোর ঘোষণা বাকি আছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই সরকার মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম এবং ডার্ক ফাইবার সুবিধা প্রদান করেছে। এমতাবস্থায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না।

তিনি আরও বলেন, সরকার এমএনওগুলোকে পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে, এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় স্তর গুলোতে পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দামও কমিয়েছে। এখন তাদের জাতীয় উদ্যোগে শরিক হবার পালা। মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও সামান্য কিছুটা কমে আসবে বলে আশা করি।

আলু ও পেঁয়াজ কমিশন গঠন, উপজেলা ভিত্তিক কাঁচামাল সংরক্ষণাগার স্থাপন, কৃষি প্রণোদনা ও ঋণ বিতরণ সহজ করাসহ ১০ দফা দাবিতে লংমার্চ করেছে কৃষক ঐক্য পরিষদ।

বগুড়া থেকে পঞ্চগড়গামী সাত দিনব্যাপী লংমার্চটি রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে রংপুরে পৌঁছে। এ সময় নগরীর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে ১০ দফা দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হল, আলু ও পেঁয়াজ কমিশন গঠন, উপজেলা ভিত্তিক কাঁচামাল সংরক্ষণাগার ও রপ্তানি কেন্দ্র স্থাপন, ঢাকাসহ সারাদেশে কৃষকের বাজার স্থাপন, কৃষি প্রণোদনা ও কৃষি ঋণ বিতরণ সহজ করা, সিন্ডিকেটমুক্ত করে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, কৃষিজ পণ্য পরিবহণে চাঁদাবাজি টোল প্রথা নির্মূল করে রেলবগি বরাদ্দ করা, খাস ও পতিত জমি বরাদ্দসহ কৃষকদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করা, সরকারিভাবে কৃষিবীমা চালু করা ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কৃষকদের ৫০ ভাগ ছাড়ে চিকিৎসাসেবা প্রদান নিশ্চিত, জাতীয় সংসদসহ অন্যান্য জাতীয় কমিটি ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মাসিক সভায় আনুপাতিকহারে কৃষক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত এবং কৃষি প্রযুক্তি ও অ্যাপস আধুনিকায়ন ও বাস্তবমুখী করা।

কৃষক ঐক্য পরিষদের নেতারা জানান, লংমার্চটি ১৭ এপ্রিল বগুড়া থেকে শুরু হয়েছে। আজ রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও পথসভা শেষে লংমার্চটি লালমনিরহাটে যাবে। এরপর নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও হয়ে ২৩ এপ্রিল পঞ্চগড়ে গিয়ে শেষ হবে। এছাড়াও দাবি আদায়ে আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও জানান নেতারা।

সংগঠনের রংপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কৃষক ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ, মহাসচিব সুলতান আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চারদিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সেখানে তিনি ‘আর্থনা সামিট-২০২৫’- এ অংশগ্রহণ করবেন।

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির আমন্ত্রণে তিনি এ সফরে যাচ্ছেন। দোহায় সামিটে অংশ নেয়ার পাশাপাশি দেশটির আমিরের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে। 

আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল এই দুদিনে সামিটে উপস্থাপনা, ইন্টারঅ্যাকটিভ প্যানেল আলোচনা, কর্মশালা ও গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন ড. ইউনূস।

দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতারে যাচ্ছেন। এই চার ক্রীড়াবিদ হলেন ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।

এছাড়াও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশে রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পে প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপির অর্থায়ন ও নির্মাণ কাজ স্থগিত করেছে ভারত। ‘শ্রমিকদের নিরাপত্তা’ এবং ‘রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার’ কারণ দেখিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে রোববার (২০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম, দ্য হিন্দু।

এতে তিনটি চলমান প্রকল্পের কাজের পাশাপাশি পাঁচটি আলাদা জায়গায় জরিপের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এরমাধ্যমে বাংলাদেশের রেলপথের মাধ্যমে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাদের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে (সেভেন সিস্টার্স) যুক্ত করার পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটেছে।

বাংলাদেশে নিজেদের রেল নেটওয়ার্ক তৈরির বদলে এখন নয়াদিল্লি এই অর্থ দিয়ে উত্তর ভারতের রেলপথ অবকাঠামোকে উন্নত করছে। এছাড়া বাংলাদেশকে এড়িয়ে নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করার ব্যাপারে ভাবছে দেশটি। একটি সূত্র জানিয়েছে, নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ প্রকল্পের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে।

দ্য হিন্দু জানিয়েছে, স্থগিত করা এ প্রকল্পগুলো ভারতের ‘স্থলবেষ্টিত’ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে বাংলাদেশের মাধ্যমে যুক্ত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই প্রকল্পের পরিকল্পনা ছিল সরু শিলিগুঁড়ি করিডরের (চিকেন নেক করিডর) ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমানো। যেটি ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করার একমাত্র পথ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো নির্মাণ বা অন্য উপকরণ আমরা পাঠাচ্ছি না। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সংযোগ রুটের অর্থায়ন বন্ধ আছে। (প্রকল্প পুনরায় শুরু করতে) প্রথমে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারত অংশে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।’

২০২৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের মূল্য ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ভারতের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় ঢাকা নয়াদিল্লির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।

স্থবির হয়েছে যেসব প্রকল্প
ভারতের সহযোগিতায় নির্মাণাধীন তিনটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে আখাউড়া-আগরতলা ক্রস-বর্ডার রেল সংযোগ এবং খুলাবুড়া-শাহবাজপুর রেললাইন, খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং ঢাকা-টঙ্গি-জয়দেবপুর রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প।

আখাউড়া-আগরতলা (ত্রিপুরা) ক্রস-বর্ডার রেল সংযোগ প্রকল্প ভারত সরকারের ৪০০ কোটি রুপি সহায়তায় করা হচ্ছিল। এই রেল সংযোগের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। যার ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইন বাংলাদেশে। আর ত্রিপুরায় ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার। খুলাবুড়া-শাহজাদপুর রেললাইন এই প্রকল্পের অংশ। এটির লক্ষ্য ছিল নতুন রেললাইন নির্মাণ ও পুরোনো লাইনের মাধ্যমে আসামের সঙ্গে সংযোগ উন্নত করা।

অপরদিকে, খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের কাজ চলছিল কনসেশনাল লাইন অব ক্রেডিটের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের খরচ ৩ হাজার ৩০০ কোটি রুপি। এটির মাধ্যমে মোংলা বন্দর ও খুলনার মধ্যে ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রড গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছিল। এরমাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মোংলা বন্দর ব্রডগেজ রেললাইনের আওতায় আসবে। এই বন্দরের একটি টার্মিনাল পরিচালনার অধিকার রয়েছে ভারতের।

অপরদিকে ঢাকা-টঙ্গি-জয়দেবপুর রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ ২০২৭ সালে শেষ হওয়ার কথা আছে। তবে বিলম্বিত এ প্রকল্পের কাজটি গত বছর পর্যন্ত মাত্র ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপির এ প্রকল্পের কাজটি করা হচ্ছে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সহায়তায়। তবে এক্ষেত্রে অর্থ ছাড়ে কিছু ঝামেলা দেখা গেছে বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

আর পাঁচটি আলাদা জায়গায় যে স্থান জরিপের কাজ চলছে সেগুলোর কাজও স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অপর একটি সূত্র।

বিকল্প আঞ্চলিক কৌশল
(পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে) ভারত তার অভ্যন্তরীণ ও বিকল্প আঞ্চলিক কৌশল পরিবর্তন করছে বলে জানিয়েছে দ্য হিন্দু।

এর অংশ হিসেব ভারত সরকার উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে রেললাইন দ্বিগুণ থেকে চারগুণ করার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। এরমাধ্যমে নিজেদের নির্ভরতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেখানে এখন জরিপ কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের এক কর্মকর্তা।

একইসঙ্গে, ভারত ভুটান ও নেপালের মধ্যে রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। যদিও লজিস্টিক্যালি এ রুটগুলো খুবই জটিল হবে। কিন্তু এগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে পারবে ভারত।

উদাহরণ স্বরূপ, ভারত ও নেপালের মধ্যে রেললাইন সংযোগ স্থাপনের আগের যে পরিকল্পনাটি আছে সেটি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। যারমধ্যে রয়েছে বিরাটনগর-নিউ মালের মধ্যে ১৯০ কিলোমিটার এবং কাজালিবাজার সেকশনেরর গালগালিয়া-ভদ্রপুর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ।

অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গে (শিলিগুঁড়ি করিডরের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে) কুমেডপুর-আম্বারি ফালাকাতা অংশে ১৭০ কিলোমিটার নতুন লাইন। পরিকল্পনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করতে স্থাপন করা হবে আরও ২৫ কিলোমিটার নতুন লাইন।

কর বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণের কৌশলটাই ভুল। প্রতিবছর বাজেট এলে তামাক পণ্যের কর বৃদ্ধির চাপ তৈরি হয়। কিন্তু কর বাড়িয়েও ব্যবহার কমে না বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার (১২ মার্চ) সকালে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরাম আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণের কৌশল বদলানোর এ তাগিদ দেন।

প্রেস সচিব বলেন, দেশের নারীদের মধ্যে ধূমপান প্রবণতা বাড়ছে। এটি চিন্তার বিষয়। তামাক নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রিসভাতেও আলোচনা হচ্ছে। কীভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নিয়ে সরকারেরও আলোচনা হচ্ছে।

এর আগে আসছে বাজেটে নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম প্রতি শলাকা সর্বনিম্ন ৯ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সরকারের অন্য সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসার তাগিদ দেন।

আব্দুর রাজ্জাক জানান, অতীতের যেকোনো চেয়ে চলতি অর্থবছরে তামাক পণ্যের বেশি কর আরোপ করা হয়েছে। এনবিআরের মূল কাজ রাজস্ব আহরণ হলেও জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিও দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলা হয় তামাক পণ্যের শুল্ক থেকে যে রাজস্ব আদায় হয়, তার চেয়ে বেশি ব্যয় হয় তামাক গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপের ১৬৯ প্রতিষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের আদেশ বাতিল করেছেন হাইকোর্টে।

বুধবার (১২ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়ের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। তবে গ্রুপটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখতে বলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এর আগে, এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে হাইকোর্টের এ রায়ের পর এখন নিজস্ব তত্ত্বাবধানে কার্যক্রম চালাতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।

ধাবমান প্রযুক্তিতে ক্রমশ গতিশীল হচ্ছে বিশ্ব। হাতের মুঠোয় চলে আসছে পৃথিবী। এ দৌড়ের সাথে তাল মেলাতে বিশ্বের সবচেয়ে হালকা স্মার্টফোন নিয়ে বাজারে এলো চীনা প্রতিষ্ঠান ‘টেকনো’। শুক্রবার (৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়।

মাত্র ৫ দশমিক ৭ মিলিমিটার পুরু ‘স্পার্ক স্লিম’ মুঠোফোনটির প্রদর্শন হয়েছে বার্সেলোনায় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, কিছুদিনের মধ্যেই মিলবে বাজারে। আইফোন সিক্সটিন প্রো ম্যাক্স, গ্যালাক্সি এস টুয়েন্টি ফাইভ আল্ট্রার মতো বাজারে থাকা শক্তিশালী ডিভাইসগুলোকে টেক্কা দিচ্ছে ‘স্পার্ক স্লিম’।

এছাড়াও ‘ক্যামন-৪০’ স্মার্টফোন সিরিজ, ‘টেকনো এআই গ্লাসেস প্রো’ চশমা ও ‘মেগাবুক এস-১৪’ ল্যাপটপ বাজারে নিয়ে এসেছে কোম্পানিটি। ‘হ্যান্ডস ফ্রি ফিচার’ অর্থাৎ ফোন স্পর্শ না করেই কল রিসিভ ও ম্যাসেজিং, চশমার কাচের মাধ্যমে অটোমেটিক রিয়েল-টাইম অনুবাদের মতো অভিনব ফিচার সংযুক্ত হয়েছে নতুন ডিভাইসগুলোতে।

নতুন পণ্যের ভীড়ে দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল টেকনোর ‘লাইটওয়েট এন্ড কম্প্যাক্ট’ ডিভাইসটি। এরইমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে কম পুরু ফোনের তকমা পেয়ে গেছে মোবাইলটি।

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে একটি নতুন আন্তঃসীমান্ত অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তুলতে চায় মেঘালয় সরকার। সম্প্রতি রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা একথা বলেছেন। শুক্রবার (৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নিউজ এ তথ্য জানায়।

এই করিডোরটি হিলি (পশ্চিমবঙ্গ) থেকে মেহেন্দ্রগঞ্জ (মেঘালয়ের গারো পাহাড়) পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। যা কলকাতা থেকে তুরা, বাঘমারা, দালু ও ডাউকির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলির মধ্যে দূরত্ব ও সময় ২৫ থেকে ৬০% কমিয়ে আনবে।

মেঘালয়ার মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জানান, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে এই করিডোর হলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে মেঘালয়, বরাক উপত্যকা এবং ত্রিপুরার দূরত্ব ৬ থেকে ৭শ’ কিলোমিটার কমবে।

এটির বাণিজ্যিক সম্ভবনার কথাও উল্লেখ করেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এটা শুধু মেঘালয় চাইলেই হবে না। এর সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ সরকারও। সাবেক সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে নয়াদিল্লি এ নিয়ে কথা বলেছিল ঢাকার সঙ্গে। আমরা এটাকে আরেকবার সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।