অর্থ - বানিজ্য

দেশে কমলার কেজি আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা। আমদানি মূল্য ১০০ থেকে ১২০ টাকা। অথচ ‘মদিনা ডেটস অ্যান্ড নাটস’ এই কমলার আমদানি মূল্য দেখিয়েছে সাড়ে ৭ ডলার বা প্রায় আট’শ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে তখন কমলার দর সর্বোচ্চ দুইশ টাকা। এটির মালিক এবিবি ও নাসা গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের জামাতা মোজাম্মেল হোসেন। প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৩২ হাজার কেজি কমলার আমদানি মূল্য দেখায় ২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। অস্বাভাবিক দাম দেখিয়ে অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে সন্দেহ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ)।

নাসা গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের অর্থপাচার ও ঋণ অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন।

জানা গেছে, আমদানি-রফতানির আড়ালে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন, নজরুল ইসলাম মজুমদার। ধর্মীয় লেবাস নিয়ে চলাফেরা করলেও জালিয়াতির সম্ভাব্য সব পন্থা তিনি ব্যবহার করেছেন বলে ধারণা বিএফআইইউ’র। কোনো ক্ষেত্রে আমদানি মূল্য দেখিয়েছেন অনেক বেশি; কোনো ক্ষেত্রে অনেক কম। আবার রফতানি দেখালেও টাকা আনেননি দেশে। ব্যক্তিগত প্রভাবে করা এসব অপরাধের শাস্তি হওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

যমুনার অনুসন্ধানে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম মজুমদারের জামাতার প্রতিষ্ঠান মদিনা ডেটসের বিক্রয়কেন্দ্র আছে। কিন্তু ট্রেড লাইসেন্সে দেয়া ঠিকানায় নেই তাদের প্রধান কার্যালয়। এ বিষয়ে নাসা গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, আমদানির জন্য যখন বেশি মূল্য দেখানো হয়, তখন দুটো উদ্দেশ্য থাকে। সেগুলো হলো— ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া ও অর্থ পাচার করা। নিয়মের বাইরে যে টাকাটা যাবে বা আসবে সেটাই মানি লন্ডারিং।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের রখতিয়ার আহমেদ বলেন, এটিও ফৌজদারী অপরাধ। নিয়মের বাইরে যেটি হয়েছে, সেগুলোর খোঁজ নিয়ে তদন্ত করা দরকার। এরপর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থাও নিতে হবে বলে মত তার।

এদিকে, খেঁজুর আমদানিতে ঘটানো হয়েছে কমলার উল্টো ঘটনা। মদিনা ডেটস অ্যান্ড নাটস দুবাইভিত্তিক কোম্পানি থেকে খেঁজুর আমদানি করে ৩ লাখ ১৩ হাজার ডলারের। প্রতিকেজির দাম দেখিয়েছে, আধা ডলার বা ৫০ থেকে ৬০ টাকা। অথচ তখন আন্তর্জাতিক বাজারে খেঁজুরের দাম দুইশ টাকার বেশি।

এ বিষয়ে এক আমদানিকারক যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, খেজুরের দাম মানের ওপর নির্ভর করে। কোনোটির দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়।

একই ধরনের অনিয়ম করেছে নাসা গ্রুপের ফ্লেমিংগো। তারা সাড়ে ৬ লাখ কেজি খেঁজুরের আমদানি মূল্য দেখিয়েছে ৪ লাখ ৫৫ হাজার ডলার। প্রতিকেজি দশমিক ৭ ডলার বা ৭৭ থেকে ৯০ টাকা। কম দাম দেখিয়ে বাকি টাকা পাঠানো হয়ে থাকতে পারে হুন্ডিতে। ফ্লেমিংগোর ঋণপত্র ছিল ১৩টি। দাম দেখানো হয় ৩৫ লাখ ডলার।

নজরুল ইসলাম মজুমদারের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ফিরোজা গার্মেন্টস। ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা রফতানি আদেশ পায় ১১৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের। এরমধ্যে, ১১৮ কোটি ৬৬ লাখ ডলার দেশে এলেও আসেনি বাকি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এ অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে ধারণা আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, রফতানি হয়েছে কিন্তু সেই অর্থ দেশে আসেনি। এটি তো আরও বড় ধরনের অপরাধ। এগুলো তদন্ত হওয়া দরকার। তিনি কোন কোম্পানির কাছে রফতানি করেছেন, তার সাথে কোম্পানিগুলোর যোগসাজশ আছে কিনা সেসব খোঁজ নিতে হবে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের রখতিয়ার আহমেদ বলেন, এমন জালিয়াতি একা করা সম্ভব নয়। তার সাথে সহায়ক হিসেবে যারা ছিল তারা নিশ্চয় সহায়তা করেছে। রাজনৈতিক নেতা, যাদের নজরদারি করার কথা কিংবা ব্যাংক সবারই এখানে সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।

বিএফআইইউর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফিরোজা গার্মেন্টস যে পণ্য ১৭ ডলারের বেশি দরে রফতানি করছিল, মাত্র চার মাস পর একই পণ্য একই কোম্পানির কাছে রফতানি করেছে মাত্র ৬ ডলার দরে। যেটি সন্দেহজনক।

কুকুরের মাংস নিষিদ্ধের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্ধ হচ্ছে কুকুরের খামার। দেশটির সরকার জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে এই বাণিজ্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হবে। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদুলু এজেন্সি এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ কোরিয়ার কৃষি, খাদ্য ও গ্রামীণবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, এরই মধ্যে ৪০ শতাংশ কুকুরের মাংস খামার স্বেচ্ছায় বন্ধ হয়ে গেছে।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংসদ কুকুর প্রজনন, জবাই ও বিতরণসংক্রান্ত বিশেষ আইন পাস করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত আগস্ট থেকে সরকার কুকুরের মাংস ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধের জন্য উৎসাহিত করতে শুরু করে।

সরকার আশা করছে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ আরও ৯৩৮টি খামার বন্ধ হয়ে যাবে, যা মোট খামারের প্রায় ৬০ শতাংশ।

কোরিয়ার সরকার ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে নতুন আইন কার্যকর হওয়ার আগে পুরোপুরি কুকুরের মাংস-বাণিজ্য বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের স্বেচ্ছায় খামার বন্ধ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং তাদের জন্য সহজ গাইডলাইন, নতুন ব্যবসা শুরু করতে পরামর্শ এবং আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

অনেক চাপ থাকার পরও এই মুহূর্তে সরকারের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিদ্যুৎ ভবনে রমজান মাসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, রমজান মাসকে লোডশেডিং মুক্ত রাখতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। চাহিদা ও যোগানের মধ্যে এমন ভারসাম্য রাখা হবে, যাতে কোনো ত্রুটি না হয়।

উপদেষ্টা আরও বলেন, ১৮ ডিগ্রি’তে না রেখে এসি ২৫ থেকে ২৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় চালানো হলে গরমের সময় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব। গরমকালে ৭০০ থেকে ১৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে বলেও জানান উপদেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, যারা নতুন সংযোগ কিংবা শিল্প কারখানায় অতিরিক্ত গ্যাসের লোড চাইবেন তাদের ক্ষেত্রে বিইআরসি’র প্রস্তাবিত নতুন গ্যাসের দাম কার্যকর হবে।

কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, সৌদি আরব, ডমেনিকান প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন কোম্পানি ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করেছে। পরীক্ষামূলক পদ্ধতির সফলতার কারণে ৪ দিনের কর্মসপ্তাহের নিয়মকে অনেকে স্থায়ী করেছে। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম ইউরো নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির পর থেকে নানা দেশে এ ব্যবস্থা চালু হয়ে আসছে। এবার এ পথে হাঁটল ইন্দোনেশিয়া ও জার্মানি ।৬ মাস পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফল হওয়ার পর ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ‘কমপ্রেসড ওয়ার্ক শিডিউল’ নামে পরিচিত এই উদ্যোগটি স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে চালু করা হয়েছে। এই নিয়মের অধীনে সপ্তাহে ৩ দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পাবেন যারা ৪ দিনের মধ্যে ৪০ ঘণ্টার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।

বেলজিয়াম ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম দেশ হিসেবে ২০২২ সালে চার দিনের কর্ম সপ্তাহ চালু করে। এছাড়াও জাপানের কিছু শহরে পরীক্ষামূলকভাবে চার দিনের কর্ম সপ্তাহ চালু করা হয়েছে, কারণ প্রতি বছর সেখানে ৫৪ জন কর্মী অতিরিক্ত কাজের ফলে মারা যান।

২০২৪ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ২০০টি কোম্পানি স্থায়ীভাবে ৪ দিনের কর্ম সপ্তাহ গ্রহণ করেছে এবং কর্মীদের বেতন অপরিবর্তিত রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে বিভিন্ন দেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল এইডের (ইউএসএআইডি) অফিশিয়াল ওয়েবসাইটও গায়েব হয়ে গিয়েছে। এরপর এক বিব্রিতিতে ট্রাম্প জানান, মাস্ক ইউএসএআইডি ‘বন্ধ’ করার প্রক্রিয়ায় আছেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইলন মাস্ক দাবি করেছেন যে তিনি ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টকে ‘বন্ধ’ করার প্রক্রিয়ায় আছেন এবং তিনি তার প্রচেষ্টা সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবহিত করেছেন। তিনি আরও দাবি করেছেন, ট্রাম্পের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

একটি অডিও স্ট্রিম পডকাস্টে মাস্ক বলেছেন যে তার দলের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ইউএসএআইডি ‘হতাশ’ করেছে। এর আগে, স্থানীয় সময় শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ওয়েবসাইটটি অ্যাকসেসের চেষ্টা করা হলে ‘সার্ভারের আইপি ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি’ এমন একটি বার্তা প্রদর্শিত হয়। অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইউএসএআইডির অ্যাকাউন্ট খুঁজতে গেলে দেখাচ্ছে ‘এই অ্যাকাউন্টটি এখন আর নেই।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। সেই আদেশেই বিদেশি সহযোগিতা বন্ধের বিষয়টি সামনে আসে। এতে বলা হয়, ৯০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে এবং নতুন সাহায্য অনুমোদন বন্ধ রেখেছে।

বাজারে পাওয়া ঘি এর ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশই ভেজাল, গুড়ে ৪৩ ভাগ আর মধুতে ৩৩ ভাগ ভেজাল পাওয়া গেছে। এছাড়া মিষ্টিতে ২৮ শতাংশ এবং দুধে ২৭ শতাংশ ভেজাল পাওয়া গেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গবেষণায়।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপদ খাদ্য দিবসে আয়োজিত সেমিনারে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম এমন ভয়াবহ তথ্য উপস্থাপন করেছে।

তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের বাজারে ঘি-তে ৬৬ দশমিক ৬৭ ভাগ, গুড়-এ ৪৩ দশমিক ৭৫ ভাগ, মধুতে ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ, মিষ্টিতে ২৮ দশমিক ৫৭ ভাগ এবং দুধ-এ ২৭ দশমিক ৯৩ ভাগ ভেজাল পাওয়া গেছে। অর্থাৎ বাজারে থাকা উল্লেখিত শতাংশ দ্রব্য খাওয়ার উপযোগী নয়।

এসব খাদ্যে দরকারি পুষ্টি গুনের ঘাটতি তো রয়েছেই; উল্টো ভেজাল উপাদান দেহে নানা ক্ষতির কারণ হয়ে আসে।

সেমিনারে বাজার তদারকিতে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। সুস্থ থাকতে ফ্রিজে কোনোভাবেই রান্না করা খাবার ও কাচা খাবার এক সাথে না রাখার পরামর্শও দেয়া হয়।

রাজধানীর মাছ বাজারে বেড়েই চলেছে অস্বস্তি। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ ও চিংড়ি। সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন জাতের মাছের দাম বেড়েছে অন্তত ৫০ টাকা। এজন্য যোগান সংকট ও পরিবহন খরচকে দুষছেন বিক্রেতারা। ভোজ্যতেলে সিন্ডিকেটের দাপট কমেনি। চলছে, দাম বাড়ানোর পায়তারা। কমিয়ে দেয়া হয়েছে সয়াবিন তেলের সরবরাহ। সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমেছে প্রতিটি শীতকালীন সবজির।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন তথ্য।

চড়াভাব কাটেনি পোল্ট্রি বাজারে। এক কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়। আর সোনালির জন্য গুণতে হবে ৩৪০ টাকা।

বেশ কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর, এবার দামের আচ লেগেছে মাছের বাজারে। সপ্তাহের ব্যবধানে সব জাতের মাছ কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। অস্বাভাবিক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ ও চিংড়ি। এক কেজি আকারের ইলিশের জন্য গুণতে হবে আড়াই হাজার টাকা্ ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার নীচে মিলছে গলদা ও বাগদা চিংড়ি। এমনকি চাষের রুই-কাতলার জন্যও দিতে হচ্ছে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। দাম বৃদ্ধির জন্য হঠাত করে মাছের যোগান কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত পরিবহন খরচকে দুষছেন বিক্রেতারা।

সব ধরনের আলুর দাম কমেছে। একইসঙ্গে কমেছে চায়না আদার দামও। মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৫০ টাকা এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি নতুন সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, নতুন লাল আলু ২৫ টাকায়। নতুন বগুড়ার আলু ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আজ দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চায়না রসুন ২২০-২৩০ টাকা, চায়না আদা ২০০-২২০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

শীতকালীন শাকসবজিতে ভরপুর বাজার। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় রাজধানীতে এখন অনেকটাই স্থিতিশীল এই বাজার। বেশিরভাগ সবজি মিলছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি করলা, বরবটি, চিচিঙ্গা, ঢেড়স, পটলের জন্য দিতে হবে ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত।

ভোজ্যতেলের সংকট তৈরি হয়েছে মুদি দোকানে। সয়াবিন তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। সিন্ডিকেট করে সংকট তৈরি করা হচ্ছে-এমন অভিযোগ খুচরা বিক্রেতাদের।

৭৫০ টাকা কেজিতে অপরিবর্তিত আছে গরুর মাংসের বাজার। কেজিতে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে খাসীর মাংস মিলছে ১১শ’ ৫০ টাকায়।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চট্টগ্রামে খাল খননের নামে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান। বলেন, চলতি বছর নগরীর ২১ টি খাল পরিষ্কারের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে নগরীর বারইপাড়া ও সুন্নিয়া খাল পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি। আদিলুর রহমান জানান, এর আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননের যে কাজগুলো হয়েছে তা হয়নি।

আগামী বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসী মুক্তি পাবে কি না এমন প্রশ্নে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, অন্যান্য বছরের মতো পানি উঠবে না তবে জলাবদ্ধতা হবে। বিগত বছরে নগরীর ৩ সেবা সংস্থা সিডিএ, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়হীনতার কারণে প্রতিবছর নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে হয়েছে। তবে আগামী দিনে জলাবদ্ধতা নিরসনে সেবা সংস্থাগুলো সমন্বয় করে কাজ করবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, জলাবদ্ধতা নিরসনে চার প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।

কিছু পণ্যে বড় ছাড় এবং এর ঘাটতি মেটাতে কিছুক্ষেত্রে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এমন সিদ্ধান্ত নিত্যপণ্যের দামে প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফ-এর প্রস্তাবে নয়, ঘাটতি হিসাব করেই কর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে কর বাড়ানো হয়েছে তাতে দরিদ্রদের সমস্যা হবে না।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আইটি খাতকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলেও জানান উপদেষ্টা। দেশের অর্থনীতি ও ব্যাংকিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগের চেয়ে অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে এবং ব্যাংকে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। তবে সব কিছু স্বাভাবিক হয়েছে এমন নয়।

তিনি আরও বলেন, ৪৩ পণ্যের কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিত্যপণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলবে না। কারণ, অত্যাবশকীয় পণ্যের শুল্ক জিরো করে দিয়েছি, ছাড় দিয়েছি।

চাল, ডালসহ প্রয়োজনীয় পণ্যর দাম বাড়বে না জানিয়ে তিনি বলেন, যেগুলোর দাম বা কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে তা খুবই অগুরুত্বপূর্ণ পণ্য। হোটেলের ক্ষেত্রে যে দাম বাড়িয়েছি, তা তিন তারকা হোটেলের ওপরে। যারা বিমানে চলাচল করে তাদের ২০০ টাকা বেশি দিতে সমস্যা হবে না।

এগুলো মার্জিনাল বলেও উল্লেখ করেন অর্থ উপদেষ্টা। বলেন, নেপাল ভুটানসহ পৃথিবীর কোনো দেশে এত কম কর বা ট্যাক্স নেই। এরপরও অত্যাবশকীয় পণ্যের কর জিরো করে দিয়েছি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আগের চেয়ে অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। সব কিছু স্বাভাবিক হয়েছে বলবো না তবে ব্যাংকে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে, ব্যাংকের প্রতি আস্থা ফিরে এসেছে।

কলকাতার একটি আদালত থেকে বাংলাদেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচারে অভিযুক্ত আলোচিত ব্যবসায়ী প্রশান্ত কুমার (পি কে হালদার) জামিন পেয়েছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ব্যাঙ্কশাল আদালত পিকে হালদারসহ ছয়জনের জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, জামিনের বিনিময়ে প্রত্যেককে ১০ লাখ রুপি জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে শর্ত দেয়া হয়েছে মামলা চলাকালীন তাদের আদালতে হাজিরাও দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে রাজ্য বা দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না।

এদিকে, এর আগে গত ২৭ নভেম্বর জামিন পেয়েছিলেন পি কে হালদারের ভাই প্রানেশ হালাদার, আমিনা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদার ও ইমন হোসেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা থেকে পিকে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।