খেলাধুলা

জিতলেই ফাইনালে, হারলে বিদায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের মতো এমন হাইভোল্টেজ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে ভারত।

ভারতের হয়ে ৩৯ বলে ৬টি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৩৬ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে ৪৭ রান করেন সূর্যকুমার যাদব। ১৩ বলে এক চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে ২৩ রান করেন হার্দিক পান্ডিয়া। ইংল্যান্ডের হয়ে ৩ ওভারে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন ক্রিস জর্ডান।

বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে নেমেই ২.৩ ওভারে স্কোর বোর্ডে মাত্র ১৯ রান জমা হতেই সাজঘরে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি। চলতি বিশ্বকাপে ছন্দে নেই এই তারকা ওপেনার। দলীয় ৪০ রানে ফেরেন ঋষভ পন্থ।

এরপর সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক রোহিত মর্শা। দলীয় ১১৩ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার রোহিত। তার আগে ৩৯ বলে ৬টি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক।

এরপর মাত্র ১১ রানের ব্যবধানে ফেরেন ব্যাটিং তান্ডব চালিয়ে ৬ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে ৪৭ রান করা সূর্যকুমার যাদব। ৪ উইকেটে ভারতের সংগ্রহ ছিল ১৪৬ রান। এরপর মাত্র দুই বলের ব্যবধানে ফেরেন হার্দিক পান্ডিয়া ও শিবম দুবে।

ইনিংসের ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে ক্রিস জর্ডানকে ছক্কা হাঁকান। চতুর্থ বলে কুরানের হাতে তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন হার্দিক পান্ডিয়া। তিনি ১৩ বলে ২৬ রান করেন। পঞ্চম বলে শিবাম দুবে এসেই বাটলারের হাতে কটবিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ক্রিজে নেমে ষষ্ঠ বলে ১ রান নিয়ে জর্ডানের হ্যাটট্রিক ঠেকান অক্ষর প্যাটেল। 

এরপর ৬ বলে ১০ রান করে ইনিংস শেষ হওয়ার এক বল আগে ফেরেন অক্ষার প্যাটেল। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রানে ইনিংস থামায় ভারত। ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিস জর্ডান ৩ ওভারে ৩৭ রান খরচ করে ৩ উইকেট শিকার করেন।

ওভারে ৬ ছক্কায় ৩৬ রানের গল্প এখন পুরোনো। কাউন্টি ক্রিকেটে দুবার ওভারে ৩৮ রানও দেখা গেছে। তবে এবার সব ছাপিয়ে ওভারে ৪৩ রান দিয়ে বসেছেন ইংলিশ পেসার ওলি রবিনসন। সাসেক্স বনাম লেস্টারশায়ার ম্যাচে অভাবনীয় এই ওভার করেছেন তিনি।

লেস্টারের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ছিলেন লুইস কিম্বার। রবিনসন বল করতে এসে প্রথম বলেই ছক্কা হজম করেন। দ্বিতীয় বল করতে এসে নো বল করে বসেন রবিনসন। সে বলে চার হাঁকান কিম্বার। সাধারণত ক্রিকেটে নো বল হলে ব্যাটিং দল এক রান পায়, তবে কাউন্টি ক্রিকেটে যোগ হয় ২ রান। এর ফলে দ্বিতীয় বলেও ৬ রান পেয়ে যায় লেস্টার।

পরের তিন বলে ৪, ৬ ও ৪ রান সংগ্রহ করেন কিম্বার। পঞ্চম বল করতে এসে ফের নো বল করে বসেন রবিনসন। এই বলেও কিম্বার ৪ হাঁকানোয় ফের ৬ রান পেয়ে যায় লেস্টার। পরের বলে আবার ৪ হজম করেন রবিনসন। শেষ বল করতে এসে তৃতীয়বারের মতো নো বল করেন রবিনসন এবং সে বলেও চার মারেন কিম্বার। শেষ বলে ওঠে ১ রান।

অর্থাৎ, তিনটি নো বল মিলিয়ে রবিনসনের সেই ওভারের ৯টি বলে যথাক্রমে ৬, ২+৪, ৪, ৬, ৪, ২+৪, ৪, ২+৪ ও ১ রান ওঠে। এটাই এখন কাউন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে খরুচে ওভার আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দ্বিতীয়।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সবচেয়ে খরুচে ওভারের রেকর্ড এখনো নিউজিল্যান্ড স্পিনার বার্ট ভ্যান্সের দখলে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে শেল ট্রফিতে ওয়েলিংটন বনাম ক্যান্টারবারি ম্যাচ এই অফ স্পিনার এক ওভারে দিয়েছিলেন ৭৭ রান। সে ওভারে ১৭টি নো বল করেছিলেন ভ্যান্স।

অ্যান্টিগায় বৃষ্টি থামার আর নাম নেই। যার কারণে ম্যাচটি আর পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। ফলে বাংলাদেশের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ইনিংসে যখন দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়, তখনই ধারণা করা হচ্ছিল ম্যাচটি বাংলাদেশের নাগালেই বাইরে চলে গেছে। আর হয়েছেও তাই। বৃষ্টির কারণে আর খেলা মাঠে গড়ায়নি। যার ফলে ২৮ রানে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। 

প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৪০ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ রান আসে অধিনায়ক শান্তর (৪১ রান) ব্যাট থেকে। তাওহীদ হৃদয় করেন ৪০ রান। এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী হয়ে খেলতে থাকেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার হেড ও ওয়ার্নার। মাঝে একবার বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হলেও এগিয়ে ছিল অজিরা। 
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে রিশাদের ঘূর্ণিতে দুই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম হেডকে বোল্ড করেন রিশাদ। এরপরের ওভারে অজি অধিনায়ক মার্শকেও তুলে নেন তিনি। 
 
 
 

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ইনিংসে যখন দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়, তখনই ধারণা করা হচ্ছিল ম্যাচটি বাংলাদেশের নাগালেই বাইরে চলে গেছে। আর হয়েছেও তাই। বৃষ্টির কারণে আর খেলা মাঠে গড়ায়নি। যার ফলে ২৮ রানে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। 

প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৪০ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ রান আসে অধিনায়ক শান্তর (৪১ রান) ব্যাট থেকে। তাওহীদ হৃদয় করেন ৪০ রান। এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী হয়ে খেলতে থাকেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার হেড ও ওয়ার্নার। মাঝে একবার বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হলেও এগিয়ে ছিল অজিরা। 

এ ম্যাচে প্যাট কামিন্স তার ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলে নিয়েছেন। প্রথমে মাহমুদউল্লাহকে বোল্ড করেন তিনি। তার পরের বলেই মেহেদি হাসানকে তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে ও টেস্ট অধিনায়ক। ২০তম ওভারের প্রথম বলে হৃদয়কে তুলে নিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন কামিন্স। হ্যাটট্রিককের কারণে ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সপ্তম এবং অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ব্রেট লি। ২০০৭ সালে এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই হ্যাটট্রিকের দেখা পান তিনি।

অর্থ ও বিত্তবান হলে নাকি বেরিয়ে আসে মানুষের আসল চেহারাটা। খসে পড়ে মুখোশ বেরিয়ে আসে ভেতরের আসল মানুষটা। এক্ষেত্রে মেসি যেন বড্ড ব্যতিক্রম। এখনও সেই আগের মতোই আছেন। বিত্তবান, নাম যশ খ্যাতি রেকর্ড ও অর্জনে ঝুলিটা পূর্ণ হলেও মেসি বদলে যাননি এতটুকুও।। ছোট বেলার বান্ধবী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোকে আবর্তন করেই এখনও ঘূর্ণায়মান তার পৃথিবী।

ব্যক্তি জীবনে নিজেরে শৈশবের দিনগুলোতে রোকুজ্জোর সঙ্গে কাটানোর মধুর সময়। ফুটবলের জন্য স্পেনে চলে আসা এবং ফের তারকা খ্যাতি নিয়ে রোকুজ্জোর কাছে ফিরে যাওয়া। ফের দু’জনের একসঙ্গে পথ চলা। এসব গল্পই এবার কোপা আমেরিকা মিশনে নামার আগে মেসি শোনিয়েছেন তার ভক্তদের। খুলে দিয়েছেন ব্যক্তিগত জীবনের দুয়ার। যাকে অনুকরণ হিসেবে মেনে নিয়ে জীবন গড়তে পারলে কমতে পারে বিচ্ছেদ।

রোকুজ্জোর সঙ্গে মেসির পরিচয়টা হয়েছিল তার চাচাত ভাই লুকাসের মাধ্যমে। যার সঙ্গে মেসির বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল নিওয়েলস ওল্ড বয়েজে খেলার সময়। সেই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই রোকুজ্জোদের বাড়িতে যাওয়া আসা হতো মেসির। সেখানেই রোকুজ্জোর প্রতি তার ভালোলাগা শুরু।

যা নিয়ে মেসি বলেন, ‘আমি ওদের বাড়িতে যেতাম, ওর সঙ্গে দেখা হতো, তখন খুবই ছোট ছিলাম। সবসময় আমি ওকে পছন্দ করতাম। এরপর যখন আমার বয়স ১৩ বছর, আমি স্পেনে চলে গেলাম এবং যেভাবেই হোক যোগাযোগাটা নষ্ট হয়ে গেল।’

স্পেনে যাওয়ার পর রোকুজ্জোর সঙ্গে যোগাযোগটা থেমে গিয়েছিল মেসির। যা নিয়ে মেসি বলেন, ‘এখনকার চেয়ে তখন যোগাযোগ করা ছিল আরও বেশি কঠিন। চিঠিপত্র, ইমেইল কিংবা ল্যান্ডলাইন ফোনের মাধ্যমে হতো, যেটা ছিল ব্যয়বহুল। তো আমরা কথা বন্ধ করে দিলাম। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, কেবল রোকুজ্জোর সাথে নয়, লুকাসের সাথেও।’

এরপর যৌবনে ফের রোকুজ্জোর সঙ্গে দেখা হয় মেসির। যা নিয়ে মেসি বলেন, ‘১৬ বা ১৭ বছর বয়সে ফের সাক্ষাৎ হওয়ার আগ পর্যন্ত, মেসেঞ্জারের কারণে যোগাযোগ সহজতর হলো, আমরা বার্তা আদান-প্রদান করতাম। আবারও কাছাকাছি এলাম। ছোট বেলায় পরস্পরের প্রতি যে অনুভূতি ছিল, সেটা কখনও হারিয়ে যায়নি, কিছুই বদলায়নি। ১৯-২০ বছরে আমরা ডেটিংও শুরু করে দিলাম।’

দীর্ঘ পথচলায় রোকুজ্জোকে ঈর্ষা করার কথাও স্বীকার করেছেন মেসি। যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন করি না, কিন্তু হ্যাঁ, আগে করতাম, যখন তরুণ ছিলাম। আমার হাতে সময় ছিল, কিন্তু এখন সেটা একদমই নেই। যখন ছোট ছিলাম, সম্পর্কের শুরুতে যখন আমরা বয়ফ্রেন্ডের মতো ছিলাম, তখন ঈর্ষাপরায়ণ ছিলাম; এখন একটুও না।’

বাংলাদেশের পেস আক্রমনে দিন দিন ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তরুণ র্তুকী তানজিম হাসান সাকিব। এখন পর্যন্ত চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ সফল তিনি। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচে নিয়েছেন ৯ উইকেট। আজ নেপালের বিপক্ষেও বল হাতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন তিনি। ৪ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

স্বল্প রানের টার্গেট দিয়েও নেপালের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ। তবে টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দিয়ে নেপালের ব্যাটিং অর্ডার পঙ্গু করে দিয়েছিলেন তানজিম সাকিব। যদিও পরে বাকি কাজ সেরে নেয় সাকিব-মুস্তাফিজরা। নিজের এই বোলিংয়ের মাধ্যমে আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করেন তানজিম সাকিব। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ২১টি বল ডট দিয়ে সর্বোচ্চ ডট বলের রেকর্ড গড়েছেন।

৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশি বোলাদের মধ্যে যা দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। একইসঙ্গে টি-টুয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিংও এটি। গত ১০ জুন নিউ ইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করা ১৮ রানে ৩ উইকেট ভেঙে দিলেন এক ম্যাচ পর। প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের এক ম্যাচে নিলেন দুটি মেডেন। তবে সাকিব জানিয়েছেন এই ম্যাচে তাঁর ভালো করার আত্মবিশ্বাসই তাকে দিয়েছে সফলতা। 

ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে এসে এই কথাই  বলেন তিনি। সাকিব বলেন, “(স্বল্প রানের টার্গেট) আমরা আতঙ্কিত হইনি। (ইনিংস বিরতিতে) আমরা বিষয়গুলো সহজ রাখতে চেয়েছিলাম। ভালো জায়গায় টান বল করে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল, এই স্কোর দিয়েই জেতা সম্ভব। বোলিংয়ে ভালো করায় এটা সম্ভব হয়েছে

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন এস্তোনিয়ার শাহিল চৌহান। সোমবার (১৭ জুন) সাইপ্রাসের বিপক্ষে মাত্র ২৭ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তিনি ভেঙে দিয়েছেন নামিবিয়ার জ্যান নিকল লফটি-এটনের ৩৩ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কীর্তিপুরে নেপালের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।

সাইপ্রাসের এপিস্কোপিতে আজ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রান তুলেছিল সাইপ্রাস। ১৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শাহিল চৌহানের ৪১ বলে অপরাজিত ১৪৪ রানের ইনিংসে ভর করে মাত্র ১৩ ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় এস্তোনিয়া। শাহিলের ইনিংসে ৬টি চারের পাশাপাশি ছিল ১৮টি ছক্কা!

হেরে বাদ পড়ল স্কটল্যান্ড, নামিবিয়াকে হারিয়ে নিজেদের কাজ করে রাখা ইংল্যান্ড সঙ্গী হলো অস্ট্রেলিয়ার। ‘বি’ গ্রুপে সব কটি ম্যাচ শেষে অজিদের পয়েন্ট ৮। ইংল্যান্ডের ৫, ৫ পয়েন্ট স্কটল্যান্ডেরও। এ দুদলের সুপার এইট নির্ধারক হলো নেট রানরেট। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা +৩.৬১১, স্কটল্যান্ডের নেট রানরেট দুইয়ের আশপাশে।


অনেক ‘ঝড়-ঝাপটা’র পরও ইংল্যান্ড-নামিবিয়া ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ১০ ওভার করে মাঠে গড়ায়। ঘণ্টা কয়েক আগের ওই ম্যাচে জিতে নিজেদের কাজটা করে রাখে জস বাটলার বাহিনী। এরপর চোখ ছিল অস্ট্রেলিয়া-স্কটল্যান্ড ম্যাচের দিকে। বাটলার তো বলেই দিয়েছিলেন, এক দিনের জন্য তিনি অস্ট্রেলিয়াকে সমর্থন দিচ্ছেন। তার সমর্থন কাজে লেগেছে বটে! ১৮১ রান তাড়ায় স্কটিশদের ২ বল হাতে রেখেই হারিয়েছে অজিরা।
 
বাটলার কৃতিত্ব দিতে পারেন ট্রাভিস হেড ও মার্কাস স্টোইনিসকে। ৬০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর এ দুজনের ব্যাটেই তো জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দুশোর বেশি স্ট্রাইকরেটে ৫৯ রান করেন স্টোইনিস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রান তাড়ায় এ নিয়ে ২০৫ রান করলেন তিনি, তাও আবার ১০২.৫০ গড় ও ১৭৮.২৬ স্ট্রাইকরেটে। ওপেনিংয়ে নেমে হেড করেন ৬৮।

ড্যারেন সামি স্টেডিয়ামে ১৮০ রান প্রায়ই হয়। অজিদের জন্যও লক্ষ্যটা বড় হওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্রথমদিকে তারা যেভাবে ব্যাট করছিল, তাতে জস হ্যাজেউলউডের ‘ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দিতে চাই’ বক্তব্যের প্রমাণই মিলছিল। ৯- এর বেশি আস্কিং রেটের ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে তারা করে মাত্র ৩৬ রান। ডেভিড ওয়ার্নার ১, মিচেল মার্শ ৮ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১১ রান করেন।
 
দৃশ্যপট বদলে যায় ১৪তম ওভার থেকে। হেড ও স্টোইনিসের ব্যাটে লক্ষ্যের দিকে দৌড়াতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। একপ্রান্তে হেড ধরে খেললেও স্টোইনিস ছিলেন মারমুখী। ৪৯ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছয়ের মারের পর সাফিয়ান শরিফের বলে আউট হন হেড। ২৯ বলের ইনিংসে ৯টি চার ও ২টি চার হাঁকিয়ে ১৭তম ওভারের শেষ বলে আউট হন স্টোইনিস, তাকে শিকারে পরিণত করেন মার্ক ওয়াট। বাকি কাজটা শেষ করেন টিম ডেভিড ও ম্যাথু ওয়েড। ১৪ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ডেভিড, ৪ রানে ম্যাথু ওয়েড।

ফ্লোরিডার লডারহিলে বৃষ্টি, বন্যার শঙ্কা আগে থেকেই ছিল। এর মধ্যেই এ মাঠে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি বজ্রবৃষ্টিতে পণ্ড হয়েছে। আবহাওয়া এতটাই খারাপ ছিল যে সেন্ট্রাল বোয়ার্ড পার্কের মাঠ কাভারে ঢাকা থাকায় টস করাও সম্ভব হয়নি। খেলা না হওয়ায় ১২ জুন নেপালের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে লঙ্কানদের, তাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ ‘ডি’ থেকে সুপার এইটের দৌড় থেকেও কার্যত ছিটকে পড়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দল।

একই দুর্ভাগ্যের শিকার হলো সাবেক বিশ্বকাপজয়ী ও গতবারের রানার্সআপ দল পাকিস্তানও। নিজেদের প্রথম ৩ ম্যাচের মধ্যে ২টি হেরে যাওয়ায় বাবর আজমরা লডারহিলে যুক্তরাষ্ট্র-আয়ারল্যান্ডের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। গ্রুপ ‘এ’-এর পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্র জিতলেই পাকিস্তান বাদ—সমীকরণ ছিল এমন। ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও সুপার এইটের আশা শেষ হয়ে যেত পাকিস্তানের। হলোও তা-ই।

লডারহিলে প্রথমে ভেজা আউটফিল্ড ও পরে বৃষ্টির কারণে শেষ পর্যন্ত টসই হয়নি ম্যাচের। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডকে। তিন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ, রড টাকার ও রিচার্ড কেটেলবরো দফায় দফায় মাঠ পরিদর্শনের পর গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। শেষ দফা মাঠ পরিদর্শনে ছিলেন ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথও।

গ্রুপ ‘এ’-তে আপাতত ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট যুক্তরাষ্ট্রের, ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট ভারতের। এই দুই দলই যাচ্ছে সুপার এইটে। পাকিস্তানের পয়েন্ট ৩ ম্যাচে ২, আয়ারল্যান্ডের ৩ ম্যাচে ০ ও কানাডার ৩ ম্যাচে ২। সম্ভাবনা শেষ এ তিন দলেরই।

অন্যদিকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে এসে সুপার এইটে জায়গা করে নিল স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। কানাডাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে তাদের বিশ্বকাপযাত্রা শুরু হয়। এরপর পাকিস্তানকে হারিয়ে পুরো ক্রিকেট–বিশ্বকে চমকে দেয় মোনাঙ্ক প্যাটেলের দল। ভারতের বিপক্ষেও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল স্বাগতিকেরা। কাল আইরিশদের বিপক্ষে তো ভাগ্যও তাদের পক্ষে এল।

অন্যদিকে ভাগ্য পক্ষে ছিল না পাকিস্তানের। অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইমরান খানের পাকিস্তানের জন্যই আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল বৃষ্টি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৭৪ রানে অলআউট হয়ে গিয়েও বৃষ্টির কারণে ১ পয়েন্ট পেয়েছিল পাকিস্তান। যে পয়েন্ট পরে বড় ভূমিকা রেখেছিল পাকিস্তানের সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করায়। এরপর তো সেবার শিরোপাই জেতে পাকিস্তান। এবার সেই বৃষ্টিই কেড়ে নিল পাকিস্তানের শেষ আশা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচিতে লডারহিলে ৪টি ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। শ্রীলঙ্কা-নেপালের পর যুক্তরাষ্ট্র-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ দুটি তো গেলই। ভারত-কানাডার পর পাকিস্তান-আয়ারল্যান্ড দিয়ে বিশ্বকাপের ফ্লোরিডা পর্ব শেষ হওয়ার কথা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ল নিউজিল্যান্ড। আজ পাপুয়া নিউগিনিকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ‘সি’ গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে সুপার এইট নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান। একই গ্রুপ থেকে আগেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ দুই দলের কাছেই হেরেছিল নিউজিল্যান্ড।

২০২১ আসরে ফাইনাল খেলা নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ আট আসরেই প্রথম পর্ব পেরিয়েছে। এবার গ্রুপে নিজেদের দুটি ম্যাচ বাকি থাকতেই দেশে ফেরার টিকিট কাটতে হচ্ছে কেইন উইলিয়ামসনদের।

গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের পর থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় ছিল কিউইরা। আজ পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে আফগানিস্তান পয়েন্ট হারালেই কেবল সুপার এইটের সম্ভাবনা টিকে থাকত। কিন্তু ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে পাপুয়া নিউগিনিকে কোনো সুযোগই দেয়নি রশিদ খানের দল।

টসে হেরে ব্যাট করতে নামা পাপুয়া নিউগিনিকে মাত্র ৯৫ রানে অলআউট করেন আফগান বোলাররা। এর মধ্যে ৪ ওভারে ১৬ রানে ৪ উইকেট বাঁহাতি পেসার ফজলহক ফারুকির। ৪ রানে দুই উইকেট আরেক পেসার নাভিন–উল–হকের।

রান তাড়ায় আফগানিস্তানের দুই ওপেনার বিদায় নেন ২২ রানের মধ্যেই। তবে তিনে নামা গুলবদিন নাইব স্বল্প রানের লক্ষ্য নাগালের মধ্যেই রাখেন। প্রথমে আজমতউল্লাহ, পরে মোহাম্মদ নবীকে নিয়ে দলকে নিয়ে যান গন্তব্যে। গুলবদিন অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৪৯ রানে, নবী ২৩ বলে ১৬ রানে।

৭ উইকেট ও ২৯ বল বাকি রেখে পাওয়া জয়ের পর ‘সি’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষেও উঠেছে আফগানিস্তান। রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই দলেরই পয়েন্ট তিন ম্যাচে ৬ করে।

উগান্ডা ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ম্যাচ বাকি থাকা নিউজিল্যান্ড এখনো পয়েন্টশূন্য। আগামীকাল উগান্ডার বিপক্ষে খেলবে তারা। যে ম্যাচে জয়–পরাজয়ে দেশে ফেরার দিনক্ষণে পরিবর্তন হচ্ছে না।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।