বাংলাদেশ

জোর করে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা লিখে নেয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্লবী থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সাবেক মালিক সারোয়ার চৌধুরী।

মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে মাশরাফীকে। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন– হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র, ইমাম হাসান, অজ্ঞাত (রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির এক কর্মকর্তা), কে এম রাসেল, বাবলু ও অজ্ঞাতসহ মোট ৮ জন।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে, জোরপূর্বক সরওয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মাদার প্রতিষ্ঠান ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিকানা কেড়ে নেয়া হয়েছে। মাশরাফীর কার্যালয়ে বসে হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র নামে সিলেট স্ট্রাইকার্সের সহ-মালিক সারোয়ার চৌধুরীর মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে ছিলেন।

আরও বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির এক কর্মকর্তা (অজ্ঞাত) সারোয়ারকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করেই স্বাক্ষর নিতে শুরু করেন। এমনকি তার পাসপোর্টও জব্দ করা হয়েছিল। এসময় তিনি যেন কারও সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা না বলেন, সেই হুমকিও শুভ্র তাকে দিয়েছিলেন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বিরুদ্ধে নড়াইলে আরও একটি মামলা হয়েছিল।

রাজস্ব ও ব্যাংক খাত সংস্কারে অর্থায়ন করবে, আইএমএফ। জ্বালানিসহ অন্যান্য খাতেও সহায়তা প্রদান করবে। অক্টোবরে আইএমএফ-এর পরিচালনা পর্ষদের সভায়, এ ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের আশা করছেন, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে, সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সাথে বিশ্বব্যাংক এবং আইএফসি এর প্রতিনিধি দল সাক্ষাত করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, বিদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং কর ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি শুধু আইএফসি ও আইএমএফ নয়, অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকেও সহায়তা চেয়েছে। অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের পর সরকার সুনির্দিষ্ট সহায়তা পাওয়ার জন্য আইএফসি ও আইএমএফের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
সহায়তার জন্য আইএমএফকে অনুরোধ করা হলেও পুনরাবৃত্তি এড়াতে অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গেও সমন্বয় করছে সরকার। বিভিন্ন অংশীদারের কাছ থেকে যেসব সহায়তা আমরা চাই, তাতে কোনো ওভারল্যাপ যেন না ঘটে তা আমরা নিশ্চিত করব।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনৈতিক ফ্রন্ট ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সরকারের সম্পদ প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা যতটা সম্ভব স্থানীয় সম্পদ সংগ্রহ করব। তবে কিছু ক্ষেত্রে আমাদের আইএমএফের মতো বাহ্যিক উৎস থেকে অর্থায়ন প্রয়োজন, যা পেমেন্ট সহায়তার ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি রাজস্ব ও ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংক ও আইএফসি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন খাতে সম্ভাব্য সহায়তার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিস্তৃত অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদেরকে বলেছি, আমরা ব্যাংকিং, রাজস্ব ও অন্যান্য খাতে সংস্কার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি যা বাস্তবায়নে কিছু সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকের দলটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার ইস্যু, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে বিশেষভাবে কথা বলবে। তারা এনবিআরের সঙ্গেও সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আগামী অক্টোবরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আসন্ন বার্ষিক সভায় ঋণদাতা সংস্থাগুলোর নীতিনির্ধারকদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন তারা।

আলোচনায় বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ইমদাদ ফাখৌরি, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক পরিচালক আবদৌলায়ে সেক এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অপারেশন ম্যানেজার গেইল মার্টিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাংক জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত দেশের শীর্ষ ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলমের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এস আলম গ্রুপ ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ নিয়েছে ও বিদেশে কত টাকা পাচার করেছে, এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি কামরুল ইসলাম মোল্লা ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

শুনানিতে আদালত বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। তাই তারা ধীরে এগুতে চান।

এর আগে এস আলমের সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর এবং স্থানান্তরের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকোনুজ্জামান।

আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা মামলায় এ আবেদন করেন তিনি। তার অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।

তবে জামিন মেলেনি দীর্ঘ ছয় বছর পরে দেশে ফিরে আসা এই সম্পাদকের। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার পর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তবে, মাহমুদুর রহমান জামিন আবেদন করেননি জানিয়ে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আত্মসমর্পণ করে তিনি কারাগারে গিয়েছেন। আপিল করা হবে, আশা করি দ্রুতসময়ে তিনি মুক্ত হবেন। বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের জন্য তাকে প্রহসনের মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।

এর আগে পলাতক দেখিয়ে মাহমুদুর রহমানের অনুপস্থিতিতে এ মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার পর গত শুক্রবার দেশে ফেরেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত এই সম্পাদক।

এদিকে মাহমুদুর রহমানের আত্মসমর্পণকে ঘিরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আদালতের প্রধান গেটের বাইরে রয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া আদালত ভবনের বাইরেও সর্তকতায় রয়েছেন সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।

সামনে প্রশাসনে আরও পরিবর্তন আসছে। প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল দেশে ফিরলে কয়েকজন সচিব প্রত্যাহার ও নতুন পদায়ন হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জনপ্রশাসন সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি জানান, নতুন ডিসিদের কেউ সক্ষমতা প্রমাণ করতে না পারলে প্রত্যাহার হতে পারেন। শূন্য থাকা ৮ জেলার ডিসি নিয়োগও হবে দ্রুত। রদবদল হতে পারে এডিসি ও ইউএনও পদেও। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীত যাচাই করে যোগ্যদের নিয়োগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়োগের পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলে ভুল বার্তা যাবে।

দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে প্রশাসন সাজিয়েছিল গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। সেই প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে অন্তবর্তী সরকার। এরইমধ্যে কয়েকজন সচিবকে ওসডি বা অবসরে পাঠানো হয়েছে। বাতিল হয়েছে ১১ সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। এতে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এখন সচিব শুন্য। আবার বেশকিছু মন্ত্রণালয়ে থেকে গেছেন বিগত সময়ের সুবিধাভোগিরা। জনপ্রশাসন সচিব জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলে, সচিব ও অধিদফতরের প্রধান পদে নতুন পদায়ন হবে। প্রত্যাহার হবেন কয়েকজন।

মাঠ প্রশাসনের চালক জেলা প্রশাসক বা ডিসিরা। ক্ষমতার পালাবদলে ৫১ জেলায় যোগ দিয়ে কাজ শুরু করেছেন নতুনরা। অভিযোগ থাকায় নিয়োগের পরদিনই বাতিল হয় ৮ জেলার নতুন ডিসির নিয়োগ। তাই ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে এসব জেলা। আবার উপসচিব পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার ক্ষোভ ও অভিযোগ আছে নতুন ডিসি নিয়োগ নিয়ে।

এ ব্যপারে সাবেক সচিব একে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, সিদ্ধান্ত নিলে বুঝে শুনে নেয়া উচিত। সিদ্ধান্ত নিলে আর পরিবর্তন না করা ভালো। পরিবর্তন করলে একটা খারাপ বার্তা যায়। সরকার গোছানোর চেষ্টা করছে। আমি মনে করি আগামী এক মাসের ভেতর সব গুছিয়ে ফেলবে।

সচিব মোখলেস উর রহমান জানান, প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনতে কঠোর সরকার। ১ অক্টোবর শুরু হচ্ছে প্রশাসন সংস্কার কমিশনের কার্যক্রমও।

রাজনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাগরণ ব্যতীত শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাফল্য অর্জন সম্ভব
নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় বাংলায় ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তার বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই আজ আমি বিশ্বসম্প্রদায়ের এ মহান সংসদে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাদের গণমানুষের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের, অফুরান শক্তি আমাদের বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

আমাদের ছাত্র ও যুব সমাজের আন্দোলন প্রথমদিকে মূলত ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে তা গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এরপর সারাপৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখেছে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ একনায়কতন্ত্র, নিপীড়ন, বৈষম্য, অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজপথ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল।

আমাদের ছাত্রজনতা তাদের অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছে। তাদের এই সম্মিলিত সংকল্পের মধ্যেই আমাদের দেশের ভবিষ্যত নিহিত, যা এ দেশটিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাঝে একটি দায়িত্বশীল জাতির মর্যাদায় উন্নীত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এই গণআন্দোলন রাজনৈতিক অধিকার ও উন্নয়নের সুবিধা বঞ্চিত বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্ব চেয়েছিল। আমাদের জনগণ একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যার জন্য আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন উৎসর্গ করেছিল। আমাদের এই তরুণরা যে প্রজ্ঞা, সাহস ও প্রত্যয় দেখিয়েছে তা আমাদের অভিভূত করেছে।

বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করেও বুক পেতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল আমাদের এই তরুণরা। অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রবলভাবে সোচ্চার হয়েছিল আমাদের তরুণীরা। স্কুলপড়ুয়া কিশোর-কিশোরীরা নিঃশঙ্কচিত্তে উৎসর্গ করেছিল তাদের জীবন। শত শত মানুষ চিরতরে হারিয়েছে তাঁদের দৃষ্টিশক্তি। আমাদের মায়েরা, দিনমজুরেরা ও শহরের অগণিত মানুষ তাদের সন্তানদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছিল রাজপথে।

তপ্ত রোদ, বৃষ্টি, মৃত্যুভয়কে তোয়াক্কা না করে তারা সত্য ও ন্যায়সঙ্গত আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল ব্যাপী রাষ্ট্রযন্ত্রকে পরিচালনা করার অশুভ ষড়যন্ত্রকে পরাভূত করেছিল। জনগণের এই আন্দোলনে আমাদের জানা মতে, প্রায় আটশতেরও বেশি জীবন আমরা হারিয়েছি স্বৈরাচারী শক্তির হাতে।

উদারনীতি, বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর মানুষের গভীর বিশ্বাস থেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। ১৯৭১ সালে যে মূল্যবোধকে বুকে ধারণ করে আমাদের গণমানুষ যুদ্ধ করেছিল, সেই মূল্যবোধকে বহু বছর পরে আমাদের জেনারেশন জি নতুনভাবে দেখতে শিখিয়েছে। এরকমটি আমরা দেখেছিলাম ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সময়েও।

বাংলাদেশের এই অভ্যুত্থান আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষকে মুক্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে প্রেরণা যুগিয়ে যাবে। আমাদের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে আমি তাই বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সাথে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাই।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হাসিনা পালালেও সংকট কাটেনি। মানুষ বিশ্বাস করে, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কোনও রকম তালবাহানা সহ্য করবেন না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না হলে কখনও নিরপেক্ষ অবস্থা তৈরি হবে না।

দলটির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ্‌র স্মরণসভায় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এখনও বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করছে। চক্রান্ত করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্নরকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে আওয়ামী লীগ। সকলকে সজাগ থাকতে হবে। হিন্দুভাইরা এ দেশের নাগরিক। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, যেকোনও ঘটনা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে।

নির্বাচনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, যৌক্তিক সময় মানে অনেক বেশি সময় না। যত দ্রুত নির্বাচন করা যাবে, ততই দেশের মঙ্গল হবে। অতিদ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও রাজপথে আন্দোলন করবো।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারকে পরাজিত করার পর দম ফেলার সুযোগ পেয়েছেন বলে মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। বলেন, এই সুযোগ একদিনে তৈরি হয়নি। তারা গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রশাসন, বিচার, অর্থনৈতিক সবকিছু কুক্ষিগত করেছে। শেখ হাসিনা সরকার ভেবেছিল, সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। অত্যাচর-নিপীড়ন করে ক্ষমতা ধরে রেখে সম্পদের পাহাড় গড়ার পরিকল্পনা ছিল।

যারা একদিন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছিল, তারাই এখন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

রাষ্ট্র সংস্কার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং হালনাগাদ ভোটার তালিকা শেষে কমপক্ষে ১৮ মাস পর দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক্ষেত্রে সব ধরনের সহায়তা দেবে বলেও কথা দিয়েছে বাংলাদেশকে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সকালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

নানা বিষয়ের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে নানা সহযোগিতার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় তাদের মধ্যে। পরে বৈঠকের বিষয়ে বলতে গিয়ে আগামী নির্বাচন ঠিক কতদিন পরে হবে, তার একটি ধারণা দেন প্রদান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসাও করেছেন বলে জানানো হয়।

আকস্মিক! বেশ আকস্মিক খবর… বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্তদের জন্য খবরটি বেশ নাড়া দেয়ার মতোই। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না সাবেক টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে।

বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার জানালেন, টি-টোয়েন্টিতে ইতোমধ্যে তিনি তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা ম্যাচই এ সংস্করণে তার শেষ ম্যাচ ছিল।

সাদা পোশাকেও ইতি টানছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। দেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে ঢাকায় ফিরবেন তিনি। ফিরে আগামী মাসে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ খেলে টেস্ট থেকে অবসরে যাবেন সাকিব।

বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে এখন দলের সাথে ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরে অবস্থান করছেন মিস্টার সেভেন্টি ফাইভ। সেখানেই ম্যাচ পূর্ববর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘোষণা দেন তিনি।

তবে খেলে যাবেন ওয়ানডে ক্রিকেট। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর একদিনের ক্রিকেটকেও বিদায় বলবেন সাকিব।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।