বাংলাদেশ

যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, টিউলিপ লন্ডনে যেসব সম্পদ ব্যবহার করেন, সেসবেরও তদন্ত হওয়া উচিত। যদি প্রমাণিত হয় এসব সম্পদ ডাকাতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন তবে ফেরত দেয়া উচিত।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় সরকারি বাসভবন যমুনায় প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রফেসর ইউনূস এসব কথা বলেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে তাকে (টিউলিপ) ও তার পরিবারকে দেয়া সম্পত্তি ভোগ করার জন্য তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ব্রিটিশ সরকারের ট্রেজারি ও সিটি মিনিস্টার হিসেবে আর্থিক দুর্নীতি মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের বাড়িগুলো অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে তৈরি করা কিনা, তা তদন্ত হওয়া উচিত।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ব্রিটিশ সরকারের দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হয়েছেন টিউলিপ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর চেয়ে হাস্যকর আর কিছু হয় না।

তিনি আরও বলেছেন, তিনি (টিউলিপ) যখন কাজটি (দুর্নীতি) করেছেন, তখন হয়তো বুঝতে পারেননি। কিন্তু এখন তো বুঝতে পারছেন। এখন আপনার বলা উচিত, আমি দুঃখিত। আমি তখন বিষয়টি (দুর্নীতির) জানতাম না। এখন আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি এবং পদত্যাগ করছি। কিন্তু তা বলছেন না। বরং নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।

এরপর সঙ্গে সঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, তার (টিউলিপের) পদত্যাগ করা উচিত—এমন বলাটা আমার কাজ না।

এদিকে সানডে টাইমস জানিয়েছে, তারা তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে যে টিউলিপ সিদ্দিক বছরের পর বছর ধরে একটি বাড়িতে বাস করেছেন, যে বাড়িটি দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ী একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কিনেছিলেন। অথচ এ ধরনের আর্থিক অস্বচ্ছতা এড়াতে তিনি বরাবর কথা বলতেন।

টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। গত বছরের ৫ আগস্ট ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। ভারতে পালানোর আগে অভ্যুত্থান ঠেকাতে তিনি শত শত মানুষকে পুলিশ বাহিনী দিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, জোরপূর্বক গুম ও দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।

সানডে টাইমস আরও জানিয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পারমাণবিক শক্তি চুক্তিতে টিউলিপ মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং আর্থিকভাবে উপকৃত হয়েছিলেন। তার দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে।

রাজধানীর সীমান্ত সম্ভারে চুরি হওয়া স্বর্ণের মধ্যে ৫০ ভরি স্বর্ণসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর মিডিয়া ব্রিফিং সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানায় ডিবি।

ডিবি জানায়, সীমান্ত সম্ভার থেকে ৩ জানুয়ারি দুপুরে ক্রাউন ডায়মন্ড এন্ড জুয়েলার্সের দোকান থেকে ২৫০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে সংঘবদ্ধ চক্র। ৮ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুজনকে শনাক্ত করে ডিবি পুলিশ।

ডিবি আরও জানায়, গত ৯ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম থেকে আসার পথে ১ জনকে এবং পরে আরও ২ জনকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী কুমিল্লা থেকে ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫), এবং সাদ্দাম হোসেন (৩১)। উদ্ধার হওয়া স্বর্ণালংকারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা।

পুলিশের ধারণা, এ ঘটনায় ৮ থেকে ৯ জন জড়িত রয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান ডিবির এই কর্মকর্তা। চুরি হওয়া স্বর্ণালঙ্কারের বাকি অংশ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতারে কাজ চলছে বলেও জানায় ডিবি।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবি বলেন, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৩৭৪ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছেন তারা।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭০ বাতিল হলে প্রার্থী কেনাবেচার হিড়িক শুরু হবে, এতে স্বাভাবিক নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের আয়োজনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শেষে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।

সদরঘাট, গুলিস্তান, কমলাপুর, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারে দরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি বলেন, এক বছর আগেও গরীব-দুঃখীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেয়নি আওয়ামী লীগ, এখন বিনা বাধায় ভালো কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।

নির্বাচনের কথা বললেই অনেকে রাগান্বিত হচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব জনগণের অধিকার জনগণকে বুঝিয়ে দিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে।

এ সময় তিনি সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, হাসিনা সকল ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে সংবিধানে যে পরিবর্তন এনেছিল সেগুলোর সংস্কার করা যেতে পারে, কিন্তু আর্টিকেল ৭০ বাতিল করা এই মুহূর্তে উচিত হবে না।

গাজীপরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ৪ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর শনিবার (৪ জানুয়ারি) তাদের আলালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের কোনাবাড়ি থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান হোসেন, গাছা থানার ৩৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নেতা হিমেল সরকার, ৩৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাকিম হোসেন জয় এবং জেলার কাপাসিয়া টোক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান।

তাদের মধ্যে, সোহানুর রহমান সোহানকে শুক্রবার রাতে কোনাবাড়ী থানাধীন আমবাগ আতাউর মার্কেট এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া গাছা থানা পুলিশ শুক্রবার হিমেল সরকার ও মোস্তাকিম হোসেন জয়কে গ্রেফতার করে।  

পুলিশ জানায়, তারা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করার লক্ষ্যে গোপনে মিটিং করার প্রস্ততি নিচ্ছিল। এ ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে নাওজোড় হাইওয়ে থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ মিছিল করার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত শহরের কাউতলী এলাকায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে এ অবরোধের সৃষ্টি করা হয়।

এ সময় দুই কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়ে পুলিশের অনুরোধে সড়ক থেকে সরে দাঁড়ায় শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বেলা তিনটার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাবের সামনে এসে জড়ো হয়। পরে তারা কাউতলী এলাকায় সড়কে গিয়ে অবরোধ করেন। এ সময় অভিযোগ করা হয়, ছাত্রলীগ মিছিল করা মানে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ। তাদেরকে গ্রেফতারে পুলিশের কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, ইতোমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাও দায়ের হয়েছে। কারা কারা জড়িত তাদের সবাইকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ভেসে উঠেছে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে, শেখ হাসিনা ফিরে আবার আসবে বীরের বেশে’ প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করেছে।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধা ৭টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের ছয়তলা ভবনের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে এ লেখা ভেসে ওঠে। এ ঘটনার পর বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নড়াইল জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহমুদুল হাসান সনি বলেন, নড়াইল জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সারাদিন সজাগ ছিল। বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছিল। কিন্তু দুষ্কৃতিকারীরা রাতের আঁধারে এটা করেছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামরুন নাহার লিনাকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানাতে লোহাগড়া থানার ওসি মো. আশিকুর রহমান বলেন, ঘটনার পর পরই অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রিয়াদ জানান, ঘটনার পরপর ডিজিটাল সাইনবোর্ডটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এটির অপারেটর দু’জনকে ডাকা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রিটিশ এমপি রূপা হকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সেই নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে একটি ভুয়া সংসদ, এমপি এবং স্পিকার তৈরি হয়েছিল। জনগণের কণ্ঠকে জোরপূর্বক দমন করা হয়েছিল। এখন দেশবাসী তাদের কণ্ঠ ফিরে পেয়েছে।

এ সময় ব্রিটিশ এমপি রূপা হক পরবর্তী নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ, সংস্কার উদ্যোগ ও রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ড. ইউনূশের কাছে জানতে চান।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, পরবর্তী নির্বাচনের জন্য ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জনগণ কতটা সংস্কার চায় তার ওপর ভোটের তারিখ নির্ভর করছে।

বৃটিশ এমপি রূপা হক বলেন, বাংলাদেশকে দেখে আমি সত্যিই অনুপ্রাণিত। আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে এই দেশে আসতে চাই।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে ভারতের কোনও অনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও পায়নি ঢাকা, এ কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলে বেলাব থানা সমিতি আয়োজিত এক বার্ষিক সাধারণ সভা ও মিলনমেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার অনুরোধের বিষয়ে এই মুহূর্তে ভারতের নতুন করে কিছু বলার নেই।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। সেদিনই তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা মামলা হয়েছে। রয়েছে গণহত্যার মামলাও। বিচারের প্রক্রিয়ার স্বার্থে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর দিল্লিকে কূটনৈতিক নোট পাঠায় ঢাকা।

বাংলাদেশ নিয়ে আরও নানা প্রশ্ন নিয়ে উত্তর দেন রনধীর জয়সওয়াল। তার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, কেউ যেন ভয়ভীতি ছাড়া কথা বলতে পারে, তা নিশ্চিত করেছে এই সরকার। ভবিষ্যতে সরকারও এই ধারা অব্যাহত রাখবে বলে প্রত্যাশা।

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হেইট থ্রু’ কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) স্টুডেন্টস রাইটস ওয়াচের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হেইট থ্রু কর্মসূচির আয়োজন করে ।

এক বছর আগেও ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যেতো আলোকসজ্জা। শোনা যেতো দলীয় স্লোগান। তবে এবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত হলো সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী এই আয়োজন।

এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি’সহ সংগঠনটির নেতাকর্মীদের ছবিতে জুতা ছুঁড়ে মারে শিক্ষার্থীরা। পরপর ৩ বার সফল হলে পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় কোমল পানীয়।

এরপর, শেখ হাসিনা, সাদ্দাম’সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি এবং গণরুম, ফ্যাসিবাদ ও দাসপ্রথা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড পুড়িয়ে ফেলা হয়। এর মাধ্যমে ছাত্র সংগঠন দ্বারা নির্যাতন প্রথার কবর রচিত হলো বলে মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।

পরে, এই কর্মসূচি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও প্রশাসনে ঘাপটি মেরে আছে। নব্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সদা সতর্ক থাকার ঘোষণাও দেন তারা। পরে টিএসসি’তে শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভে’ জুতা ছুঁড়ে মারে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ।

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্য, ন্যায় বিচার, অহিংসা, মানবতা, উন্নত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, এই শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশ জনতা পার্টি নামে নতুন রাজনৈতি দল আত্মপ্রকাশ করেছে।

গতকাল (শনিবার) রাজধানীর কাওরানবাজারের ইডিবি ট্রেড সেন্টারে এই দলের ঘোষণা করেন দলটির প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইকবাল কবির। এর আগে দলটির চেয়ারম্যান নূর হাকিম তার দলের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন।

স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক নামক রাষ্ট্রটি মূলত- ১৭৫৭, ১৯৪৭, ১৯৪৮, ৫২, ৫৪, ৬৬,৬৯,৭০-য়ে বৈপ্লবিক আন্দোলন ও কর্ম সূচির মধ্যে দিয়ে  পরবর্তীতে ৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন করে। এরপর ৯০, এর গণ আন্দোলন ২০০৬ এর আন্দোলন এবং ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথান, পরবর্তীতে বর্তমান  অবস্থায় উপনীত আমাদের এই বাংলাদেশ। 

গত ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ‘দেশ জনতা পার্টি'র রাজনৈতিক দলের উদ্ভাবনের সূচনা হয়। ঢাকায় ২২/১ তোপখানা রোডের বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ ভবনে।

স্বাধীনতা চেতনার আলোকে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চায়। বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধাশীল এবং মৌলিক মানবধিকার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় আছে এবং কর্মসংস্থান পূর্ণ মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গিকারবদ্ধ। দেশের নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার, নাগরিক অধিকার, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থানের অধিকার বাস্তবায়নে সক্রিয় থাকবে। ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রসাশনিক কার্যক্রম ও সেবা  উন্নয়ন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করিতে চায়।   

এরপর দেশ জনতা পার্টির ১০৫ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে চেয়ারম্যান করা হয় মো. নূর হাকিমকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় ইদ্রিস আলী নান্টুকে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।