সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আজিজ আহমেদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাংবাদিক শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এরই মধ্যে অভিযুক্তদের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দপ্তর সিআইসি। গোয়েন্দারা জানান, অনুসন্ধানের আওতায় আসা ব্যক্তিদের জমি, বাড়ি, গাড়ি খুঁজতে সরেজমিন তদন্ত করা হবে।
কখনো ভাইদের কারণে, কখনো নিজ কর্মকাণ্ডে বার বার বিতর্কিত হয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আজিজ আহমেদ। গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে কয়েকটি সংস্থা। এবার তদন্তে নামল এনবিআর।
অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার, সাবেক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা কারণে আলোচিত শেখ পরিবারের সদস্য ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র ফজলে নুর তাপস। গুঞ্জন আছে, সরকার পতনের আগেই তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন। এবার নানা অভিযোগে বিচারে মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে।
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সবচেয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তা ডেপুটি গভর্নর এস কে সূর চৌধুরী। ব্যাংক লুটে যোগসাজশ, অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপার বিরুদ্ধেও নামে বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আছে। এই পাঁচ ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছে সিআইসি।
সাবেক কর কমিশনার বজলুল কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘কারা বেশি কর ফাঁকি দিয়েছে তাদেরকে প্রায়োরিটি দিয়ে আইনানুগ ভাবে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অতিদ্রুত সেটা উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে হবে। সমস্ত আয় ব্যয় পুনঃতদন্ত করা উচিত। সরকার গত বছর যে আইনটা করেছে যে একজন করদাতা তিনি যদি কর ফাঁকি দেন তাহলে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তার কর মামলা পুনর্জীবিত করা যাবে।’
গোয়েন্দারা জানান, অভিযুক্তদের স্থাবর সম্পদের খোঁজে এবার বিশেষ জোর দেওয়া হবে। আয়কর নথিতে দেওয়া সম্পদ বিবরণ কতটা সঠিক তা যাচাই করা হবে।
এর আগে সামিট, ওরিয়ন, নাসা, বেক্সিমকো ও বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে সিআইসি। এরই মধ্যে এসব ব্যক্তির ব্যাংক লেনদেনের তথ্য আসতে শুরু করেছে গোয়েন্দাদের কাছে। তারা জানান, কর ফাঁকিতে অভিযুক্তদের শেয়ার লেনদেনের তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এজন্য চিঠি দেয়া হয়েছে ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে।