অর্থ - বানিজ্য

রাজধানী ঢাকার মেট্রোরেল চালুর নির্দেশনা পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামী শনিবার থেকে যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। তার আগে এখন মেট্রোরেল ব্যবস্থার নানা দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল চলাচলে সর্বোচ্চ সাত দিন সময় লাগতে পারে। তবে এর আগেও চালু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তাসংক্রান্ত কিছু প্রক্রিয়া শেষ করে যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আজ রোববার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সচিবদের বৈঠক হয়। এতে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী মেট্রোরেল চলাচলের বিষয়টি তুললে দ্রুত তা চালুর নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামী শনিবার যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল চলাচল শুরু করবে।

ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, মেট্রোরেল পুনরায় চালুর সর্বাত্মক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপ হিসেবে আজ সংশ্লিষ্টরা হেঁটে হেঁটে পুরো মেট্রোরেলের পথ পরীক্ষা করেছেন। আগামীকাল সোমবার নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। আগামী মঙ্গলবার যাত্রীবিহীন (ব্ল্যাঙ্ক) ট্রেন পরিচালনা শুরু হতে পারে। যাত্রী ছাড়া কয়েক দিন মেট্রোরেল চালানো হবে। এরপরই যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু হবে। কারণ, মেট্রোরেলের জন্য আলাদা পুলিশ রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশ এখনো পুরোদমে কাজে যোগ দেয়নি। যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরুর আগে পুলিশের উপস্থিতিও নিশ্চিত করতে হবে।

মেট্রোরেলে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করলেও মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে থামবে না। আন্দোলনের সময় এই দুটি স্টেশন ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাকি ১৪টি স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামা করতে পারবেন বলে ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে।

গত ১৮ জুলাই মিরপুর–১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওই দিন বিকেল পাঁচটায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়।

ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন বন্ধ রেখে বাকি স্টেশনের মধ্যে মেট্রোরেল চালাতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, মেট্রোরেলের লাইন, কোচ, সংকেত ও বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সবই অক্ষত আছে। সরকার পরিবর্তনের কারণে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আত্মগোপনে চলে গেছেন। ফলে মেট্রোরেল চালানোর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পায়নি কর্তৃপক্ষ। আজ সেই নির্দেশনা পাওয়া গেছে।

চালুর পর থেকেই মেট্রোরেল জনপ্রিয় গণপরিবহন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বন্ধ হওয়ার আগে মতিঝিল থেকে মেট্রোরেলের সর্বশেষ ট্রেন ছাড়ত রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। আর উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিলের পথে সর্বশেষ ট্রেন ছেড়ে যেত রাত ৯টায়। সারা দিনে প্রায় ২০০ বারের মতো মেট্রোরেল চলাচল করে। যাত্রী যাতায়াত করে তিন লাখের মতো।

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ইসলামী ব্যাংকে গোলাগুলি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। যারা এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুহূর্তে তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। গভর্নর নিয়োগ নিয়ে এখনই কিছু বলতে চান না তিনি। তবে পেমেন্ট সিস্টেমসহ আরও যেসব কাজ আছে সেগুলো রুল অফ বিজনেস অনুযায়ী চলবে। গভর্নর কে হবে তা সামনে দেখা যাবে।

সালেহউদ্দিন বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কোনো কাজ ফেলে না রেখে দ্রুত শেষ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে, রোববার (১১ আগস্ট) ঢাকার মতিঝিলের দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসলামী ব্যাংকের কর্মীরা আন্দোলন করছিলেন। এ সময় তাদের ওপর গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে উপস্থিত কর্মকর্তারা ধাওয়া দিলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

এবার পদত্যাগ করলেন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর শনিবার (১০ আগস্ট) তিনি ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান।

গণমাধ্যমকে বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাতে পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। তার একদিন পরেই বিএসইসি চেয়ারম্যান পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন।

গত ২৮ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর বিরোধীতা সত্যেও চলতি বছরের ২৮ মে তাকে ৪ বছরের জন্য পুনঃনিয়োগ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০২০ সালের ১৭ মে তাকে প্রথমবার বিএসইসির চেয়ারম্যান করা হয়।

চলমান ছাত্র আন্দোলনের কারণে দেশের সব তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।  রোববার বিজিএমইএ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান কচি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় শ্রমিক কর্মচারী ভাইবোনদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সব পোশাক শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার জন্য মালিকদের প্রতি অনুরোধ করা হলো।

এর আগে এক দফা দাবিতে রোববার শিক্ষার্থীদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের গাজীপুরসহ দেশের গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সাভারের আশুলিয়ায় পাঁচটি পোশাক কারখানায় আগুন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে পড়েন। রোববার (৪ আগস্ট) বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন লাগা কারখানাগুলো হলো- জিরানী এলাকার হামিম গোডাউন, সিনহা টেক্সটাইল, বেক্সিমকো টেক্সটাইল, ডরিন টেক্সটাইল ও বেঙ্গল গ্রুপের কারখানা। 

এর মধ্যে কয়েকটি কারখানার আগুন স্থানীয়ভাবে নেভানো হলেও বেক্সিমকো ও বেঙ্গল গ্রুপের কারখানায় এখনো আগুন জ্বলছে বলে জানা গেছে।

জিরাবো ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার আবু সায়েম মাসুম বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট হামিমের গোডাউনে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছে। এছাড়া বাইপাইল মোড়ে আরএস টাওয়ারে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে জানতে পেরেছি।

ডিপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার জুবায়েদ বলেন, জিরানী এলাকার সিনহা টেক্সটাইল, বেক্সিমকো, ডরেন ও জিরাবো এলাকায় হামিম গার্মেন্টসের গোডাউনে অগ্নি সংযোগের খবর এসেছে। আমরা সিনহা টেক্সটাইলে যাওয়ার পথে আন্দোলনকারীরা গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় আমাদের ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্যকে মারধর করেছে তারা। পুলিশের নিরাপত্তা ছাড়া আমাদের কাজ করা সম্ভব নয়। 

ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার প্রণব চৌধুরী বলেন, আমাদের ফায়ার স্টেশনে একটির পর একটি আগুনের খবর এসেছে। কিন্তু আমরা কোথাও যেতে পারিনি। রাস্তায় আন্দোলনকারীরা বাধা দিয়েছে। এখনও বেঙ্গল ও বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানায় আগুন জ্বলছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, দুষ্কৃতকারীরা রাস্তার পাশে যেদিক দিয়ে যাচ্ছে সেদিক দিয়ে দোকান-পাট ও কারখানায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। আশুলিয়া থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক বক্স ও আমাদের লাইনে হামলা করেছে। আমরা কোনো কিছুই করতে পারছি না, শুধু লোকাল সোর্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করছি।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয়ে। জুলাই মাসে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এদিকে এক মাসের ব্যবধানে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কয়েকটি পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব করা হয়। এর মধ্যে একটি মোট রিজার্ভ। অন্যটি আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী হিসাব। এর বাইরে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভেরও হিসাব রয়েছে।

বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ কমার পাশাপাশি মোট রিজার্ভের পরিমাণও কমেছে। গত জুন শেষে মোট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৮২ কোটি ডলার। জুলাই শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৯২ কোটি ডলারে।

আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের যে হিসাব করে, তাতে গত জুন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৭৯ কোটি ডলার। জুলাই শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৯ কোটি ডলারে।

আমদানিকৃত লুব্রিকেন্ট অয়েলের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দাম আমদানি শুল্কায়নমূল্য নির্ধারণ করায় দেশ থেকে ডলার পাচারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এইচএস কোড প্রণয়ন করায় হয়রানির শিকার হবেন ব্যবসায়ীরা।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে লুব্রিকেন্টস ইম্পোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (লিয়াব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে প্রতিকার দাবি করেন সংগঠনের নেতারা।

সংগঠনের সভাপতি জমসের আলী লিখিত বক্তৃতায় বলেন, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি করা সব ধরনের লুব্রিকেন্টস অয়েলের এনবিআর আমদানি শুল্কায়ন মূল্য (অ্যাসেসমেন্ট) অস্বাভাবিক হারে নির্ধারণ করায় বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার পাচারের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। 

তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে সব ধরনের ফিনিশড লুব্রিকেন্টস একটিমাত্র এইচএস কোড ব্যবহার করা হতো। যার শুল্কায়ন মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ২০০০ ডলার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আগের এইচএস কোড ২৭.১০.১৯.৩১ সঙ্গে আরও নতুন দুটি এইচএস কোড ৩৪.০৩.৯৯.২০ এবং ৩৪.০৩.৯৯.৩০ সংযোজন করা হয়েছে। 

এই সংযোজিত ৩৪ সিরিয়াল এইচএস কোড আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচলিত ফিনিশড লুব্রিকেন্টস এইচএস কোডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই বাজেটে এইচএস কোড ২৭.১০.১৯.৩১ মিনারেল প্রতি মেট্রিক টন ২৫০০ ডলার। এইচএস কোড ৩৪.০৩.৯৯.২০ সেমি সিনথেটিক প্রতি মেট্রিক টন ৩২০০ ডলার, এইচএস কোড ৩৪.০৩.৯৯.৩০ সিনথেটিক প্রতি টন ৫০০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। 

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওই মিনারেল, সেমি সিনথেটিক, সিনথেটিক লুব্রিকেন্টসের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রকৃত মূল্য যথাক্রমে ১৬০০, ১৭০০, ২০০০ ডলার। সেই হিসাবে মিনারেল লুব্রিকেন্টস শুল্কায়ন মূল্য ৫৭ শতাংশ, সেমি সিনথেটিক ৮৯ শতাংশ, সিনথেটিক ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্কায়ন মূল্য (অ্যাসেসমেন্ট) বাড়ানো হয়েছে। 

বাজারমূল্য থেকে শুল্কায়ন মূল্য অতিরিক্ত ধার্য করার ফলে প্রতি মেট্রিক টন মিনারেলে ১২০০ ডলার, সেমি সিনথেটিক ১৫০০ ডলার ও সিনথেটিক ৩০০০ ডলার পাচার হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে সরকারি সুবিধায় ওভার ইনভয়েসের সুযোগ থাকায় নিশ্চিতভাবে ডলার পাচার বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, ফিনিশড লুব্রিকেন্টসের ওপর অতিরিক্ত শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণের ফলে পরিবহণ, শিল্প-কলকারখানা, বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্ট, কৃষি উৎপাদন, গার্মেন্টশিল্পে খরচ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। সরকারের বর্তমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা নিশ্চিতভাবে ব্যর্থ হবে। লুব্রিকেন্টস মূল্যবৃদ্ধি হলে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে সব নিত্যপণ্য সামগ্রীতে। তাছাড়া নিম্নমানের লুব্রিকেন্টে বাজার সয়লাব হয়ে যাবে এবং মেশনারিজের জীবনকাল কমে আসবে। তিনি এই সেক্টরকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোবারক হোসেন, পরিচালক আবুল কাশেম জামাল, মো. দেলোয়ার হোসেন, আসলাম পারভেজ, সানোয়ার হোসেন, জাকির হোসেন ও আবু সাঈদ প্রমুখ।

শিক্ষামূলক অনলাইন প্লাটফর্ম টেন মিনিট স্কুলের জন্য পাঁচ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষ থেকে। প্রস্তাবটি বাতিল করা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে বাতিল করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করা এক স্ট্যাটাসে এই তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, টেন মিনিট স্কুল- এর জন্য ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব স্টার্টআপ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাতিল করা হলো।

এছাড়া ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে পোস্টটি শেয়ার করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে টেন মিনিট স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিক কোনো মন্তব্য করেননি।

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সোমবার একটি স্ট্যাটাস দেন আয়মান সাদিক। তিনি লেখেন, ‘রক্তাক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়! আমার ক্যাম্পাসে রক্ত কেন? প্রতিবাদ জানাই।’

এছাড়াও কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে ফেসবুকের কভার ফটোও পরিবর্তন করেন আয়মান সাদিক। টেন মিনিট স্কুলের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজের প্রোফাইলও পরিবর্তন করে কালো রঙের ছবি দেওয়া হয়।

বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিকল্প উপায় হিসেবে ডলারের খোঁজে সরকার। এক-দেড় বছর ধরে ডলার প্রাপ্তির প্রধান উৎস রপ্তানি আয়, প্রবাসী আয় ও উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি ঋণ। বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ খুবই কম। ফলে ঘাটতি মেটাতে বাজেট সহায়তার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। তারপরও গত এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার কোটি বা ১০ বিলিয়ন ডলার। মূলত প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে শ্লথগতি এবং বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়ে যাওয়ার কারণেই রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে।

এ অবস্থায় ডলার খরচের চাপ কমাতে চীনের কাছ থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান ঋণ চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু চীনের ঋণের উদ্যোগটি আপাতত আলোর মুখ দেখেনি। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে এ নিয়ে একটি ইতিবাচক ঘোষণার প্রত্যাশা ছিল। এ জন্য দুই পক্ষের মধ্যে দুই মাস ধরে দর-কষাকষি চলছিল। প্রধানমন্ত্রীর সফরে আলোচিত এই ঋণের বিষয়ে ঘোষণা না থাকায় রিজার্ভ ধরে রাখার সমস্যা আপাতত থেকেই গেল। ফলে বাজেট সহায়তা পাওয়ার ভরসা এখন বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি)।

২০২৩ সালের ৩০ জুন দেশের রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি বা ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুসারে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন সেই রিজার্ভ কমে হয়েছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি বা ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদেরাও মনে করেন, ভবিষ্যতে রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে; ডলারের চাহিদাও বাড়বে। কারণ, সরকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চায়। এ জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি উৎপাদন বাড়াতে হবে। ফলে আমদানি বাড়বে, যা ডলারের চাহিদা বাড়িয়ে দেবে। আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধও বাড়ছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আসার প্রবণতা কমেছে। তারপরও প্রায় এক যুগ পর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জন করেছে বেনাপোল স্থলবন্দর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বাড়তি আদায় হয়েছে ২১৬ কোটি টাকা।

বিদায়ী অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭৮০ টন পণ্য। অন্যান্য বছরের তুলনায় পণ্য আমদানি কম হলেও রেকর্ড রাজস্ব কীভাবে আদায় হলো তা নিয়ে আলোচনা নানা মহলে।

ব্যবসায়ীদের মতে, বন্দর কর্তৃপক্ষ যে জিরো টলারেন্স দেখিয়েছে, তাতে স্বতঃস্ফূর্ত রাজস্ব লক্ষ্য আদায় হয়েছে। ৬-৭ মাস ধরে আমাদানি অর্ধেকে কমে এসেছে। কারণ, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, ব্যাংকগুলো এলসি খুলছে না। এনবিআরের যে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা তা দশ বছর পর পূরণ হলো।

এক বছর আগেও বেনাপোল স্থলবন্দরের ওজন স্কেলে কারচুপি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ছিল। রাজস্ব কর্মকর্তাদের দাবি, এখন পণ্যের ওজন নেয়া হচ্ছে অটোমেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে। তার ওপর ডলারের দাম বাড়ায় আমদানির পণ্য আনতে খরচ হয়েছে বেশি। ফলে বাড়তি রাজস্ব এসেছে কাস্টম হাউজের হিসাবেও।

বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা, প্রয়োগ এবং সবার প্রচেষ্টায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে।

বেনাপোল স্থল বন্দরের পরিচালক রেজাউল ইসলাম বলেন, কাস্টমসের পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষের যে অটোমেশন সফটওয়্যার এবং ওজন স্কেলের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণপূর্বক সরকারি রাজস্ব ফাঁকি রোধে জিরো টলারেন্স নীতিগ্রহণই সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।

উল্লেখ্য, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মঈনুদ্দিন কাজল
deshermatidaily@gmail.com
০১৬১৫১১২২৬৬, ০১৬৭৩৫৬২৭১৬

দেশের মাটি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।